![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজেকে বিশ্বাস করি... নিজের কাছে সৎ থাকতে চাই। যেটা ভাল লাগে তা আন্তরিকতার সাথে করি ভাল না লাগলে করি না...
জীবনে এই প্রথম কারো সম্পর্কে লিখতে যাছি। না, তিনি কোন বিশেষ ব্যাক্তিত্ত্ব নন। খুবই সাধারন মানের একজন মানুষ তিনি। অন্য সবার কাছে তার অবস্থান যাই হোক না কেন, আমাদের আমাদের ব্যাচের ৫০ জন ক্যাডেট এর কাছে তার অবস্থান ছিল সবসময়ই খ্যাতির সর্বোচ্চ চূড়ায় । আমাদের ছয় বছরের ক্যাডেট লাইফের বেশিরভাগ ঘটনারই কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন এই মহামানব ‘জিনের বাদশা ওস্তাদ মাহমুদ আলি খান মাজারি ওরফে পাপা টাইগার’। নামের মাহাত্ম্য পুরো লেখাটা পরলেই বুঝতে পারবেন। তার ঘটনাবহুল জীবনের কিছু সারসংক্ষেপ তুলে ধরছি এই লেখায়।
ক্যাডেট জীবনের শুরুটা যে তার খুব একটা ভাল হয়েছিল তা বলবনা। ক্লাশ সেভেনে ভর্তি হওয়ার কিছুদিন যেতে না যেতেই কলেজের নিয়ম কানুন আর সিনিয়রদের জ্বালাতনে জীবনটা একেবারে অতিষ্ট হয়ে গেল। মনস্থির করে ফেলল, নাহ এই কলেজে আর থাকা যাবেনা, যে করেই হোক কলেজ থেকে বের হয়ে যেতেই হবে। কিন্তু কাউকে কিছু বলতেও পারছেনা। নিজ ইচ্ছায় কলেজ থেকে চলে গেলে অনেক টাকা জরিমানা দিতে হবে। শুধুমাত্র মেডিকেল গ্রাউন্ডে যদি কাউকে কলেজ থেকে বের করে দেয় সেক্ষেত্রে জরিমানা দেওয়া লাগেনা। অনেক ভেবেচিন্তে একটা সলিউশনও বের করে ফেলল। ঠিক করল পাগলের ভান করে মানসিক রোগী হিসেবে যদি কোনভাবে বের হওয়া যায়। শুরু হল পাগলের অভিনয়। কয়দিনের মধ্যে পুরো কলেজে রটে গেল যে মাহমুদ পাগল হয়ে গেসে। একদিন কেঊ বলে যে সে নাকি দেখসে মাহমুদ পা উপরে আর মাথা নিচের দিকে দিয়ে লং আপ হয়ে দাত ব্রাশ করতেসে, আর একদিন শোনা গেল মাহমুদ ক্লাশ টুয়েলভ এর কোন এক সিনিয়র ভাইকে নাকি চড় মারসে। যদিও এগুলোর সবই গুজব। আমদের ক্লাশের কয়েকজনকে অনেক অনুনয় বিনয় করে সে এগুলো ছড়াতে রাজি করসিল। তো এসব শুনে আমাদের হাউসের হাউসমাষ্টার হাসান স্যার একদিন আমাকে জিজ্ঞেস করল “আচ্ছা বলতো মাহমুদের কি হইসে” আমি বললাম “না স্যার তেমন কিছু হয় নায় নাই, তবে কয়দিন হল ও কেমন যেন একটু অস্বাভাবিক আচরন করতেসে”। একটু গুড় লাগায় দিলাম আর কি। স্যারকেও কথাটা শুনে একটু চিন্তিত মনে হল। কয়দিন পর দেখি সত্যি সত্যি মাহমুদকে হাসপাতালে ভরতি করা হইসে। কিন্তু ডাক্তারের কাছে যখন শুনল তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে তিনমাস অবজার্ভ করা হবে তার পর থেকেই সে পুরোপুরি সুস্থ। কি আর করা এভাবে কাজ হবেনা। অবশেষে কলেজ থেকে বের হওয়ার ভুত নামানো গেল। সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসল মাহমুদ। কিন্তু তারপর থেকে সবাই তাকে খেপাত ‘পাগলা মাহমুদ’ বলে । আর পাগলা মাহমুদ বললেই খেপে গিয়ে সরাসরি প্রিন্সিপাল স্যার এর অফিসের দিকে হাটা দিত তার নামে রিপোর্ট করতে। তখন থেকে পাগলা মাহমুদ না বলে আমরা ওকে ডাকতাম “স্বাভাবিক মাহমুদ” বলে। কিন্তু তার কিছুদিন পরেই কলেজের একটা কালচারাল অনুষ্ঠানে পাগলের ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি আবার তার সেই আগের নামটি পুনরূদ্ধার করলেন। তখন থেকে আজ অবধি তিনি আমাদের কাছে ‘পাগলা মাহমুদ’ নামেই সর্বাধিক পরিচিত।
যাই হোক ক্লাশ সেভেনে বেশির ভাগ সময়ই দেখতাম তার মন খারাপ থাকত। মন খারাপের কারণগুলোও বেশ বিচিত্র। একদিন দেখলাম ড্রিল গ্রাউন্ডের কোনায় বসে একা একা কানতেসে। আগায় গিয়া জিজ্ঞেস করলাম দোস্ত কি হইসে? জানাল তার নাকি খুব মুরগির মাংস দিয়া গরম ভাত খাইতে ইচ্ছা করতেসে কিন্তু আজকে দুপুরের মেন্যু মাছ। এই জন্যেই মনটা খুব খারাপ। কিন্তু আর একদিন ডিনারের পর লক্ষ্য করলাম সে আসলেই খুব চিন্তিত। কিন্তু জিজ্ঞেস করলে কিছু বলতেসে না। অনেক বার জিজ্ঞেস করাতে বলল “ দোস্ত পাগলের ভান ধরসিলাম সেজন্য আমার উপর আল্লাহর গজব পড়সে, আমার অনেক বড় একটা অসুখ হইসে” শুনে মনটা খুব খারাপ লাগল। কিন্তু কি অসুখ হইসে সেটা জিগাইলে আর কিসু কয় না। একটু পরে কি জানি ভেবে নিজে থেকেই বলল “দোস কি যে করি, আমার নুনুর গোড়ার একটু উপরে কেন জানি অনেকগুলা চুল গজাইতেসে”!! মাথায় শয়তানি বুদ্ধি আসতে টাইম লাগেনা। অনেক কষ্টে হাসি চাপায় রেখে খুব সিরিয়াস একটা ভাব নিলাম। বললাম “ দোস্ত মনে হচ্ছে খুবই খারাপ ধরনের অসুখ এটা, তুই তাড়াতাড়ি সিক রিপোর্ট কর”। কথাটা মনে হয় মনে ধরল বসের। কথামত সিক রিপোর্ট করার জন্য পারমিশন নিতে হাউস প্রিফেক্ট জাহিদ ভাই এর কাছে গেল। এদিকে মজা দেখার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেসি। কিন্তু অনেকক্ষন হয়ে গেল সে আর ফেরত আসে না। বেশ কিছুক্ষন পর দেখি ঘর্মাক্ত মাহমুদ কানতে কানতে ফেরত আসতেসে।
কিছুদিন পরই আন্তঃ হাউস নভিসেস ড্রিল প্রতিযোগিতা। পাগলের ভান ধরা, হাসপাতাল, সিক রিপোর্ট এসব কারনে ব্যাস্ত থাকার কারনে ড্রিল প্র্যাক্টিস করার সুযোগ খুব একটা হয়ে ওঠেনি তার। ড্রিলের ক্ষেত্রেও তার আবার একটা বিশেষ বাতিক ছিল। ‘ডানে সালাম’ এর জায়গায় কেন জানি বার বার ‘বামে সালাম’ দিয়ে বসত। ফাইনাল কম্পিটিশনের দিন কে কোথায় দাঁড়াবে সেটা আগে থেকেই ঠিক করে দেয়া হল। ভাগ্যক্রমে আমার পাশেই হল তার অবস্থান। আমার উপর দায়িত্ব পড়ল যে করেই হল মাহমুদ যেন ‘ডানে সালাম’ এর জায়গায় কোন রকম ভুল না করে। ফাইনাল ডে তে ড্রিলে দাড়ানোর পর থাকেই আমি অনবরত বিড় বিড় করে বলতে থাকলাম “মাহমুদ দোস্ত, ডানে সালাম, ডানে সালাম, মনে রাখিস কিন্তু”। সেও আমাকে অভয় দিয়ে বলল “দোস্ত নো প্রবলেম, আজকে আর ভুল হবেনা”। দেখলাম সত্যি সত্যি মাহমুদ আজকে আর কোন ভুল করলনা, ডান দিকে তাকিয়েই ঠিকমত স্যালুট দিল। কিন্তু ডানে সালাম দেয়ার পর ড্রিল কমান্ডার ইফতেখার যখন কমান্ড দিল ‘প্যারেড ঊল্টা ঘোর’ মাহমুদ সাহেব তখনও চরম আত্মবিশ্বাসের সহিত উল্টা না ঘুরে ডানে ঘুরলেন। ড্রিল কম্পিটিশনে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে অবশ্য তাকে এ নিয়ে আর কোন ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। পরে তাকে এর কারন জিজ্ঞেস করলে বলল বার বার ডানে সালাম এর কথা স্মরন করিয়ে দেয়ার কারনে নাকি তার সবকিসু অটোমেটিক ভাবেই ডান দিকে হয়ে যাচ্ছিল।
পাগলা মাহমুদের ছিল আশ্চর্য্য টাইপের কিছু মুদ্রাদোষ। যেমন সামনের দুই দাঁত এর বিশালাকার ফাঁক কমানোর জন্য সারাক্ষন দুই আঙ্গুল দিয়ে দাঁত দুইটাকে দুপাশ থেকে বার বার প্রেস করা, নিচের ঠোটটা একটু ঝোলানো ছিল তাই আঙ্গুল দিয়ে সেটাকে উপরের দিকে ওঠানোর চেষ্টা, নাক দিয়ে বিচিত্র এক ধরনের সাউন্ড করা, আর যেকোন শব্দে ‘এ’ কার বা ‘আ’ কার থাকলে তার উচ্চারন করত ‘য’ ফলা দিয়ে যেমন চারকে বলত চ্যার, দেশকে বলত দ্যাশ এইসব আর কি। যাই হোক, ক্লাশ নাইনের ফেরদৌস ভাই ছিল তার আদর্শ। খাওয়া দাওয়া , হাটা চলা সবকিছুতেই ওনাকে ফলো করত, কিন্তু ফেরদৌস নামটাই ঠিকমত উচ্চারন করতে পারত না। ফেরদৌসকে বলত ‘ফ্যারদৌশ’। তখন থেকে ওকে আমরা মাহমুদ না বলে ‘ফ্যাহমুদ’ বলেও ডাকতাম। কিন্তু আশ্চর্য্য একটা বিষয় আবিষ্কার হল একদিন। মাহমুদের সামনে ফ্যারদৌস, ফ্যাহমুদ এমন কি শুধুমাত্র ‘ফ্যাএএ’ এই টাইপ কিছু বললেই সে হাসিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। দেখা গেল মাহমুদ নামাজে দাড়ালেই আমরা ওর সামনে গিয়ে ‘ফ্যা......’ বলে উঠতাম, আর তাতেই শুরু হত হাসি, একবার শুরু হলে তা আর থামতে চায় না। এই ‘ফ্যা...’ নিয়েও একটা কাহিনি আছে।
কলেজে আমরা যে স্যারকে সবচেয়ে বেশি ভয় পেতাম তিনি হচ্ছেন রইস স্যার। স্যার ক্লাশে কাউকে অমনোযোগী দেখলে তার একেবারে খবর করে দিত। তো এই স্যারের ক্লাশে একদিন একটা সিরিয়াস মুহূর্তে সুযোগ বুঝে আমার পিছনে বসা ফ্যাহমুদের দিকে তাকিয়ে আস্তে করে বললাম ‘দোস্ত, ফ্যা...’। এটা শোনার পর সেতো আর হাসি থামায় রাখতে পারেনা। হাসি থামানোর আপ্রান চেষ্টা করেও কোন লাভ হলনা। যথারীতি রইস স্যারের কাছে ধরা। ফলাফল যা ভাবসিলাম তাই, দুই গালে দুই কষা চড়। আমি কিছুই জানিনা এমন ভাব করে চুপ করে বসে থাকলাম। ক্লাশ শেষে দেখি মাহমুদ চেয়ারের পায়া ভাঙ্গার চেষ্টা করতেসে, আমাকে মারার জন্য। ভয়ে ভয়ে কাছে গিয়ে বললাম মাহমুদ, আমি তো তোকে বলতে চাইসিলাম “ দোস্ত, ফ্যানটা অফ কর” কিন্তু ফ্যান এর ফ্যা... শুনেই তুই যে হাসি শুরু করে দিলি তো আমার কি দোষ বল? যাই হোক, পরে অন্যদের মধ্যস্ততায় সে যাত্রা চেয়ারের পায়ার বারি খাওয়া থেকে রক্ষা পাইসিলাম।
ক্লাশ নাইনে ওঠার পর নতুন এক রোগে আক্রান্ত হল আমার এই প্রিয় বন্ধুটি। কিন্তু এবার আর আমাদের কারো কাছেই মুখ খুলল না। কিন্তু হঠাত একদিন তার লকারে ‘আমলকি রসায়ন’ বা এই টাইপ কিছু একটা নাম লেখা বিশাল সাইজের এক ওষুধের বোতল পাওয়া গেল। পরে জানা গেল রাতের বেলা ঘুমের মধ্যে নাকি মাঝে মধেই তার পুরুষাঙ্গ দিয়ে আঠার মত এক ধরনের তরল দাহ্য পদার্থ নিঃসরণ হয়! তারই প্রতিষেধক হিসেবে ৫০০ টাকা মূল্যের এই ওষুধটি হাউস বেয়ারা ওমেদ ভাই এর সাথে গোপন শলাপরামর্শক্রমে সংগ্রহ করা হয়েছে।
যাই হোক, এ ধরনের ছোট খাট ঘটনার অভাব নাই তার জীবনে। এই সব বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্টের কারনে তারে আমরা ওস্তাদ বলেও ডাকতাম। ওস্তাদের ভাগ্যটাও ছিল খুব খারাপ। কখনোই লাক ফেভার করত না। নিয়মের বাইরে কোন কাজ করলে সে যে ধরা খাবেই এটা এক রকম নিশ্চিত। এস এস সি পরীক্ষার আগে আগে হঠাত একদিন দেখলাম ওস্তাদ সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি,মাথায় টুপি আর চোখে সুরমা লাগিয়ে এসে বলল দোস্ত আমি একটু মাজার জিয়ারত করতে যাব, তোরা একটু ব্যাবস্থা করে দে । কলেজ থেকে পালিয়ে বাইরে গিয়ে ধরা পড়লে কলেজ থেকে বের করে দিবে, এটা সবাই জানে। এমনকি এস এস সি পরীক্ষাও দিতে দেয় কি না সেটা নিয়েও সন্দেহ আছে এমন পরিস্থিতি। সবাই মিলে বুঝালাম দোস্ত তুই পালিয়ে বাইরে গেলে সিওর ধরা খাবি। কিন্তু কোনভাবেই তাকে মানানো যায় না। সে নাকি স্বপ্নে দেখছে কেরামতিয়া মসজিদে গিয়ে কেরামত পীরের মাজার যিয়ারাত না করলে আসন্ন এস এস সি পরীক্ষায় সে ফেল করবে। কি আর করা, আমাদের ক্লাশেরই দুইজন গিয়ে তাকে কলেজের পিছন দিককার দেয়াল পার করে দিয়ে আসল। সেখানেও এক বিপত্তি দেয়াল টপকাতে গিয়ে পায়জামার খানিকটা ছিড়েও ফেলল। ছেড়া পায়জামা নিয়েই মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। এদিকে আমরা তো টেনশনে অস্থির। ধরাই খায় কিনা আবার। ডিনারের আগেই ফিরে আসার কথা ওর। সন্ধ্যার সময় মাগরিবের নামাজে যাওয়ার সময় শুনি তাজুল স্যার নাকি বাইরে মাহমুদের মত একজনকে দেখসে, এখন কলেজের ভিতর বাহির সর্বত্র মাহমুদকে খোঁজা হচ্ছে। আমাদের ক্লাশের সবাইকে একসাথে ফলিন করা হল। দেখা গেল একজন কম এবং সেটা মাহমুদই। কলেজের ভিতরে কোথাও খুজে পাওয়া গেল না তাকে। সবাই নিশ্চিত হল মাহমুদ সত্যি সত্যিই কলেজ থেকে পালিয়েছে। আমাদের সবার মন খুব খারাপ। কিন্তু তাও কেন জানি মনের অজান্তেই মুখে বারবার হাসি চলে আসতেসে। কেউ আর হাসি থামায় রাখতে পারতেসি না। বুঝতেসি মাহমুদের আজ অনেক বড় বিপদ, কিন্তু কলেজ পালায় মাজারে গিয়া ধরা খাইসে এ কথা মনে করলেই হাসি চাপায় রাখা দায়। যাই হোক, অপেক্ষা করছি কখন মাহমুদ ফেরত আসে। রাত দশটার দিকে দেখে গেল মাজার ফেরত মাহমুদকে কলেজের গার্ড ধরে নিয়ে আসতেসে। তারপর জিজ্ঞাসাবাদ, স্টেটমেন্ট লেখা সে এক বিশাল চক্কর । এখন আর স্বান্তনা দেয়া ছাড়া আর কিছুই করার নাই। কিছুদিন পর শুনলাম এস এস সি পরীক্ষার পর মাহমুদকে কলেজ থেকে বের করে দেয়া হবে । এস এস সি পরীক্ষা শেষ হল। এর পর তিনমাসের ছুটিতে যাব সবাই। ফিরে এসে আর মাহমুদকে আমাদের মাঝে আর পাব না। সবাই ওর সাথে কোলাকুলি আর জড়ায় ধরে কানাকাটি করে বিদায় নিলাম।
রেজাল্ট বের হওয়ার কয়দিন পর আমরা আবার কলেজে ব্যাক করলাম। কলেজে এসে আবার মাহমুদকে দেখে তো সবাই একেবারে যার পর নাই অবাক। কাহিনি কি, তোকে না কলেজ আউট করে দিসে, আবার আসলি ক্যামনে? সবার একই জিজ্ঞাসা। মনে করলাম কেরামত পীরের বদৌলতেই হয়ত এই অসাধ্য সাধন হইসে। কিন্তু না, জানা গেল কোন এক পলিটিক্যাল পার্টির একজন উচ্চপদস্থ নেতার বিশেষ কল্যানেই নাকি তাকে পুনরায় ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এস এস সির পর কলেজে ব্যাক করার পর থেকেই লক্ষ্য করলাম তার মধ্যে রহস্যময় কিছু পরিবর্তন। যেমন দিনে পাচ ওয়াক্তের জায়গায় ছয় সাত ওয়াক্ত নামাজ আদায়, সারাদিনই তসবিহ তাহলিল পাঠ সাথে মন্ত্রের মত কী জানি বিড়বিড় করা, ঘুমের মধ্যে হঠাৎ করে হক মওলা বা এই টাইপ কিছু একটা বলে বলে চিৎকার করে ওঠা, দুই রাকাত নামাজের পেছনে আধাঘন্টা সময় ব্যায়,নামাযের আগে পরে ও মধ্যে বারবার অযু করা, দাঁত মাজতে অদ্ভুত প্রজাতির বিশাল এক গাছের ডালের ব্যাবহার ইত্যাদি । এগুলো দেখে ওকে নিয়ে মাঝে মাঝে সন্দেহ জাগত আবার ভয়ও পেতাম। এরি মধ্যে একদিন গোপন সূত্রে খবর পাওয়া গেল মাহমুদ নাকি হামযা ও মিম নামে দুটি জ্বীনকে ইতিমধ্যে কব্জা করে ফেলসে, মানে সে এখন দুটি জ্বীনের মনিব, এই জ্বীন দ্বয় মাহমুদের কথা মত ওঠে বসে। হামযার বোনের বিয়েতে নাকি মাহমুদকে দাওয়াতও দেয়া হয়েছিল কোহেকাফ নগরীতে। কিন্তু সেদিন মোস্তাফিজ স্যার নাইট ডিউটি মাষ্টার থাকায় ঐ দিন আর কোহেকাফ নগরী ভিজিট করা হয়ে ওঠেনি। পরে তার মুখেই শুনেছি এ সব। আলিফ লায়লাতে দেখসি জ্বীনের কাছে যা চাওয়া যায় সবই মুহূর্তে হাতের মুঠোয় চলে আসে। স্বপ্ন পূরনের এইতো সুযোগ। ভয়ে ভয়ে একদিন আমি, ইফতেখার, রাজি আর আলীম আমাদের জ্বিন দর্শনের আরজি তার কাছে পেশ করলাম। অনেক ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে একদিন রাজিও করায় ফেললাম। কিন্তু শর্ত একটাই একথা ভুলেও কাউকে কোনদিন বলা যাবেনা। বললে তার উপর নাকি লানত নামক কিছু একটা বর্ষিত এটা এক রকম নিশ্চিত। জ্বিন নামানোর কাহিনীটা বিশাল। সংক্ষেপে বলা সম্ভব না। অনেক আয়োজনের পর রাতের অন্ধকারে মাহমুদের উপর ভর করে মাহমুদরূপি হামযা সাহেব একদিন আমাদের সম্মুখে উপস্থিত হলেন ঠিকই কিন্তু নানান বাহানা দেখায় আমাদের কোন আবদারি পুরন করলেন না। আমার মুম্বাই গিয়ে কারিনার সাথে সাক্ষাতের শখ, আলীমের জ্বিনের কার্পেটে করে আকাশে উড়াল দেয়া, রাজির পিজা হাটের পিজা খাওয়া আর ইফতির কেমিষ্ট্রি পরীক্ষার খাতা চুরি করে নিয়ে এসে ছেড়ে আসা প্রশ্নগুলোর উত্তর নতুন করে লেখার আবদার সবই অপূর্ণ থেকে গেল। সেদিন আসলেই হামযা এসেছিল নাকি মাহমুদই জ্বীনের ভাষায় কথা বলে আমাদের ধোকা খাওয়াইল সেটা অবশ্য এখনও রহস্যই থেকে গেছে। লানত বর্ষনের কথা শুনে ভয়ের ঠেলায় তখন এটা নিয়ে আমরা কেউই আর বেশি একটা উচ্চবাচ্য করিনি।
প্রতিশোধের আগুনে তখন আমরা জ্বলছি। কিছু একটা করতেই হবে। এ ব্যাপারে ইফতেখার এর মাথা আবার চাচা চৌধুরীর মতই প্রখর। একদিন আমাকে ডেকে বলল, “দোস্ত একটা বুদ্ধি পাইসি, আমরা প্লানচেট করে আত্মা নামাব”। আইডিয়াটা ভালই, জ্বীনের বদলা আত্মা। কিন্তু এখন কিছু করলেই মাহমুদ বুঝে যাবে যে আমরা চাপাবাজি করতেসি। তাই ঠিক করলাম কিছুদিন পর সেকেন্ড টার্ম এর ছুটি থেকে আসার পরেই কাজটা করা হবে। ছুটি কাটিয়ে আসার পর ইফতেখার আর রাজির উপর দায়িত্ব বর্তাল মাহমুদকে বিশ্বাস করাতে হবে যে আমি এবার ছুটিতে গিয়ে প্লানচেট করে আত্মা নামানোর কায়দা শিখে আসছি। প্লানচেট এর কথা শুনে জ্বিনের বাদশা মাহমুদকে বেশ কৌতুহলী মনে হল। অনেক প্ল্যান প্রোগ্রাম করে দিনক্ষন ঠিক করা হল কবে আত্মা নামানো হবে। রাতের বেলা রুমের লাইট অফ করে জানালায় কাল কম্বল টাঙিয়ে ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে একটা ভূতুরে পরিবেশ সৃষ্টি করা হল। প্লানচেট সম্পর্কে আমাদের কারোই বিন্দুমাত্র জ্ঞান থাকলেও পাগলা মাহমুদকে বেশ সিরিয়াস মনে হল। সে দোয়া দরুদ পড়ে পুরা রুমের চারিদিকে আর আমাদের সবাইকে বান দিয়ে দিল। খারাপ আত্মা এসে আমাদের যেন কোন অনিষ্ট করতে না পারে সেজন্যই এই প্রিকশনমূলক ব্যাবস্থা। আমরা আগে থেকেই দরজার সিটকিনি, লকারের উপর ফুলদানি আর স্টিলের স্কেলের সাথে খাতা সেলাই করার সুতা বেধে একটা প্রান্ত নিজেদের হাতে ধরে আছি। তারপর শুরু হল প্লানচেট। প্রায় দশ মিনিট ধরে হাবিজাবি কি কি সব মন্ত্রটন্ত্র পড়ে আমি হঠাত করে ফিট হয়ে পড়ে গেলাম। আমার উপর তখন আত্মা ভর করসে। পড়ে যাওয়ার সাথে সাথে মাহমুদ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ইফতেখার সিটকিনির সাথে যে দড়ি বাধা ছিল সেটা জোরে টান দিল। সাথে সাথে ধামম করে দরজা খুলে গেল। দরজার আশেপাশে কেউ নাই কিন্তু হঠাত দরজা খুলে গেল, এদিকে আবার আমিও ফিট হয়ে পড়ে আছি, মাহমুদ তখন মোটামোটি নিশ্চিত যে আত্মা সত্যি সত্যিই আসছে। আর রাজি ইফতেখার আর আলীম এর তখন এমন ভাব যে ভয়েই তারা মরে যাচ্ছে। ইফতেখার তখন ভয়ে ভয়ে আমার উপর ভর করা আত্মার নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করা শুরু করল। অন্ধকারের মধ্যে প্রচন্ড হাসি চাপায় রেখে বললাম আমার নাম Buffo Melanostictus. ১৭৬৭ সালে স্পেনে আমার জন্ম। মাহমুদের বায়লজি নাই তাই এ নামের অর্থও তার বোঝার কথা না। তারপর আলীম খুব বিনয়ের সাথে জিজ্ঞেস করল আচ্ছা জীবিত কালে আপনার পেশা কি ছিল? বললাম, আমি ছিলাম স্পেনের বিখ্যাত একজন যোদ্ধা। সাথে সাথেই স্টিলের স্কেল মেঝেতে ফেলায় দিয়ে ঝুনঝুন শব্দ। ইফতেখার মাহমুদকে বুঝাইল “উনি যে যোদ্ধা ছিলেন তো সেজন্য তলোয়াড় এর শব্দ করে আমাদের বুঝালেন”। মাহমুদ তখনো কিছু বলার সাহস পাইতেসে না, শুধু বিড় বিড় করে আয়তুল কুরসী পড়তেসে। প্ল্যান মোতাবেক রাজী বলল আপনি যদি এখানে বসেই ওই সবচেয়ে দুরের লকারের উপর রাখা ফুলদানিটা মাটিতে ফেলে দিতে পারেন তাহলে আমরা সত্যি সত্যি আপনার কথা বিশ্বাস করব, না হলে করব না। মাহমুদ তো ভাবসে এটা কোনভাবেই সম্ভব না, এজন্য দেখি সেও রাজির কোথায় সায় দিল। কিন্তু এখনি ঘটল আসল বিপত্তিটা। সুতার কোন জায়গায় জানি এমন গিট্টু লাগসে এখন যতই টানি ফুলদানি তো আর পড়েনা। সবাই তো খুব টেনশনে। এমন পরিস্থিতি ট্যাকেল দেওয়ারও কোন উপায় নাই। মাহমুদকে এতোক্ষনে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে দেখা গেল। কিন্তু আগেই বলসি ইফতেখার এর মাথা চাচা চৌধুরীর চেয়েও প্রখর। সাথে সাথে ও আবার ধামমম করে দরজাটা খুলে দিল। ততক্ষনে আমিও বুইঝা ফালাইসি কাহিনি। কয়েক সেকেন্ড পর ফিট লাগা থেকে উঠে বসলাম। পরে মাহমুদকে বোঝানো হল ফুলদানি ফেলতে বলায় আত্মা সাহেব খুব মাইন্ড করসিল মনে হয় এ জন্যেই রাগ করে চলে গেসে, হাজার হলেও এত বিখ্যাত একজন যোদ্ধার আত্মা সামান্য ফুলদানি ফেলতে বলায় মাইন্ড করতেই পারে। প্ল্যান অনুযায়ী পুরোটা না হলেও সেদিন বেচারা মাহমুদকে মোটামোটি ভালই ভয় খাওয়ায়সিলাম।
ক্লাশ ইলেভেন-টুয়েলভ মোটামোটি জ্বিন ভ্রাতৃদ্বয় আর ইবাদত বন্দেগী নিয়ে বেশ ভালই কাটছিল পাপার। ও আচছা পাপা টাইগার নামটার শানে নযুলটা এখনও বলে হয়নি। শুরু থেকেই আর্মিতে যাওয়ার ব্যাপারে আবার খুব ঝোক ছিল ওনার। আমাদের কলেজের এক স্টাফের ট্র্যাকস্যুটে একদিন ‘পাপা টাইগার’ লেখা দেখে ওই নামটা তার খুব মনে ধরল। তখন থেকেই পাপা টাইগার কি জিনিস সেটা জানার খুব আগ্রহ লক্ষ্য করলাম তার মধ্যে। যাকে দেখে তাকেই জিজ্ঞেস করে পাপা টাইগার সম্পর্কে। পরে যখন জানতে পারল যে পাপা টাইগার আর্মিতে আসলেই খুব বড় মাপের কোন একটা উপাধি তারপর থেকে আমাদের রিকোয়েস্ট করত দোস্ত তোরা আমাকে পাপা টাইগার বলে ডাকিস। আমরা ওরে পাপা টাইগার কইয়া ডাকলে দেখতাম আসলেই খুব খুশি হত পাপা।
পাপার জীবনে ঘটনার কোন শেষ নাই। বলে শেষ করা যাবেনা। এইচ এস সি পরীক্ষার মাত্র একমাস আগে ত্রিকোণমিতি আর বলবিদ্যা একেবারে জিরো থেকে শুরু করা, আসরের ওয়াক্তে মুনাজাতে বসে মাগরিবের নামাজ মিস,আবার এদিকে ছুটিতে গিয়া বেনজিন ছাত্রাবাসে পতিতা দর্শন, রোজা রেখে ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের দরজা ফাঁক করে প্রশ্নপত্র চুরি এসব ছিল তার কাছে খুবই তুচ্ছ ঘটনা।
শুধু ক্যাডেট কলেজের মধ্যেই যে তার ঘটনাবহুল জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটেছে তা না। কলেজ থেকে বের হওয়ার পরও তিনি একের পর এক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। যেমন একদিন চুল কাটতে গেলেন এক সেলুনে। চুল কাটার পর বিশ টাকা বিল দেয়ার জন্য পকেট থেকে বের করলেন সদ্য ব্যাংক থেকে তোলা দশ হাজার টাকার এক বান্ডিল। সেখান থেকে একশ টাকা বের করে বিল দিয়ে রাস্তায় ওঠার কিছুক্ষন পরই দেখলেন পকেট থেকে টাকার বান্ডিল গায়েব।
আর্মিতে চান্স না পাওয়ার পর অনেক দিন পাপার কোন খোজ নাই। একবার শুনলাম পাপা অষ্ট্রেলিয়া চলে যাবে। সবকিসু ঠিকঠাক খালি ভিসাটা এখনও পায়নি। আর একবার শুনলাম সে নাকি রাজশাহী ভার্সিটিতে ভর্তি হইসে। কিন্তু পরে সবাইকে অবাক করে দিয়ে বুজুর্গ মাহমুদ ভর্তি হলেন ফ্যাশন ডিজাইনিং এ!!! আবার সেই ‘ফ্যা...’!! কিছুদিন আগে দেখা হয়েছিল বসের সাথে। আশিকের রুমে বসে অনেকক্ষন গল্প করার পর আমাকে বলল দোস্ত ‘আন আর্মড কম্ব্যাট’ এর কয়েকটা টেকনিক শিখায় দেনা। আমাকে জোর করেই বিছানা থেকে উঠালো। ‘আন আর্মড কম্ব্যাট’ শিখতে চাওয়ার কারন হল কয়দিন আগে গুলশানে রাস্তা দিয়ে হাটার সময় একজন ছিনতাইকারী ছুরির ভয় দেখিয়ে তার মোবাইল ও মানিব্যাগ সহ সর্বস্ব নিয়ে গেছে। ‘আন আর্মড কম্ব্যাট’ জানা থাকলে সেদিন ছিনতাইকারীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেত। দেশের এই অবস্থায় তাই ‘আন আর্মড কম্ব্যাট’ টা শেখা তার কাছে খুব জরুরী মনে হচ্ছে। বর্তমানে নায়ক রুবেলের কোচিং সেন্টারে কারাতে প্রশিক্ষন নিচ্ছে আমাদের পাপা টাইগার।
ব্যাস্ততা আর দূরে দূরে থাকার কারনে ইদানিং খুব একটা বেশি যোগাযোগ হয়না পাপার সাথে। পাপাকে সবসময়ই মিস করি। শুধু আমি না, আমাদের ব্যাচের সবাই তোমাকে খুব মিস করে পাপা। আর্মির পাপা টাইগার হতে পারনি তো কি হইসে আমাদের কাছে তুমি সবসময়ই পাপা টাইগার। U R THE GRANDPAPPA OF ALL TIGER!
২| ০১ লা আগস্ট, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৮
ইফতেখার নাঈম বলেছেন: "পাগলা মাহমুদের ছিল আশ্চর্য্য টাইপের কিছু মুদ্রাদোষ। যেমন সামনের দুই দাঁত এর বিশালাকার ফাঁক কমানোর জন্য সারাক্ষন দুই আঙ্গুল দিয়ে দাঁত দুইটাকে দুপাশ থেকে বার বার প্রেস করা, নিচের ঠোটটা একটু ঝোলানো ছিল তাই আঙ্গুল দিয়ে সেটাকে উপরের দিকে ওঠানোর চেষ্টা"
এইটা পড়ে আর স্থির থাকতে পারলাম না
চরম হইসে, জাস্ট চরম
৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:০০
গন্ধমাতম বলেছেন: ভাই জয়তু আপনারা কিন্তু জ্বিন হামজার কথা ঠিকই বিশ্বাস করেছিলেন বলে মনে হচ্ছে, নাহলে প্রতিশোধ নিলেন কেন?
০১ লা আগস্ট, ২০১১ রাত ৮:৩৭
জয়তু১১৯২ বলেছেন: "সেদিন আসলেই হামযা এসেছিল নাকি মাহমুদই জ্বীনের ভাষায় কথা বলে আমাদের ধোকা খাওয়াইল সেটা অবশ্য এখনও রহস্যই থেকে গেছে। লানত বর্ষনের কথা শুনে ভয়ের ঠেলায় তখন এটা নিয়ে আমরা কেউই আর বেশি একটা উচ্চবাচ্য করিনি।"
ভাই গন্ধ, তখন একটু একটু তো বিশ্বাস করসিলামই। কিন্তু পুরাপুরি বিশ্বাস করিনি জন্যেই লানত বর্ষনের রিস্ক থাকা স্বত্তেও প্রতিশোধ নেওয়ার সাহস পাইসিলাম।
৪| ০২ রা আগস্ট, ২০১১ সকাল ১০:০৫
রাজীউর রহমান বলেছেন: "আমার নুনুর গোড়ার একটু উপরে কেন জানি অনেকগুলা চুল গজাইতেসে"
অনেকদিন পর এই কাহিনী মনে পড়ল, হাসতে হাসতে গড়াগড় =)) =))
০২ রা আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৩:১৫
জয়তু১১৯২ বলেছেন:
৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১১ সকাল ১০:০৭
রাজীউর রহমান বলেছেন: আর ফাদার 'এ্যান্থনি গোমেজ ডি কস্টা'র নামটা পুরা গায়েব করে দিলি শালা!! কত কষ্ট করে একটা বিশ্বাসযোগ্য নাম বানানো হইছিল।
৬| ০২ রা আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৩:১৯
জয়তু১১৯২ বলেছেন: 'এ্যান্থনি গোমেজ ডি কস্টা'র নামটা পুরাই ভুইলা গেসলাম, এখন মনে পড়ল।
৭| ০২ রা আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৪:৫৫
কুচ্ছিত হাঁসের ছানা বলেছেন: আহারে, ম্যালা পুরান কথা মনে পইড়া গেল।
আমাদের রিয়াসাত ক্লাস সেভেনের প্রথম সাতদিন থেকেই বলল সে আগামী টার্মে আর ক্যাডেট কলেজে আসবে না। পরের টার্মেও আসল। এসে বলল, যে ক্লাস সেভেন কমপ্লিট করে চলে যাবে।
সেভেন কমপ্লিট হবার পর বলল, নাইনে উঠুক তার পরে যাবে ...
শেষ পর্যন্ত ক্লাস টুয়েলভে যেদিন চলে আসি সবাই, সেদিন ওকে একদফা টিজ দিয়া বলছিলাম, শালা, তুই না সেভেনের প্রথম সাতদিনের টার্মেই চলে যাস?
বডিবিল্ডিং এর শখ ছিল ওর। আমাদের সবচেয়ে ভাল লাগতে রাত তিনটায় ওকে ঘুম থেকে তুলে, কি রে রিয়াসাত, ঘুমাচ্ছিস? আচ্ছা ঘুমা।
কিংবা প্যারেডের সময় পাড়া দিয়ে ওর সু খুলে দেয়া।
সেই রিয়াসাত এখন একটা পাবলিক ভার্সিটির টিচার।
ক্যাডেট লাইফের এত গল্প আছে যে, একজনকে নিয়েই পুরা একটা বই লেখা হয়ে যাবে। থাক আজকের মত অফ গেলাম।
৮| ০২ রা আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৪:৫৮
কুচ্ছিত হাঁসের ছানা বলেছেন: মামা, তোরে তো চিনি না, তয় আলীম আর রাজীর লগে খাতির আছে মুটামুটি।
কেমন আছস? পোস্টিং কই তোর? ব্লগে দেইখা ভাল্লাগলো।
আমি মির্জাপুরের। সেইম ব্যাচ।
০২ রা আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:৪৬
জয়তু১১৯২ বলেছেন: মামা এইতো মিশনে ভাড়া খাটতেসি, হাতে অফুরন্ত সময়, তাই ভাবলাম তোদের একটু বিনোদনের যোগান দেই।
আমাগো মাহমুদের কাহিনি নিয়ে লিখতে গেলে শুধু একটা বই না, ছোটখাট একখান লাইব্রেরী হয়ে যাবে।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা আগস্ট, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৪৯
সামাউন খালিদ কলিন্স বলেছেন: PAPA TIGER ROCKZ........