নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
একজন অরুন্ধতী রায় এবং
''দ্য মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস'
প্রায় ২২ বছর আগে এই নশ্বর, তুচ্ছ পাঠকের পাঠের ইতিহাস আমূল পাল্টে দিয়েছিল অরুন্ধতী রায়ের 'দ্য গড অফ স্মল থিংস' বইটি। চেতনাপ্রবাহের গনগনে আঁচ সামলে ওই লিরিক্যাল হেঁটে যাওয়া। দক্ষিণী জীবনের পানির গন্ধে মানবসম্পর্কের তীব্র ও চূড়ান্ত উন্মোচন। আর ভাষা? ‘বহে নিরন্তর' এক হিংস্র চিত্ররূপময়তার নি:শব্দ বিস্ফোরণ! আনকোরা, ললিত-স্মার্ট, শোনিতের শেষ বিন্দু দিয়ে লেখা এই মহাগ্রন্থ যেন নীল আকাঙ্খার আত্মচরিত। অরুন্ধতী রায়ের প্রথম পাঠের সেই ধাক্কাটি এ জীবনে ভোলার নয়।
বুকার প্রাইজ পেয়েছিলেন 'দ্য গড অফ স্মল থিংস' লেখক। সেই সঙ্গে রেকর্ড রয়ালটি। কিন্তু কি আশ্চর্য! অরুন্ধতী বহুপ্রসবা হলেন না! পরবর্তী ২০ বছর অরুন্ধতী যে নীরব ছিলেন, তা নয়। এই সময় সাহিত্য ছেড়ে তিনি বেছে নেন ‘প্রতিবাদ রাজনীতি’, জড়িয়ে পড়েন ভারত সরকারের নিগ্রহ নীতির বিরোধিতায়। যুক্ত হন মাওবাদীদের সঙ্গে। ভূমিহীন-দলিতদের সঙ্গে। এমনকি ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধরত কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষেও কথা বলেছেন তিনি। ভারতের পরিবেশবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একদিকে সরকার, অন্যদিকে বৃহৎ পুঁজির কোপানলে পড়েন অরুন্ধতী। ইরাক যুদ্ধ এবং বিশ্বজুড়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধেও তিনি হয়ে ওঠেন এক প্রধান সমালোচক।
ন্যায়-সমতা আর মুক্ত পৃথিবীর পক্ষে এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর অরুন্ধতী রায়ের প্রথম উপন্যাস ‘গড অফ স্মল থিংস’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। এর ২০ বছর পর প্রকাশিত হয়েছে তার দ্বিতীয় উপন্যাস 'দ্য মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস’।
অরুন্ধতীর প্রথম উপন্যাসটি ছিল একটি ব্যক্তিগত কাহিনি, একটি পরিবারের গোপন লজ্জার ভেতরের গল্প। কিন্তু দ্বিতীয় উপন্যাসে তিনি বিবেচ্য বিষয় নির্ধারণ করেছেন নাগরিক বলয় থেকে। দুটি সমান্তরাল গল্প—একদিকে দিল্লির একটি ‘হিজড়া’ মেয়ে আনজুমের আত্ম-আবিষ্কার, অন্যদিকে স্থাপত্যকলার ছাত্রী তিলোত্তমা ও পুলিশি নখর থেকে পালিয়ে বেড়ানো তার কাশ্মীরি প্রেমিকের কাহিনি। এই দুই কাহিনির নকশিকাঁথা থেকে সাম্প্রদায়িক ভারতের বিষাদগাথা নির্মাণ করেছেন অরুন্ধতী, যেখানে নারী তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত, নিম্নবর্ণের মানুষ সমাজের প্রান্তসীমায় বাস করে, মুসলমানদের দিন কাটাতে হয় অবিশ্বাসে, অসম্মানে, অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াইরত যুবককে পালিয়ে বেড়াতে হয় পুলিশ ও সামাজের রক্তচক্ষু থেকে। এই দুইয়ের মধ্যে ভেদরেখা নির্ধারণ অসম্ভব। বস্তুত, অরুন্ধতীর এই উপন্যাস বর্তমান ভারতের এক কুৎসিত মানচিত্র। এখানে রয়েছে গুজরাটের দাঙ্গা, ভূপালের গ্যাস বিস্ফোরণ, দিল্লির যন্তরমন্তরে ছাত্র বিক্ষোভ। এই ভারত প্রবল রকম সামন্ততান্ত্রিক, শ্রেণিবিভক্ত, দুর্নীতিনির্ভর ও নিবর্তনবাদী। ধর্মের নামে এখানে ক্ষমতা দখল করা যায়। ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের উচ্চকণ্ঠ অন্য সব কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে দিতে পারে। আবার এই দুঃসহ ও দুর্মর মানচিত্রের ভেতর পাতায় বাস করে ভালোবাসা, সেখানে আশ্রয় পায় প্রেম, জন্ম নেয় আশা।
এক কথায়, অপূর্ব!
অরুন্ধতী এই ভারতের বিরুদ্ধে এবং এক ভিন্ন ভারতের জন্য লড়াই করছেন গত আড়াই দশক। এ জন্য তাঁকে পুলিশি জুলুম সহ্য করতে হয়েছে, জেলের ঘানি টানতে হয়েছে। বলা যায় 'দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস' তাঁর সেই লড়াইয়েরই গল্প। অরুন্ধতী রায় বহুদিন পর ন্যারেশনে ফিরলেন, 'দ্য মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস'। অরুন্ধতীর লেখনির মতোই চরিত্রগুলোও অসাধারণ, সজীব শব্দ প্রয়োগের মধ্যদিয়ে যা উদারতা ও সহমর্মিতায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিটা শব্দই যেন জীবন্ত, যা আমাদের জাগিয়ে তুলে এক নতুন পথে দেখতে, অনুভব করতে, শুনতে ও যুক্ত হতে শেখায়।
১৯৯৭ সন থেকে ২০১৭, ‘গড অফ স্মল থিংস’ থেকে 'দ্য মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস’ -এই মহালেখিকার অনুরক্ত হয়ে রইলাম আমি। এভাবেই ক্রিয়াশীল থাকুন, প্রিয় অরুন্ধতী রায়।
১২ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের দেশে পাওয়া অনুবাদ বইগুলো দৈনিক বাংলা মোড়ের কোনো অনুবাদক অনুবাদ করেছিলো-তাই অমন বাজে হয়েছে। সেই বইগুলোর ফটোকপি ভার্সন ফেরিওয়ালারা রাস্তায় বিক্রি করতো। পরবর্তীতে ভালো অনুবাদ বাজারে এসেছে।
ধন্যবাদ।
২| ১২ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:২১
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: প্রথম বইটি পড়েছি প্রকাশের সাথে সাথেই।সিনেমা হলের ঘটনাটি একজন নারী লেখক হয়ে সাহসী প্রকাশ।অধিকার আদায়ের জন্য যে সংগ্রাম করেছেন সেটাই তাকে সমৃদ্ধ করেছে লেখিকার থেকে বেশি।দ্বিতীয় বইটি পড়া হয় নাই।বলা চলে প্রথম বইটি পড়েই দ্বিতীয় বইটি পড়ার আগ্রহ হয় নাই।
১২ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৫৯
জুল ভার্ন বলেছেন: একমত।
৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:০১
রাজীব নুর বলেছেন: দ্য গড অফ স্মল থিংস টা কষ্ট করে পড়েছি।
১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:০২
জুল ভার্ন বলেছেন: বেশীরভাগ অনুবাদই অমন খাপছাড়া।
৪| ১২ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:২৭
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: দ্য গড অফ স্মল থিংস পড়া শুরু করে শেষ করিনি
১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:০৩
জুল ভার্ন বলেছেন: এতোই মজা পেয়েছিলেন!
৫| ১২ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:২৫
নতুন বলেছেন: উনার লেখা নতুন একটা স্টাইল পেয়েছি। তার ব্যক্তিত্ব, আত্নবিশ্বাস তার জ্ঞানের প্রকাশ,।
আমাদের নারীরা তাকে অনুসরন করেনা করে সিনেমার নায়িকাদের
১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:০৩
জুল ভার্ন বলেছেন: কঠিন সত্য কথা বলেছেন।
৬| ১২ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৩৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: উনি আমার প্রিয় লেখক
১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:০৩
জুল ভার্ন বলেছেন: আমার অন্যতম প্রিয়।
৭| ১২ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০৪
সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: আপনি কার অনুবাদ পড়েছেন একটু বললে উপকৃত হতাম। দ্য গড অফ স্মল থিংস এর একটা অনুবাদ কিনেছিলাম, পড়তে পারিনি। এত অখাদ্য, একটা বাক্যের সাথে আরেকটা বাক্যের কোন সামঞ্জস্য'ই নেই।
৮| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:০৬
জুল ভার্ন বলেছেন: আমি গোটাকয়েক অনুবাদ কিনে ধরা খেয়েছি। তবে আবীর হাসানের অনুবাদ ভালো লেগেছে। যদিও আমি ইংরেজী ভার্সন পড়েই বেশী তৃপ্ত।
৯| ২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৩৩
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: অরুদ্ধতী রয় এর লেখা 'দ্য মিনিস্ট্রি অফ আটমোস্ট হ্যাপিনেস' একবার নয় বার বার পড়ার মতো একটা বই।
অনজুমের 'পুরুষের শরীরে নারীর হৃদয় নিয়ে জন্ম নেয়া' কিংবা দুই কবরের মধ্যবর্তী স্থানে থাকার জায়গা বেছে নেয়া।
তিলোত্তমা এবং মুসা (কাশ্মীরি প্রেমিক) এর প্রেম, লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তিলোত্তমার উপলক্ষ্যমূলক বিবাহ। কাশ্মীরে মুসলমানদের দমনের নামে নিপীড়ন...
প্রতিটি বিষয় এতো চমৎকার ভাবে তুলে ধরা হয়েছে!
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৫২
জুল ভার্ন বলেছেন: আপনার মন্তব্যের সাথে একমত।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:১০
সত্যপথিক শাইয়্যান বলেছেন:
দ্য গড অফ স্মল থিংস-এর দুটি অনুবাদই অসম্ভব রকমের বাজে হয়েছিলো। তাই, পড়তে পড়তে মনোযোগ ধরে রাখতে পারিনি। শেষটাও হয়নি।
তবে, অরুন্ধতী রায়কে আমার প্রতিবাদী লেখিকা হিসেবেই মনে হয়।
গড অব স্মল থিংক্সের এই লাইন আমার খুব ভালো লেগেছে- ''তুমি যদি স্বপ্নের ভিতর সুখী হও, সেটা কি ধর্তব্যের মাঝে আনা যায়?''
আরেকটি লাইন মনে রাখার মতো- ''পরিবর্তন হচ্ছে এক জিনিস, আর, তা স্বীকার করে নেওয়া অন্য কিছু।''
যদিও এই লাইনের অর্থ বুঝতে পারিনি- ''তার শরীরের অস্তিত্ব কেবল সেখানেই, যেখানে সে তাকে স্পর্শ করেছিল। আর, বাকীটা ছিলো ধোঁয়াশায় ঢাকা। [The way her body existed only where he touched her. The rest of her was smoke.]
এই তিনটি লাইন আমার অনুবাদকৃত।