নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নজিবুদ্দির স্বপ্ন ভংগ...

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৪৫

নজিবুদ্দির স্বপ্ন ভংগ...
(লক ডাউনের চার নম্বর গল্প

লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে আনন্দ উচ্ছ্বাস, ভ্রমণ এবং জীবন জীবিকা ঝিমিয়ে পড়েছে। এখন আর প্রতিদিন গুলশান - মতিঝিল যাওয়া আসার তাড়া নেই। দুবাই, সিংগাপুর ব্যাংকক, মালেশিয়া গিয়ে একটু চেঞ্জ হওয়ার সুযোগ নেই। সারাক্ষন বাড়িতে কাঁহাতক বসে থাকা যায়!

মাঝেমধ্যে 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' করছে- তাতে সৈয়দ মোহাম্মদ নজীব উদ দৌলা আরো বিরক্ত! এই ৫০ বছর বয়সে এসব ভাল লাগে না। কিন্তু বিকল্প কিছুই করার নেই- লক ডাউন সবকিছু লক করে দিয়েছে। কি আর করা- সকাল থেকে রাত পর্যন্ত 'সবকিছু খায়', নেটফ্লিক্সে মুভি দেখে। বহু বছর পর বাড়িতে দুপুরে ভাত ঘুমে গা এলিয়ে দেয়। ঘুম আসেনা, ঘুমের ওষুধ খায়। দিনেও খায়, রাতেও খায়। যখন তখন বাড়িতে মিনি বারে বিলেতি খায়...নেশার লাটিম ঝিম ধরে...

সৈয়দ মোহাম্মদ নজীব উদ দৌলা দুপুরের ভাত খেয়ে শুয়ে আছে। ঘুম আসছে না....। স্বাস্থ্য সচেতন স্ত্রী সৈয়দা উলফত আরা বেগম ঝংকারী আর মেয়ে কিটি দুপুরে সামান্য স্যালাড আর ফ্রুটস খায়। ওরা এখন খাচ্ছে আর গল্প করছে...সৈয়দ মোহাম্মদ নজীব উদ দৌলা অনেক দিন পর নিজের অতীতে ফিরে গিয়েছে...যে অতীত শুধুই দারিদ্রের....গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার অজপাড়াগাঁর এইচএসসি পাস নজিবুদ্দি গ্রামে ছোটখাটো ব্যাবসা করার চেষ্টা করেও সামান্য পুঁজির অভাবে সুবিধা করতে নাপেরে ঢাকায় এসে বেঁচে থাকার জন্য কী না করেছে! রাজনৈতিক দলের মিছিলে মিটিংয়ে যোগ দিয়ে দৈনিক একশো টাকার মালিক হওয়া। 'বড়ো ভাই'দের ফুটফরমাশ খেটে নেতাদের কাছে যাওয়া...নেতার সুদৃষ্টিতে নিজেই কুড়িল বস্তীর লিডার বনে যাওয়ার আগ পর্যন্ত অনেক কষ্ট করলেও ২০০৯ সনের পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি....দলীয় শ্রমিক সংগঠনের একটা পদ পদবীর জোড়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে 'পর্দা বালিশ' সাপ্লাইয়ের কাজ করে সিটি করপোরেশনের গোটা দশেক দোকানের মালিক, তারপর পেট্রোল পাম্প, কুইক রেন্টাল পাওয়ার স্টেশনের মালিক। গুলশানে নিজ বাড়ির মালিক সৈয়দ মোহাম্মদ নজীব উদ দৌলার কখন চোখ লেগে আসছে...

'ঘুমিয়ে পড়লে?' স্ত্রী সৈয়দা উলফত আরা বেগম ঝংকারী স্বামীকে ঠেলছে...

'না..এই..হুমমম..' - সৈয়দ মোহাম্মদ নজীব উদ দৌলা অন্য জগৎ থেকে বলে।
'তুমি একদম বুড়িয়ে গেছ...দুর..'- স্ত্রী মুখ ঘুরিয়ে শোয়।
সৈয়দ নজীব উদ দৌলা তন্দ্রালু চোখে মাথা তোলে..
"কি হল?"

'তোমার মাথা..ইচ্ছে ফিচ্ছে নেই?' স্ত্রী উলফত আরা বেগম ঝংকারীর ঝংকার।
"উম...কিটি কি করছে?"

'জানি না। মদই যত নষ্টের গোড়া! এতদিন পর একটু বাড়িতে থাকছো তা রাতেও ঘুমাচ্ছ, দুপুরেও...তুমি ক্যামন পুরুষ মানুষ! কিটি ওর ঘরে কীসব পচাপচা মুভি দেখছে' - ঝংকারী গজর গজর করে অন্য পাশ ফিরে শোয়....
নাঃ আজ..ঝংকারী..সৈয়দ নজীব উদ দৌলা মাথা উঁচুকরে নিমীলিত চোখে ঝংকারীকে দেখে...আস্তে আস্তে ঝংকারীতে হারিয়ে যায়...........
'তুমি এখনও তিরিশ বছরের আছ!

তৃপ্ত ঝংকারী হাঁপাতে হাঁপাতে বলে- এই, বাচ্চা হয়ে যাবে না তো?'

ক্লান্ত সৈয়দ মোহাম্মদ নজীব উদ দৌলার চোখ জুড়ে ঘুম নামছে..ঘুম ঘুম চোখে বলে, "মাথা খারাপ নাকি! তোমাকে না ছয়মাস আগে ব্যাংককে Hysterectomy করিয়ে আনলাম। কতবার বলেছি তোমার আর বাচ্চা হবে না.."
'মানে?' সৈয়দা উলফত আরা বেগম ঝংকারী ছিটকে লাফিয়ে ওঠে!' What nonsense! আমার কবে হিস্টেরেক্টমি করালে?'
সৈয়দ মোহাম্মদ নজীব উদ দৌলার ঘুম ছিটকে যায়- সৈয়দা উলফত আরা বেগম ঝংকারী তীব্র দৃষ্টির সামনে ঘামতে থাকে কাশিয়ানী থানার আগেকার সেই নজিবুদ্দি...

সৈয়দ মোহাম্মদ নজীব উদ দৌলা এই মুহূর্তে শুধুই নজিবুদ্দি হয়ে ঘামছে...নজিবুদ্দির মুখ, মুখের ভাষা লক ডাউন হয়ে গেছে!


(এক বছর আগে ফেসবুকে লিখেছিলাম)

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:৩১

চাঁদগাজী বলেছেন:



ফেইসবুকের লোকজন পছন্দ করেছিলো? আমার খুব একটা পছন্দ হয়নি।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩৮

জুল ভার্ন বলেছেন: কে কোথায় পছন্দ করবে কিম্বা করবেনা তা ভেবে লিখিনা। করোনা কালে ছয়টা গল্প লিখেছিলাম- তারই একটা এই গল্প।

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৯

কামাল১৮ বলেছেন: শেষের দিকটা ভালো লাগেনি।শুরুটা আমাদের নব্য বড় লোকদের অনেকের জীবন কাহিনী।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৪০

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪০

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: একবছর আগে লেখা চেনা চেনা লাগছে।বেশ রম্য লাগলো। নজীব উদ দৌলা নজিবুদ্দি হয়ে ঘামছে আর আমরা পাঠকেরা মজা পেলাম তার মুখ লক হয়ে গেছে দেখে।বৌ এর কাছে ধরা খেয়েছে।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৪২

জুল ভার্ন বলেছেন: "যেখানে শোকের আয়ু তিন মাস, ভালো লাগার আয়ু নয় মাস" সেখানে এক বছর আগে পড়েছিলেন-এখনো মনে আছে-এটা কিন্তু কম বড়ো পাওয়া নয়!

৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৪৩

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.