নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চেতনায় জেগে উঠুক আগুনের পরশমনি

জীবনের প্রত্যেক প্রবাহ অমৃত চায়।

কবীর হুমায়ূন

কেমন করে বাঁজাও বাঁশি সুর যেন গো সর্বনাশী থাকতে আমায় দেয়না গৃহ কোনে , ওঝা যেমন বীনের টানে গর্ত থেকে সর্প আনে তেমনি করে টানছো তোমার পানে।

কবীর হুমায়ূন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোনাজাত

০৬ ই এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৩:৪৩

এটি একটি দীর্ঘ কবিতা। তবে, প্রতিদিন বিশ্বপিতার কাছে প্রার্থনাস্বরূপ উচ্চারণ করতে পারি। ছন্দে লেখা এ কবিতাটি লিখতে গিয়ে যে লেখাটি আমার চেতনায় প্রেরণাস্বরূপ কাজ করেছে; তা হলো, কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর 'বিদ্রোহী'। ভালোবাসা এবং শুভ কামনা। রমজানুল মোবারক


হে আমার আল্লাহ!
তোমার কাছেই এই মোনাজাত
করিতেছি আমি হয়ে প্রণিপাত,
দয়াময় তুমি দাও সাফায়াত, তুমিই অন্তর্যামী;
আমিতো তোমার অপার করুণাকামী।
ওগো দয়াময়! করুণার নিধি, কতো যে তোমার রূপ!
যতো দেখি আমি ধরণীর বুকে, ততো হই নিশ্চুপ।
ইয়া রহমান, পরওয়ারদেগার,
মৃত ও সকল জীবিতের প্রভু, রাব্বুল আলামিন!
ডাকছি তোমায় সুন্দর নামে,
আমি যে অধম, খাকসারজন, তোমারই চির অধীন।


রাব্বুল আলামিন!
তুমিতো বলেছো পাক কোরানেতে চাইতে তোমার কাছে;
শিখিয়ে দিয়েছো কিভাবে তা' চাবো,
কিভাবে আমরা তোমারে যে পাবো,
দুঃখ-শোকের এই পৃথিবীর মাঝে।
গায়েবের জ্ঞান নেই যে আমার,
অসহায়! তাই, করি চিৎকার!
এই জীবনের সকল পতিত কাজে।
কৃতজ্ঞচিতে তোমার নিকটে করি আজ ফরিয়াদ;
হে আমার রব! তোমার নিকটে আমার এ মোনাজাত।


প্রথমে তোমার প্রিয় রাসুলের নামে,
দরুদ পড়িয়া যাই;
আল্লার নবী মোহাম্মদের (সাঃ) কোনই তুলনা নাই।
তিনিই তোমার প্রেরিত রাসুল পৃথিবীর বুকে জানি,
কখনো করেনি তোমার নাফরমানী।
আমরা যে তাঁর উম্মত;
তিনিই শ্রেষ্ঠ ধরণীর তলে, তাঁরে করো রহমত।
তুলেছি দু'হাত বিনীত হৃদয়ে, অসীম, হে রহমান!
তোমার অতুল করুণার দরবারে;
আমিতো নাফরমান।
আমার সকল ভুল ও ভ্রান্তি
প্রভু! ক্ষমা করে দাও,
আমাকে তোমার করুণায় টেনে নাও,
দাস করে এই হৃদয়ে শান্তি দাও।
পৃথিবীতে আমি কতো না করেছি জঘন্যতর পাপ!
গোপনে এবং প্রকাশ্যে প্রভু,
দিবসে অথবা আঁধার নিশিতে; করে দিও সব মাফ।
সকল সময় তোমার করুণা পাওয়ার তাওফিক দাও,
কিয়ামত-দিনের ভয়-উদ্বেগ,
রহিত করিও আমার আবেগ
ত্রাস থেকে; প্রভু, আমাকে বাঁচিয়ে নাও।


আমার কবর প্রসারিত করো, প্রভু!
ওগো, দয়াময় খোদা! ক্ষমাশীল- 'গাফ্ফার'!
প্রশস্তকারী 'বাসিত' তুমি হে, রাব্বি!
পরাক্রমশালী মহাবিশ্বের, সমস্ত দুনিয়ার।
তোমার অপার করুণার জ্যোতি দিয়ে,
আমার কবর করে দিও আলোকিত;
কবরের সেই সওয়াল-জবাব সহনীয় করে, প্রভু!
হৃদয় আমার করে দিও পুলকিত।


হে দয়ালু, প্রভু! ওই মিজানের দাঁড়িপাল্লায়,
তোমার অপার করুণা বিলিয়ে আমারে করিও পার,
এইতো কামনা, হে পরওয়ারদেগার।
তরবারী সম ধারালো এবং সূক্ষ্ম পুল-সিরাত!
সেই বিপদের কালে যখন দাঁড়াবো ঠাঁয়,
বিদ্যুত-সম দ্রুততার সাথে পার করে নিও আমায়।
ওগো সুন্দর! দোজাহানের মালিক!
করুণা করিও, শেষ বিচারের কালে,
যখন করবে বিচার আল-কাহারের হালে।
বিচারের দিনে আমার ত্রুটিকে ফাঁস করিও না, খোদা;
পাপগুলো সব ক্ষমা করে দিও,
করুণার ছলে কাছে টেনে নিও;
এইটুকু চাই, হে আ্মার সাঁই! সততই সর্বদা।
পান কবিবারে আবে কাউসারের অমিয়ধারার জল,
তোমার করুণা প্রার্থনা করি, অবিরাম, অবিরল।
ইয়া রহমান!
আমার আমলনামাকে তুমি ডানহাতে দিও,
সেই কঠিন বিচার দিনে;
পাপী বলে দূরে সরিয়ে রেখো না
বেদ্বীন বলে সেদিন ঠেলে দিও না;
কিঙ্কর ভেবে করুণার চোখে আমারেও নিও চিনে।
প্রশান্তি দাও ভরপুর করে আমার হৃদয় মাঝে,
শক্তি দিও হে, মগ্ন রহিতে তোমার সকল কাজে।
অন্যকে ক্ষমা করার ক্ষমতা,
তারে ভালোবাসিবার, করিতে মমতা,
এ গুণ আমারে দিও হে বিশ্বপিতা!
এ মানুষের সমাজে।


কল্যাণকর বাক্যসমূহ উচ্চারণের তরে,
শক্তি ও সাহস দান করো প্রভু আমার কণ্ঠস্বরে।
জিহ্বাকে আমার সংযত করো
সকল গীবত, রাগ-অভিমান থেকে;
সিরাতুল মোস্তাকিমে চলতে গিয়ে,
প্রভু, আমি যেন কভু একটুও না যাই বেঁকে।
কোন মানুষের যথাযথ হক নষ্ট না যেন করি;
এমন ক্ষমতা এবং সততা,
আমাকে দিও, হে খোদা, অন্তর ভরি।
সহীহ আকিদাহ লভিবার তরে বাড়াও দ্বীনের শক্তি;
সবুরের সাথে পাঠ করি যেন
তোমার কোরান, পবিত্র বাণী; বাড়ে যেন তাতে ভক্তি।


ইয়া রহমান!
পিতা ও মাতাকে হেফাজত করো তুমি,
নেক হায়াত দাও তাঁদের জীবনে, হে অন্তর্যামী।
মৃত্যুর পরে পিতা ও মাতাকে যতনে রাখিও তেমন,
শিশুকালে তাঁরা পৃথিবীর বুকে রেখেছে আমায় যেমন।
ভাই-বোনদের হেফাজত করো, দ্বীনেতে অটল রেখে,
সুস্থতা দাও, সুস্বাস্থ্য দাও,
রক্ষা করিও সকল অন্যায় থেকে।
সদা করুণায় রক্ষা করিও পরিবার-বন্ধন;
সন্তানসহ থাকি যেন এক সাথে,
সকল সময়ে, দিবসে এবং রাতে;
মিলমিশে, হাসিখুশি হয়ে একমন।
বন্ধুকে মোর বান্ধব মনে রাখিও ভুবনে, খোদা!
বিশ্বাসে, প্রেমে জড়াজড়ি করে
থাকি যেন সবে পৃথিবীর বুকে, হাসিখুশি সর্বদা।


ধন-সম্পদে না যেন বাড়ায়
মানুষের কাছে, আত্ম-অহংকার;
সেই অন্তর দাও তুমি মোরে, হে পরওয়ারদেগার।
হেদায়েত দিয়ে আমার ইমান, তাওয়াক্কুল বাড়াও;
তাকওয়া, জ্ঞান, মানুষের প্রেম যতো আছে পৃথিবীতে;
সাধু আখলাখ আমাকেই তুমি দাও।
ইয়া আল্লাহ!
তোমার অপার করুণায়,
মুহসিনিন ও মুত্তাকিন করে দাও আমায়।
হিংসা-বিদ্বেষ, রিয়া প্রবনতা নাহি যেন আসে
এই অন্তরে; কখনো লোভের বশে।
ইমানের সাথে মৃত্যুকে দাও,
সুস্থতা দাও শাফি!
কুফরি, হারাম না যেন করি, চাচ্ছি গো তাই মাফি।
চাই নাকো আমি জান্নাত খোদা,
চাই না স্বর্গ-হুর;
তোমার করুণা সম্পদ হয়ে
আমার হৃদয়ে রয় যেন ভরপুর।


ইয়া আল্লাহ!
বিপুল বিশাল! তোমার করুণা চাই।
বিশ্বাস করি জীবনে মরনে,
অদ্বিতীয় তুমি বিশ্বভুবনে;
তুমি ছাড়া আর কোথায়ও কেহ নাই।
অক্ষয় তুমি, অব্যয় তুমি, তুমিই স্রষ্টা, প্রভু!
তবুও, আমরা যথাযথভাবে ডাকি না তোমারে কভু।
আর-রহমান নাম যে তোমার,
কিতাবে শুনেছি ক্ষমাশীল আর
অনুপম দয়াময়।
ভালো ও মন্দে, সুখে ও দুঃখে চাই তব আশ্রয়।
কবুল করো হে, ওগো দয়াময় এ পাপীর প্রার্থনা,
পরম উদার দয়াশীল তুমি, এইতো আমার জানা।
হে আমার আল্লাহ!
তুমিতো অন্তর্যামী;
আমি যে তোমার অপার করুণাকামী।
সব অপরাধ করে দাও তুমি মাফ,
তোমার করুণা আমার জীবনে কমাবে মনস্তাপ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই এপ্রিল, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: প্রায় দুই শ' লাইনের কবিতা।

০৭ ই এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:০৫

কবীর হুমায়ূন বলেছেন: ২০০ লাইন নয়; ১৪০ পঙক্তির কবিতা। বিদ্রোহী কবিতাটি ১৩৯ পঙক্তির। আমরা প্রতিদিন আল্লাহর কাছে যে দোয়া চাই; তার প্রায় সবগুলোই এখানে বলার চেষ্টা করেছি। এ কবিতাটি লিখতে গিয়ে অনেক পড়তে হয়েছে। এবং বেশ কয়েকদিনের প্রচেষ্টার পর মাত্রাবৃত্ত ছন্দের কাঠামোতে আনার চেষ্টা করেছি। কবিতায় মুক্তক অন্ত্যমিল ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। যদি পুরো কবিতাটি পাঠ করে থাকেন; তবে ধন্যবাদ। পড়ার পড় আশা করি, কোন মুসলিমই ঠকবেন না। শুভ কামনা প্রিয় রাজীব নুর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.