![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হিমু মত এলোমেলো পথে জোছনায় ময়ুরাক্ষীর পাড়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা, ধীরে নদীর পানি গ্রাস করতে থাকে আমাকে .....। ফেসবুকে আমিঃ https://www.facebook.com/hiimmuu
ঘুম থেকে উঠেই আবিষ্কার করলাম কেউ আমার গলা ধরে শুয়ে আছে আর বেশ ভারী পা আমার পায়ের ওপর উঠিয়ে রেখেছে। চোখ খুলে এলোমেলো চুল দিয়ে ঢেকে যাওয়া মুখ আমার।
চুলের এই ঘ্রাণটা আমার খুব পছন্দ।
আমি পাশে না তাকিয়েও বলতে পারি আমার পাশে কে!!
কয়েকটা বছর অপেক্ষা করার পর অবশেষে,
সকাল বেলা মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে।
আগে করতো না এমন না। আমি হাত বাড়িয়ে দিতে গিয়ে হাত গুটিয়ে নিলাম।
মেয়েটার ঘুম দরকার।
হঠ্যাৎ পাশ থেকে নবনী বলে উঠলোঃ
- বিয়ে করা বৌ কে ধরতেও সঙ্কোচ? কি বিয়ে করে ঠকে গেছেন?
ঃ না তুমি ঘুমাচ্ছো। তাই...
- জানিতো। সবাই বলছিলো বিয়ের পর তুমি আর আমাকে ভালোবাসবা না।
ঃ কি যে বলো!!
- তাইলে সারারাত এমন পটকা মাছের মত হা করে ঘুমাইছো কেন?
ঃ কই!!
- তোমার ড্রেসটাও পাল্টায়া দেয়া লাগে!!
আমি নিচের দিকে তাকিয়ে অবাক!! সত্যিই এই ট্রাউজার তো আমি পরি নাই।
নবনীর মুখে দুষ্টু হাসি। আমার কেমন জানি লাগতেছে।
মেয়েটার গাল টেনে দিয়ে বললামঃ
আমি রাতে নিজেই পরেছিলাম এটা।
ঃ আচ্ছা তাইলে তোমার গালের ওপর যে লিপস্টিকের দাগ, সেইগুলা??
- কেমনে কি? কই?
ঃ দাঁড়াও।
আমাকে কিছু ববলার সুযোগ নানা দিয়ে নবনী আমার কাছে এসে কানে কানে বললোঃ
ঃ এই যে লিপস্টিক। সকাল বেলা দিছি। তোমার জন্য। সুন্দর করে বাংলা শাড়ি পড়ছি। তোমার অই পাশে চা!! খাও, আমি দেখি আম্মু কি করে!!
- দাঁড়াও লিপস্টিক মুছে দেই।
বলে নবনীর হাত ধরে টানতেই আবার মেয়েটার চুল আমার মুখের ওপর ঘিরে ধরলো।
মেয়েটা এখন আমার স্ত্রী। ভাবতেই মন ভালো হয়ে যাচ্ছে। নবনী কিভাবে যেন মাথাটা নাড়া দিলো আর আমার মুখের চারপাশে মেয়েটার অবিন্যস্ত খোলা চুল ছড়িয়ে পড়লো।
আমি নবনীর চোখ দেখতে পাচ্ছি।
ভোরের আলোরা নবনীর চুলের মাঝে দিয়ে আমার মুখে পড়ছে।
আমি নবনীর কপালে একটা ছোট চুমু দিয়ে বললামঃ
আমি জানি তুমি আমাকে আমার চেয়েও ভালোবাসো, তাই আজ থেকে আমার কিছুই এলোমেলো থাকবে না।
জানি ঘরে ফিরলেই তোমার হাসিমুখটা থাকবে,
চোখের নরম শাসনে তুমি আমায় আগলে রাখবে,
জানো?
শুধু তোমার জন্য এতগুলো বছর অপেক্ষা করেছি।
অপেক্ষা করেছি এই দিনটার জন্য।
তুমি আমার পাশে আছো এই ব্যাপারটা সত্যি কল্পনা করেই একসময় ভালো লাগতো।
নবনী থামিয়ে দিয়ে বললোঃ
হইছে এখন থামো...
ঃ কেন?
- এত সাহিত্য না ঝেড়ে উঠো, মা আসবে!!
ঃ মা আসবে না। বলোঃ ভালো...
বাইরে হঠ্যাৎ মা ডাক দিলোঃ আকাশ বাবা!! ওঠ!! নয়টা বাজে।
আমি লাফ দিয়ে উঠে বসলাম। বসে বললামঃ আম্মা আমার খারাপ লাগতেছে। একটু পর উঠবো।
অভ্যাস বশত বলা বাক্যটা শুনে মা হয়তো হেসে চলে গেছে কিন্তু নিজেই অবাক হলাম।
ধ্যাত মা কি ভাবলো!!
আমি তো প্রতিদিনকার মত বলে দিছি!!
নবনীও ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে।
বললোঃ তুমি থাকো আমি যাই আর আমার শাড়ীর কুঁচি ঠিক করে দাও।
আমি উঠে ড্রয়ার থেকে পায়েলটা নবনীর অলক্ষ্যে পকেটে নিয়ে ফেলেছি।
শাড়ীর কুচি ধরে টান দিতেই কি যে হলো, পুরো শাড়িই খুলে নেমে আসলো।
আমি চোখ বন্ধ করে অপেক্ষা করছি।
নবনী আমাকে ঠাস করে আস্তে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো অসভ্য।
নবনীর পায়ে আমি পায়েল পরিয়ে দিয়ে বললামঃ
আমিও জানতাম , বিয়ের পরও তুমি আমাকে পিটাবা!! এইটা কিছু হইলো??
ঃ হুম হলো। আগেও যখন ক্যাফেতে হাত ধরার চেষ্টা করতে গিয়ে মাইর খাইতা, এখনও খাবা!! এখন শাড়ী পড়ায় দাও। আমি কেম্নে বাইরে যাবো!!
- ইউটিউব দেখে পড়ায় দিচ্ছি।
.
ইউটিউব দেখে ট্রাই করা বদলে আমি নবনীকে পেছন থেকে জড়ায় ধরে বললামঃ
একদিন রুমেই থাকো। আজ কোন কাজ করা লাগবে না!!
- আর তোমার মা কি ভাববে? ছিহ!! এই ছাড়ো!!
ঃ না।
- খুব সাহস বাড়ছে? বিয়ে হইছে বলেই এইগুলা করবা
ঃ কি আশ্চর্য। আমি না করলে কে করবে?
- কি সব বেহায়া মার্কা কথা!! একবার ও তো বলো নাই ভালোবাসি। তুমি আসলেও একটা ইয়ে!!
ঃ কিয়ে?
- জানি না।
বলেই নবনী আমাকে এত শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো যে আমি ব্যালান্স না করে খাটের ওপর পরে গেলামঃ
নবনী খিলখিল করে হেসে বললোঃ
আহারে আমার জিম করা সুপুরুষ!!
আমি আমতা আমতা করে বললামঃ
ইয়ে নবনী।
তোমার শাড়ী সম্ভবত মেঝেতেই।
নবনী আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে একহাত দিয়ে আমার হাত ধরে ওর খোলা পিঠের দিকে বসিয়ে দিয়ে।আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো,
কি ভয়ংকর মায়া ভরা দৃষ্টি,
কতটা ভালোবাসা আর বিশ্বাস আর সব কিছু ছাপিয়ে এক হতে পারার আনন্দটা হয়তো চোখের কোনে অশ্রু হিসেবে জমেছে।
আমি শক্ত করে জড়িয়ে নিলাম।
অন্য হাতটা মাথায় দিয়ে বললামঃ
বাবাকে মিস করতেছো।
ঃ হুম।
- খারাপ লাগতেছে?
ঃ হুম।
- একটা কাজ করি!!
ঃ হুম।
- রাগ করবা না তো!!
আমি মেয়েটাকে পাজোকোলা করে কোলে নিয়ে দেখতে থাকলাম।
নবনী রাগ করছে না কিংবা কিছু বলছে না।
তারপর হঠ্যাৎ চোখ রাঙ্গিয়ে বললোঃ
আগের কথাগুলা এমনি বলছি, ভাবছি একটু আদর করবা। আর তুমি? কিচ্ছু বোঝো না।
আমি আবার নবনীর দিকে ঠোঁট এগিয়ে আনতেই নবনী বললোঃ আম্মু
আমি ভয় পেয়ে নামিয়ে দিলাম।
নবনী আবার হাসতে লাগলো।
রাগ করে বাইরে বের হলাম।
যে দেখছে সেই হাসছে।
হঠ্যাৎ ছোট বোনটা বললোঃ
নির্লজ্জের মত লিপস্টিক দিয়ে ঘুরতেছিস ক্যান?
আমি দৌড়ে ঘরে আসতেই নবনী মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হাসতে লাগলো।
কি লাভ হইলো মেয়েটারে বিয়ে করে।
ভাবছিলাম বিয়ে পর ঠিক হবে।
নবনীকে আমি একটুও বুঝতে পারি না।
বিয়ের পর এখন এর প্রতিটা এক্সপ্রেশন আরো দুর্বোধ্য ঠেকছে।
মুখ ধুয়ে বের হবো। নবনী দেখি শাড়ী পরে ফেলেছে।
-তার মানে একটু আগে ইচ্ছা করে শাড়ী না পরতে পারার ভান করছো না?
আমি একটু জোরেই বললাম।
নবনী হেসে বাইরে যেতে যেতে বললোঃ
প্যান্টটা পরে নাও।
আমি আঁতকে নিচে তাকিয়ে দেখি সব ঠিক আছে।
নবনীর খোঁজে রান্নাঘরে কাছে যেতেই শুনি নবনী বলছেঃ
আম্মা আমি আজ রান্না করি?
আম্মা বের হয়ে আমাকে দেখে বললোঃ
তোর না শরীর খারাপ। যা শুয়ে থাক!!
ঃ না মানে মা, একটু রান্না ঘরে যাবো।
- কেন?
ঃ ব্রাশ করবো!!
বলেই আবার চুপ হলাম। ধ্যাত কি সব বলি। আশেপাশে সবাই হাসছে।
কেউ মুখ চেপে, আর কেউ জোরে।
সবচেয়ে জোরে যে হাসছে সে নবনী।
মাও হাসছে....
_ রিফাত চৌধুরী।
(০৯/০৩/২০১৬)
সকালঃ ১১ঃ০০
২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৪২
কাব্যপ্রেমী রিফাত বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৪৭
বিজন রয় বলেছেন: হা হা হা
ভাল লিখেছেন।
+++