| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হুঁশ ফিরলে দুজনে আর বুঝে পায়না কি বলবে। মিনিট চারেক পর-
গল্পঃ এই তোমাকে ওরা কিছু করেনিতো?
মোনাঃ জানো আমাকে না ওই চিমসেটা একটা বিরাশি সিক্কার চড় হাঁকিয়েছে, কালশিটে পরে গেছে।
গল্প ভাল করে দেখল মোনার গালের কালো দাগটা। একবার ভাবল একটা চুমু দেয়, পরক্ষণেই ভাবল না না মেয়ে বেশি লাই পেয়ে যাবে, এমনিতেই একটু আগে ওকে জাপ্টে ধরাটা একটু বেশিই হয়ে গেছে। যদিও কয়েকমাস আগে একবার গল্প মোনাকে প্রায় জড়িয়ে ধরেছিল কিন্তু সে আলাদা সময়।
'এই কি ভাবছ? এরা কারা? তুমি কিভাবে জানলে আমি এখানে? তোমাকে চিনে এরা?? কিভাবে? এই বলনা...'
'তুমি থামলে তো বলব। যে তোমাকে চড় মেরেছে সে নুরুল আমিন, নীলার বড় ভাই, গুণ্ডা টাইপের লোক। কোনদিন ডন হয়ে যাবে।'
'বাপরে ! কিন্তু নীলা তো মারা গেছে তিন বছর হতে চলল। এখন এই লোক তোমার কাছে কী চায়?'
'জানিনা। আর আমার সাথে সমস্যা ও তোমাকে কেন ধরে আনল? আই অ্যাম রিয়েলি সরি মোনা আমার জন্য তুমি বিপদে পড়লা।'
'ওই ব্যাটা তোমার সাথে যোগাযোগ কখন করল? তুমি কখন জানলে যে আমি এখানে?'
'গতকাল রাতে, তোমার বাসা থেকে ফেরার সময়'
গল্প তখন গতকালের সব ঘটনা খুলে বলল, মোনার কাছে থেকেও সব শুনল।
'আচ্ছা গল্প , কার বিয়ে? বিয়ে বাড়িতে আমরা বন্দী হয়ে কেন? বাড়িতে এত আয়োজন তার মাঝে আমাদের ধরে এনে রেখেছে , ওদেরো তো সমস্যা হবে।'
'ওদের সমস্যা ওরা বুঝবে, আমরা বের হব কি করে এটা আমাদের বুঝা দরকার।'
ঠিক এগারোটায় নুরুল আমিন ওর কালো চারকোণা লোকটাকে সাথে করে ঘরে ঢুকল। 'মোড়ক, একটা চেয়ার নিয়ে আয়তো।'
চারকোণা লোকটা বেরিয়ে গেল, কয়েক সেকেন্ড পরেই একটা প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে আসল। নুরুল বসে তাকিয়ে থাকল দুই বন্দীর দিকে।
ওরা দুইজন মাটিতেই বসে আছে। বেশ অস্বস্তিকর একটা নীরবতা। গল্প একটু খুক করে কাশল। মোড়ক ভ্রুকুটি করে তাকাল, নুরুল আমিন নির্বিকার।
'ইয়ে নুরুল ভাই..'
নুরুল আমিন গর্জে উঠল, ' তুই হা**জাদা আমাকে ভাই ডাকবিনা। আমার বোনের সর্বনাশ করেছিস, আমাকে ভাই ডাকবিনা খবরদার বলে দিলাম'
গল্প চুপ করে গেল। এবার মোনা বলে উঠল,' মি. নুরুল আমিন, জানতে পারি আমাদের কেন এখানে এনেছেন? '
'খুব পারিস। তোকে এনেছি ওই শালারে কব্জায় রাখতে। আজ রাতের মধ্যেই তুই ছাড়া পেয়ে যাবি যদি ওই শয়তান সব কিছু ঠিকমত করে তো।'
মোনা ও গল্প মুখ চাওয়াচাওয়ি করল। নুরুল ঘুরে একবার মোড়কের দিকে রোষকষায়িত নয়নে তাকাল। মোড়ক বেরিয়ে গেল।
' আবে ওই বড়ঘরের বড় ব্যাটা, তোর বাপ কি বলছিল তোর থেকে নীলার স্ট্যাটাস অনেক নিচে তাইনা? আমি গুণ্ডা তাই না !'
'নুরুল ভাই দেখুন আমি নীলার ক্ষতি করতে চাইনি, ওকে মেলা আগেই আমাকে ভুলে যেতে বলেছিলাম, ও পারেনি। আমি ওর অপরাধী। আপনি আমাকে নীলার তরফ থেকে শাস্তি দিতে পারেন। আমি আমার বাবার হয়ে ক্ষমাও চাচ্ছি। প্লীজ এই মেয়েটাকে ছেড়ে দিন।'
'চুপ কর তুই .. নীলা তোর কারণে মরল। এদিকে তুই এই ছেমড়ির সাথে প্রেম করে বেড়াচ্ছিস। তোর জন্য আমার বাড়ির বদনাম হল আর তুই এখনও বড় বড় বুলি আওড়াচ্ছিস।'
'আমি ক্ষমা চাচ্ছি ভাই, আর তিন বছর পেরিয়ে গেছে। এতদিন পর কেন? আর আজকে আপনাদের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান, আমাদের পিছনে কেন সময় নষ্ট করছেন?'
'কার বিয়ে সেটা জানিস?'
'না, আমি তো জানিনা যে এ বাড়িতে কে কে থাকে।তবে একটা সন্দেহ হয় যে মিলার বিয়ে। ওকে সেবার যখন দেখেছিলাম ১৬ বছরের ছিল'
'ঠিকি ধরেছিস। আমার ছোট্ট বোনটার বিয়ে। নীলার মত সুন্দরী নয়, কিন্তু তাতে ওর বিয়ে আটকাতো না। আটকালো কেন জানিস? তোর কারণে। একে আমাদের সমান মর্যাদার পরিবার গ্রামে নেই। আত্মীয়তা করতে যাই, খালি নীলার কথা উঠে আসে। বড় বোন আত্মহত্যা করেছে, প্রেম করত। ছোটবোন কেমন কে জানে! আত্মহত্যা কেন করল? নিশ্চয় খারাপ কিছু করেছিল। আর ও কি কি সব বলে। আর লোকেরও অভাব নেই কান ভাঙ্গানোর জন্য।'
গল্প মাথা নিচু করে ফেলল। তারপর একটা কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে বলল ' আমি বুঝতে পারছি নুরুল ভাই, কিন্তু এটাও ঠিক যে আপনার কাজ-কারবারের জন্যই ভদ্র পরিবার আরো আত্মীয়তা করতে ভয় পায়। রাগ করবেননা প্লীজ, কথাটা সত্য। আর এটাও ঠিক যে মিলাকে তো যারতার সাথে বিয়ে দিতে পারেননা। নইলে আপনার দলের কারো সাথেই.... আচ্ছা এসব কি বলছি, আজকে তো মিলার বিয়ে হচ্ছেই। '
'সেতো হচ্ছেই। আর বিয়েতে যাতে তুই কোন ঝামেলা না পাকাস সে জন্য তোর ওই বান্ধবীকে পাকড়ে এনেছি।'
'মানে?' মোনা-গল্প একসাথে বলে উঠল।
'মানে হল, তোর বাপের চোখা মুখ ভোঁতা করব আমি। ও দেখবে যে মেয়েকে ঘরের বউ করবে না বলে বড় নাক উঁচু করে সেদিন এই বাড়ি থেকেই বেরিয়ে গেছিল, আজ সেই বাড়ি থেকেই ওর গুণধর ছেলে সেই বাড়িরই মেয়ে বিয়ে করে আনছে।'
গল্প দাঁড়িয়ে গেল, মোনাও উঠে দাঁড়ালো। 'এসব কি বলছেন? গল্পকে আপনি ধরে এনেছেন আপনার বোনের সাথে বিয়ে দিতে ??? পাগল নাকি আপনি??'
'হ্যাঁ আমি পাগল। ওর কারণে আমার এক বোন মরেছে, আরেক বোনের বিয়ে দিতে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে আমি পাগল তো হবই। চুপচাপ থাক শালী একটা কথাও না, আজ সন্ধ্যায় ও মিলাকে কবুল করবে। তারপর আমি নিজে তোকে তোর শহরে ছেড়ে আসব। আর একটা কথা আজকের পর থেকে ওর কাছ থেকে সরে যাবি। একটা কথাও বলবি না এই হারামিটার সাথে।'
বলে নুরুল আমিন দুমদাম করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। মোড়ক এসে ঢুকল দুই থালায় ভাত আর তরকারি নিয়ে। মাটিতে থালাদুটো রেখে বেরিয়ে গেল। একটু পর এসে একটা গ্লাস আর পানির জগ দিয়ে গেল।
' দুইটার সময় এসে তোমাদেরকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাব, বিয়ের জন্য সাজাতে হবে তো। এখন খেয়ে নাও।'
বলেই বের হয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। মোনা হটাত করে ফুঁস্তে লাগল।
'গল্প তুমি যদি ওই মিলাকে বিয়ে কর আমি তোমাকে কখনই ক্ষমা করবনা জেনে রাখো। তুমি আমাকে না করে দিয়েছ আর এখন এই মেয়েকে...' বাকি কথা শেষ হওয়ার আগেই ফোঁপাতে লাগল সে।
গল্প অসহায়ের মত মোনাকে দেখছে। ওর মাথায় বিভিন্ন চিন্তা ঝড়ের বেগে ঘুরছে। কি করবে সে? নুরুল আমিনের কথা মত মোনাকে বাঁচাতে বিয়ের পিড়িতে বসবে আর নিজের জীবনটা শেষ করে দিবে? নাকি দুইজনেরই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পালানোর পথ খুঁজবে? হাতে টেনেটুনে আড়াই ঘন্টা সময়, এরপর মোড়ক নামের লোকটা আসবে ওদের নিতে। কিন্তু তার আগে সে এই ঘর থেকে বেরই বা হবে কি করে? আর ওকে তো চোখ বেঁধে নিয়ে এসেছিল এখানে, তেমনি মোনাও আসার সময় অজ্ঞান ছিল। রাস্তাও তো চিনা নয়। আর যদিবা বাড়ির সামনেটায় ওরা পৌঁছেও যায় যেখানে সে বাইকটা রেখে এসেছে, ওখানে তো এখন মনে হয় মেলা মানুষ ঘুরে-ফিরে বেড়াচ্ছে।
এখন উপায়???
(চলবে)
২|
১২ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
এখন উপায় শোনার অপেক্ষায় ...
৩|
১২ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: খাইছে!!
জোর কইরা বিয়ে তাও আবার বেটা মাইনষের
চলুক
৪|
১৩ ই জুন, ২০১৪ রাত ১১:৪৯
অদিতি মৃণ্ময়ী বলেছেন: বাকিটা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
৫|
১৪ ই জুন, ২০১৪ রাত ১০:৩৬
জগা বলেছেন: ধন্যবাদ সবাইকে,
আমি কাহিনি শুনার সময় গল্পকে বলেছিলাম 'তোদের প্রেমের গল্প তো উপন্যাস হতে চলল। তাও আবার ক্রাইম থ্রিলার মার্কা
'
ওর উত্তর ছিল, ' তাও ভালো গত দুইবছরে আমাদের প্রেমের নীট অগ্রগতি পুংখানুপুংখভাবে তোকে শুনায়নি, তখন বলতি এ যে মেগাসিরিয়াল। তৈলাক্ত বাঁশ ও বাঁদরের মত '
আমরা বন্ধুরা ঠাট্টা করে বলতাম , ইঞ্চি ইঞ্চি প্রেম (একটু একটু করে এগোয়) । এরপর হটাত করেই বেগ বেড়ে গেল।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:১৫
সোজা কথা বলেছেন: ভালোই। চলুক,,,,,