নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পেশা যখন- হাসানো......

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:২৫

পেশা যখন- হাসানো......

কার্টুন ছবি দেখা আমার অন্যতম নেশা নয়, তবে মজা!
এসবের মধ্যে গোপাল ভাঁড়ের কার্টুন ছবি বেশ পছন্দের।
আমার ধারণা, কোনো না কোনো ভাবে গোপাল ভাঁড়ের নাম শোনেননি, এমন শিক্ষিত বাঙালী ভূ-ভারতে নাই। বেটে, গোলগাল নাদুস নুদুস চেহারা- দেখলেই হাসি পায়৷পেশায় কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভা মনোরন্জক ৷অসম্ভব ধূর্ত৷এমন সব কান্ড কারখানা করবে যে মহারাজ মহারানী থেকে সভাগৃহের তামাম মানুষের হাসতে হাসতে পেটের খিল ধরে যাবে ৷কাউকে রেয়াত করবে না ৷ গোপালের জনপ্রিয়তায় প্রধানমন্ত্রীর প্রচন্ড রাগ ৷তাঁর সব চেষ্টা গোপালকে হেয় করার৷ কিন্তু গোপালের সাথে বুদ্ধিতে পেরে ওঠেনা৷এমন কি মনুষ্য সমাজের চতুর শিরমণি রাজ পরামানিক, একমাত্র যে মানুষ রাজার কান মলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে, সেও গোপালের চতুরতায় হিংসা করে, সবসময় চেষ্টা করে টেক্কা দেওয়ার ৷কিন্তু বিধি বাম, গোপালের সাথে বুদ্ধিতে পেরে ওঠেনা সেও৷বার বার অপদস্থ হতে হয়৷
গোপাল কাউকে ভয় পায় না৷এমন কি মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকেও না ৷ প্রয়োজনে উচিত শিক্ষা দিয়ে দেয় ৷ গোপালের পশ্চাৎদেশের ফোড়া কাটার গল্পটা নিশ্চই মনে আছে৷যদিও গল্পটা সকলের জানা, তবুও উদাহরন হিসেবে আপনাদের আর একবার শোনাই৷

গল্পটা নীতিশিক্ষামূলকঃ-
মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের জমজমাট সভাগৃহ ৷ রাজা মন্ত্রী সেনাপতি সভাকবি হিসেবরক্ষক ইত্যাদি সকলে মিলে হাসি ঠাট্টা চলছে ৷ হঠাৎ মহারাজ বললেন-
"আচ্ছা বল দেখি, মানুষ কিভাবে সবথেকে সুখী হয়"?
সবাই এক এক রকম বলছে- কেউ খাওয়া, কেউবা ঘুম, আবার কেউ সহবাস, যুদ্ধ জয়, কণ্যাদায় মুক্ত হওয়া ইত্যাদি নানা উপায় বাতলাচ্ছে ৷ গোপাল একেবারে চুপ৷ স্পিকটি নট৷

"কিহে গোপাল, তোমার কি হল? একেবারে চুপচাপ কেন?' .... মহারাজের গোপালকে খোঁচা৷
"না না মহারাজ ৷ এনাদের সাথে আমার মতের মিল হবে না ৷ তাছাড়া আপনার পছন্দ হবেনা৷ অহেতুক রাগ করবেন৷ তার থেকে চুপ থাকা ভাল" .... গোপাল বললো৷

"তুমি বলো৷ কিছু মনে করবো না৷ রাগও করবো না" .... মাহারাজ অভয় দিলেন৷

"অভয় যখন দিলেন তাহলে বলি৷ প্রচন্ড বেগ এলে, ঝেড়ে পরিষ্কার হওয়ার পরে মানুষ যে সুখ পায়, আর কোন কিছুই এর সমতূল্য নয়"..... গোপাল বলেই ফেল্ল৷

শুনে রাজা গেল প্রচন্ড রেগে৷ কিন্তু কি আর করা ৷ কথা দিয়েছে৷ শাস্তি দেওয়া যাবে না৷ তাই গোপালকে দিন সাতেকের জন্য সভায় আসতে বারণ করে কোনমতে রাগ সামলে নিল৷

মাস খানেক পরে রাজার শিকারে যাবে৷ নৌকো করে বেশ খানিকটা গিয়ে তারপর জঙ্গল৷ অন্ধকারে ভোর চারটেয় বেরোতে হবে৷ জন্তু জানোয়ারের আনাগোনা ওই সময় বেশি৷ সাথে বেশি জন নেওয়া যাবে না৷ মাঝি, সেনাপতি আর পথ প্রদর্শক হিসেবে গোপাল৷ রাজার অত ভোরে ওঠার অভ্যেস নেই৷ কোনরকমে প্রাতকর্ম না সেরে তড়িঘড়ি বেড়িয়ে পরলো৷ নৌকোয় চলতে চলতে রাজার পেল পটি৷ নৌকো থামাতে বললেও গোপাল কিছুতেই থামাতে দেবে না৷ এখানে বাঘ, ওখানে সাপ, ডাকাত ইত্যাদি কতো বাহানায়৷ শেষে থাকতে না পেরে রাজামশাই মাঝিকে গর্দান নিয়ে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে নদীর তীরে নৌকো থামিয়ে দৌড়ে গেলেন জঙ্গলের ভেতর৷ খানিক পরে রাজা হাসিমুখে জঙ্গল থেকে ফিরে এলে তখন মুখে এক পরম তৃপ্তি ..... ওহঃ গোপাল, কি আরাম৷ গোপাল ঠিক এই মুহুর্তটির অপেক্ষায় ছিল৷ মিটিমিটি হেসে রাজাকে জিজ্ঞেশ করলো, "কি মহারাজ, আমি সেদিন কিছু ভুল বলেছিলাম?"

বেশ বুঝতে পারছি, ইতিমধ্যেই আপনারা সব্বাই রুমাল বা আঁচলের খুট বা ওড়না দিয়ে নাক চাপা দিয়ে ফেলেছেন৷ ঠিক যেমন 'চুপকে চুপকে' সিনেমায় পরিমল ত্রিপাঠী সুলেখার জিজ্জাজীকে একটা প্রশ্ন করতেই সুলেখার দিদি আঁচলের খুট নাকে চাপা দিয়েছিল৷
প্রশ্নটা কিন্তু অতি সাধারন৷ ইংরাজি বানান শিক্ষা- TO টু DO ডু হলে GO 'গু' না হয়ে 'গো' উচ্চারন হয় কেন?
নাম শুনলেই গা ঘিনঘিন করে!

এই নিয়ে একটা মজার গল্প শুনেছিলাম ৷ তখন সময় কবিগুরুকে নিয়ে কাগজে খুব লেখালেখি চলছে৷ পাতার পর পাতা, কলমের পর কলম৷ খালি কবিগুরু কবিগুরু ৷ তখন DTP ছিল না ৷ প্রেসগুলোতে বাজার থেকে লেটার কিনে সেগুলো দিয়ে ম্যাটার কম্পোজ করে মেশিনে ছাপানো হোত৷ আনন্দবাজার কাগজে গুরুদেবকে নিয়ে ম্যাটার কম্পোজ করতে গিয়ে এতবার গুরুদেব লিখতে হয়েছে যে গুরুদেবের বাহুল্যের ঠেলায় প্রথম অক্ষর 'গু' লেটার শেষ ৷ ম্যাটার রেডি করার জন্য অনেক 'গু' দরকার৷ অগত্যা হুকুম, এই পচা, চট করে বাজারে গিয়ে এক সের 'গু' কিনে নিয়ে আয় তো৷

মূল কথায় আসি- পেশা দিয়ে শুরু ৷ গোপালের পেশা- হাসানো৷ পেশা হিসেবে সম্মানজনক৷ কিন্তু একবার ভাবুন তো, আলোচ্য বস্তু মাথায় বওয়া যাদের পেশা ছিল তাদের? পেটের জন্য এই পেশাকে আপন করে নিতে হয়েছে ৷ অনেকের নিশ্চই এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা আছে৷ বিশেষ করে গ্রামে গন্জে যারা বড় হয়েছেন ৷ শহর লাগোয়া বসতি গুলোতেও সেনিটারি পায়খানা ছিল না৷ চৌহদ্দির শেষ প্রান্তে এই বিশেষ উঁচু স্থাপনার অবস্থান৷ খাটা পায়খানা ৷ সকালে বাড়ীর পেছন দিয়ে প্রবেশ করে সারা দিনের সন্চিত ময়লা নিজের পাত্রে ঢেলে মাথায় নিয়ে প্রস্থান৷ ছোটবেলায় এদের দেখে ঘেন্না করতো৷ বামুন পাড়া, কায়েত পাড়া, ধোপা পাড়া, নাপিত পাড়া, মালাকার পাড়া, জেলে পাড়া, কলু পাড়া, ঢালি পাড়ার সঙ্গে ধাঙড় পাড়া ৷ এদের বসবাস ধাঙড় পাড়ায়৷ কর্পোরেশন ধাঙড় বস্তি৷ তখন বোঝার বয়েস হয় নি৷ এখন বুঝি৷ সমাজ এদের কাছে কতো ঋণী!

এই প্রসঙ্গে লিখবো কিনা ভাবছিলাম৷ কিন্তু এই বিষয় নিয়ে একটা পূর্ণ দৈর্ঘের সিনেমাও হয়েছে- "টয়লেট এক প্রেম কথা" নামে, সেই সিনেমাটা নতুন করে লিখলাম গোপাল ভাঁড় আর রাজা মশাইয়ের ঘটনা।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৪৩

আলমগীর সরকার লিটন বলেছেন: সুন্দর লেখেছেন দাদা
ভাল থাকবেন-----

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৪৪

জুল ভার্ন বলেছেন: ধন্যবাদ সরকার।

২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:০১

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


গোপাল ভাড়ের বুদ্ধিমত্তা এখনকার মানুষের তুলনায় কম ছিলো।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:১০

জুল ভার্ন বলেছেন: আমরা যাদেরকে ভাঁড় বলে উপহাস করি- সেই ভাঁড়দের বুদ্ধি সব সময়ই বেশী! খেয়াল করে দেখুন- গোপাল ভাঁড়, বীরবল, নাসির উদ্দীন হোজ্জা এমনকি আমাদের দেশের যাত্রা দলের খর্বাকৃতির মানুষগুলো মানুষ হাসানোর ছলে কী বাস্তবতার প্রেক্ষিতে সত্যকথা বলে ফেলে!

৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৪৫

মোঃআনারুল ইসলাম বলেছেন: হাস্যরসের মাধ্যমে খুব সুন্দর একটা ম্যাসেজ দাদা ভালো লাগলো। ❣️

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৫০

জুল ভার্ন বলেছেন: দুঃখ কষ্ট ভুলে থাকতে এর বিকল্প নাই। ধন্যবাদ ভাই।

৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:০৪

রানার ব্লগ বলেছেন: পেশা কে পেশা হিসেবেই দেখুন তার আত্মপরিচয় নয় !!!

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:২৩

জুল ভার্ন বলেছেন: দ্বিমত নাই।

৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: বাঙ্গালীরা একটা ভুল করে। তাঁরা মনে করে গোপাল একজন ভাড়। গোপাল মোটেই কোনো ভাড় নন। তিনি একজন মানবিক মানুষ। অথচ সমাজের লোকজন তাকে জোর করে ভাড় বানাবেই।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩

জুল ভার্ন বলেছেন: গোপাল নামের সাথে ভাঁড় যোগ পাব্লিক করেনি। ততকালীন সময়ে রাজদরবারে রাজ কবি, রাজ হেকিম, রাজ শিক্ষক, রাজ বিদুষক পদের মতো রাজ ভাঁড়ও সম্মানিত পদমর্যাদা সম্পন্ন ছিলেন।

৬| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:১১

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন:
- মিরাক্কেল দেখেছেন?

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩

জুল ভার্ন বলেছেন: মাঝেমধ্যে দেখেছি।

৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৩

শেরজা তপন বলেছেন: আমাদের এলাকায় মেথরেরা বাস করত রেলের পুরনো মাল গাড়িতে যুগের পর যুগ ধরে। সন্ধ্যেয় দেশী মদ খেয়ে বেহড মাতাল হয়ে চিৎকার করে এলাকা মাথায় করত। ওদের কেউ ঘাটাতে সাহস করত না- কেউ আজেবাজে কথা বললে তার বাড়ির সামনে বিষ্ঠা-ভর্তি মালসা উপুর করে ফেলে আসত।

০৫ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

জুল ভার্ন বলেছেন: আমার মনে আছে, ৬০/৭০ দশকে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউকে শায়েস্তা করতে মেথরদের দিয়ে দরজার সামনে এক বালতি গু ঢেলে রাখা হতো- যা ছিলো অনেক অপমানের। আবার মেথর এই অপকর্ম করতে দুই পক্ষ থেকেই অনেক টাকা কামাই করতো- যা তাদের ২/১ মাসের উপার্জনের চাইতেও বেশী!

৮| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: গোপাল নামের সাথে ভাঁড় যোগ পাব্লিক করেনি। ততকালীন সময়ে রাজদরবারে রাজ কবি, রাজ হেকিম, রাজ শিক্ষক, রাজ বিদুষক পদের মতো রাজ ভাঁড়ও সম্মানিত পদমর্যাদা সম্পন্ন ছিলেন।

গোপাল দরিদ্র মানুষ ছিলেন। তার বাবা মারা গেলে মন্দিরের লোকজন তার মাকে জোর করে চিতায় ফেলে দিয়ে সহমরন দেয়। এই ঘটনা গোপালকে খুব কষ্ট দেয়। অভাবের কারনে, পেটের ক্ষুধায় গোপাল রাজাদের দেওয়া ভাড় শব্দটা মেনে নেয়। মূলত গোপাল ভাড় নয়। একজন হৃদয়বান ও মানবিক মানুষ।

০৬ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০১

জুল ভার্ন বলেছেন: হ্যা এই ঘটনা পড়েছি। ধন্যবাদ রাজীব।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.