নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্দ কাজের সমালোচনা নয় নিজে ভাল কিছু করার চেস্টা করি । অন্যের সমালোচনায় কৃতিত্ত নেই কৃতিত্ত কেবল নিজের পরিবর্তনেই।

সহিহ কথা

একজন পতিতা যে ভাবে তার খদ্দর খোজে আমরা ও তার চেয়ে অনেক বেশি আমাদের স্বার্থ খুঁজি, এই খোঁজার শেষ হয় মৃত্যুর মাধ্যমে।সফলতার পিছনে নিত্য ধাবমান মানুষ গুলার মাঝে মৃত্যু শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয় তারপর ও আমরা মৃত্যুকে ভয় করি । সার্থক জীবনের মাঝে সুখ থাকলেও আমরা সাফলতার মাঝে পাওয়া ক্ষণিকের খুশিকেই বড় করে দেখি।

সহিহ কথা › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুনাফিক মুয়াবিয়ার পরিচয় ২য় পর্ব

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৩৬

কাতেব এ ওহী নামে অপপ্রচারঃ

যারা মুয়াবিয়াকে সাহাবীর সম্মান দিয়েও খুশি হতে পারেন নি তারাই তার নামের আগে “কাতেব এ অহি” জুড়ে দেন। মক্কা বিজয় এর আরও পরে মুয়াবিয়া ইসলাম গ্রহন করেন। কুরআন এর প্রায় সব আয়াত তখন নাজিল হয়ে গেছে। কুরআন সম্পূর্ণ হতে তখন মাত্র আর কয়েকটি আয়াত বাকি ছিল। অহি লিখার সৌভাগ্য হল তার কি ভাবে? তাছাড়া কুরআন এর কোন আয়াত মুয়াবিয়া লিখলেও তাতে কি হয়েছে? কখনও কখনও মুনাফিক দের সর্দার আবদুল্লাহ ইবনে উবাইকে কে দিয়েও অহি লিখিয়েছেন বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। অথচ এই উবাইকে মুনাফিক হিসেবে চিহ্নিত করে সুরা মুনাফেকুন নাজিল হয়েছে। মারওয়ানকেও অনেকে কাতেব এ অহি বলে থাকেন কিন্তু তাকে তো সাহাবার মর্যাদা দেয়া হয় না। মুয়াবিয়ার অসংখ্য মুনাফেকি থাকা সত্ত্বেও যারা মুয়াবিয়ার সমালোচনা করলে ঈমান চলে যাবে বলে ফতোয়া দেন তাদের আগে নিজের ঈমান কতটুকু আছে তা ভেবে দেখা উচিত।



মুয়াবিয়ার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসঃ

কিয়ামতের ময়দানে কিছু সাহাবা নামধারী ও রাসুল সাঃ এর মধ্যে যে দেয়াল থাকবে তা পূর্বে সহিহ হাদিস হতে বর্ণনা দেয়া হয়েছে। ইমাম শাফেয়ী রাঃ এর প্রধান শিস্য আল্লামা মজনী বলেন – প্রত্যেক সাহাবার সব ধরনের কার্যকলাপ , প্রত্যেক এর জন্য হেদায়াত স্বরূপ হতে পারে। যে সমস্ত সাহাবা কতৃক গুণা সংগঠিত হয়েছে তাদের ওই সমস্ত কার্যকলাপ কে যদি হেদায়েত এর শিখা হিসেবে উল্লেখ করা হয় হয় তবে তা হবে মারাত্মক ভুল। ( জামে বয়ান আল ইলম) রাসুল সাঃ এর বিপরীত চরিত্রের কোন লোক সাহাবা হতে পারে না। তাছাড়া কুরআন মতে সাহাবাদের চরিত্র আমাদের জন্য অনুসরণ যোগ্য না। আল্লাহ্‌ বলেন- সুতরাং অনুসরনীয় আদর্শ হচ্ছে মহানবী সাঃ এর চরিত্র , অতঃপর আল্লাহ্‌ পাক যাদের কে পবিত্র কুরআন এ পাক পবিত্র ঘোষণা করেছেন। (সুরা আহজাব আয়াত-২১) এই খানে পাক পবিত্র বলতে আহলে বায়াত বা নবী বংশ কে বলা হয়েছে। তাই মহানবী ও আহলে বায়াত আমাদের জন্য আদর্শ , সাহাবা নয়। তবে অধিকাংশ সাহাবা উত্তম চরিত্রের অধিকারী ছিল তবে সব সাহাবা নয়।

আল্লামা ইবনে জওযী রাঃ বর্ণনা করেন- আহমদ ইবনে হাম্বল তার পুত্রের প্রশ্নের জবাব এ বলেন –হজরত আলী আঃ এর মর্যাদা সম্পর্কে যে সমস্ত হাদিস মহানবী বলে গেছেন আর কোন সাহাবা সম্পর্কে এত হাদিস বর্ণিত হয় নি। কিন্তু হজরত আলী আঃ এর শত্রুরা এই সব হাদিস বিকৃত করে ওই সব হাদিস এ মুয়াবিয়ার নাম ঢুকিয়ে দেন। অতঃপর মুয়াবিয়ার নামে নতুন হাদিস রচনা শুরু হয়ে গেল। ( আলে রাসুল ও মুয়াবিয়া)

সাওয়াইক এ মুহারিকা নামক কিতাব এ বর্ণিত আছে যে- হজরত আলী আঃ এর নামের স্থলে মুয়াবিয়ার নাম জুড়ে দিয়ে উপস্থিত লোকদের সামনে হাদিস বর্ণনা করা হত। (রওফল হেজাব) ইমাম ইসহাক বিন ইব্রাহিম হানাজালী রাঃ বলেন- ফজিলতে মুয়াবিয়ার কোন হাদিস ই সহিহ না। (রওফল হেজাব)

আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ুতি রাঃ বলেন- মুয়াবিয়ার ফজিলতের প্রচলিত হাদিস গুলা মওজু ( তাজকেরাতুল মওজুয়াত, সরহে সাফারুস সআদ)

হজরত আবদুল হোক মুহাদ্দিসে দেহলভি রাঃ বলেন- বনু উমাইয়ার কর্মচারী বৃন্দ ও মসাহেব গণ যে সমস্ত হাদিস রচনা করতেন তাহাদের মধ্যে অন্যতম হলেন মহালিব বিন আবি সাফরাহ, (সরহে সাফারুস সআদ)



মুয়াবিয়া সম্পর্কে বিশিষ্ট সাহাবা ও আওলিয়া দের মতামত ১ হজরত আলী আঃ বলেন-আমার ও মুয়াবিয়ার মহব্বত এক সাথে কোন ব্যক্তির হৃদয় আঃ থাকতে পারে না। (নাসাঈ এ কাফিয়া )

২ হজরত ওমর রাঃ বলেন – সে (মুয়াবিয়া) তোলাকাদের মধ্যে গণ্য। তার জন্য খেলাফত জায়েজ নহে। ( রওফল হেজাব,ইস্তিয়াব ইবনে আব্দুর রব)

৩ হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাঃ বলেন- আল্লাহর কসম যে অবস্থায় মুয়াবিয়া ক্ষমতা নিয়েছে , আমি হলে তা কখনো গ্রহন করতাম না। (ইবনুল আসীর)

৪ আবুল আওলিয়া হজরত হাসান বসরি রাঃ বলেন- মুয়াবিয়ার পরকাল ধ্বংস হবার জন্য শুধু এইটাই যথেষ্ট যে , সে ইয়াজিদ কে তার উত্তরাধিকারী মনোনীত করে তার বায়াত গ্রহন করে।( আবুল ফেদা, ইবনুল আসীর)

৫ আবুল আওলিয়া হজরত হাসান বসরি রাঃ আরও বলেন-মুয়াবিয়ার চারটি কাজের যে কোন একটি তার আখেরাত ধ্বংস হবার জন্য যথেষ্ট। ক, মুসলিম উম্মাহ ও বৈধ ইসলামী খেলাফতের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন করা ও শূরার পরামর্শ ব্যতীত ক্ষমতা গ্রহন করা খ, শরাবি ও লম্পট পুত্র ইয়াজিদ কে স্থলাভিষিক্ত করা। গ, যিয়াদ (তার পিতার জারজ সন্তান) কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আপন ভাই হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া। ঘ, মহানবীর বিশিষ্ট সাহাবা হাজর বিন আদি রাঃ ও তার সঙ্গিদের বিনা দোষে হত্যা করা। ( ইবনুল আসীর ৩য় খণ্ড, আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া ৯ম খণ্ড)

উল্লেখ্য যে মুয়াবিয়ার বাবা আবু সুফিয়ান তায়েফ এ এক ঘরে রাত্রি যাপন করেন। সেখানে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে সামিয়া নামক এক গ্রীক দাসীর সাথে সহবাস করেন। কিছুদিন পর তার ঔরস এ এক ছেলে জন্ম গ্রহন করেন । আবু সুফিয়ান লজ্জায় পিতৃত্ত অস্বীকার করে । এই জন্য এই ছেলের নাম হয় জিয়াদ ইবনে আবিহ অর্থাৎ জিয়াদ কারো পুত্র নয় । মুয়াবিয়া ও তাকে ভাই বলে স্বীকার করে নি। কিন্তু আমীর হবার পর ও হজরত আলী আঃ এর বিরুদ্ধে যখন মাঠে নামল তখন জিয়াদ কে ভাই বলে স্বীকৃতি দিয়ে নিজ দলে টেনে নিল।

ইমাম যুহরী রাঃ বলেন –মুয়াবিয়ার এই কাজটি নিঃসন্দেহে শরিয়ত বিরোধী। ( আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া ৮ম খণ্ড)

যে সব সাহাবা ও অলিরা মুয়াবিয়া কে পথ ভ্রষ্ট মানতেন তাদের তালিকা- ১ উম্মুল মুমেনিন হজরত আয়েশা রাঃ ২ উম্মুল মুমেনিন হজরত উম্মে সালমাহ রাঃ ৩ হজরত আবু দারদা রাঃ ৪ হজরত আম্মার বিন ইয়াসির রাঃ ৫ কায়েস বিন সাদ রাঃ ৬ আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ ৭ আবু জর গিফারি রাঃ ৮ হাজর বিন আদী রাঃ ৯ আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাঃ ১০ হজরত ওয়াইস করণী রাঃ ১১ হজরত হাসান বসরী রাঃ ১২ মুয়াবিয়া বিন ইয়াজিদ বিন মুয়াবিয়া (মুয়াবিয়ার পৌত্র) ১৩ আল্লামা ইবনে আসির ১৪ শাহ আবদুল আজিজ মুহাদ্দিস দেহলভি ১৫ শাহ আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভি

হাদিসের নামে জাল হাদিসঃ

মহানবী বলে গেছেন –আমার নামে প্রচলিত হাদিস যদি কোরানের ভাব ধারার বিরোধী হয় তাহলে জানবে তা হাদিস নয়। (তাফসীরে আহমদিয়ার মুকাদ্দামার) সুরা আস শুরার ২৩ নং আয়াত নাজিল হবার পর সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন –ইয়া রাসুল আল্লাহ্‌ কারা আপনার নিকটবর্তী যাদের ভালবাসা আল্লাহ্‌ আমাদের জন্য ওয়াজিব করেছেন? উত্তরে রাসুল সাঃ বললেন আলী, ফাতেমা, হাসান, হুসাইন (ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী)

মুয়াবিয়ার উপর লানত জায়েজঃ

১ মুয়াবিয়ার উপর লানত জায়েজ এই বিষয় এ কিতাব রচনা করেছেন হজরত আল্লামা বাবা খলিল আহমদ চিশতী, সাবেরী রাঃ এর কিতাব “মুয়াবিয়া পর জওয়াজে লানত কি শরিয়া দলিল” “মওলা আউর মুয়াবিয়া” এবং “কাওলে ফয়সল” এই সমস্ত কিতাব এ তিনি পবিত্র কুরআন হাদিস এর আলোকে ইজমা, কিয়াস ভিত্তিক মুয়াবিয়াকে মুনাফিক প্রমান করেছেন। ২ মুয়াবিয়ার মত শাসক দের জন্য আল্লাহ্‌ নিজে কুরআন এ লানত বর্ষণ করেছেন- আমি তাদের কে নেতৃত্ব দান করেছিলাম । তারা মানুষকে দোজখ এর পথে আহবান করত। কিয়ামতের দিন তারা কোন সাহায্য পাবে না। আমি তাদের প্রতি লানত বর্ষণ করি। (সুরা কাছাছ- ৪১-৪২) ৩ মুয়াবিয়ার প্রতি রাসুল সাঃ নিজে লানত বর্ষণ করেছেন- হে আল্লাহ্‌ মুয়াবিয়া ও আমর ইবনে আস কে ফিতনার মধ্যে ফেলে দাও এবং তাদের কে দোজখে নিক্ষেপ কর। (মসনদে আবু ইয়ালা) ৪ একদিন প্রিয় নবী সাঃ মুয়াবিয়া কে ডেকে পাঠান, এ সময় মুয়াবিয়া আহার রত ছিল। তাই তিনি আসতে পারবে না বলে জবাব দেন। তখন রাসুল সাঃ বলেন- হে আল্লাহ্‌ মুয়াবিয়ার পেট যেন কখনো না ভরে। ( মুসলিম শরীফ, নেসায়ি শরীফ) ৫ যখন মুয়াবিয়াকে তোমরা আমার মিম্বরে দেখবে তখন অবশ্যয় কতল করবে। ( শরহে নাহাজ আল বালাঘা, তারিখ এ বাগদাদ, ইবনে হাজার আসকালানির- তাহজিব আত তাহজিব, সিফফিন প্রভৃতি) ৬ যে আলীর সাথে শত্রুতা করে সে কাফের, তার আবাস দোজখ (মুয়াদ্দাতুল কোবরা –সৈয়দ আলী বিন সাহাবুদ্দিন মুহাম্মাদ হামাদানি রাঃ) ৭ যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম আমার সুন্নত কে পরিবর্তন করবে সে বনু উমাইয়ার একজন ( নেসায়ি, ইবনে মাজা, আবু দাউদ) ৮ মওলা আলী বলেন- মুয়াবিয়া, আমর ইবনুল আস ও আবু ময়িদ দিন কুরানের অনুসারি নয় ( সরহে ইবনে আবিল হাদিদ)

মুয়াবিয়া সম্পর্কে হজরত আলীর মতামতঃ জঙ্গে নাহরাওয়ান থেকে ফেরার পর মওলা আলী আঃ জনগণের উদ্দেশ্যে এক খুৎবা প্রদান করেন । ওই খুৎবায় বলেন-আল্লাহ্‌ তোমাদের কাছ থেকে পরীক্ষা নিয়েছেন এবং তোমাদের বিজয় দান করেছেন। তোমরা যত শীঘ্রয় সম্ভব মুয়াবিয়া এবং তার দোসর দের বিরুদ্ধে জেহাদে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েছ।

মওলা আলী আঃ আরও বলেন- আমার দুশমনের সাথে যে বন্ধুত্ত রাখে সে আমারও দুশমন। আমি তারও বন্ধু যে আমার বন্ধুর সাথে বন্ধুত্ত রাখে।

আল্লামা ইমাম বায়হাকি রাঃ বলেন-মুয়াবিয়া ঈমানে দাখিল হয় নি যে সে তা থেকে খারিজ হবে। বরং সে হুজুর আকরাম সাঃ এর দিকে কুফুরি থেকে নেফাক এর দিকে এসেছে। মহানবীর ইন্তেকাল এর পর তার আসল রুপ প্রকাশ পেয়েছে। (রাওজাতুল জান্নাত)

হজরত আল্লামা ইমাম রাগেব ইস্পাহানী এর মতে- মুয়াবিয়া মওলা আলী আঃ এর সাথে এই জন্য শত্রুতা করেছিল যে , যে কোন প্রকার এ তার স্বার্থ সিদ্ধি হোক, এই পন্থা হারাম হোক বা হালাল হোক তাতে কিছু যায় আসে না। মতলব হাসিল করার জন্য সে যে কোন দ্বীন বিরুধি কাজ করতে যেমন কাজ করত না , তেমনি না ছিল তার কোন আল্লাহর গজবের ভয়।



আমাদের মাজহাব এর ইমাম হজরত আবু হানিফা রাঃ বলেন- আমার এতেকাত হল আমি যদি সিফফিন এর যুদ্ধে মওলা আলী আঃ এর সৈন্য দের মধ্যে থাকতাম তাহলে আমি মুয়াবিয়ার মোকাবেলায় মওলা আলী কে সাহায্য করতাম এবং মওলার পক্ষে মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতাম। (আত তামহিদ ফি বয়ানিল তাওহিদ-আল্লামা আবু শুকর সালমী )



মুয়াবিয়া পন্থী পাঠকদের বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করুন ইমাম আবু হানিফা বলেন নাই তারা ২ জন সাহাবা আমি তাদের যুদ্ধে নীরব থাকবো। যারা মুয়াবিয়ার মত মুনাফিক কে ইস্তিহাদ জনিত ভুল বলে সাহাবা মানতে চান তাদের জন্য পূর্বেও অনেক ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে প্রমান সহ এখন ও দিয়েছি। কিন্তু চন্দ্র দ্বিখণ্ডিত হবার পর ও যেমন মক্কার কাফেররা রাসুল এর উপর ঈমান আনেন নি তেমনি অনেক প্রমান পাবার পর ও যারা বেতন ভুক্ত কাঠমোল্লাদের ফতোয়া ছাড়া অন্য কিছু মেনে নিতে পারেন না তাদের সম্পর্কে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। বুঝা টা তকদির না বুঝাটা ও তকদির। হজরত আলীর সুস্পষ্ট ঘোষণা “আমার ও আলীর ভালবাসা এক হৃদয় এ থাকতে পারে না” এমন হাদিস থাকার পর ও দেশের কিছু মোল্লা মুফতি এক হৃদয় এ ২ জনের ভালবাসা কে স্থান দেয়ার কথা বলেন। তাদের কথা সত্য হলে মওলা আলীর কথা কে ভুল বলতে হয়। যা আমার পক্ষে সম্ভব না। তাই আপনারা আমাকে কাফির, বেয়াদব, শিয়া, যাই বলেন আমি সবসময় মুয়াবিয়া কে মুনাফিক বলে যাব। কারন আমি বেতন খোর মোল্লাদের কথা বর্জন করে মওলা আলীর কথা কে মেনে নিলাম।



হানাফি মাজহাব এর বিখ্যাত কিতাব “তাওজি ওয়া তলয়ীজ” কিতাব এ উল্লেখ আছে –যে সমস্ত সাহাবা সর্ব সম্মত বিচার এ বুজুর্গ ও প্রসিদ্ধ তারাই প্রকৃত সাহাবা। বাকীরা সাধারন মানুষের মত এবং তাদের মধ্যে আইন অমান্যকারীও ছিল। উক্ত কিতাব এ মুয়াবিয়াকে বিদ্রোহী, প্রতারক, ও হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। (“তাওজি ওয়া তলয়ীজ” ২য় খণ্ড)

আজকে যারা মুয়াবিয়া পন্থী তাদের দলের বিখ্যাত কিতাব ফতোয়ায়ে শামী। মাসিক তরজুমান এ ফতোয়ায়ে শামী থেকে প্রচুর রেফারেঞ্চ দেয়া হয়। আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত এর মশহুর কিতাব ফতোয়ায়ে শামী তে উল্লেখ আছে- হজরত আলী এবং তার অনুসারীরা সঠিক পথে ছিল এবং তার দুশমন মুয়াবিয়া ছিল বিদ্রোহী।



আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত এর মশহুর কিতাব হিদায়া তে উল্লেখ আছে- সে সময় সাহাবাগন মুয়াবিয়ার পক্ষ থেকে বিচারক এর পদ গ্রহন করেছেন অথচ সে সময় ন্যায় হজরত আলীর সাথেই ছিল। এখানে মুয়াবিয়া কে জালিম এবং মওলা আলী কে ন্যায় পরায়ন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। (হিদায়া ২য় খণ্ড)



মুয়াবিয়া কতৃক আসহাবে কাহাফ এর সাথে বেয়াদবিঃ

ইবনে আবি সায়বা, ইবনে মুনযের, ইবনে আবি হাতেম হজরত ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন- আমি মুয়াবিয়ার সাথে রোমীয়দের মোকাবেলায় গজওয়াতুল মুযিক নামক যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। এ সময় আমরা আসহাবে কাহাফ এর গুহার নিকট উপস্থিত হই, মুয়াবিয়া আসহাবে কাহাফ এর মৃতদের প্রত্যক্ষ করার ইচ্ছা পোষণ করল। কিন্তু আমরা তাতে বাধা দিলাম কারন আল্লাহ্‌ স্বয়ং রাসুল সাঃ কে তাদের মৃতদেহ প্রত্যক্ষ করতে নিষেধ করেছেন, তিনি তো আপনার চেয়েও শ্রেষ্ঠ ছিলেন। মুয়াবিয়া এই কথা কর্ণপাত না করে কয়েকজন কে ভিতর এ পাঠালেন । তারা গুহার মধ্যে প্রবেশ করতে চাইল তখন প্রচণ্ড এক দমকা হাওয়া ঝড়ের আকারে প্রবহিত হয়ে তাদের কে উড়িয়ে বাহির করে দিল। অতঃপর মুয়াবিয়া ভীত হয়ে প্রত্যক্ষ করার ইচ্ছা ত্যাগ করল। (তাফসীরে রুহুল মায়ানি ৫ম খণ্ড, তাফসীরে মা’আরেফুল কুরাআন-মুফতি আহমদ শফি সৌদি বাদসা কতৃক প্রচারিত



মুয়াবিয়ার জগত প্রীতিঃ

অনেকে মুয়াবিয়াকে বুজুর্গ, সাহাবা, কাতেব এ ওহী বলেন কিন্তু মুয়াবিয়া নিজেই বলে গেছেন নিজের সম্পর্কে –যদি ইয়াজিদ এর ভালবাসা আমাকে অন্ধ করে না দিত তবে আমিও সত্য পথে অগ্রসর হতাম। (তারিখ, কামিল, আল্লামা ইবনে ইয়াসির)

মুয়াবিয়া মানুষের সামনে গর্ব করে বলতেন- দুনিয়া আমার মা এবং আমি তার বেটা (ওকলুদ ফরিদ)

ইমাম হাসান আঃ পত্রের মাধ্যমে মুয়াবিয়াকে মহানবীর শ্রেষ্ঠ তম শত্রুর পুত্র বলে ধিক্কার দিয়েছেন। নবীজীর সাথে কিছুদিন থাকলেই তাকে সাহাবা বলা যাবে না। সাহাবা হতে হলে রাসুল সাঃ এর নীতি ও আদর্শের অনুসারি হতে হবে। প্রিয়নবি বলেছেন হজরত আলীর শত্রু আল্লাহর শত্রু।



মুয়াবিয়া সম্পর্কে স্পষ্ট ফায়সালা হয়ে গেছে। মুয়াবিয়া কুরআন ও রাসুল এর আদর্শ বিরোধী। মধ্যযুগীয় বেতন ভুক্ত , ফতোয়াবাজ , অন্ধ মোল্লাদের মুয়াবিয়া প্রীতি জগতে টিকে থাকবে না। সত্য সমাগত মিথ্যা দূরীভূত ।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.