নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতই ফালাসরে পাগল মরতে একদিন হইবই

তারা ভরা রাতের নিষাচর...

জুনজুন

নিতান্তই সরল দিন গুলো কেটে যায়..... শুধু বসে থাকা কিছু সপ্নকে মুঠো করে।

জুনজুন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবেসে একদিন

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৪

সিমিল অনেকদিন ধরে এই দিনটির প্রতীক্ষায় ছিল, কবে আসবে পয়লা বসন্ত। ইমি বলে রেখেছে সেইদিন পুরো দিন বলে ঘুরাঘুরি পোগ্রাম। যাক সেইদিনটা এসেই গেল, সিমিল যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে এসব অবোল তাবোল ভাবতে থাকে। হটাৎ একটা জটলা চোখে পড়তে ওর ভাবনার খেই হারিয়ে গেল, কয়েকটা টিভি ক্যমেরা কি যেন শুটিং করছে। সেইদিকে মনযোগ দিয়ে ও কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে গেছিল ঠিক তখনই নারী কণ্ঠের ব্যপক হৈচৈ আর ইমি কে আবিস্কার করল। পয়েলা বসন্তের সাজে সেই শ্যম্লা বরন ইমিকেও অনিন্দ্য সুন্দরী মনে হচ্ছে।
-কৈ ছিলা এতক্ষন, আমি ফোন দিতে দিতে......... মোবাইল কই?



-কেন পকেটেই...
-তাহলে ইচ্ছা করে অফ করে রাখছ নাকি, আমার সাথে দেখা করতে চাও না! নাকি আরেক জন কারো জন্য বসে আছ!!
-কি যে বল না, এই দেখ......... বলতে বলতে সিমিল মোবাইল বের করে দেখে মোবাইল কোনভাবে “এয়ারপ্লেন মুড” হয়ে আছে।
- ও আচ্ছা ! বিমানে ত কোনদিন চড়াইতে পারলা না আর এখন “এয়ারপ্লেন মুড” মারো। সিমিলের মনটাই খারাপ হয়ে যায় এই সুন্দর বসন্ত দিনে একি অনন্ত কারবার শুরু হোল।
ও ইমিকে আপাত থামানর জন্য পকেট থেকে মানি ব্যগ বের করে বলে উঠে
-দেখ তোমার জন্য সারপ্রাইজ!
-কি?
সিমিল মানিব্যগ থেকে বাসন্তী কালারের একটা চিরকুট বের করে বলে উঠে
-তুমি যে আজ এই কালারের শাড়ি পড়ে আসবে সেটা আমি আগেই গেস করছিলাম।
ইমি আর থাকতে না পেরে সিমিলের গালে ঠাশ করে বসায় দিল......
-আজ পয়লা বসন্তে যে বাসন্তী কালারের শাড়ি পড়ে আসব সেটা আবার গেস করা লাগে!!
সিমিলের চোখ কান লাল হয়ে গেছে, আশেপাশের লোকজন কৌতুক চোখে তাকাচ্ছে। ইমি অবশ্য নিজের ভুল বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি রিক্সা ডেকে উঠে পড়ে। সিমিলকে হাত ধরে টানতে যন্ত্রচালিতের মত উঠে পড়ে রিক্সায়। যাক অনেক সরি সরি বলাতে সিমিল ধাতস্ত হয়। ইমি সিমিলের গায়ে গা এলিয়ে ওর হাত মুঠায় নিয়ে খেলা করে যেন একপ্রকারের সান্তনা দেয়।
-এখন বল কোথায় যাবা?
-তুমিই বল...... তুমিই ত এখন পর্যন্ত সব করলা!
-বললাম ত সরি।ও আরও ঘন হয়ে আসে......।
-না তুমিই বলও!


-কেন এখনও রাগ কমেনি, আচ্ছা চল টি এস সি...... না চল ধানমণ্ডি লেকের পার।
-ওখানে লোক গিজ গিজ করতেছে, তারচেয়ে চল নিরিবিলি কোথাও যাই।
-হুম!কোথায় তবে?
রিক্সা চালক বেশ বুড়া করে, বললেন কোথায় যামু এখনও ত কইলেন না?
ইমি বলে উঠে, ও তাইত কোথায় যাব তাইত বলিনি। এইটা কোথায়?
-নতুন বাজার! কই যাপেন আপ্নারা?হাতির ঝিল নিয়ে যামু......
ওরা দুজনেই মাথা নাড়ে।
হাতির ঝিল একেবারে তেতে আছে এই দুপুরে তারমধ্যে ওরা দুজন ইস্ট ওয়েস্ট ভার্সিটির কাছা কাছি রিক্সা ছেঁড়ে দিল।
প্রায় বারটা বাজছে চল কোন রেস্টুরেন্ট এ বসি, সিমিল সুধায়।
এত তাড়াতাড়ি তারচেয়ে চল হেঁটে হেঁটে পুলিশ প্লাজা যাই... ইমি জবাব দেয়। হাতির ঝিলে এই গরমেও জুটির অভাব নেই, সবাই রং বেরঙের ড্রেস পড়ে এসেছে। ওদের দুজনের আর একলা একলা লাগছে না। তাও রোদের ঝাঁজ বাঁচিয়ে ওরা চলতে থাকে রাস্তার পাশে পাশে দিয়ে।
“কই তোমার পুলিশ প্লাজা? আর কত দূর?” সিমিল বলতে বলতে প্লাজার সামনে চলে আসে। তবে প্লাজায় ঢুকে ওদের কষ্ট সব লাঘব হয়ে যায়। শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিরাট মার্কেটে বিকাল ওব্দি কাটিয়ে সিমিল অনুভব করে ওর পকেটের অবস্থা কেরসিন তাই তাড়াতাড়ি বের হওয়ার পথ খুজে। বিকেলের হাতির ঝিলের রুপ পালটে গেছে...... হাজার মানুষের আনাগোনা আর কোলাহলে ভরপুর কেমন যেন উৎসব উৎসব ভাব। যে সকল যুবকরা একা একা হাঁটছে তাদের মনে কি যেন অফসুস অফসুস ভাব আর জুটিদের মনে এক ধরনের প্রফুল্ল ভাব। এক বেলুন আলা মেরুন কালারের লাভ বেলুন উড়িয়ে ঘুরছে দাম বলে পঞ্চাশ টাকা মাত্র ইমির আবদার রক্ষার্থে সেটাও সই। দুইটা পথশিশু ওদের পিছু নিল, আপু কিছু দেন... ভাইয়ারে বলেন দিতে ইত্যদি ইত্যদি......... ওরা দুজন যতই সরতে চায় ততই ওদের পিছে পিছে। এক সময় একটা আরেকটারে বলতে লাগল “গতবারের আপুটা বেশি সুন্দর ছিল!!এইবারেরটা কাইলা!” সিমিল ভাবল আরেকটা বোধহয় বিস্ফ্রনের সময় আসছে যাবার আগে কিন্তু দেখল ইমি বেশ হাসি হাসি মুখ করে শুনছে। ছেলেগুলো কিছু না পেয়ে এক সময় চলে গেল। সন্ধ্যার হাতির ঝিলে আলোকসজ্জার মেলা, পানিতে প্রতিফ্লিত হয়ে ওপারথিব লাগছে। এর মধ্যেই ইমিকে রিক্সায় তুলে ও চলল বাসার দিকে। পকেটের অবস্থা গড়ের মাঠ। পহেলা ফাগুনটা মাস শেষে হলে ভাল হতো বাকি মাসের চিন্তাটা থাকত না সিমিল মনে মনে ভাবতে থাকে।
মেসে পৌঁছে দেখল কেউ আসেনি এমনকি বুয়াও ছুটিতে! ভালই আবোল তাবোল খেয়ে ক্ষিদেও নাই। তাই টিভিটা অন করে চোখ রাখে সিমিল। খবর হচ্ছে তাও আবার পহেলা বসন্ত নিয়ে...... কিন্তু খবরের মধ্যে নিজের ছবি দেখে ও চমকে উঠে! সেই ফিউচার পার্কের সামনে ওর আরা ধারাভাষ্য শুনতে ইচ্ছে করে না, তার চড় খাবার খবরটা এতটা মজাদার খবর হবে তা কস্মিনকালেও ভাবেনি। ওর ইচ্ছে হলও ধরণি যদি দ্বিধা হত সে সেখানে লুকাত। এর মধ্যে আবার ফোন......ওপাশ থেকে ওর খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড শিহাব বলে উঠে দোস্ত তুদের আজকে দেখি দুই তিন চ্যনেলে দেখাইছে!! ও ফোন কেটে দিয়ে আবার “এয়ারপ্লেন মুড” এ দিয়ে রাখে যা হবার হোক!!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:২৪

কল্লোল পথিক বলেছেন: বাহ!চমৎকার গল্প।

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫২

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লিখেছেন।
++++

৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৫৯

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
চমৎকার গল্প।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.