নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।
অবিদ্যা...
একদা বাদশা আকবর তাঁর সভাসদ বীরবল কে প্রশ্ন করলেন, "বীরবল, অবিদ্যা কি?"
বীরবলঃ "জাহাঁপনা, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য আমাকে ৪ দিন ছুটি দিতে হবে, ফিরে এসে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেব!"
বাদশা আকবর তাঁকে ৪ দিন ছুটি দিলেন।
বীরবল এক মূচির কাছে গিয়ে বললেন, "ভাই একজোড়া জুতো বানিয়ে দাও।"
মূচি বলল, "ঠিক আছে হুজুর, মাপটা দিন।"
বীরবল বললেন, "ওসব মাপ টাপ ছাড়, দেড় হাত লম্বা আর একহাত চওড়া জুতো বানাও, আর ওতে কিছু হীরে জহরত জুড়ে দাও। সোনা আর রুপোর সুতো দিয়ে সেলাই করো, টাকার চিন্তা করো না, যা দাম হবে তাই পাবে, দরদাম করব না।"
মূচী বলল, "ঠিক আছে, কিছু টাকা আগাম দিন, আর ৩ দিন বাদে এসে নিয়ে যাবেন।"
তৃতীয় দিন পুরো টাকা দেওয়ার আগে বীরবল মূচিকে দিয়ে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিলেন যে ও এই জুতোর গল্প কারও কাছে কখনও করবে না।
তারপর বীরবল একপাটি জুতো নিজের কাছে রেখে অন্য পাটিটা মন্দিরের সামনে রেখে দিলেন। ভোরবেলা মন্দিরের পুরহিত এসে ঐ একপাটি জুতো আবিষ্কার করলেন। পুরহিত চিন্তা করলেন, এত বড় জুতো কখনও কোন মানুষের পায়ের হতে পারে না। আর যা হীরে জহরত লাগানো তাতে নিশ্চয়ই ভগবান রাত্রে মন্দিরে এসেছিলেন এবং ভুল করে এই একপাটি জুতো ফেলে গেছেন।
পুরহিত প্রথমে জুতোর পাটিটা মাথায় ঠেকালেন, তারপর বার বার জুতোটাকে চুমু খেলেন। পরে মন্দিরে আরও অনেক লোক এলে পুরহিত সকলকে ভগবানের জুতোর পাটি পাওয়ার গল্প বললেন। সকলেই বলল, নিশ্চয়ই এই জুতো ভগবানের হবে, মানুষের পায়ে এত বড় জুতো হতেই পারে না, আর মন্দিরের বাইরে যখন পাওয়া গেল তখন ভুত বা পেত্নীরও নয়। সবাই মিলে জুতোর পাটি বারবার মাথায় ঠেকাতে আর চুমু খেতে লাগল।
শেষ পর্যন্ত জুতোর কথা বাদশার কানে গেল, আকবরের আদেশে জুতো শাহী দরবারে পেশ হল।
বাদশাও স্বীকার করলেন, "এ জুতো ভগবানেরই হবে।"
তিনিও বারবার মাথায় ঠেকিয়ে আর চুমু খেয়ে বললেন, "এই জুতো মন্দিরের পবিত্র স্থানে রাখো- যাতে সবাই এসে ভক্তিভরে মাথায় ঠেকিয়ে চুমু খেয়ে পূণ্য অর্জন করতে পারে।"
পরের দিন বীরবলের ছুটি শেষ হল।
বীরবল এসে বাদশা কে সালাম ঠুকে মাথা নিচু করে বসে রইলেন।
বাদশা প্রশ্ন করলেন, "কি হল রাজা বীরবল, তুমি এমন বিরসবদন কেন?"
বীরবলঃ "জাহাঁপনা, আমার বাড়ি থেকে একপাটি জুতো চুরি গেছে।"
"একপাটি জুতো?" বাদশা প্রশ্ন করলেন।
"হ্যাঁ, আমার প্রপিতামহের একপাটি জুতো চুরি গেছে, চোর একপাটি ফেলে গেছে।"
"ঐ একপাটি জুতো কি তোমার কাছে আছে?" বাদশা র প্রশ্ন।
"হ্যাঁ, আমার কাছে আছে," বীরবল অন্য পাটিটা বের করে দেখলেন।
দেখেই তো বাদশার মাথা ঘুরতে আরম্ভ করল, নিজের কপালে করাঘাত করে হুকুম করলেন মন্দির থেকে জুতোর পাটি নিয়ে আসতে।
তারপর বললেন, "আমরাতো এটাকে ভগবানের জুতো মনে করে কত মাথা ঠেকিয়ে, চুমু খেয়ে, চেটে চেটে চকচকে করে ফেলেছি!"
বীরবল বললেন, "জাহাঁপনা, একেই বলে অবিদ্যা, কোন কিছু সম্পর্কে একেবারে কিছুই না জেনে ভেড়ার পালের মত সবাই একই দিকে চলতে থাকা!"
(গল্পের সার অংশ সংগৃহীত, লিখেছি আমি আমার মতো করে)
১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:৩২
জুল ভার্ন বলেছেন: খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
ধন্যবাদ।
২| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:২০
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: হাহাাহা এসব গল্প দারুন লাগে।
১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:৩৩
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:২৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: চমৎকার হয়েছে।
আগে কোথাও পড়ি নি।
তবে বাদশা আকবর কেনো ঐটিকে ভগবানের জুতো ভাববেন? তার মন্দিরেইবা কেনো রাখবেন? তারতো মন্দিরই থাকার কথা না। অবশ্য তার এক স্ত্রীর মন্দির ছিলো, সেখানে রাখতে পারে।
১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:৩৪
জুল ভার্ন বলেছেন: আকবরের সময় মন্দির প্রীতি বেশী ছিলো...
৪| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:০০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: +++++
১১ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১:২৮
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ২:৪৯
ইসিয়াক বলেছেন: আসলে নিজের বিবেক বুদ্ধিতে না চলে অন্ধভক্তি বা গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসালে এমন হয়। গল্প ভালো লাগলো। শিক্ষনীয় ও বটে।
শুভকামনা রইল।
১২ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২১
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৬| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১১:৩৮
অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের দেশে এই রকম অবিদ্যার উদাহরন ভরি ভরি ।
১২ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২২
জুল ভার্ন বলেছেন: আমাদের জীবন চারিতাই অবিদ্যা নির্ভর।
৭| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:৪৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন:
সুন্দর ও সুপাঠ্য । মুগ্ধ হলাম লেখায়
১২ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:২২
জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
৮| ১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: অবিদ্যা সমাজের জন্য ক্ষতিকর।
১২ ই অক্টোবর, ২০২১ দুপুর ১২:৫৩
জুল ভার্ন বলেছেন: বর্তমানে অবিদ্যার উপর নির্ভর করে সবাজ রাস্ট্র পরিচালিত হচ্ছে।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১১:১৫
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: মূল কথা হলো , অনুকরণ ভালো তবে তবে না জেনে-না বুঝে অন্ধ অনুসরন ভালো নয়।
গল্প ভালো হয়েছে।এ রকম কত শত জুতা চুম্মা-চাটি করি আমার না জেনে-বুঝে তার হিসাব কে রাখে।