নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পাঠক।

জুনায়েদ বি রাহমান

মৌসুমি রোদ্দুর মেঘ হলে, আমি বৃষ্টির জলে খুঁজবো তোমাকে; নীল খামে কাব্য করে বর্ষার ঠিকানায় লিখবো প্রেমপত্র।

জুনায়েদ বি রাহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমসাময়িক দেশচিত্র

১৩ ই মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৪

কিছু করার বা বলার পূর্বে আমাদের ব্রেইন বিদ্যুৎ গতিতে তার নেগেটিভ ও পজেটিভ বিভিন্ন দিক ভেবে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত দেওয়ার চেস্টা করে। যাদের ব্রেইন একসাথে নেগেটিভ-পজেটিভ বা একাধিক চিন্তা করার ক্ষমতা রাখে না; সমাজ, রাস্ট্র তাদের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বলে ট্যাগ দেয়। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের কর্মকাণ্ড, কথাবার্তা সমাজ-রাস্ট্রের কাছে মূল্যহীন! কিন্তু সমাজ বা রাস্ট্রের বড়বড় চেয়ারে বসে বসে কিছুকিছু মানুষকে নিয়মিত বড়বড় কথা বলতে শুনা যায়। তাদের কথাগুলো শুনতে অনেকটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীদের কথাবার্তার মতো বেসামাল শুনায়। মনে হয় মাত্রাতিরিক্ত মদ বা নেশাজাতীয় কিছু সেবন করে কথা বলছেন। (যেহেতু
মদ বা নেশাজাতীয় দ্রবাদি কিছুক্ষণের জন্য ব্রেইনের কর্মকাণ্ড স্থবির করে দেয়। তাই মাত্রাতিরিক্ত মদ পানকারী মানুষগুলোও মদ্যপানের পর কিছুসময়ের জন্য বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের মতো বেসামাল কথাবার্তা বলে থাকে।) আসলে তেমন কিছুই না। তারা সুস্থ মস্তিষ্কে আজগুবি কথাবার্তা বলে বলে বড়বড় অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়ার চেস্টা করেন।

সম্প্রতি আমাদের অর্থমন্ত্রী ব্লুমবার্গের জরিপের সূত্র ধরে বলেছেন, দেশের অর্থনীতি নাকি কানাডা ও থাইল্যান্ডের সমান। ব্লুমবার্গের জরিপ, মন্ত্রী সাহেবের বক্তব্যের কিঞ্চিত সত্যতা থাকলেও সবি আমার কাছে চাপাবাজি- গাজাখুরি মনে হচ্ছে কারণ আমি বাস্তবে দেশের মানুষের দিনযাপন চিত্র দেখছি।
দেখছি, কৃষকেরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল উৎপাদন করেও দুইবেলার খাবার যোগাড় করতে পারছেন না। প্রথমআলোতে "হাওরের ধানে খুশি কৃষক, দাম নিয়ে চরম হতাশা"- শিরোনামে কৃষকদের হাহুতাশের প্রতিবেদন প্রকাশিত হচ্ছে। জাতীয় দৈনিকগুলোতে চাকরিহীন বাবার দুধ চুরির নিউজ প্রকাশিত হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অপ্রত্যাশিতভাবে বাড়ার কারণে দিনমজুর শ্রমিক, প্রবাসী, সাধারণ চাকুরীজীবিদের ভাগ্যেরও কোনো উন্নতি ঘটছে না।

২০১৬ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের ‘বাংলাদেশে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক এক গবেষণায় পাওয়া তথ্যমতে
দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১০ কোটি ৫৫ লাখ মানুষ এখনও দরিদ্র। যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। এছাড়া মোট জনসংখ্যার ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ বা ৫ কোটি এক লাখ মানুষ মধ্যবিত্ত শ্রেণির। আর ৪৪ লাখ বা মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ ধনী। অর্থ্যাৎ দেশের অর্থনীতি মাত্র ২.৭ শতাংশ কিংবা তার চাইতেও কম মানুষের পকেটে। দিনদিন এই ২-৩ শতাংশ মানুষই আংগুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে বিপরীতে বাকিরা হচ্ছে নিঃস্ব, স্বর্বস্বান্ত। এমতাবস্থায় মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের এমন বক্তব্য চাপাবাজি, গাজাখুরির ক্যাটেগরিতে না ফেলা নিসন্দেহে দলান্ধতার লক্ষণ। মাননীয় পাঠক, আমি আওয়ামী সমর্থক হলেও দলান্ধ নই! তাই.....

২।
উপরেই উল্লেখ করেছি। "হাওরের ধানে খুশি কৃষক, দাম নিয়ে চরম হতাশা"- শিরোনামে প্রথমআলো গতকাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন'টি পড়বার পর থেকে রহিম আলী চাচাকে খুব মিস করছিলাম। চাচার বাড়ি হাওরপাড়ের এক ছোট্ট সবুজ একটা গ্রামে। অর্ধযুগ আগের এক বর্ষার দুপুরে আমরা কয়েকজন হাকালুকিতে ঝড়ের কবলে পড়ে বাধ্য হয়ে রহিম চাচার বাড়িতে উঠেছিলাম। চাচা আমাদের স্টিমার চালক নাজিম ভাইয়ের মামা শ্বশুর। বিকেলে। ঝড় শেষে হলে, ফেরার পথে বাধা হয়ে দাড়ালেন চাচা। বললেন, 'ও বেটাইন আইজ থাকি যাও। যাওয়ার কাম নাই। পথও তুফান আইতে পারে। দিনকালও এখন ভালা নায়। মানুষ আর মানুষ নাই।'
চাচীও কিছুতেই ছাড়তে চাইলেন না। শেষপর্যন্ত থেকে গেলাম। সন্ধ্যায় বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া শুরু হলো। চাচী রঙ চা আর আগুনে ভাজা নতুন ধানের মুড়ি সামনে দিলেন। আরো দিলেন ভাজা চাল।
সেইরাতে চাচা চাচীর আপ্যায়ন, পাশের বাড়ির মতি ভাই, ফয়সালদের আন্তরিকতা আজীবন মনে রাখার মতো ছিলো। তারপর আরো অনেকবার রহিম চাচার বাড়িতে গিয়েছি।
গতকাল প্রতিবেদ'টি পড়ে গতকাল চাচাকে কল দিয়েছিলাম। আজও কিছুক্ষণ চেস্টা করে ব্যর্থ হয়ে ফয়সাল ভাইকে কল দিলাম। ফয়সাল ভাই রহিম চাচাদের প্রতিবেশী। তিনি জানালেন চাচা ভালো আছেন। ফোনে চার্জ না থাকায় হয়ত বন্ধ। আবহাওয়া খারাপ থাকায় এলাকার সৌরবিদ্যুতগুলোতেও নাকি আজকাল চার্জ হচ্ছে না।
ধানের বর্তমান বাজার, উৎপাদনের খরচাপাতি সম্পর্কেও কথা হলো ফয়সাল ভাইয়ের সাথে। তারা প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১২-১৪ হাজার টাকা খরচ করে ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পেয়েছেন। অর্থাৎ ১ মণ ধান উৎপাদন করতে তাদের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬৫০-৭০০ টাকা। কিন্তু এখন ১ মণ ধান ৪৫০-৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতি বিঘায় তাদের ৩-৪ হাজার টাকা লোসকান গুনতে হচ্ছে। সরকার প্রতি মণ ধানের মূল্য ১০৪০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বাস্তবায়নে কোনপ্রকার সরকারি পদক্ষেপ নেই। কেনো নেই? জবাব খুজলে দ্যাখা যাবে-
ধানের বেসরকারী এই বাজার মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে দেশের গুটিকয়েক বড়বড় ধনকুবের মিল মালিক। যাদেরকে সরকার কোটি কোটি টাকা লোন দিচ্ছে। এবং সেই লোমের টাকা বিদেশে পাচারের সুযোগও করে দিচ্ছে। অতঃপর আবার কৌশলে রহিম চাচাদের মতো পরিশ্রমী, মহৎ মানুষের রক্ত চুষে চুষে সেই টাকা সরকারি ফান্ডে জমা করছে। কি খাতরনাগ রক্তচোষা জোকদের খপ্পরে পড়েছি আমরা!

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মে, ২০১৯ রাত ৮:০৫

অনুভব সাহা বলেছেন:

ব্লগের সমস্যা হল, মনখুলে মন্তব্য করা যায় না। নয়তো মন্ত্রীকে একটা গালি দিতাম


বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, ২০১৭ সালে কানাডার মোট দেশজ উৎপাদন ছিল ১.৬৪৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল মাত্র ২৪৯.৭২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।মাথাপিছু মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি পার ক্যাপিটা)বিশ্বব্যাংকের ২০১৭ সালের হিসাবে কানাডার মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন ৪৪,৮৭০.৮ মার্কিন ডলার হলেও, বাংলাদেশের এই আয় ১,৫১৬.৫ মার্কিন ডলার। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের বার্ষিক মোট জাতীয় উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৩ শতাংশ। তবে একই অর্থবছরে কানাডার প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ ও কানাডা: দুই দেশের অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য কতটা?


[প্রবৃদ্ধির বিষয়টা মন্ত্রিমশায় হয়তো ভালোমত বোঝে না]
জয় বাবা ভোলানাথ

১৪ ই মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১০

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: এরা সবিই বুঝেন, তবে বক্তব্য দেওয়ার আগে ভালোমন্দ গিলে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হয়ে যান। যাতে তিলকে তাল হিসেবে উপস্থাপন করে জনগণকে আকাশে উঠাইতে পারেন।
তারা ভালোভাবেই জানেন, দেশের ৬০%+ জনগণ বাজেট, জেডিপি... রাজনীতি কিছুই বুঝে না। এবং এসব বুঝবার অবস্থায়ও নেই। কিছুএকটা বললেই হলো।

২| ১৩ ই মে, ২০১৯ রাত ৮:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: আসলে আমাদের দেশের প্রধান সমস্যা যোগ্য পদে যোগ্য লোক না থাকা।

১৪ ই মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১২

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: এটাই প্রধান সমস্যা। সঠিক মানুষদের হাতে দেশের দায়িত্বে নেই। চোর, নির্লজ্জ, বেহায়া, ডাকাত, সন্ত্রাস, অযোগ্যদের হাতে দেশ।

৩| ১৪ ই মে, ২০১৯ রাত ১২:১৫

আমিনভাই বলেছেন: সবই বোজে সবই জানে। এগুলি আওয়ামীলীগ প্রধান ও কিছু উপদেষ্টার শিহ্মানো বুলি। এগুলি খেয়াল করলেই বোজবেন। আওয়ামীলীগ একটা নীতি মেনে চলছে সেটা হলো টাকা বানাও। টাকাতেই আমার শক্তিশালি হবো। বেশি দুরে নয় আমার উপরের লোক দারা কথায় কথায় শোসন হবো। সেটা সামান্য কিছু হলেও।

১৪ ই মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৩

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: লুঠপাট দেশে তাই মনে হচ্ছে।

আমরা শোষিত হচ্ছি, হবো...

৪| ১৪ ই মে, ২০১৯ সকাল ১১:৫৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: কোন দল বা ব্যক্তি বেশীদিন ক্ষমতায় থাকলেই চাটুকারদের একটা গ্রুপ সৃষ্টি হয়ে যায়। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে ক্ষমতাসীনরা এদের চাটুকারিতাকে পুরস্কৃতও করে। ফলে, এদের কাজের মাত্রা দিনে দিনে বাড়তেই থাকে। কিছু সাংবাদিক আর বুদ্ধিজীবি এসব চাটুকারিতায় নিত্য নতুন মাত্রা যোগ করে।

যেনতেন ভাবে কিছু সোর্স জোড়াতালি দিয়ে এরা এমনসব খবর তৈরী করে যা দেখে ক্ষমতাসীনরা তালি দিতে দিতে হাতের চামড়া খুলে ফেলে। এখন এ'ধরনের খবর ঘন ঘন দেখবেন। আজ একটা বেড়িয়েছে view this link

১৪ ই মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৯

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: সহমত।
চাটুকার বুদ্ধিজীবী মহল ও সাংবাদিকেরা চাটুকারিতা না করলে শাসকশ্রেণী আরো দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করতো। দুর্নীতি হ্রাস পেতো।

৫| ১৪ ই মে, ২০১৯ রাত ৮:১৮

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: এদেশের বড় বড় আসনগুলো দুষ্টলোকদের দখলে চলে গিয়েছে।

১৭ ই মে, ২০১৯ বিকাল ৩:৩৫

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: শুধু বড়বড় আসন নয়, ছোটছোট গুলাও দুষ্ট লোকদের দখলে চলে গেছে। ক্রমাগত বাড়ছে লুটতরাজ, অপকর্ম, রাহাজানি!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.