নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মন্দ কাজের সমালোচনা নয় নিজে ভাল কিছু করার চেস্টা করি । অন্যের সমালোচনায় কৃতিত্ত নেই কৃতিত্ত কেবল নিজের পরিবর্তনেই।

সহিহ কথা

একজন পতিতা যে ভাবে তার খদ্দর খোজে আমরা ও তার চেয়ে অনেক বেশি আমাদের স্বার্থ খুঁজি, এই খোঁজার শেষ হয় মৃত্যুর মাধ্যমে।সফলতার পিছনে নিত্য ধাবমান মানুষ গুলার মাঝে মৃত্যু শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয় তারপর ও আমরা মৃত্যুকে ভয় করি । সার্থক জীবনের মাঝে সুখ থাকলেও আমরা সাফলতার মাঝে পাওয়া ক্ষণিকের খুশিকেই বড় করে দেখি।

সহিহ কথা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামের আলোকে জ্যোতির্বিদ্যা

০৪ ঠা জুন, ২০১৬ রাত ১২:০০

মানসুর দাভানিকি বাগদাদকে রাজধানী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন। তিনি জ্যাতির্বিজ্ঞানীদেরকে তাঁর দরবারে নিয়ে এসেছিলেন এবং পরবর্তীকালে অন্যান্য শাসকও তাঁর ঐ কাজকে অনুসরণ করেছিল। খলিফা মানসুর জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের সাথে পরামর্শ না করে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজে সাধারণত হাত দিতেন না। জযেোতির্বিজ্ঞানে মুসলমানদের আগ্রহ জাগার পেছনে আগ্রহ বা প্রেরণা জুগিয়েছিল আলকোরআন। কেননা কোরআন মুসলমানদেরকে আল্লাহর সৃষ্টিজগত বিশেষ করে আকাশ, যমিন, চাঁদ, সূর্য, নক্ষত্র ইত্যাদি নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করার জন্যে উদ্বুদ্ধ করেছে মুসলমানদের নামায আদায় করা, হজ্জ্ব করা, রোযা রাখা, ক্বেবলার দিক নির্নয় করা, হত্যা নিষিদ্ধ হারাম মাসগুলোর মর্যাদা রক্ষা করা ইত্যাদি বিচিত্র ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করার সাথে জ্যোতির্বিজ্ঞানের নিবীড় সম্পর্ক রয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতি মুসলমানদের আগ্রহ ছিল বেশি। মুহাম্মাদ ইবনে মূসা খাওয়ারেযমি ছিলেন অপর এক ইরানী মুসলিম মনীষী। তিনি গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, ইতিহাস এবং ভূগোলের মতো বিভিন্ন বিষয়ে নামকরা পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। ইবনে নাদিম তাঁর নির্ঘন্ট বইতে খাওয়ারেযমির দুটি অ্যাস্টরেোনমিকেল চার্টের কথা উল্লেখ করেছেন। খাওয়ারেমির এই অ্যাসট্রোনমিকেল চার্ট ইসলামী যুগের প্রথম গ্রন্থ যাতে কেবল ত্রিকোণামিতির কথাই বলা হয় নি, বরং এই গ্রন্থের ভূমিকায় জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রতিও ইঙ্গিত করা হয়েছে। মুসলমানদের মাঝে জ্ঞান-বিজ্ঞানের যে শাখাটির চর্চা সবচেয়ে বেশি ছিল তা হলো জ্যোতির্বিজ্ঞান।

মুসলিম দার্শনিকগণ জ্যোতির্বিজ্ঞানে ইরানী ও ভারতীয় অর্জন বা উদ্ভাবনীগুলোকে কাজে লাগিয়ে অনেক মূল্যবান অবদান রেখে গেছেন। বিভিন্ন প্রকার সোলার সিস্টেম ঘড়ি তৈরি, গ্রহ নক্ষত্রের উচ্চতা ও গতিবিধি নির্নায়ক যন্ত্র অ্যাসট্রোলেইব আবিষ্কার, সময় নির্নায়ক সরঞ্জাম ইত্যাদি মুসলিম মনীষীদের অবদান। মুসলিম মনীষীগণ বহুধরনের অ্যাসট্রোলেইব তৈরি করেন। এগুলোর কার্যক্রম এতো উন্নত মানের ছিল যে ব্যবহারিক দিক থেকে এগুলো বর্তমান যুগের কম্পিউটারের নির্ভুল ফলাফলের সাথে তুলনাযোগ্য। সময় নির্নায়ক বিদ্যা বা ক্রোনোলজি সম্পর্কে মুসলমান বিজ্ঞানীরা যখন ব্যাপক গবেষণা চালিয়েছেন তখন ইউরোপে এই সময় নির্দেশক ঘড়ি বা যন্ত্রের কোনো অস্তিত্বই ছিল না।
মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানগুলোর মাঝে একটি হলো ভূপৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের উপায় নিয়ে চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালানো। ইতিহাসের বিচিত্র তথ্যপঞ্জী অনুযায়ী আব্বাসীয় খলিফা মামুন জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আদেশ দিয়েছিলেন ভূপৃষ্ঠকে পরিমাপ করার জন্যে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তখন তাদের পূর্ববর্তী মনীষীদের বিশেষ করে গ্রিক মনীষীদের রেখে যাওয়া পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করে নতুন আরেকটি পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন। এই পদ্ধতিটা বেশ আকর্ষণীয় ছিল সবার কাছে। এর কিছুদিন পর আবু রেইহান বিরুনি অ্যাসট্রোলেইব ব্যবহার করে আরো একটি পদ্ধতি আবিষ্কারে হাত দেন। তাঁর এই বিখ্যাত আবিষ্কারটির বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে তাঁরই লেখা ভূপৃষ্ঠ পরিক্রমা নামক বইতে।
নক্ষত্রবিদ্যার ক্ষেত্রে মুসলিম মনীষীদের কাজের সূত্রপাত ঘটে টলেমির বই অনুবাদের মধ্য দিয়ে। তাঁর বইটি অনুবাদের পর এর ব্যাখ্যাধর্মী আরো অনেক বই লেখা হয়। সেইসব গবেষণা থেকে টলেমির দৃষ্টিভঙ্গির কিছু নেতিবাচক দিক বেরিয়ে আসে মুসলিম বিজ্ঞানীদের বিবেচনায়। তারা টলেমির দৃষ্টিভঙ্গির সাথে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বৈপরীত্য পোষণ করে এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মুসলমান বিজ্ঞানীদের সেইসব মতামত বর্তমানে ‘কোপারনিক-পূর্ব' দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে বিখ্যাত। টলেমির জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত লেখাগুলোর বহু অনুবাদ এবং অসংখ্য ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়েছে এগুলোর মধ্য থেকে তিনটি অনুবাদ এবং বেশ কিছু বিশ্লেষণ এখনো অবশিষ্ট রয়েছে। টলেমি পাঠের ফলে মুসলিম বিজ্ঞানীগণ নক্ষত্রের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে এস্ট্রোনমিকেল টেবলস তৈরিতে উদ্বুদ্ধ হন এবং পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থৈরি কেরন। নক্ষত্র সম্বন্ধে যথার্থ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার লক্ষ্যেই এইসব চেষ্টা প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল এবং চেষ্টাগুলো সফলও হয়েছিল।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর মাঝে একটি ছিল সৌরবর্ষের দৈর্ঘ নিরূপণ করা। এ লক্ষ্যে মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অবিরাম পর্যবেক্ষণের ফলে মুসলিম বিশ্বে সময় গণনা বিদ্যার উন্নয়ন ঘটে। সৌরবর্ষের ৈদৈর্ঘ গণনা করতে গিয়েই তাঁরা মুসলিম বিশ্বে পঞ্জিকার উদ্ভব ঘটান। জালালী পঞ্জিকাই তার ঐতিহাসিক উদাহরণ। এভাবেই সৌরবর্ষের সময়সীমা বা কালক্ষণ বাত্তানী এবং খযানীর মতো মুসলিম বিজ্ঞানীদের হাতেই নিরূপিত হয়।
এস্ট্রোনমিকেল টেবলস তৈরির জন্যে বারবার পর্যবেক্ষণ চালানোর ফলে নক্ষত্র সম্পর্কে মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ নতুন নতুন তথ্য দিতে শুরু করলেন। মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ বুঝতে পারলেন জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কে পূর্বেকার ধারণাগুলোতে সমস্যা রয়েছে। মুসলমান জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ সুষ্ঠু পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে টলেমির থিওরিগুলোর ব্যাপারে প্রশ্ন বা সন্দেহের জন্ম দিলেন। ইবনে সিনা তাঁর জযেোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত লেখায় এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যবেক্ষণের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনিও মুসলমান জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতোই টলেমির থিওরির গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেন। টলেমির থিওরিটি ছিল ‘এই পৃথিবী হচ্ছে সমগ্র বিশ্বের কেন্দ্র।'
টলেমির থিওরিটির ব্যাপারে আরো যেসব জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিরোধীতা করেছেন তাদের মধ্যে খাজা নাসিরুদ্দিন তুসি অন্যতম। তিনিও টলেমির থিওরিটির অনেক ভুলভ্রান্তি তুলে ধরেছেন। টলেমির থিওরিটির মধ্যে ছিলো গ্রহ-নক্ষত্রগুলো পৃথিবীর চারদিকে ঘোরে-তাঁর এই মতামত সম্পর্কে সন্দেহ েোষণ করেন তুসি। নাসির উদ্দিন তুসির এই মতামত মুসলিম বিশ্বের একেবারে পশ্চিম প্রান্ত তথা স্পেনসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্বের বিজ্ঞানীগণ অনুমোদন করেন। নাসিরুদ্দিন তুসির পর আবু রেয়হান বিরুনি, ইবনে হিশামসহ আরো অনেক মুসলিম বিজ্ঞানীই টলেমির থিওরির সমালোচনা শুরু করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে কপলার এবং কোপারনিক মুসলিম বিজ্ঞানীদের প্রভাবিত ছিলেন বিশেষ করে খাজা নাসির উদ্দিন তূসির প্রভাব তাদের ওপর ব্যাপকভাবে পড়েছিল।
মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের উচ্চতর গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয় চিকিৎসা বিদ্যায় তাদেঁর অগ্রগতির পাশাপাশি জ্যোতির্বিজ্ঞানেও তাদের অবদান উল্লেখযোগ্য। মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আহমাদ বিন আব্দুল্লা.. মারুযি। মারুযি হিজরী ২০৯ থেকে ২২০ সালর পর্যন্ত নক্ষত্র পর্যবেক্ষণে আত্মনিয়োজিত ছিলেন। চাঁদের পরিক্রমণও নিয়েও তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। আবু আব্দুল্লা.. মুহাম্মাদ বিন জাবের বাত্তানী একজন বিখ্যাত মুসলিম গণিতবিদ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানী ছিলেন। হিজরী ২৪৪ সালের দিকে তিনি হাররানে জন্মগ্রহণ করেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁর অবদানগুলো খুবই মূল্যবান। জ্যোতির্বিজ্ঞানে তাঁর নতুন নতুন দৃষ্টিভঙ্গির জন্যে তিনি মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মাঝে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। আবু রেয়হান বিরুনিসহ মুসলিম অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী জাবের বাত্তানীর দৃষ্টিভঙ্গিগুলো ভ্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেন। নতুন চাঁদ দেখার ব্যাপারে তিনি নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি দেন। সূর্যের পরিভ্রমণ সম্পর্কে নিকোলাস যে থিওরি দেন তা সুস্পষ্টভাবেই বাত্তানীর দৃষ্টিভি্গির প্রভাবে প্রভাবিত। বাত্তানীর উদ্ভাবনীগুলো সমগ্র ইরেোপে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।
সৌরবিজ্ঞানে রেো যেসব জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহা মূল্যবান অবদান রেখে গেছেন তাদের মধ্যে আবুল ভাফায়ী বুযজানী নাম উল্লেখেোগ্য। ৩২৮ হিজরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাগদাদে তিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণা কাজগুলো চালিয়েছিলেন। চন্দ্রগহণের সময় নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে আবু রেয়হান বিরুনির সাথে তিনিও সহয়োগিতা করেছিলেন। বুজডানীও জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মূল্যবান বহু বই লিখেছেন। এগুলোর মাঝে পূর্নাঙ্গ অ্যাস্ট্রোনমিকেল চার্ট একটি। কী করে দূরত্ব পরিমাপ করা যায়, পাহাড়ের উচ্চতা নির্ণয় করা যায়, নদীর দৈর্ঘ নির্ধারণ করা যায় সেসব যন্ত্র থৈরির দিক-নির্দেশনা দিয়ে গেছেন এ বইতে। এই যন্ত্র দিয়ে অ্যাসট্রোলেইবের কাজও চালানো যেত।

জ্যোতির্বিদ্যায় মুসলমানদের অবদান
মনসুর আহমদ : যখন মুসলিম বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞান চর্চায় অনেকদূর এগিয়েছিলেন তখন পাশ্চাত্যে তাদের সমকক্ষ একজন বিজ্ঞানীও ছিলেন না। ৭৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে আববাসীয়দের উত্থান ইসলামী শাসনের শক্তি, জৌলুস ও সমৃদ্ধির যুগ সূচনা করে। ৭৫০ থেকে ১১০০ সালের মধ্যে মুসলিম জগতে বিভিন্ন বিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটে।
আল্লাহর সৃষ্ট বিশ্ব জগতকে গভীরভাবে উপলব্ধি করার বাসনা থেকে মুসলমানদের মনে জাগে বিজ্ঞানের কৌতুহল। সে সময় জ্যোতির্বিদ্যায় ভারত ছিল এগিয়ে। জ্যোতির্বিদ্যায় হিন্দুরা ছিল আরবদের শিক্ষক। অধ্যাপক জাচাউ তার আলবেরুনী কৃত ভারতবর্ষের ইতিহাসের ইংরেজী অনুবাদের ভূমিকায় লিখেছেন, ‘আববাস বংশীয় খলিফাদের রাজত্বকালে দুই সময়ে আরবরা হিন্দুদের কাছ থেকে জ্ঞান লাভ করেন : [১] মন্ সুরের রাজত্ব কালে [খৃস্টাব্দ ৭৫৩-৭৭৪] প্রধানতঃ জ্যোতির্বিদ্যা, [২] হারুনের রাজত্বকালে বারমাক নামক মন্ত্রী পরিবারের প্রভাবে [যারা ৮০৩ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত মুসলমান জগতের ওপর প্রভূত্ব করেছিলেন।] খলিফা আল মন্সুরের সময় হিন্দু গণিতজ্ঞ রচিত ‘সিদ্ধান্ত' গ্রন্থটি আরবীতে অনুবাদ করেন মুহম্মদ-ইবনে-ইব্রাহিম আল ফাজারি। এ গ্রন্থের প্রভাবে মুসলমানদের মধ্যে প্রথম জ্যোতিষ শাস্ত্রের বৈজ্ঞানিক আলোচনা আরম্ভ হয়। পরবর্তী পর্যায়ে টলেমীর ‘‘আল মাজেষ্ট’’ আরবী ভাষায় অনুদিত হলে মুসলিম জ্যোতিষশাস্ত্রে গ্রীক প্রভাব পড়ে। হাজ্জাজ বিন-মাতার এবং হুসাইন-বিন-ইসহাক এ গ্রন্থের অনুবাদ সম্পন্ন করেন। মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদানকে দুটো ভাগে ভাগ করা যায়। গ্রীক গ্রন্থের অনুবাদ ও মৌলিক আবিষ্কার।
এখানে একটি বিষয় বলে রাখা প্রয়োজন যে, বিভিন্ন ঐতিহাসিকগণ তাদের রচিত গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, খলিফা আল মন্সুরের সময় হিন্দু গণিতজ্ঞ রচিত ‘সিদ্ধান্ত' গ্রন্থটি আরবীতে অনুদিত হয়। কিন্তু হিন্দু জ্যোতির্বিদ্যায় ‘সূর্যসিদ্ধান্ত' যার রচনাকাল ৩০০ খ্রিস্টাব্দ এবং ‘সিদ্ধান্ত শিরোমনি' যার রচনাকাল ১১৫০ খ্রিস্টাব্দ দু'খানা গ্রন্থের সন্ধান পাওয়া যায়। যেহেতু মন্সুরের রাজত্বকাল ছিল ৭৫৩-৭৭৪ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত, তাই মন্সুরের সময় অনুদিত ‘সিদ্ধান্ত' গ্রন্থ খানা যে ‘সূর্যসিদ্ধান্ত' তা নিশ্চিত করে বলা চলে।]
মুসলমানরা তিন উপায়ে জ্যোতির্বিদ্যার উন্নতি সাধন করেন। গ্রন্থ রচনার মাধ্যমে, মানমন্দির নির্মাণের মধ্যদিয়ে ও বিভিন্ন আবিষ্কারের মধ্যদিয়ে। উমাইয়া যুগে ইমাম বাগদাদে একটি মানমন্দির নির্মিত হয়। রাজদরবারের জ্যোতিষীগণ এখানে বিজ্ঞানসম্মতভাবে গ্রহ নক্ষত্রের গতিবিধি লক্ষ্য করতেন। মুসলিম বিজ্ঞানীগণ এখানে ক্রান্তিবৃত্তের বক্রতা, বিষুবের সঠিক সময়কাল নির্ধারণ ও সৌর বৎসরের দীর্ঘতা সম্পর্কে টলেমির ‘‘আল মাজেস্ট’’এ বর্ণিত তত্ত্বাবলী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। খলিফা আল মামুন দামেস্কের কাছে কাসিয়ুনে একটি মানমন্দির নির্মাণ করেছিলেন।
সেলজুক সুলতান জালাল-উদ্দীন মালিক শাহ নিশাপুরে একটি মানমন্দির নির্মাণ করেন। এই মানমন্দিরে কবি ও দার্শনিক হিসাবে খ্যাত ওমর খৈয়াম তার গবেষণা কার্য পরিচালনা করেন। তিনি এখানে বসে প্রাচীন ফার্সী পঞ্জিকা সংশোধন করে এক নতুন পঞ্জিকা উদ্ভাবন করেন। তিনি তাঁর পৃষ্ঠপোষকের নাম অনুসারে নতুন পঞ্জিকার নাম রাখেন ‘‘আত-তারিখ-উল জালালী’’। তার উদ্ভাবিত এ পঞ্জিকা গ্রেগোরিয়ান পঞ্জিকা থেকে অনেকাংশে নির্ভুল ছিল।
বাগদাদ নগরী ধ্বংসের এক বছর পর হালাকু খান উরমিয়া হৃদের নিকটবর্তী মারাগা নামক স্থানে এক মানমন্দির নির্মাণ করেন। বিশ্ববিখ্যাত জ্যোতির্বিদ ও দার্শনিক নাসীর উদ্দীন আত তুসীকে এ মান মন্দিরের পরিচালক নিযুক্ত করা হয়। এই মানমন্দিরে গবেষণা চালিয়ে তিনি একটি সারণী তৈরি করেন। ইলখানী সুলতান হালাকু খানের নাম অনুসারে এই সারণির নাম করা হয় ‘‘আজ-জীজ-উলু ইলখানি’’। হালাকু খান সিরিয়া, ইরাক, পারস্য থেকে প্রায় চার লাখ গ্রন্থ সংগ্রহ করে এই মানমন্দিরের সন্নিকটে একটি বিরাট লাইব্রেরী নির্মাণ করেন।
বুয়াইদদের আমলে বাগদাদে আর একটি মানমন্দির নির্মিত হয়েছিল। আব্দুর রহমান আস সূফী ও আহমদ-আস-সাগানী এই মানমন্দির থেকেই তাদের গবেষণা কার্য পরিচালনা করেছিলেন। বুয়াইদ সুলতান রুকন-উদ-দৌলার সময়ে আবু জাফর আল খাজিন নামক এক বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটে। তিনি ক্রান্তি বৃত্তের বক্রতা সম্পর্কে নির্ভুল তথ্য প্রদান করেছিলেন। বিদ্যোৎসাহী শাসক শরফুদ্দৌলাহ তার মৃত্যুর পূর্বে জ্যোতিষ শাস্ত্রের উন্নতিকল্পে একটি মান মন্দির নির্মাণ করেন। ইবনুস সালাম, আব্দুর রহমান সূফী এবং আবুল ওয়াফার তার দরবার অলংকৃত করেন।
মুসলমান জ্যোতির্বিদগণ জ্যোতিষশাস্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে কিছু যন্ত্রপাতি আবিষ্কার করেন। ইব্রাহিম-বিন-ফাজারী সর্বপ্রথম এ্যাস্ট্রোলেব তৈরী করেন। সে যুগের যন্ত্রপাতির মধ্যে কোয়াড্রান্ট, এ্যাস্ট্রোলেব, ডায়াল এবং ভূ-চিত্রই প্রধান। এস্ট্রোলেব সম্পর্কে লিখিত প্রাচীন গ্রন্থের মধ্যে অলী বিন-ঈসা-আল-আসতারলাবীর গ্রন্থ অন্যতম। জাফর আল সাদিক রসায়ন ও জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক গ্রন্থ লিখে সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। আববাসীয় যুগে বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ আবু-আল-আববাস আহমদ-আল ফরগানী রচনা করেন আল মুজাহিল-ইলা-ইলম-হায়ত উল আফলাক নামক গ্রন্থ। গ্রন্থখানা ল্যাটিন ও হিব্রু ভাষায় অনুদিত হয়। ফরগানির পরামর্শে আল মুতাওয়াককিল ফুসতাতে একটি নিলো মিটার (পানির উচ্চতা পরিমাপ যন্ত্র) প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
জ্যোতির্বিদ্যা চর্চার ক্ষেত্রে গজনীর আবু-আর-রায়হান-মুহম্মদ বিন আহমদ আল বেরুনী এক উল্লেখযোগ নাম। গজনীর বিখ্যাত সুলতান মাহমুদের পুত্র মাসুদ তাকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় সকল জ্যোতিষশাস্ত্রের মিলনে ১০৩১ খৃস্টাব্দে আল বেরুনী রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘আল-কানুন উল মা'সুদি-ফিল-হাইয়া ওয়ান নজুম'। তিনি রচনা করেন ‘আল আসার উল বাকিয়া-আল আন কুরূন-উল খালিয়া’’; ‘আত তাফহীম লী আওয়া' ইল সিনাত-উত তানজীম' নামক জ্যামিতি অংক, জ্যোতির্বিদ্যা প্রভৃতির প্রশ্নোত্তরমালা সম্পর্কিত এক গ্রন্থ। ভারতবর্ষে অবস্থানকালে তিনি হিন্দু দর্শনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে রচনা করেন বিখ্যাত গ্রন্থ ‘কিতাব-উল-মুসিকি-আল কবির' নামক গ্রন্থ। এইসব গ্রন্থে তিনি অক্ষরেখা, দ্রাঘিমা রেখা নির্ণয় করে পৃথিবীর কক্ষপথ সম্বন্ধে বিতর্কিত তত্ত্বের ওপর নির্ভুল মন্তব্য করেন।
জ্যোতিষশাস্ত্রের অপর নক্ষত্র ছিলেন বলখের আবু মাশার। জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর তিনি বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেন। এ সবের মধ্য থেকে চারখানা গ্রন্থ ল্যাটিন ভাষায় অনুদিত হয়। তিনি সর্বপ্রথম চন্দ্র সূযের প্রভাবে জোয়ার ভাটার কারণ নির্ণয় করেন।
মুসলিমদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ জ্যোতির্বিদ মুহম্মদ বিন জাবির আল-বাত্তানী আর রাক্কায় জ্যোতিষশাস্ত্র গবেষণায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি ৮৭৭ খৃস্টাব্দ থেকে ৯১৮ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত গবেষণা কার্য পরিচালনা করেন। মৌলিক গবেষণায় তার প্রচুর অবদান রয়েছে। তিনি টলেমির সূত্র সংস্কার সাধন করে চন্দ্র এবং বিভিন্ন গ্রহের কক্ষপথ সম্পর্কে নতুন মত প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি নিপুণতার সাথে সূর্যের আংশিক গ্রহণ, ক্রান্তিবৃত্তের বক্রতা, বৎসর এবং ঋতুর দীর্ঘতা এবং সূর্যের কক্ষপথ সম্পর্কে গবেষণা চালিয়েছিলেন।
জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর লিখিত ভিন্ন ভাষায় পুস্তকাদি আরবীতে অনুবাদ করেই মুসলিম বিজ্ঞানীরা থেমে থাকেননি। তারা গবেষণার জন্য মানমন্দির প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন।
নবম শতাব্দীর প্রথম দিকে জুন্দেশাহপুরে একটি মানমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। খলিফা আল মামুনের খিলাফতকালে সিনদ বিন আলী ও ইয়াহইয়া বিন আবি মনসুরের তত্ত্বাবধানে ভূ-মন্ডলের দৈর্ঘ্যের পরিমাপ নির্ণয় আল-মামুনের দরবারের জ্যোতির্বিদদের এক উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব। খলিফা আল-মামুনের খিলাফতকালে পৃথিবী গোলাকার ধরে আয়তন নির্ণয় করা হয়। পালমিরা ও ইউফ্রিটিস নদীর নিকটবর্তী সিন্জার সমতল ভূমিতে মুসা ইবনে সাকিবের পুত্রগণ এবং অংক শাস্ত্রবিদ আল খাওয়ারিজম এই পরীক্ষা কার্য চালান।
জ্যোতির্বিদ আল খাওয়ারিজম কর্তৃক প্রস্তুত জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত সারণী দুই শতাব্দী পরে স্পেনের জ্যোতির্বিদ মাসআলা আল মাজরিতি কর্তৃক সংশোধিত হয় এবং পরে তা ল্যাটিন ভাষায় অনুদিত হয়ে তা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের গবেষণার ভিত্তি হিসেবে পরিগণিত হয়।
আরবদের তৈরিকৃত সারণীগুলো গ্রীক ও ভারতীয়দের সারণীগুলোর স্থান দখল করলে চীনেও তার ব্যবহার শুরু হয়। এছাড়া মুসলিম জ্যোতির্বিদদের মধ্যে কর্ডোভার আল মাজরিতি টলেডোর আজ জারকালী এবং সেভাইলের ইবনে আফ্ লাহর নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
জ্যোতিষশাস্ত্রে ব্যবহৃত অনেক শব্দ আছে যা মুসলমান জ্যোতির্বিদগণ আবিষ্কার করেন। যেমন- Zenith, Azimath, Nadir প্রভৃতি।
১৬১০ খৃস্টাব্দে নক্ষাত্রাদি পরীক্ষার জন্য দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কৃত হয় এবং তারপর থেকেই জ্যোতির্বিদ্যার দ্রুত উন্নতি হয়েছে। এর ও আগে মুসলমানরাই ছিল জ্যোতির্বিদ্যায় সব চাইতে উন্নত জাতি।
ইসলামী বিশ্বের জ্যোতির্বিদ্যা বলতে মুসলিমদের জ্যোতির্বিদ্যা না বুঝিয়ে তখনকার ইসলামী সাম্রাজ্যের সব জ্যোতির্বিদের কাজ বুঝাচ্ছি, তা যে ধর্মেরই হোক না কেন। অধিকাংশ কাজ যে মুসলিমরাই করেছিলেন তা নিশ্চিত, কিন্তু সংখ্যালঘুদের পরিচয় এড়িয়ে যাাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। যেমন, স্পেনের তোলেদো শহরে যে যুগান্তকারী যিজ (গ্রহতারাতালিকা) প্রণয়ন করা হয়েছিল তা মুসলিম-ইহুদি জ্যোতির্বিদরা একসাথে মিলেই করেছিলেন।
ইসলামী বিশ্বের ‘যিজ’ (زيج)
বিভিন্ন সময়ে চাঁদ-সূর্য-গ্রহদের অবস্থানের তালিকাই যিজ। এগুলো দেখে গ্রহদের গতির ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়।
আর্যভটসিদ্ধান্ত ও ব্রহ্মস্ফূটসিদ্ধান্ত এবং আরো কিছু ভারতীয় সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করেই খলিফা হারুন আল-রাশিদ (৭৬৬-৮০৯) এর সময় ৭৭৭ সালে বাগদাদে প্রথম যিজ (যিজ আল-সিন্দহিন্দ আল-আকবার) লিখিত হয়। ৮শ থেকে ১২শ এর মধ্যে মুসলিম বিশ্বে প্রায় ২০০ যিজ রচিত হয়েছে। অধিকাংশ যিজ অবশ্য টলেমি’র বই অনুসরণে রচিত।
আল-খোয়ারিজমি’র (৭৮০-৮৫০) লেখা যিজ আল-সিন্দহিন্দ সবচেয়ে বিখ্যাত। এটাই যিজকে একটা শক্তিশালী জনরা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। আসলে এখনো আমাদের হাতে আছে এমন যিজগুলোর মধ্যে আল-খোয়ারিজমি’র টাই প্রাচীনতম।
স্পেনের তোলেদো শহরের মুসলিম ও ইহুদি জ্যোতির্বিদরা ১০৮০ সালে যে যিজ বানিয়েছিল তা পরবর্তিতে লাতিনে (Toledan Tables নামে) অনূদিত হয়ে ইউরোপীয় রেনেসাঁয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ইংরেজি’র আদিকবি জেফ্রি চসারের The Canterbury Tales এ এই লাতিন তারাতালিকার কথা আছে, তবে তিনি এটাকে Toletanes লিখেছেন; নিচের চরণগুলোতে:
His tables Toletanes forth he brought,
Full well corrected, that there lacked nought,
Neither his collect, nor his expanse years,
Neither his rootes, nor his other gears,
As be his centres, and his arguments,
And his proportional convenients
For his equations in everything.
টলেমি’র মডেল চর্চা
টলেমি’র আলমাজেস্ট বইটার আসল গ্রিক নাম ছিল মাথেমাতিকে সিন্তাক্সিস। আরবরা আল-মাজিস্তি অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ নামে ডাকত। বর্তমানে আলমাজেস্ট ই এর সর্বজনপ্রচলিত নাম।
আলমাজেস্ট আলাদা আলাদাভাবে অন্তত ৪ বার আরবিতে অনূদিত হয়েছে।
অধিকাংশ অনুবাদ হয়েছে বাগদাদের আব্বাসীয় খলিফাদের (৭৫০-১২৫৮) সময়।
১০ম শতকে আল-বাত্তানি তার যিজে টলেমির মডেলের কিছু মান আরো সূক্ষ্ণভাবে মাপেন।
টলেমি’র মডেল ও পরিমাপের অনেক সীমাবদ্ধতা বেরিয়েছিল এ যুগে। যেমন, ভূ-অক্ষের নতির মান টলেমি’র সময়ের চেয়ে প্রায় ০.২৫ ডিগ্রি কমে গিয়েছিল যা ইসলামী বিশ্বে জ্যোতির্বিদরা বুঝতে পারে।
এবং ঋতুর দৈর্ঘ্য টলেমি’র সময়ের তুলনায় পরিবর্তিত হয়েছিল। এই পরিবর্তনের একমাত্র কারণ হতে পারে, সূর্যের অপভূ (apogee, যে বিন্দুতে এলে তার দূরত্ব পৃথিবী থেকে সবচেয়ে বেশি হয়) খুব ধীরে পূর্বদিকে সরে যাচ্ছে; বা সূর্য যে কেন্দ্রের চারদিকে ঘুরে সেই কেন্দ্রটাই পৃথিবীর চারদিকে খুব ধীরে ধীরে ঘুরছে। আল-বাত্তানি’র (৮৫৮-৯২৯) যিজে এর পরিমাপ আছে; কোপার্নিকাস তার বইটিতে যে যিজ উল্লেখ করেছেন।
ইবনুল হাইসামের সমালোচনা ও তার প্রভাব
১০০০ সালে ইবনুল হাইসাম (৯৬৫-১০৪০) টলেমি’র ইকুয়েন্ট বিন্দুর সমালোচনা করেন; কোনো বস্তু নয়, বরং কেবল এক কাল্পনিক বিন্দুর চারদিকে আবর্তন কিভাবে সম্ভব?
এই সমালোচনায় প্রভাবিত হয়ে ১৩শ শতকে বর্তমান আজারবাইজানের মারাগাহ তে মোঙ্গল শাসক হুলাগু খান এর পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত মানমন্দিরে টলেমি’র মডেল সংশোধনের কিছু চেষ্টা হয়।
আল-শিরাজি’র (১২৩৬-১৩১১) ছাত্র, মানমন্দিরটির ১ম পরিচালক নাসির আল-দিন আল-তুসি (১২০১-৭৪) তার তাহরির আল-মাজিস্তি বইয়ে টলেমি’র এপিসাইকেল এর জায়গায় “তুসি যুগল” (Tusi cuple) বসিয়ে ইকুয়েন্ট বিন্দুর প্রয়োজনীয়তা নাশের চেষ্টা করেন। তুসি যুগলকেই ইসলামী বিশ্বের বিশ্বতত্ত্ব অর্থাৎ কসমোলজি’র সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বলা যায়।
মুসলিমদের জ্যোতির্বিদ্যা চর্চা এতদূর অগ্রসর হয়েছিল যে বিখ্যাত ধর্মতাত্ত্বিক আল-গাজ্জালি (১০৫৮-১১১১) [উল্লেখ্য আল-গাজ্জালি এবং আল-তুসি দুজনেই বর্তমান ইরানের তুস নগরে জন্মগ্রহণ করেন।] যখন দার্শনিকদের তীব্র সমালোচনা করে “তাহাফুত আল-ফালাসিফাহ” রচনা করেন তখন তিনি জ্যোতির্গণিতবিদ দের সমালোচনার ঊর্ধ্বে রেখেছিলেন
এই ব্যাপারগুলো [চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ] জ্যোতির্বিজ্ঞান ও গণিতের মাধ্যমে সুপ্রমাণিত এবং এগুলোতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। যে ব্যক্তি এসব নিয়ে গবেষণা করেছে, এ সম্পর্কিত সব উপাত্ত খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেছে, এবং তার কারণে কখন সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ ঘটবে, সেটা আংশিক হবে না পূর্ণ হবে এবং কতক্ষণ বজায় থাকবে তার ভবিষ্যদ্বাণী করার অধিকার অর্জন করেছে, তাকে গিয়ে যদি বলো যে এগুলো ধর্মের পরপন্থী, তাহলে তার বরং ধর্মবিশ্বাস টলে যাবে, কিন্তু তার গবেষণায় বিশ্বাস এতটুকু টলবে না।
১৪শ শতকে দামেস্ক এর ইবনুল শাতির (১৩০৪-৭৫) মারাগাহ স্কুল দিয়ে প্রভাবিত হয়ে দুটি এপিসাইকেল দিয়ে ইকুয়েন্ট অপসারণের চেষ্টা করেন।
কিন্তু কেউ টলেমি’র বিকল্প আরেকটা নতুন মডেলের কথা ভাবতে পারেননি।
এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে কোপার্নিকাসের আবির্ভাবের। সূর্যকে কেন্দ্রে বসানোর ধারণাটা ইসলামী বিশ্বে কারো কারো এলেও, সবাই তার সম্ভাব্যতা বাতিল করে দিয়েছিলেন। সৌরকেন্দ্রিকতা তাই প্রাচীন গ্রিক আরিস্তার্কোস আর মধ্যযুগীয় পোলীয় কোপার্নিকাস এরই দান। কিন্তু কোপার্নিকাস তার মডেল তৈরি করতে গিয়ে ইবনুল শাতির ও মারাগাহ স্কুলের গবেষণার কিছু সাহায্য নিয়েছেন।

জ্যোতির্বিদ্যা এক জায়গায় অদৃশ্য হয়ে হঠাৎ আরেক জায়গায় শূন্য থেকে পুনরাবির্ভূত হয়নি, বরং এক সভ্যতা তার হাতের বেটনটি আরেক সভ্যতাকে দেয়ার মাধ্যমে এই বিরাট মহাকালিক দৌড় অব্যাহত রেখেছে।
আল বাত্তানি , ইবনে রুশদ, নাসিরুদ্দিন তুসি, মহিউদ্দিন উর্দি , ও ইবনে শাদির পৃথিবীকে কেন্দ্র করে গ্রহ গুলোর আবর্তন তত্ত বা জিউসেন্ট্রিক মডেল (Geocentric model) সংশোধন করে । তাদের এই সংশোধন সুর্য কে কেন্দ্র করে গ্রহগুলার আবর্তনে কোপার্নিকাসের মডেল বা হেলিওসেন্ট্রিক মডেল ( Heliocentric model) অন্তর্ভুক্ত করা হয় ।
জ্যোতিষবিজ্ঞান বা এস্ট্রলজি একটি সায়েন্স। এটি হলো সায়েন্স অফ প্রোবাবিলিটিস বা পসিবিলিটিস। অর্থাৎ কী হতে পারে তা নিয়ে অভিমত, ব্যাখ্যা, পর্যালোচনা বা অনুমান-এটাই হলো জ্যোতিষবিজ্ঞান। কেউ যখন কোনো সম্ভাবনার কথা বলে, বলে এটা হতে পারে, সেটা ঘটতে পারে, তখন তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। এবং এস্ট্রলজির আলোকে কেউ যদি এই সম্ভাবনার কথা বলে তাহলে তা ইসলামের বৈধতার সীমার মধ্যেই থাকে। যেমন আবহাওয়া, ঘূর্ণিঝড়, বৃষ্টিপাত , সুনামি, বজ্রপাত, আগ্নেয়গিরি , তাপমাত্রা বৃদ্ধি সম্পর্কে বিজ্ঞানী রা আগাম সতর্ক দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন রক্ষা করে তেমনি রাশিচক্র ও অনুরুপ। নক্ষত্রবিদ্যা চর্চা করে যেমন পরিবেশ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ , জোয়ার ভাটা সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বানী করা যায় তেমনি মানুষের অতীত, বর্তমান , ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারনা দেয়া যায় গ্রহ, নক্ষত্রের প্রভাবজনিত ভাগ্য পরিবর্তন এ।
আসলে জ্যোতিষী নিয়ে আমাদের সমাজে অনেকের মধ্যে যে বিরূপ মনোভাব তার মূলে আছে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি। কারণ আমাদের এখানে অতীতে জ্যোতিষচর্চা করতেন মূলত ব্রাহ্মণ পন্ডিতরা। অতএব জ্যোতিষ-বিজ্ঞান চর্চা করলে সে মুসলমান থাকবে না। সেইসাথে কোরআন-হাদীসের পক্ষপাতদুষ্ট ব্যাখ্যার মাধ্যমে কট্টরপন্থী একশ্রেণীর আলেম এ বিষয়টিকে ধর্মীয় নিষেধের বেড়াজালে বন্দি করে ফেলেন। তারা গণকের ভাগ্য গণনার সাথে জ্যোতিষ বিজ্ঞানকে একাকার করে ফেলেন।
অথচ ইসলামের স্বর্ণযুগে যত বড় বড় পন্ডিত ছিলেন-আল বেরুনী, ইবনে খালদুন, ইবনে সিনা, ইবনে রুশদ, আল বাত্তানী, আল কিন্দি, আল আন্দালাসী, আল জারকালি, ইবনে বাজ্জা, ইবনে তোফায়েল, ইবনে আরাবী, ইব্রাহীম আল ফাযারি, আল ফারগানি, আল খারেজমি, আল তারাবি, ওমর খৈয়াম, ইবনে ইউনুস, উলুগ বেগ, নাসিরুদ্দিন আল তুসী প্রমুখ মুসলিম মনীষীগণ জ্যোতিষ বিজ্ঞানের চর্চা করেছেন।
কারণ, তাদের অনুপ্রেরণা ছিলো পবিত্র কোরআনের বাণী-‘নিশ্চয়ই আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, দিন-রাত্রির আবর্তনে জ্ঞানীদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। তারা দাঁড়িয়ে, বসে বা শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে। তারা আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিরহস্য নিয়ে গভীর ধ্যানে নিমগ্ন হয় এবং বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি কর নি’ (সূরা আলে ইমরান ১৯০-১৯১)। পবিত্র কোরআনের ৮৫ নং সূরাটির নাম ‘বুরুজ’, যার মানে রাশিচক্র। আরবি ভাষায় রাশিকে বুরুজ বলা হয়। সূরা তারিক এর প্রথম আয়াতগুলাতে উজ্জ্বল তারকাপুঞ্জের শপথ নেয়া হয়েছে এবং পাচ নং আয়াত এ মানুষ কে গবেষণার জন্য আহবান করেছে।
বাগদাদের নিজামিয়া মাদ্রাসা তখন ছিলো বিশ্বের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানকার পাঠ্যতালিকায় ছিলো এই ‘ইলমে আল নাজ্জুমী’ যা একইসাথে এস্ট্রলজি এবং এস্ট্রনমি-দুটোকেই বোঝাতো। এমন কোনো মুসলিম পন্ডিত ছিলেন না যিনি এস্ট্রলজিতে দক্ষ ছিলেন না। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে বেয়ার’স স্টার চার্ট বা বেয়ারের তারাতালিকা ব্যবহারের আগ পর্যন্ত প্রচলিত ছিলো ‘জিজ-ই-উলুগ বেগ’ বা উলুগ বেগের তারাতালিকা যা প্রণয়ন করেন মধ্যযুগের সবচেয়ে খ্যাতনামা মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানী উলুগ বেগ। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে যত নক্ষত্রের নাম রয়েছে এর তিন ভাগের এক ভাগই হচ্ছে আরবি নাম।
পন্ডিত আল বেরুনী ছিলেন সুলতান মাহমুদের রাজ-জ্যোতিষ। তিনি যখন সুলতান মাহমুদের দরবারে আসেন সুলতান তার জ্যোতিষ বিজ্ঞানে দক্ষতা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি আল বেরুনীকে বললেন, আগামীকাল আমি কোন দরজা দিয়ে সিংহাসনে প্রবেশ করবো, তা বলতে হবে।
সিদ্ধান্ত হলো-আল বেরুনী সব হিসেব-নিকেশ করে তার সিদ্ধান্ত লিখে একটা খামে সিলগালা করে সুলতানকে দেবেন। সুলতান খামটি সিংহাসনে রেখে যাবেন। পরদিন সুলতান দরবারে এসে সবার সামনে তা খুলবেন। যথানিয়মে আল বেরুনী তার ছক কষে হিসেব করে তার ভবিষ্যদ্বাণী লিখে খাম সিলগালা করে সুলতানের হাতে দিলেন। সুলতান তা সিংহাসনে রেখে দরবার শেষ করে বেরিয়ে এলেন। এসেই হুকুম করলেন-দেয়াল ভেঙে রাতের মধ্যেই নতুন একটি দরজা নির্মাণ করতে হবে।
যথারীতি দরজা নির্মিত হলো। পরদিন সুলতান মাহমুদ নতুন দরজা দিয়ে হাসতে হাসতে দরবারে প্রবেশ করলেন। ভাবখানা এই যে, আল বেরুনীকে আজ ভালভাবেই জব্দ করা যাবে। কারণ স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যমান তিনটি দরজার যেকোনো একটির কথাই কাগজে লেখা থাকবে।
সুলতান সিংহাসনের দিকে এগিয়ে গেলেন। খামটি তুললেন। মন্ত্রীর হাতে দিলেন। খুলে পড়তে বললেন। মন্ত্রী খাম খুললেন। কাগজে লেখা আছে- সুলতান আজ নতুন একটি দরজা দিয়ে দরবারে প্রবেশ করবেন।
দরবারসুদ্ধ সভাসদরা বিস্ময়ে হা হয়ে গেলেন।
কবি হিসেবে বিখ্যাত হলেও ওমর খৈয়াম ছিলেন খোরাসানের রাজ-জ্যোতিষ। তিনি ‘তারিখ ই জালালি’ নামে নির্ভুল ক্যালেন্ডার তৈরি করেন। গ্রেগরী ক্যালেন্ডারের সাথে তুলনা করলেই খৈয়ামের গণনার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয়। বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রচলিত গ্রেগরী ক্যালেন্ডার অনুসারে ৩৩৩০ বছরের গণনায় একদিনের পার্থক্য দেখা দেবে। অপরদিকে ওমরের ক্যালেন্ডার হিসেবে গণনা করলে ৫০০০ বছরে একদিনের তারতম্য দেখা দেবে।
ওমর খৈয়ামের জ্যোতিষ-জ্ঞান এত নির্ভুল ছিলো যে, নিজের মৃত্যুর দিন-ক্ষণ সম্পর্কে তার ধারণা ছিলো। ঐতিহাসিক শাহজুরির বর্ণনা অনুসারে-‘মৃত্যুর দিন খৈয়াম রোজা রেখেছিলেন। মাগরিবের সময় হলে তিনি নামাজে দাঁড়ান। সেজদায় গিয়ে তিনি উচ্চস্বরে বলেন-আল্লাহ! যথাসাধ্য তোমাকেই চেয়েছি। আজ আমার মিনতি-তোমার করুণা ও ক্ষমা থেকে যেন বঞ্চিত না হই’। সেজদা থেকে তিনি আর ওঠেন নি।
স্বয়ং মহানবী রাসুল সাঃ নিজেও ভবিষ্যতবাণী করতেন। হজরত আম্মার এর শাহাদাত বরন বিদ্রোহীদের হাতে, হজরত আবুজর গিফারী রাঃ এর নীরব মরুভূমি তে মৃত্যু সহ কিয়ামতের আগে কি কি হবে তার সুস্পস্ট বর্ণনা করেছেন।
রত্ন-পাথর কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের জন্যে, শারীরিক-মানসিক সুস্থতার জন্যে উপকারি , অনেকটা ওষুধের মতো। এটা আপনার ভাগ্য পরিবর্তন এ সহায়ক ভুমিকা পালন করতে পারে। এস্ট্রলজি নিয়ে সাহাবাদের মধ্যে চর্চা ছিল এবং রাসুল সা: নিজে আংটি পরিধান করতেন ও সাহাবারাও করতেন। এটা নিয়ে সর্বপ্রথম বিরোধিতা করেছিল খারেজীরা। ইতিহাস না জেনে খারেজী দের মত বিরোধিতা শুরু করে দিলেন আপনি। মওলা আলী (আ:) যখন খারেজী দের সাথে আলোচনা করার জন্য আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: কে পাঠান তখন আংটি পরিধান করার কারনে খারেজিরা বিতর্ক শুরু করলেন। তখন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস কুরান থেকে দলিল দিলেন " বল আল্লাহ স্বীয় বান্দাদের জন্য যেসব শোভার বস্তু ও বিশুদ্ধ জীবিকা স্রিস্টি করেছে তা কে নিশিদ্ধ করেছে? (সুরা আরাফ -32). এর পর ও খারেজীরা মেনে নেন নি। আপনার স্বভাব খারেজী দের থেকে আগত। স্বয়ং মহান আল্লাহর রাসূল (সঃ) নিজ হাতে আকিক পাথরের আংটি পরিধান করতেন,আল্লাহর অনেক অলিরাও জ্যোতিষ শাস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন বই লিখেছেন। কোন রংইয়ের আকিক কি কাজ করে তা নিয়ে বিশদ ভাবে আলোচনা ও গবেষনা করেছেন তার লিখিত বই এ ইবনে সিনা। স্বপ্নের ব্যাখা ও জ্যোতিষ শাস্ত্রের অন্যতম একটি অংশ
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বপ্নের কথা শুনতে পছন্দ করতেন। তিনি একদিন জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ গত রাতে স্বপ্ন দেখেছ?আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন : আমি স্বপ্ন দেখেছি, আকাশ থেকে তিনটি চাঁদ আমার ঘরের মধ্যে পতিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তোমার স্বপ্ন যদি সত্যি হয়, তাহলে তোমার ঘরে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তিন জন মানুষকে দাফন করা হবে। এরপরে তো পর্যায়ক্রমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ও ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুকে তার ঘরে দাফন করা হয়েছে। (আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান। বর্ণনায় : মুস্তাদরাক হাকেম)

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, নবুওয়তে আর কিছু অবশিষ্ট নেই, বাকী আছে কেবল মুবাশশিরাত (সুসংবাদ)। সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, মুবাশশিরাত কী? তিনি বললেন: ভাল স্বপ্ন।
(বর্ণনায় : সহীহ বুখারী)
ইসলামের ইতিহাস এ শ্রেষ্ঠ সপ্ন বিশারদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন আল্লামা ইবনে সীরিন রাহঃ । ইসলামের প্রাথমিক যুগে তাকে শ্রেষ্ঠ সপ্ন বিশারদ হিসেবে অভিহিত করা যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.