নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

"The Rape of Proserpine".....

১০ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:২৪

"The Rape of Proserpine".....

রোমান পুরাণকথা অনুযায়ী প্রসেরপিনে (Proserpine) ছিলেন দেবতাদের রাজা জুপিটার (Jupiter) এবং সেরেস (Ceres) এর একমাত্র কন্যা। সেরেস ছিলেন কৃষি এবং ফসলের দেবী।

একদিন প্রসেরপিনে তাঁর সখীদের সাথে বাগানে ফুল তুলছিলেন। সেই সময় সেখান দিয়ে চারটি কালো ঘোড়া সংযোজিত রথে চড়ে যাচ্ছিলেন পাতালের দেবতা এবং নরকের রাজা প্লুটো (Pluto)। রথের গতি কমিয়ে তিনি ওদের সকলের দিকে একবার দৃষ্টি বুলিয়ে নিলেন। প্রসেরপিনে’র মনোহারিণী রূপ প্লুটো’কে আকৃষ্ট করলো এবং চুড়ান্ত কামার্ত করে তুললো। তিনি প্রসেরপিনে’কে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন।

কিন্তু রাজি হলেন না প্রসেরপিনে, অনেক চেষ্টা করেও মন গলানো গেলো না তাঁর। এদিকে প্লুটোও ক্রমশ অস্থির হয়ে উঠছিলেন, তিনি আর ধৈর্য রাখতে পারলেন না। আচমকা দুই হাতে জাপটে তুলে নিলেন প্রসেরপিনে’কে, আর অতি দ্রুত তার রথে তুলে নিয়ে পাতলে প্রবেশ করলেন।

খবর পৌছুলো সেরেস’এর কাছে। কিন্তু তিনি যখন ঘটনাস্থলে পৌছুলেন তখন দেরি হয়ে গেছে। সারা পৃথিবী তিনি তন্ন তন্ন করে খুঁজেও মেয়েকে পেলেন না। রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে তিনি পৃথিবীকে শুষ্ক করে দিলেন, সব ফসল নষ্ট করে দিলেন। পৃথিবী জুড়ে হাহাকার লেগে গেলো।

স্বর্গ থেকে সবই লক্ষ্য করছিলেন জুপিটার। প্লুটো যে তাঁরই ভাই। ঘটনা বেগতিক দেখে তিনি অবশেষে হস্তক্ষেপ করলেন এবং প্লুটোর সাথে একটা রফার মাধ্যমে সমস্যার তাত্ক্ষনিক সমাধান করলেন। স্থির হলো যে, বছরের অর্ধেক সময় প্রসেরপিনে প্লুটোর রানী হয়ে পাতালে থাকবেন আর বাকি অর্ধেক সময় তিনি তাঁর মায়ের কাছে অর্থাত্‍ সেরেস’এর কাছে থাকবেন।
সেরেস’এর অবশ্য এই প্রস্তাব মনঃপুত হলো না, কিন্তু অবস্থার গতিকে তিনি মেনে নিতে বাধ্য হলেন। বছরের যে সময়ে প্রসেরপিনে পাতালে থাকতেন, পৃথিবী সেই সময় বরফে ঢেকে থাকতো, কৃষিকাজ বন্ধ থাকতো, কোন ফসল ফলতো না। আর বসন্তের প্রারোম্ভে, যখন মেয়ে পৃথিবীতে উঠে আসতেন মায়ের কাছে, সেরেস তখন পৃথিবীকে ভরিয়ে দিতেন ফুলে ফলে ফসলে।
এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, গ্রীক পুরাণ অনুযায়ী প্রসেরপিনে হলেন পার্সিফোন (Persephone), জুপিটার হলেন জিউস (Zeus) , সেরেস হলেন দিমিতির (Demeter) এবং প্লুটো হলেন হেদেস (Hades)।

ভাস্কর্যের পেছনের কাহিনী সংক্ষেপে এমনই। ভাস্কর্যের
ইনসেটে ছবি যুক্ত শিল্পী ইতালির খ্যাতিমান ভাস্কর গিয়ান লোরেনজো বের্নিনি (১৫৯৮-১৬৮০)। তিনি এই শিল্পকর্মটি সৃষ্টি করেছিলেন ১৬২১ থেকে ১৬২২ সময়কালে এবং নাম দিয়েছেন "The Rape of Proserpine".
প্লুটো যেই মূহুর্তে প্রসেরপিনে’কে দুই হাতে জাপটে তুলে নিয়েছে তাঁকে অপহরণ করার উদ্দেশ্যে, ঠিক সেই মুহূর্তটিকেই এই ভাস্কর্যে মূর্ত করে তোলা হয়েছে। মূর্তিটি রাখা আছে ইতালির Galleria Borghese মিউজিয়ামে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য পর্যটক আসেন আর মূর্তিটির চারদিকে ঘুরে ঘুরে দেখেন, এক খণ্ড মার্বেলের মধ্যে একজন শিল্পী কি অসাধারণ দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন পুরাণ কাহিনীর একটি মুহূর্তকে। প্লুটোর শরীরের প্রতিটি পেশি, মাথার চুল, দাড়ি, মুখমণ্ডলের ক্রূরতা আর নিদারুণ অসহায় প্রসেরপিনে’র সর্বশক্তি দিয়ে প্লুটোর বেষ্টনী থেকে মুক্তি পাবার ব্যাকুলতা, তাঁর বাঁ দিকের গালের কয়েক ফোঁটা অশ্রু, এইসব কিছুই যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে ওই পাথরের মূর্তিতে।

এইসব শিল্পকে বোঝবার মতো সামান্য জ্ঞানবুদ্ধিও এই অধমের নেই। আমি শুধু মুগ্ধ হই শিল্পীর দক্ষতা দেখে। আর একটা কথা এখানে বলার- পুরুষ আর নারী, নারীর দিকে পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি, পেশিবহুল বর্ধিত হাত, নারী লুণ্ঠন, ভোগদখল, বিবাহ, সম্পত্তির উত্তরাধিকারের উদ্দেশ্যে সন্তান উতপাদন— এইসবই মানুষের সভ্যতার ইতিহাসের ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে আছে। আর তাই মানুষের সভ্যতার ইতিহাস এক অর্থে অ-সভ্যতার ইতিহাসও বটে।

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৫৫

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: সকল পুরাণেই নারীর অসহায়ত্ব প্রকাশিত হয়েছে।পুরুষকে দেখানো হয়েছে শৌর্যের প্রতীক হিসেবে। গ্রিক,রোমান,ভারতীয় সব পুরাণেই নারীরা কোমলতা, উর্বরতা, গৃহের উন্নতির প্রতিভূ। এক জিউসই জোর করে কতজন নারীকে ভোগ করেছে তার ঠিক নেই।আর ভাষ্কর্য শিল্পের ব্যাপারে আমিও একেবারেই অজ্ঞ।শুধু দেখে ভালো লাগে এই পর্যন্তই।

১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:১২

জুল ভার্ন বলেছেন: সত্য।

২| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:০২

লাতিনো বলেছেন: প্লুটো নামে জুপিটারের কোন ভাই নেই। জুপিটারের পিতা ক্রনাসের ঔরসে আর দুই ভাই হল পসাইডন এবং হেডিস। এছাড়াও ডিমিটার এবং রেয়া নামে তার দুই বোনও ছিল।

১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:১৩

জুল ভার্ন বলেছেন: আপনি আমি আমরা সবাই একই ইতিহাস পড়ে জেনেছি।

৩| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:০৩

গফুর ভাই বলেছেন: একটা ফ্যাক্ট মাথায় আসে এসব গ্রিক কাহিনি পরলে গড তার সৃষ্টি সাথে সেক্স কিভাবে করে। আর সে যদি সবার উপরে শক্তিশালি হত তাহলে অন্য দেবতার সাথে আপোষ করত নাহ।যাই হোক গল্প অনুসারে এই ভাস্কর্য দারুন লাগলো

১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:১৪

জুল ভার্ন বলেছেন: সনাতন ধর্মীয় এবং গ্রীক দেবতাদের কাজই সেক্স!

ধন্যবাদ।

৪| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:০২

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ধর্ষণও শিল্পের বিষয়!

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০৫

জুল ভার্ন বলেছেন: একদম!

৫| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্ট টি খুব মন দিয়ে পড়লাম।
একদিন সুন্দরী আফ্রোদিতি'র কথা লিখবেন। তাকে আমার ভালো লাগে।

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০৫

জুল ভার্ন বলেছেন: ওকে।

৬| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৫৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্লুটো যদি জুপিটারের ভাই হয়ে থাকে, তাহলে প্রসেরপিনে হলো প্লুটোর ভাতিজি। বাগানে দেখেই সে কামার্ত হলো কেন, সে তাকে চিনতো না?

গল্পে একটা বিষয় আমি ক্লিয়ার হতে পারি নি। প্রসেরপিনেকে প্রথমে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হলো। সে রাজি না হওয়ায় জোর করে তুলে নিয়ে গেল, পরে জুপিটারের সাথে সমঝোতা করে বিয়ে দেয়া হয়। প্রসেরপিনেকে রেইপ করা হয়েছে তার কোনো ইন্ডিকেশন নেই।

পোস্টের লাস্ট কথাটা খুব তাৎপর্যপূর্ণ- মানুষের সভ্যতার ইতিহাস এক অর্থে অসভ্যতার ইতিহাস। আসলেই তো।

সুন্দর পোস্ট।

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০৭

জুল ভার্ন বলেছেন: যদি হয় সমবয়সী, কিসের আবার মাসীপিসি!

৭| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:১৮

এস এম মামুন অর রশীদ বলেছেন: গ্রিক ও রোমান নামকরণের কারণে সম্পর্কের ব্যাপারে কিছু পাঠকের খটকা লাগছে। রোমান প্লুটো হচ্ছে গ্রিক হেডিস, জুপিটার জিউস। জোর করে তুলে নেয়া পর্বকেই রেইপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০৮

জুল ভার্ন বলেছেন: রাইট।

৮| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:২৫

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। কিছুটা জানা ছিলো বলে আরো বেশী ভালো লেগেছে।

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০৮

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৯| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:২৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: জুল ভার্ন,





পোস্টটি নজরে আসতেই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়েছিলুম ভাস্কর্য্যটির দিকে। ভাবছিলুম, একটি মানুষের ভাস্কর্য্যের নিচ্ছিদ্র শৈল্পিকতা , জীবন্ত করে তোলার কারিশমা নিয়ে বিদেশ আর আমাদের দেশের তুলনামূলক অবস্থান সম্পর্কে । দীর্ঘশ্বাস পড়েছিলো।
একটি ভাস্কর্য্য কেন যে জীবন্ত হয়ে ওঠে সেটা ভাবতে ভাবতে পোস্টে দেখি আপনিও তা তুলে ধরেছেন সুন্দর করে।

শেষের লাইনটিতে নিষ্ঠুর একটি সত্য তুলে এনেছেন।

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:১০

জুল ভার্ন বলেছেন: ঘটনা যেমন তেমন ভাষ্কর্য্যের প্রসংশা না করে উপায় নাই!

ধন্যবাদ ভাইজান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.