নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোবির

নিজের বাপারে কিই বা লেখার আছে।

কোবির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মযুদ্ধের ইতিকথা

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৩

ক্রুসেডের শুরু যেভাবে

১০৯৫ সাল, ২৭শে নভেম্বের এক শীতের সকাল, ঘটনাস্হল ফ্রান্সের ক্লেয়ারমন্ট। এক বিশাল সমাগম হয়েছে পোপ দ্বিতীয় আরবানের আগমন উপলক্ষে। সেইদিন পোপ দ্বিতীয় আরবান ইউরোপীয় রাজাদের ধর্ম যুদ্ধের শামিল হওয়ার ধর্ম যুদ্ধের একটি বক্তৃতা দেন। ইতিহাসে সেইদিনের সেই বক্তৃতাটিকেই ক্রুসেডের সূচনাপর্ব বলে ধরে নেওয়া হয়। তবে ক্লেয়ারমন্টে পোপ দ্বিতীয় আরবান বক্তৃতার পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা করা যাক।

এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে বাইজেনটাইন সাম্রাজ্য তখন সেলজুক তুর্কী আক্রমণে নাকাল হচ্ছিলো। ১০৮৫ সালে মানজিকার্টের যুদ্ধে সেলজুক তুর্কদের হাতে বাইজেনটাইন সাম্রাজ্য নাকাল হওয়ার পর, এই সাম্রাজ্যের অনেক জায়গা হাতছাড়া হয়ে যায়, এমনকি বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়ে যায়। এই অবস্হায় সম্রাট নাইসফোরাস অনেক অজনপ্রিয় হয়ে পড়েন।

১০৯৫ সালের মার্চ মাসে বাইজেনটাইন সাম্রাজ্য ক্ষমতার পালাবদল হয়। ক্ষমতায় আসেন আলেক্সিস কোমনিয়াস, যিনি ইতিহাসের পাতায় প্রথম আলেক্সিস নামে পরিচিত। টালামাটাল বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যে পরিবর্তন আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করলেন। তিনি ইউরোপের বিভিন্ন রাজদরবারে সামরিক সাহায্য চেয়ে দূত পাঠানো শুরু করলেন। তিনি চিঠিতে লিখে পাঠালেন সেলজুক তুর্কী কর্তৃক বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যেের খ্রিষ্টিয়ান নাগরিকদের উপর অত্যাচারের কথা। ফ্লান্ডার্সের কাউন্ট (বর্তমানে বেলজিয়ামের অংশ)-এর কাছে পাঠানো চিঠিটি এখনও বেচে আছে। সেই চিঠিতে দেখা যায়, তিনি আবেগময় ভাষায় বলেছেন, কিভাবে সেলজুক তুর্কী শিশুদের ব্যাপটিজমে বাধা দেয়, সেলজুক তুর্কী খ্রিষ্টিয়ান নারী ধর্ষণের কাহিনী এবং এমনকি সেলজুক তুর্কীরা খ্রিষ্টিয়ান পুরুষদেরও ধর্ষণ করতো। সেইসাথে তিনি এটিও উল্লেখ করেন প্যাগান তুর্কীদের হাতে খ্রিষ্টিয়ানদের পবিত্র ভূমি দখলে থাকার কথাও। আলেক্সিস কোমনিয়াসের বার্তা ব্যাপক সাড়া জাগায় পুরো ইউরোপে, বিশেষ করে আলোড়িত হোন পোপ দ্বিতীয় আরবান। এর ফলস্বরূপ তিনি একটি পবিত্র যুদ্ধের ধারণা দেন ইউরোপের শাসকদের।
তবে মজার ব্যাপারটি হলো আলেক্সিস কোমনিয়াস নিজেও কোনদিন এইরূপ ধর্ম যুদ্ধের কথা স্বপ্নেও ভাবেননি, যার স্হায়ীত্ব ছিলো হবে কয়েক শত বছর ধরে এবং ইতিহাসের পাতায় ঠাই নেবে সবচয়ে দীর্ঘস্হায়ী মহাযুদ্ধ হিসেবে। তাঁর মূল লক্ষ্য ছিলো বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের হারানো গৌরব পুনরূদ্ধার এবং কনস্টান্টিনোপল'কে বিপদমুক্ত করা। তিনি ইউরোপ থেকে ধর্মযুদ্ধ করতে আসা ক্রুসেডারদের (ধর্মযোদ্ধা) এটাও শপথ করিয়েছিলেন যে, প্যালেস্টাইনের কিংবা বাইবেলে বর্ণিত পবিত্র শহরগুলো দখল হলেও সেগুলো যেনো তার শাসনের অধীনে আনা হয়। অবশ্য ধর্মযোদ্ধারা এই শপথ ভঙ্গ করে এবং নিজেরাই আলাদা রাষ্ট্র বানিয়ে শাসন শুরু করে। আলেক্সিস কোমনিয়াস ৩৭ বছর বাইজেনটাইন সাম্রাজ্য শাসন করেন এবং জীবিতকালেই দেখে যান ক্রুসেডাদের জেরুজালেম, এন্টিয়ক, এডেসা এবং ত্রিপোলি শহরগুলো দখল করতে। তিনি কোমনিয়াস নামক রাজবংশের গোড়াপত্তন করেন এবং সেইসাথে বাইজেনটাইন সাম্রাজ্যের ভিত্তি সুসংহত করেন।

(পরবর্তী পর্ব: "ঈশ্বরের ইচ্ছা")

১২/৯/১৫, ব্রিসবেন

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


রাজ্য ও ধর্ম ছিলো যুদ্ধের কারণ।

আজও ধর্ম যুদ্ধের কারণ

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৩

আকাশ আহমাদ বলেছেন: চাঁদগাজী ভাই ধর্ম কখনো কোনো যুদ্ধের কারণ হতে পারে না। আমরা নিজেদের স্বার্থ ও লোভ লালসার জন্য যুদ্ধ করি এবং ধর্মকে সামনে নিয়ে আসি। ধর্ম মানুষকে ভালবাসতে শেখায় যুদ্ধ করতে নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.