নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভোর হয়, সূর্য ওঠে... সেই সূর্যও একসময় রাতের কোলে ঘুমিয়ে যায়। আমিও সূর্যের সাথে উঠি, রাতের কোলে ঘুমিয়ে যাই, মাঝিবিহীন নৌকায় বসে উত্তাল সমুদ্রে নিয়মিত ঘুরপাক খাই, উত্তর থেকে দক্ষিণে বিদ্যুৎ বেগে দৌড়াই আবার দক্ষিণ থেকে উত্তরে কচ্ছপ বেগে হেঁটে হেঁটে আসি, তারপর চৈত্রের কড়া দুপুরে কম্বল মুড়ি দিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকি অনেকক্ষণ! কারণ আমার জীবনের কোন লক্ষ্য নেই!\n\n\nপেশায় ছাত্র। পড়ছি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এইতো..
কাল ভোট।
ভুলেই গিয়েছিলাম আমি ভোটার! কয়েকদিন আগে নির্বাচনের পোস্টার দেখে খেয়াল হল! ‘আমি তো মমিনসিঙ্গের ভুটার!’
কিন্তু ভোটটা দেব কাকে? আমিও প্রার্থীদের চিনিনা, প্রার্থীরাও আমাকে চিনেন না! তাই বলে আমার মহামূল্যবান ভোটখানা তো জলে ফেলতে পারি না! হলের এক কর্মচারীকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘মামা, ভোট কাকে দেয়া যায়?’ ‘আমার কাকারে দিয়েন। খুব বালো লুক। হেয় চাইর বারের চেয়ারম্যান!’ মামার সুচিন্তিত পরামর্শ আমার মনপুত হল না। যেখানে উপজেলা নির্বাচনই হয়েছে তিনবার সেখানে ওনার কাকা চার বার চেয়ারম্যান হন কি করে??
রাতে রিক্সায় হলে ফিরছিলাম। ভাবলাম রিক্সাওয়ালার কাকা নিশ্চয় নির্বাচলে দাঁড়াবেন না। সত্য জানার এটাই মোক্ষম সুযোগ। জিজ্ঞেস করলাম, ‘মামা ভোট কারে দিবেন?’
‘ হ... ভুট দিবাম’
‘কারে দেবেন? কে কে দাড়াইছে?’
‘মনে করুইন ঘোড়া মার্কা, কাপ পিরিচ মার্কা...’
‘এনারা লোক কেমন? আপনার পরিচিত কেউ আছে?’
‘না মামা,আমি কাউরে চিনিনা!’
আমি হতাশ! নকটা আবারো ভুল যায়গায় করেছি।
এবার আমার সাথে ভোটার হওয়া এক বন্ধুকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কিরে ভোট কাকে দিবি?’
বন্ধুও দেখি ইকোনোমিক উত্তর দেয় - ‘যে টাকা দেবে তাকে দেব!’
ভোটার হয়ে বুঝি ভালই বিপদেই পড়লাম। হাল যে ছেড়ে দেব তাও পারছি না। জীবনের প্রথম ভোট বলে কথা! যে করে হোক ভোট আমাকে দিতেই হবে! ইলেকশন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে প্রার্থী সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞানার্জনের শেষ চেষ্টাটা করলাম। মার্কা আর প্রার্থীদের ছবির দিকে তাকিয়ে থাকলাম অনেকক্ষণ। কেউ গোফওয়ালা তামিল হিরো, কেউ শাড়ি পড়া নতুন বউ, আবার কেউবা শান্তশিষ্ট গম চোর! আমার শেষ চেষ্টাও ব্যর্থ হল। হতাশ... আমি আবারো হতাশ!
‘ও ভাই, তাইলে কি আমি ভুট দিতাম না???’
©somewhere in net ltd.