![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জগতের সব কাজই আমি পারি না। অনেক কাজে অলস হলেও লিখতে কখনও ক্লান্তি বোধ করি না। এতে করে আমার সময়গুলো ভালো কাটে।
ভাগ্যবানের বউ মরে, অভাগার গরু মরে। আমার মতে এটি খুবই নোংরা এবং অমানবিক একটি প্রবাদ। আমাদের লোক-সমাজে একসময় হয়তো খুব বেশিই প্রচলন ছিলো কথাটির। আর প্রচলিত এ প্রবাদটির উৎস নিয়ে যতটা না কৌতুহলী হওয়া প্রয়োজন, তার চেয়ে আরো বেশি দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন সে সময়কার মানুষগুলোর মন-মানসিকতা আর জ্ঞানবুদ্ধির দিকেও। দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন মনে করি তখনকার দৈনন্দিন জীবন-প্রণালীর দিকেও। আজকাল মানুষ অনেক জানে। অনেক কিছুই দেখে। দেখে দেখেও শিখে ফেলে আরো অনেক। কিন্তু একুশ শতকের জীবনযাত্রার সঙ্গে কথাটি কোনোভাবেই খাপ খায় না। কিন্তু তবুও দেখি অনেক শিক্ষিত নারী-পুরুষই প্রবাদটি প্রয়োগের সুযোগ পেলে ছাড়েন না। বিশেষ করে নারীদের মুখ থেকেই অনেক সময় আক্ষেপের মতও বেরিয়ে আসতে দেখেছি। ভেবে দেখা যেতে পারে যে, ঘরের বউ কতটা গুরুত্বপূর্ণ আর একটি গরুর প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?
আজকাল হাল চাষের জন্য গরুর প্রয়োজন নেই। সে কাল অনেক আগেই বাসি হয়ে গেছে। তাহলে কথাটি কেন এখনো প্রচলিত? আর এর ব্যবহার কারা করেন? আর সত্যি সত্যিই যিনি বিপতœীক হন তিনি কি নিজকে ভাগ্যবান ভাবতে পারছেন? যদি এমন হয় একটি শিশু বয়সের দিক দিয়ে এক বছরের। তার বড়টি তিন বছরের। তার বড়টি পাঁচ বছরের। তাহলে সে তিনটি শিশু যদি মাতৃহীন হয় তাহলে তাদের পিতা কতটা ভাগ্যবান ভাবতে পারেন নিজকে? হয়তো তিনি মৃত স্ত্রীর চেয়ে সুন্দরী, গুণী আর আর কম বয়সী একটি স্ত্রী পেলেন, তাহলে কি তিনি ভাগ্যবান হয়ে গেলেন? শিশু তিনটিকে কি সেই নারী মন থেকে ভালোবাসতে পারবেন? সে ঘরে কি তিনি স্বামীর বিগত স্ত্রীর কোনো স্মৃতিকে রক্ষা করতে দেবেন? এমনটা সাধারণত হয় না। মাতৃহীন শিশু তিনটি সে নারীর কাছে সতীনের স্মৃতি হিসেবেই হয়তো তুল্য। কিন্তু যে অর্থে পুরুষটিকে ভাগ্যবান বানানো হচ্ছে বা দেখানো হচ্ছে সেই একই অর্থে কিন্তু শিশু তিনটির মত হতভাগ্য আর কেউ নেই। কারণ তাদের পিতার স্ত্রী তাদেরকে তাদের মায়ের মত ভালোবাসা বা স্নেহ-মমতা দিতে পারছেন না ততটা। হয়তো সে চেষ্টা তিনি করেনও না। আর করলেও দেখা যায় প্রথম পক্ষের সন্তানরা তাদের মায়ের আসনে তাকে মেনে নিতে পারছে না। মায়ের আসনে আসীন নতুন নারীটিকে মন থেকে ভালোবাসতে পারছে না বলেও তার আন্তরিকতা থাকলেও তা তাদের স্পর্শ করে না। আর তা থেকেও সৃষ্টি হয় নানা তিক্ততা। যে তিক্ততার কমবেশি আমরা অনেকেই জানি বলে সেদিকে আর আগাচ্ছি না।
তবে, কোনো একটি নারী বা পুরুষ বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হলে (প্রেমের বিয়ে ধরছি না।) প্রথম চার চোখের মিলনের পরই দুজন দুজনকে আবিষ্কারের নেশায় মেতে ওঠেন। পরস্পর পরস্পরের হৃদয়কে কতটা দখলে নিতে পারেন বা কে কাকে কতটা বেশি ভালোবাসেন তারও একটি সূক্ষ্ম প্রতিযোগীতা চলে হয়তো। তা ছাড়াও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পারস্পরিক মিল-অমিল খোঁজার চেষ্টাতেই পেরিয়ে যায় মোটামুটি একটি দীর্ঘ সময়। আর সে কারণেই দেখা যায় বিয়ে-পরবর্তী সময়গুলোতে স্বামী-স্ত্রীতে তেমন ঝগড়া-ঝাঁটি হতেও দেখা যায় না। আর হলেও সেটা বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া বেশি দূর গড়ায় না। কিন্তু নারী পুরুষ উভয়ের দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো যেন চটজলদিই চলে আসতে দেখা যায়। যদিও পুরুষটির দ্বিতীয় বিয়ে এবং নারীটির প্রথম বিয়ে সে ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অনেকাংশেই সহনীয় পর্যায়ে থাকতে দেখেছি। কিন্তু দুজনেরই যখন বিবাহটা দ্বিতীয় বারের বা তারও পরবর্তী বিয়ে হয়ে দাঁড়ায় সেখানে যেন সাংসারিক ভারসাম্য বজায় থাকার ক্ষেত্রে পরিস্থিতিটা প্রায়শ নাজুক অবস্থাতেই থেকে যায়। কারণ দুজনের মনের ভেতরই দীপ্যমান থাকে প্রথম বিয়ের স্মৃতি। নতুন সংসার বাঁধার পর সর্বক্ষণই চলে পুরোনোর সঙ্গে নতুনের তুলনা। কিন্তু কথায় বলে না যে, প্রথম প্রথমই। আর সে কারণে প্রথম স্বামী বা স্ত্রীকে কোনোভাবেই অতিক্রম করে যেতে পারেন না দ্বিতীয় জন। প্রসঙ্গক্রমে প্রথমজনের তুলনা কোনো না কোনোভাবে চলে আসতেই পারে। আর সে তুলনায় দেখা যায় প্রায়ই হারতে বসেছেন দ্বিতীয়জন। আর তার পথ ধরেই চলে আসে সংঘাত। দুজনই পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে সব কিছুকে বিচার করেন বলে কেউ কাউকে ছাড় দিতে খুব একটা পারেন বলেও দেখা যায় না। যে কারণে দুজনেরই কণ্ঠস্বরের পর্দা চড়তে চড়তে শয়নঘরের দরজা জানালা দিয়ে ছিটকে বাইরে চলে আসে। তাদের মধ্যকার অমিল নিয়ে যে দ্বন্দ্ব তৈরী হয় তাও অনেক সময় ঠোকাঠুকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর তার ছিঁটেফোঁটাও এসে লাগে সন্তানদের ওপর। তারা তাদের পিতা এবং নতুন মায়ের প্রতি আস্থা বা নির্ভরতা হারাতে থাকে ধীরে ধীরে। তারা বড় হতে থাকে খানিকটা অবহেলা আর শংকার ভেতর দিয়ে। দিনরাত পার করতে থাকে নানাবিধ অনিশ্চয়তার ভেতর দিয়ে। আর এমন পরিস্থিতির চাপে পড়ে ধীরে ধীরে ঘটতে থাকে মাতৃহারা শিশুদের মানসিক বৈকল্য। কখনো কখনো পিতা ও সন্তানের সম্পর্কের মাঝে তৈরী হয় দুস্তর ব্যবধান। কখনো বা সন্তানরা নিজের অজ্ঞাতেই মননে লালন করতে পারে পিতার প্রতি ঘৃণা। যে ঘৃণা তাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পিতার কাছ থেকে এমন কি ঘর থেকেও ঠেলে দিতে পারে অনেকটা দূরে
সুতরাং ভাগ্যবানের বউ মরে কথাটি সর্বাংশে বা খুব বেশি ক্ষেত্রেই যে সত্য বলে প্রতীয়মান হয় না তা আমি আমার সামাজিক অবস্থান থেকেই বলতে পারি। কাজেই আমার মতে এমন একটি নোংরা আর অমানবিক প্রবাদের ব্যবহার অচিরেই বন্ধ হওয়া উচিত। থেমে যাওয়া উচিত অমানবিক একটি প্রবাদের প্রচলন।
২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:০৪
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: বুঝলাম না।
২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:০৯
তুতুষার বলেছেন: ২৯তম বিসিএস এর বাংলা লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্ন আসছে
ব্যাখ্যা করুন: 'ভাগ্যবানের মরে বউ আর অভাগার মরে গরু।'
২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:২১
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: আমার তো সেই প্রশ্ন দেখার ভাগ্য হয় নাই। আমি হইলাম আরবের দুইবছর চুক্তির কামলা। ব্যাপারটা জানা ছিলো না। আপনাকে ধন্যবাদ।
৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:২৮
হ্যামেলিন এর বাঁশিওয়ালা বলেছেন: আমার মতে এটি খুবই নোংরা এবং অমানবিক একটি প্রবাদ।
২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:৩৬
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ। এটিকে আপনার সমর্থন বলে ধরে নিলাম।
৪| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:৪৯
রাজসোহান বলেছেন: +
২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:৫৯
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন:
৫| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:২৯
শয়তান বলেছেন: ঠিক
২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:৪০
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: হুম!
৬| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:৩১
আমি এবং আঁধার বলেছেন: হ
২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ৩:৪০
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: হ
৭| ২৮ শে জুলাই, ২০১২ রাত ১২:০৩
আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: আগের দিনের লোকজনের মন মানুষিকতা খারাপ ছিল বলেই দেশের কোনো উন্নতি হয়নি। তখন মূর্খ লোকজন বেশী ছিল। দীর্ঘ দিনের পরাধীনতার ফল এইসব।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:০০
তুতুষার বলেছেন: এই ব্যাখ্যাটা ই ২৯বিসিএস এ আসছে।