![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কন্যার বয়স তখন সবে মাত্র সতের কি আঠারো । খুব চুপ চাপ আর শান্ত প্রকৃতির ছিল কন্যা। একদিন হঠাৎ করিয়াই সে কিছু বুঝিয়া উঠিবার আগেই তাহার বিবাহ হইয়া গেল।
কন্যা তার বিবাহের পর বাপের বাড়ি থেকে ট্রাক ভরিয়া বেশী কিছু আনিতে না পারিলেও সঙ্গে করিয়া আবেগ ভর্তি কয়েকটি ডায়েরি আর গানের খাতা খানি ঠিকই আনিয়াছিল । খুব যতনে সেগুলি রাখিয়া দিয়াছিল তার পতিদেবের কাছ থেকেই পাওয়া ছোট্ট একটি ড্রয়ারে ......।।।
অবসর সময়ে ঐ ডায়েরি আর গানের খাতা গুলোই ছিল কন্যার একমাত্র সঙ্গি আর আনন্দের উৎস। ওদের নিয়েই কন্যার ছিল নিজস্ব একটা ভূবন । কত কি যে লিখিতো কন্যা ঐ ডায়েরি গুলোয়। কত শত কথাই না হইতো কন্যার সাথে ওদের । কত মান অভিমান ,পাওয়া ,না পাওয়ার সাক্ষী ছিল ওরা, তাহা কি কন্যা ছাড়া আর কেউ কখনো জানিতে পারিয়াছে কোন দিন।।।
কিন্তু একদিন বিধি হইলো বাম। এত সুখ কন্যার সহিলো না। কন্যার অনুপস্থিতিতে তাহার পতিদেব উহাকে অপ্রয়োজনীয় আবর্জনা ভাবিয়া ফেরিওয়ালার কাছে সের দরে বিক্রি করিয়া দিল। তার সাথে সাথে বিসর্জিত হইলো কন্যার এত দিনের সঞ্চিত ভাল লাগা, মন্দ লাগা আবেগী মূহুর্ত গুলোরও।
জানিনা উহাতে তাহার পতিদেবের কতটাই বা লাভ হইয়াছিল কিন্তু কন্যা যা হারাইয়াছিল তা আর শোধরাবার নয়। তার পতিদেব কখনো জানিতেও পারিলো না প্রতিনিয়ত কতখানি উথাল পাথাল করা আবেগ ঐ অপ্রয়োজনীয় ডায়েরি গুলোকে প্লাবিত করিত।
শোকে, দুঃখে কন্যা লিখতে ভুলিয়া গেল, ভুলিয়া গেল গাইতেও। নিজের উপরই প্রতিশোধ নেওয়ার প্রয়াসে কন্যা নিজেকে একটা যান্ত্রিক মানুষে পরিনত করিবার মনস্থির করিল। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জীবনে আর কখনো আবেগকে প্রশ্রয় দেবে না।
সে তার শখের গল্প, কবিতার বই গুলোকেও পর করিয়া দিল। মনে হইতো তারা যেন দুই ভিন্ন গ্রহের বাসিন্দা। একে অপরের নামটা পর্যন্ত শোনেনি কখনো। সঙ্গীতের সাথেও ভাবের আদান প্রদান শেষ হইলো। কন্যা পুরোপুরি গা ভাসিয়ে দিল যান্ত্রিকতায়।
এভাবে দেখতে দেখতে কাটিয়া গেল শত সহস্র বছর.........
এরই মধ্যে কত কিছু ঘটিয়া গেল, কত কিছুরই না পরিবর্তন হইলো। কিন্তু কন্যা একদিন হঠাৎ আবিষ্কার করিলো যে, সে আসলে নিজের কাছেই নিজে হেরে গিয়েছে। তার এখনো লিখিতে ভাল লাগে, ভাল লাগে গান শুনতে, আকাশ ভাল লাগে।
এখনো চাঁদকে শুধু তার একটা উপগ্রহ ই মনে হয়না, তার জল থৈ থৈ জ্যোৎস্না দেখলে এখনো মনটা ভাল হয়ে যায় ।
শত সহস্র বছর আগে সে যেখানেই দাড়িয়ে ছিল এখনও ঠিক সেই খানেই দাড়িয়ে আছে। যান্ত্রিক জীবন যাপন তাকে এত টুকুও যন্ত্রে রুপান্তরিত করিতে পারে নাই ।।।।
বিঃ দ্রঃ - আসলে নিজেকে বদলানো যায়না .....
কিছু মানুষ কখনোইইই........ বদলায় না !!!
২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:১৮
মোটা ফ্রেমের চশমা বলেছেন: সবার এমন না হলেও অনেক মেয়ের জীবনই এমন। যুদ্ধে হেরে যাওয়ার গল্প।
৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭
তুষার কন্যা বলেছেন: জ্বী যথার্থ বলেছেন !
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:৩৮
বনলতা-সেন বলেছেন: বেচারি কন্যা