![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘড়ির অ্যালার্ম এ ঘুম থেকে ওঠা সাতসকালে। তারপর তাড়াহুড়ো করে রডি হওয়া। সকাল ৮ টা(আগে বা পরেও হতে পারে) কমলাপুর রেল-স্টেশনে দাড়িয়ে ট্রেন এর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। রেল-স্টেশন এর চার নম্বর টার্মিনাল এ আসার কথা “এগারশিনধুর প্রভাতি”। নির্ধারিত সময়ে কখনোই বাংলাদেশের বাস বা ট্রেন ছাড়েনা এটা জানা কথা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে টিকিট করা হয়নি কারন গত তিন দিন ধরে কোন প্রকার টিকিট নেই সব সাবাড়।
চার নম্বর টার্মিনাল থেকে ঠিক সামনে তাকালেই স্ষ্ট দুই নম্বর টার্মিনালটি দেখা যায়। গিয়ে দারলাম কোলাহল থেকে সাময়িক মুক্তি পাবার জন্য। একটু সামনেই একজন ফেরিওয়ালা চা বিস্কিট বিক্রি করছিল। হাটতে হাটতে সেখান থেকে এক কাপ চা আর একটা বেনসন নিলাম। একের পর এক মাইক এ ঘোষণা হচ্ছিলো অন্নান্য যায়গার ট্রেন ছেড়ে যাবার কিন্তু এগারসিন্ধুর কোন ঘোষণাই আসছিলনা। অনেক্ক্ষণ হয়ে গেল, প্রায় ঘণ্টা খানেক তো হবেই! অবশেষে ট্রেন আসলো কিন্তু এখনো ঢের দেরি ছাড়তে। ট্রেন এর প্রতিটা বগি তে বাথরুম এর জন্য পানি ভরা হচ্ছে। একজন লোক ট্রেন এর উপরে উঠে তাতে পাইপ দিয়ে পানি ভরছে। দেখতে দেখতে ২ কাপ চা আর ৩টা ছিগারেট শেষ করে ফেললাম। ঠিক ১০.১৫ তে ট্রেন ছাড়ল। আমিও উঠে পরলাম। আমার অনেক ছোট ভাইদের কাছে শুনেছি ট্রেন এ নাকি টিকিট ছাড়া চরা যায়। এই প্রথম বার চেষ্টা করে দেখলাম। দুর্দান্ত একটা অনুভূতি হচ্ছিলো। একদম শেষ কামড়া তে উঠেছিলাম সেইদিন। কোন প্রকার সিট পাইনি তার কারণ প্রচুর মানুষ ছিল। ঠিক দরজার কাছে গিয়ে একটা খবরের কাগজ বিছিয়ে বসলাম। সে এক অন্য রকম অনুভুতি আগে আমি কখনই এভাবে বসিনি। কমলাপুর থেকে ট্রেন আস্তে আস্তে টার্মিনাল ছেরে খিলগাঁও দিয়ে চিরচেনা মগবাজার ঠিক আমার নানুর বাসার পাশ দিয়ে আস্তে আস্তে অতিক্রম করে চলে যাচ্ছে। চিন্তা করতে লাগলাম এই সময় আমার মামাতো ভাই টা কি করছে! কি আর করবে! যেই কুড়ে! ঘুমানো ছাড়া আর কোন কাজ নাই। তাও অফিস করে সপ্তাহে মাত্র একদিন ছুটি পায়। মগবাজার বস্তির মাঝখান দিয়ে রেল লাইন চলে গেছে। মানুষ গুলোর মাঝে কোন প্রকারের ভয় কাজ করেনা। একদম ছোট ছোট বাচ্চারাও খেলা করছে ট্রেন এর কাছ ঘেঁষে। যে কোন মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটলে অবাক হবার কিছু থাকবেনা। এরাই নাকি আমাদের দেশের রাজনৈতিক দল গুলোর ভোটের একটা বিরাট অংশ। আস্তে আস্তে মহাখালি ছেড়ে গিয়ে বনানী রেলস্টেশন এর পাশ দিয়ে যাচ্ছে এগারশিন্ধুর প্রভাতি। আমার বরাবরই বনানী এর পর থেকে উত্তরা পর্যন্ত খুবই ভাল লাগে। ঠিক যেন কোন একটা জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে যাচ্ছিলাম। এটা কিন্তু আমার দ্বিতীয় ট্রেন জার্নি ছিল। আর প্রথম বারের মতো আমি একা একা যাচ্ছি। আসলে সব কিছু সবাইকে দিয়ে হয়না। প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে দেখতে যে কখন উত্তরা স্টেশন এ চলে এশেসিলাম আমি আসলে বুঝতে পারিনি। আমি যথাযথ ভাবেই আমার স্থান আমি ধরে রেখেছি মানে আমি কনমতেই দরজার পাশ থেকে উঠবনা। ৫-১০ মিনিট পর আবার ট্রেন চলতে শুরু করলো। টঙ্গি হয়ে ঠিক আমার তখনকার অফিস এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। পুবাইল এর পর থেকে আমি এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলাম যে চোখ ফেরাতে পারিনি। কিন্তু গরম ছিল প্রচণ্ড আর ধুলার কথা নাই বললাম থাক। দরজার বাইরে পা ঝুলিয়ে দেখসিলাম প্রকৃতি। যতো দূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। ধান ক্ষেত। এই গরমের মাঝেও মাঠে কাজ করছে অনেকেই। হঠাৎ হঠাৎ দুই একটা বড় বড় গাছ দেখা যাচ্ছে আর তার নিচে বসে অলস কিছু সময় পার করছে মানুষেরা। হয়তবা তারা হবে কোন ঘনিষ্ঠ বন্ধু অথবা তারা মশগুল কোন প্রকার রাজনৈতিক আলাপ আলোচনাতে। রেল লাইন এর ঠিক পাশ দিয়েই আবার হাইওয়ে। বাস গাড়ি যাচ্ছে তাদের নিজস্ব গতিতে। দেখতে ভালই লাগছে। ভাবসিলাম এই এতো এতো টাকা খরচ করে দেশের বাইরে না গিয়ে এই আমার মতো উল্টা পাল্টা ভাবে ঘুরলেও তো মানুষ অনেক কিছু দেখতে পারত জানতে পারত। আর এটাও বুঝতে পারত আমাদের এই দেশ অন্য কোন দেশ থেকে সৌন্দর্যের দিক থেকে কোন অংশে কম নয়। হঠাৎ একটা নদী অতিক্রম করলাম। বিশাল একটা ব্রিজ তার উপর দিয়ে আমি যাচ্ছি। কেমন যেন একটা অনুভুতি হচ্ছিল। নিচে অনেক বড় একটা নদী আর তার উপর দিয়ে যাচ্ছি এই খুদ্র আমি। ভাবছিলাম এই বুঝি পরে যাব। নাহ! পরিনি বহাল তবীয়তেই নদী পার হয়ে গিয়েসিলাম। আমি এই পথ দিয়ে এর আগেও একবার গিয়েছিলাম আমার কাকা এর বাসায় যাবার সময়। তারা থাকেন ঘোড়াশাল। যাই হোক আড়াই ঘণ্টা পর আমি ভৈরব রেল স্টেশন এ গিয়ে দাড়াই। ট্রেন এর বগি পরিবর্তন হচ্ছে। আরও ১ ঘণ্টার রাস্তা। সময় কাটছিলনা। আবার ট্রেন এ খারাপ ও লাগছিলনা। আমি ঠিক ১.৫ মাস পর ওর সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলাম। ভাবতে আমার ভালই লাগছিল। ১ ঘণ্টা পর যখন বাজিতপুর যেয়ে নামলাম তখন মনে হল জীবন টা ফিরে পেয়েছি। আসলে এতো গরম আর মানুষের চিৎকার চেঁচামেচি মাথা নষ্ট করে দিচ্ছিল। এদিকে পেটের ভিতর মনে হচ্ছে ক্ষুধা বাবা সেইরকম মারামারি করছে খাবার এর জন্য। বাজিতপুর রেল স্টেশন এর চেহারা টা একেবারে ছবির মতো করে আকা গ্রামের কোন একটা রেল স্টেশন এর মতো। মাথার উপর একটা টিন এর চালা। অনেক বড় ছিল সেটা। একটা কাউন্তার। সেখানে বসে ছিলেন দুই তিন জন লোক। অনেক টা ভাব নিয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছিলেন। বুঝতে পারিনি কেন। এর ঠিক পাশেই রেল স্টেশন কে কেন্দ্র করে গরে ওঠা অনেক গুলো খাবারের দোকান। আর ঠিক পূর্ব পাশে একটা চায়ের দোকান। সেখানে গরুর দুধের চা পাওয়া যায়। আমি টিকেট কাউন্তারে গিয়ে ঢাকা এর টিকেট চাইতেই বলল আগামি ১ সপ্তাহের টিকেট নাকি নাই। যাই হোক ফিরার বেপারে আমার এতো তাড়াহুড়ো ছিলোনা। আমি রেল স্টেশন এ ওর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ১৫ মিনিট পর আমি আমার সবচাইতে পসন্দের মানুষটির দেখা পেয়েছিলাম। ওকে সেইদিন অন্য রকমের সুন্দর লাগছিল। কাল একটা জামা পরেছিল। সম্ভবত পপ্লিন কাপড়ের। তখন এই ধরণের পোশাকের বেশ চল। ও আমাকে একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল খাবার এর জন্য। ওইটা নাকি ওদের ওখানকার বেশ নামকরা ফাস্ট-ফুড এর দোকান। কি নেই সেখানে! বার্গার থেকে আরম্ভ করে ফ্রাইড রাইস সবই ছিল। আমার তো তখন ভয়ানক ক্ষুধা। খাবার দাবার এর প্রতি আমার বরাবরই ভালবাসা ছিল। আমি ফ্রাইড রাইস আর ঝাল চিকেন ফ্রাই নিয়েছিলাম। অমৃত ছিল স্বাদ। খেতে খেতে আমি ওকে খেয়াল করছিলাম। সুন্দর ভাসা ভাসা এক জোড়া চোখ। কখনো ওকে বলা হয়নি এই চোখ জোড়াই আমাকে সম্মোহিত করেছিল। বিশাল লম্বা চুলের অধিকারিণী ছিল এই শ্যামলা মেয়েটি। আমার ঠিক সামনে বসে ও আমাকে দেখছিল আর হাসছিল। অবশ্য আমি কারণ টা জানতে চাইনি। পাগলামি করাটা আমার একটা স্বভাব। ও তখন জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল আমার যতটুকু মনে পরে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা ঐ দোকান টা থেকে বের হয়ে হাটতে থাকি। আমি তো আর কিছুই চিনিনা। সব ভরশা ছিল তখন ও। আমরা হাটতে হাটতে রেল লাইন কাছে চলে এসেছিলাম। চার পাশে বড় বড় গাছের সারি। মাঝখান দিয়ে পিচ ঢালা একটা পথ একে বেকে অনেকদুর চলে গেছে। আর দুপাশে নানা রকমের ফসলের ক্ষেত। ট্রেন এ থাকার সময়ের আবাহাওয়া টা আর এখন নেই। আকাশে হঠাৎ এ বেশ মেঘ করেছিল। আমরা হাঁটছিলাম। অনেক কথা বলছিলাম আমি সেদিন। আজাইরা প্যাঁচাল। আমার অফিসের কাহিনী। বন্ধুদের সাথে কাটানো মজার মজার কিছু সময়ের কথাও বলছিলাম। আসলে এই ধরণের সুযোগ আমার খুব কম ই হতো। আমার বেস্ততা আর ওর পড়া লেখা আমাকে ওর কাছ থেকে অনেক বেশি দুরেই রাখত সবসময়। অনেক বেশি ক্ষুধার্ত মানুষ যখন তার সামনে হঠাৎই খাবার পায় তখন যেভাবে গোগ্রাসে খায়, আমার অবস্থা টা ছিল ঐদিন সেরকমই। যতটুকু সম্ভব ছিল খুব কাছে থাকার চেষ্টা করছিলাম। আবার কবে দেখা হবে তা তো জানতাম না। একটি জায়গায় এসে দেখতে পেলাম মাথার ঠিক উপর দিয়ে অনেক গুলো বাশ গাছ অনেকটা কুর্নিশ করে আছে। আমার কাছে মনে হচ্ছিল গাচ গুলো আমাদের কে স্বাগত জানাচ্ছে। পাগল কিন্তু অনেক রকমের প্রলাপ পারে। আরও কিছুক্ষন হাটার পর আমরা একটা রিকসা তে উঠলাম। ঠিক দেড় মাস আগে কোন এক সময় আমরা দুজনে রিকসায় করে খানিক্ষন ঘুরেছিলাম। দুপাশের ফসলের ক্ষেতের মাঝখানের রাস্তা দিয়ে আমরা যাচ্ছিলাম। আকাশের সাথে মেঘের মনে হচ্ছিল কোন বিষয়ে মিল হচ্ছিলনা। মেঘ তার চিরাচরিত ঘন কাল মুখ নিয়ে সারাটা আকাশ কে ঢেকে দিচ্ছিল। আমি কিন্তু মনে প্রাণে চাচ্ছিলাম যাতে ঝুম বৃষ্টি আসে। কোন কিছুরই যেন কমতি ছিলনা। চার পাশের অপূর্ব পরিবেশ, আকাশে মেঘের ঘনঘটা। বাতাসে মাটির একটা তাজা গন্ধ। ঠাণ্ডা বাতাস। প্রকৃতির এই জিনিষ টাকে আমার কাছে খুব ভাল লাগে। এই এখন খুব গরম আবার কিছুক্ষণ পরই বৃষ্টি। ঠিক যেন মনের কথা টা বুঝতে পারে আর কিছুটা স্বস্তি নিয়ে আসে। আর এতো সুন্দর একটা পরিবেশের মাঝে একজন সুন্দর মানুষের সাথে সুন্দর কিছু সময় কাটানো তো আর যেন-তেন কথা নয়। এই সুন্দর পরিবেশ, সুন্দর পৃথিবী আর কিছু সুন্দর সময় আমাদের দুজন কে বরন করে নিয়েছিল সেদিন। আরও অনেকক্ষণ যাবার পর ও রিকশাওয়ালা কে কোন একটা গ্রামের মাঝে দিয়ে যেতে বলেছিল। এরই মাঝে আকাশ ভেঙে মেঘের বৃষ্টি রুপে পদার্পণ করলো ধরণী তে। অসম্ভব সুন্দর কিছু মুহূর্ত ছিল। আমি দেখছিলাম কিছু মানুষ বৃষ্টি তে ভিজে যাবে বলে তার প্রিয় ঘরের দিকে যাচ্ছে অতি দ্রুত। কৃষক তার সন্তানের মতো ফসলের ক্ষেতের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে, যেন দেখছে তার সন্তানদের কোন কষ্ট হচ্ছে কিনা। ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে যতো দূর চোখ যাচ্ছে শুধু বৃষ্টি আর বৃষ্টি। কিছু কিশোর বয়সী ছেলে পেলে রাস্তায় নেমে এসেছে বৃষ্টি কে আলিঙ্গন করবে বলে। টপ টপ শব্দ আর ছিটে আসা জলে আমার ডান পাশ সম্পূর্ণ রকমের ভিজে গিয়েছিল। আমি ওকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম ভিজবে কিনা! কিন্তু পরক্ষনেই আবার আমি মানা করে দিলাম। কারণ আমার সাথে আমার ল্যাপটপ ছিল। মনে মনে নিজেকে গালি দিলাম। সুন্দর কিছু সময় কে হয়ত আরও কিছু সুন্দর করতে পারতাম যদি ওটা না থাকতো। আমি কিছুক্ষণ পর পরই ওর কাল চোখ গুলোর দিকে তাকাচ্ছিলাম, বুঝতে চেষ্টা করছিলাম চোখ জোড়া কিছু বলছিল কিনা! নাহ, আমি এতই অভাগা কিছুই বুঝতে পারছিলামনা। কিন্তু আমি ওর হাত টাকে আমার কাছে টেনে নিয়েছিলাম। আমি ওর চোখ জোড়ার মাঝে কিছু একটা চঞ্চলতা দেখতে পেয়েছিলাম। হয়ত এই মুহূর্ত টার জন্য সে অপেক্ষা করছিল! হয়ত! কিন্তু আমি করছিলাম। বৃষ্টি তখনো হচ্ছিল অবিরাম ধারায়। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যাও নেমে আসছিলো। আর আমারও যাবার সময় এসে পরেছিল। এর কিছুক্ষণ পর যখন বৃষ্টি থামল, সন্ধ্যা ও যখন ছুঁইছুঁই, আমার বিদায় নেবার সময় হয়েছিল। ওর কলেজের থেকে বেশ কিছুটা দূরেই ছিল বাস কাউন্তার। আমি ঢাকার টিকিট কাটলাম। ওখানের ঐ বাস টাই ছিল শেষ বাস। একটা রিকসা তে ওকে উঠিয়ে দিলাম। বিদায় নিলাম। আমি তাকিয়ে ছিলাম যতক্ষণ ওকে দেখা যায়। ও পেছনে তাকিয়ে ছিল কিনা আমি বুঝতে পারিনি। সময় টা ছিল ২০১১ এর মাঝামাঝি কোন একটা সময়।
২০১২, জুলাই ২৭ তারিখঃ মন টা খুব খারাপ কোন একটা কারণে। অফিস থেকে ছুটি নিলাম ৩ দিনের। দেখি কথাও থেকে যদি ঘুরে আসা যায় হয়ত ভালই লাগবে। মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে একটা টিকিট কাটলাম কিশোরগঞ্জ, বাজিতপুর। ৩ ঘণ্টা পর আমি সেখানে গিয়ে পৌছালাম। আমি হাটতে হাটতে ঐ ফাস্টফুড এর দোকান টাতে গিয়ে উঠলাম। দোকানের মালিক আগে আস্ত্রেলিয়া তে থাকতেন। কোন একটা রেস্টুরেন্ট এ শেফ ছিলেন। এখন দেশেই ভাল ব্যবসা করছেন। আমাকে দেখে জিজ্ঞাসা করলো কেমন আছি! ভালই বললাম। আমাকে খাবার দিলো। সেই একি খাবার আমি নিলাম। কিন্তু সেদিনের মতো আমি পুরোটা শেষ করতে পারিনি। কেন পারিনি জানিনা। আজ আমার সামনের চেয়ার টাতে তুমি ছিলেনা। তোমাকে আমার ভীষণ প্রয়োজন ছিল। আমি উঠে পরলাম। আমি ঠিক সেইদিন টার মতো করে হাটতে হাটতে রেল লাইনের পাশ দিয়ে হেটে চললাম। সেইদিন এর মতই চারিপাশ টা অনেক শুন্দর ছিল। শুধু তুমি ছিলেনা। আমি ঠিক সেইদিন টার মতো একটা রিকসা নিলাম। কিন্তু আজ আকাশের সাথে মেঘের কোন রকম মনের অমিল ছিলনা। আজ সেই কৃষক ক্ষেতের পাশে দাড়িয়ে ছিলনা, রাস্তায় ছিলনা কোন কিশোর কোন কিচুর অপেক্ষা তে। শুধু আমি এ ছিলাম একা রিকসা তে বসা। আমি ঠিক সন্ধ্যার সময় সেই বাস টার্মিনাল এ গিয়ে দাঁড়ালাম। সেই যাত্রী ছাউনি তে আজ আর কোন মানুষের ভির ছিলনা। যাত্রী ছিলাম শুধু আমি আর একাকিকত্ত। আমি কখনো ভাবিনি তোমার সাথে সেইদিন ই হবে আমার শেষ দেখা। আমি যদি একবার হলেও বুঝতাম তাহলে আমি হয়ত সেইদিন তোমার কাছেই থেকে যেতাম যে কোন মুল্যে.........
বিঃ দ্রঃ গল্পের কাহিনী টি আমার এক বন্ধুর ডায়রি থেকে নেয়া। অন্য কারও জীবনের সাথে মিলে যাওয়াটা তাই স্বাভাবিক। কিন্তু এর জন্য লেখক দায়ী নন।
©somewhere in net ltd.