নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এপিটাফ \n\nএক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

জুল ভার্ন

এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস... খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে... কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়। আমার অদক্ষ কলমে... যদি পারো ভালোবেসো তাকে... ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে, যে অকারণে লিখেছিল মানব শ্রাবণের ধারা.... অঝোর শ্রাবণে।।

জুল ভার্ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পলিগ্রাফ টেস্ট বা মিথ্যা সনাক্তকরণ (‘লাই ডিটেক্টর’)......

০৩ রা মার্চ, ২০২৩ সকাল ৮:৪৩

পলিগ্রাফ টেস্ট বা মিথ্যা সনাক্তকরণ (‘লাই ডিটেক্টর’

পরীক্ষা। কিন্তু এই পরীক্ষা কতটাই বা
নির্ভুল হয়? কীভাবে তা কাজ করে?
সংক্ষেপে বলা যায়, পলিগ্রাফ টেস্টে বিভিন্ন ধরনের শরীরিক প্রতিক্রিয়া ধারণ করা হয় যার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয় যে একজন ব্যক্তি সত্য কথা বলছে কিনা। সাধারণত রক্তচাপ কেমন, শ্বাস-প্রশ্বাসের পরিবর্তন এবং হাতের তালু ঘামছে কিনা, নাড়ির গতি- এগুলোই তার মাপকাঠি হিসেবে কাজ করে।

পলিগ্রাফ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন ফরেনসিক মনোবিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ড. সোফি ভান ডের জি। তিনি বলেন, “পলিগ্রাফ অন্য যেকোনো মিথ্যা শনাক্তকরণ কৌশলের মতই যা মিথ্যা বলার পরোক্ষ প্রভাব পরিমাপ করে।”
তিনি আরো বলেন, “মিথ্যা বলার ফলে মানসিক চাপ বেড়ে যেতে পারে …এবং মিথ্যা শনাক্তকরণ পরীক্ষার মাধ্যমে আচরণগত এবং মানসিক পরিবর্তনগুলো দেখা যায় যা মানসিক স্ট্রেস-এর সময় হয়ে থাকে।”
সুতরাং পলিগ্রাফ টেস্ট সরাসরি প্রতারণা এবং মিথ্যাকে পরিমাপ করে না, কিন্তু একজন ব্যক্তি কথা বলার সময় সাক্ষাতকার-গ্রহীতাকে প্রতারিত করছে কি-না তা দেখতে সক্ষম। এই তথ্য পরে অন্যান্য সবকিছুর সাথে ব্যবহার করা হয় এবং ওই ব্যক্তি সত্য বলছে কিনা সেটা নির্ণয় করা হয়।

কীভাবে কাজটি করা হয়?
বিশ্বের নানা প্রান্তে পলিগ্রাফ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। জাপান, রাশিয়া এবং চীনে তা প্রচলিত। সবখানেই এর প্রযুক্তি এবং প্রক্রিয়া এখনও একই রয়ে গেছে।
অধ্যাপক ডন গ্রুবিন, যিনি ব্রিটেনে পলিগ্রাফ পরীক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, তিনি বলেন, ”এখানে একটি অনুশীলন টেস্টও হয় যেখানে প্রচুর প্রশ্ন করা হয়।” ওই ব্যক্তিকে সহজ স্বাভাবিক অনুভূতি দেয়াও এর উদ্দেশ্য যাতে সে স্বস্তির পরিবেশ পায় এবং কিভাবে প্রক্রিয়াটি কাজ করতে পারে সেটিও সে বুঝতে পারে। সব সরঞ্জাম এক সাথে যুক্ত করার আগে সব প্রশ্নের ব্যাপারেও তার সম্মতি নেয়া হয়।
তিনি বলেন, “তাকে কোনও আচমকা প্রশ্ন করা হয় না। কারণ সেটা নিজে একটা ট্রিগার জাগিয়ে তুলবে। অর্থাৎ আপনাকে কী প্রশ্ন করা হতে যাচ্ছে সে সম্পর্কে আপনি অবগত।”

সরঞ্জামগুলো যুক্ত করার পর এর সাথে রক্তচাপ ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য একটি মনিটর, আঙ্গুল ও হাতের তালুতে তড়িৎ প্রবাহের পরিবর্তন লক্ষ্য করার জন্যে দুটি নল বক্ষ এবং পাকস্থলীর আশেপাশে যুক্ত করা হয়। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে এসব সরঞ্জামের সাথে তাকে যুক্ত করা হবে কিন্তু কক্ষটির ভেতরে তাকে থাকতে হবে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা।
প্রশ্নকর্তা বেশকিছু নির্দিষ্ট প্রশ্ন করবেন এবং তারপরে মূল প্রশ্নগুলোর প্রতিক্রিয়া তুলনা করে দেখবেন। পরীক্ষার পরে আরেকটি সাক্ষাৎকার দিয়ে যাচাই কাজ শেষ হয় যেখানে ওই ব্যক্তিটি যেকোনো প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে তার ব্যাখ্যা তুলে ধরার সুযোগ পাবেন।
প্রতারণা করা সম্ভব?

বিশেষজ্ঞদের মতে তা সম্ভব। প্রফেসর গ্রুবিন বলেন, যে কোনও ব্যক্তি পলিগ্রাফ টেস্টকে হারাতে পারে কিন্তু সেজন্য অবশ্যই তাকে প্রশিক্ষিত হতে হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের মাদকের সাহায্য নেয়ার চেষ্টা করে অনেকে, কিন্তু তারা সাফল্য পায় না। তিনি এও বলেন যে, বেশিরভাগ পরীক্ষকই শনাক্তকরণ বানচালের এধরনের কোনও প্রকাশ্য চেষ্টা ধরে ফেলতে পারেন।
আসলেই কার্যকর?

১৯২১ সালে যখন এর উদ্ভাবন হল তখন থেকেই পলিগ্রাফের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যন্ত্রটিকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল। এটা কতোটা নির্ভুলভাবে কাজ করবে তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এর মৌলিক বিষয়ে ত্রুটি রয়েছে। এটা ছলচাতুরী ধরতে পারে না, যা এর মূল সমস্যা- এমনটাই মনে করেন অধ্যাপক অ্যালডার্ট ভ্রিজ। তিনি এই বিষয়ের ওপর প্রচুর লেখালেখি করেছেন।
তিনি বলেন, “মিথ্যাবাদীরা প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবার সময় উদ্দীপনা দেখায়, যা যারা সত্য বলছেন তারা করবেন না।”
বিশেষজ্ঞ ড. সোফি ভান ডের জি বলেন, এটা কখনো কখনো নিষ্পাপ মানুষকেও অপরাধী বলে উপস্থাপন করতে পারে। ফলে যাদের এই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তারা মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যাবেন। তাই মিথ্যা শনাক্ত করার ক্ষেত্রে এটি বেশ ভাল হলেও, সত্য শনাক্ত করার ক্ষেত্রে তা খুব একটা ভাল নয়।

তবে অধ্যাপক গ্রুবিন বলেন, কেন এই শনাক্তকরণ পরীক্ষা ভুল হতে পারে তার অনেক কারণ আছে। প্রশ্নগুলি দুর্বল হতে পারে এবং তার ফলে ফলাফল ভুল হতে পারে।
তিনি বলেন, “যদি পরীক্ষক প্রশিক্ষিত হন, পরীক্ষা সঠিকভাবে পরিচালনা করা হয় এবং যদি সঠিক নিয়ন্ত্রণ থাকে তবে ৮০% -৯০% ক্ষেত্রে নির্ভুল উত্তর পাওয়া যেতে পারে।”
তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলেন, পলিগ্রাফির অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে এবং বিভিন্ন কারণে এ থেকে ভুল ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।

সম্ভাব্য অপরাধীকে জেরার সময় তদন্তকারীরা কখনও ‘লাই ডিটেক্টর’-এর সাহায্যে মিথ্যা বক্তব্য শনাক্ত করেন। এবার আরও নির্ভরযোগ্যভাবে মিথ্যা ধরার তোড়জোড় চলছে।
আধুনিক এ যন্ত্র ভবিষ্যতে অপরাধবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিপ্লব আনতে পারে। লাই ডিটেক্টর পরীক্ষায় ফাঁকি দেয়া যায় বলে তা সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য নয়। প্রমাণ হিসেবে তার ফলাফল যথেষ্ট নয়।

বার্লিনের স্নায়ুবিজ্ঞানী জন ডায়লান হেনস একেবারে নতুন ধরনের এক লাই ডিটেক্টর তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছেন। এ যন্ত্র হবে ত্রুটিহীন এবং এর প্রয়োগে সন্দেহের কোনো অবকাশ থাকবে না।
সচেতনভাবে কেউ মিথ্যা কথা বলছে কিনা, তা শনাক্ত করার বদলে এ যন্ত্র অপরাধস্থল সম্পর্কে অকাট্য তথ্য মিলিয়ে দেখবে। হেনস বলেন, ‘কেউ সত্যি না মিথ্যা বলছে, তা জানতে চাইলে হয় তাকে সরাসরি প্রশ্ন করা যেতে পারে। যেমন ‘তুমি কি ঘটনাস্থলে ছিলে?’, ‘তুমি কি এই অস্ত্র ব্যবহার করেছ?’ ইত্যাদি। অথবা সরাসরি তার মস্তিষ্কে উঁকি মেরে দেখা যেতে পারে, সে কোনো কিছু চেনার লক্ষণ দেখাচ্ছে কিনা। একবার কিছু দেখে থাকলে মস্তিষ্ক আবার তা চিনতে পারে। কোনো অপরাধ করে থাকলে সেটা মনে পডলে মস্তিষ্কে কিছু লক্ষণ দেখা যায়।’

একবার কোনো জায়গায় গিয়ে থাকলে কি সারা জীবন ধরে তার ‘নিউরোনাল ইমেজ মনে থাকে? হেনসের টিম এক ধরনের ভিডিও গেমসের মাধ্যমে এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে।
এই পরীক্ষার আওতায় স্বেচ্ছাসেবীরা ভার্চুয়াল বাড়িঘর ও এলাকার মধ্য দিয়ে চলে যাচ্ছেন। যা দেখছেন, সেসব কিছু মনে রাখা তাদের দায়িত্ব। এই প্রক্রিয়া ভবিষ্যতে খুনি, ডাকাত বা হামলাকারীকে শনাক্ত করতে কাজে লাগতে পারে।
তখন ঘটনাস্থলের ছবি দেখিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নিউরাল প্রতিক্রিয়া পরিমাপ করা হবে। গোটা প্রক্রিয়াটা কোনো কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্রের লাই ডিটেক্টর যন্ত্রের মতো মনে হয়।

ভিডিও দেখানোর পর স্বেচ্ছাসেবীদের মস্তিষ্কে বিকিরণ করা হবে। এক মনিটরের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা তাদের পরিচিত ও অপরিচিত জায়গার ফিল্ম দেখিয়ে তাদের মস্তিষ্কের ক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করবেন।
এই তথ্য বিশ্লেষণ করে মানুষের মনে পড়ার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। প্রথমে গবেষকদের জানতে হবে, কোনো ব্যক্তি একটি জায়গা দেখে থাকলে তার মস্তিষ্কে ঠিক কোন ক্রিয়া ঘটে। তারপর সেই প্যাটার্ন বা বিন্যাস কম্পিউটারকে শেখাতে হবে।
নিউরাল লাই ডিটেক্টর অবশ্যই কাজ করছে। কোনো ব্যক্তি কোনো জায়গা একবার দেখে থাকলে মস্তিষ্কের কিছু অংশ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তখন মিথ্যা বলে কোনো লাভ হয় না।

বিজ্ঞানীরা আরও এক ধাপ এগিয়ে অপরাধ ঘটার আগেই মস্তিষ্কের বিন্যাসের সাহায্যে সম্ভাব্য অপরাধীকে শনাক্ত করতে চান। জন ডায়লান হেনস বলেন, ‘অত্যন্ত দ্রুত এক স্ক্রিনিং টেস্ট করতে পারলে অবশ্যই ভালো হতো।
তবে আগামী বছরগুলোতে সেটা সম্ভব হবে না। কারণ কোনো ব্যক্তির খারাপ অভিসন্ধির মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য থাকতে পারে। তার মনে বোমা বা পিস্তল দিয়ে হামলা চালানো, পণবন্দি করার মতো মতলব থাকতে পারে।
অর্থাৎ আমাদের খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব সম্ভাব্য মতলব খুঁজতে হবে। এই মুহূর্তে সেটা খুবই কঠিন কাজ।’ কিন্তু সেই মতলবের অস্তিত্ব যদি শুধু কল্পনার জগতেই সীমাবদ্ধ থাকে, তখন কী করা যায়?

সেই মতলব বাস্তবে কার্যকর না করলেও কি কোনো ব্যক্তিকে দায়ী করা যেতে পারে? মনের কথা আগেভাগে জেনে অপরাধীকে থামানোর সম্ভাবনা থেকে আমরা এখনও অনেক দূরে রয়েছি।

https://www.bbc.com/bengali/news-45755185

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.