নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হতবাক

অবাক আমি

সময়

Walking alone in road with no direction...........

সময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাইকিং রুপকথা - পর্ব ৩, জীবন বৃক্ষ- ইয়াগদ্রাসিল (Yggdrasil) এবং নয়টি বিশ্ব (The Nine Worlds)

২৯ শে জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৫০



জীবন বৃক্ষ- ইয়াগদ্রাসিল (Yggdrasil) এবং নয়টি বিশ্ব (The Nine Worlds)ঃ

নর্সদের বিশ্বব্রহ্মাভের জীবন বৃক্ষ গাছের নাম হচ্ছে ইয়াগদ্রাসিল (Yggdrasil)। ইয়াগদ্রাসিল (Yggdrasil) আবার ‘উরদ এর কূয়া’ নামের কুয়া থেকে পানি পেয়ে বৃদ্ধি পায়। ভাইকিংরা যে নয়টি পৃথিবীতে বিশ্বাস করে তা এই গাছের ডালপালাতে অবস্থিত। এই গাছের শিকড়ের নিচে তিনজন বৃদ্ধা বাস করে, যাদেরকে নরন্স (Norns) বলে অভিহিত করা হয়।




ভাইকিংদের মতে এই তিন বৃদ্ধা সবসময় তাঁত বুনতে থাকে। এই তাঁতকে বলা হয় ভাগ্যচিত্র (weave the tapestry of fates) বুনানোর তাঁত। বলা হয়ে থাকে তাদের এই তাঁতের প্রতিটা সুতো এক-একটি মানুষের জীবন নির্দেশ করে। যার সুতোর দৈর্ঘ্য যতটুক, তার জীবনের দৈর্ঘ্যও ঠিক ততটুকু! মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রত্যেক দেবতারও একটি করে সুতা রয়েছে, যা এই তিন বৃদ্ধা দেবদেবীদের থেকে লুকিয়ে রাখেন। নর্স (Norse) মিথলজিতে এটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ যে, স্বয়ং দেবতাদেরও সবকিছু তাদের নিজেদের আওতায় নেই। তাদের নিজেদের ভাগ্য অনেকসময় অন্যরা নিয়ন্ত্রন করে, যেমন তাদের জীবনসীমা এই তিন বৃদ্ধার হাতে সমর্পিত।



অনেক ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, এই তিন বৃদ্ধাই প্রতিনিয়ত উরদ এর কুয়া থেকে পানি নিয়ে ইয়াগদ্রাসিল (Yggdrasil) গাছ এ দেয়। যাতে মহাবিশ্বের পৃথিবীগুলো বেঁচে থাকে!



যাই হোক, এখানে ইয়াগদ্রাসিল (Yggdrasil) এবং উরদ এর কুয়া রুপক অর্থে ব্যবহার করা হয়। এটা আসলে উপস্থাপন করে বর্তমান এবং অতীতকে। উরদ এর কুয়া হচ্ছে অতীত যেটা থেকে ইয়াগদ্রাসিল (Yggdrasil) গাছ পুষ্টি পায়। ইয়াগদ্রাসিল (Yggdrasil) হচ্ছে বর্তমান, যেটা অতীতের ফলাফলের উপর নির্ভরশীল। এই গাছের পাতা থেকে নির্গত শিশির আবার সেই উরদ এর কুয়াতে ফেরত যায়। তাই ভাইকিংদের মতে ‘সময়’ চক্রাকারে আবর্তনশীল। বর্তমান এবং অতীত, দুটোই একে অপরের উপরে নির্ভরশীল! এ থেকে এটাও প্রতীয়মান হয় যে সৃষ্টি হচ্ছে একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং একটা জীবন শেষ হয়ে যাওয়া মানে হচ্ছে আরেকটা জীবনের শুরু।


ইয়াগদ্রাসিল (Yggdrasil) এর নয়টি পৃথিবীগুলো হচ্ছেঃ



প্রথম স্তর হচ্ছে আসগার্ড (Asgard), এটা হচ্ছে প্রধান দেবতাদের পৃথিবী, এর অধিবাসীকে আইসার (Aiser) বলা হয়। থর, ওডিন এদের বাসস্থান। ওডিন হচ্ছে আসগার্ডের শাসনকর্তা এবং সমস্ত দেবদেবীদের প্রধান। ওডিনের সহধর্মী এবং আসগার্ডের রানী হচ্ছেন ফ্রিগ। আসগার্ড একটা বিশাল দেয়াল দিয়ে ঘেরা, যেটা এক ধরনের বিস্ময়কর শক্তি দিয়ে সমস্ত আসগার্ডকে রক্ষা করে। আসগার্ড এবং মিদগার্ড একটি জাদুকরী রঙধনু সেতু (Raindbow Bridge) দিয়ে সংযুক্ত।



মিদগার্ড (Midgard) হচ্ছে মানুষদের বসবাসের স্থান। সমগ্র মানবজাতি এইখানে বাস করে। মিদগার্ডের চারপাশ সমুদ্র দিয়ে ঘেরা। বলা হয়ে থাকে সমস্ত মিদগার্ড সমুদ্রে ডুবে যায় যখন তার ধ্বংসের সময় হয়ে আসে এবং আবার সমুদ্র থেকে উঠে আসে এবং নতুন জীবন ব্যাপ্তি লাভে করে। মিদগার্ডের অর্থ হচ্ছে মধ্যবর্তী যায়গা, অর্থাৎ নয়টি বিশ্বের মধ্যে মিদগার্ড হচ্ছে মাঝখানের বিশ্ব।



ভানাহিম (Vanaheim) , ভানির (ভানির) শ্রেণির দেবতারা এইখানে বাস করে। এরা হচ্ছে আদি দেবতা। ভানহিমের বাসিন্দারা জাদুবিদ্যা, বিশেষ করে ভবিষ্যৎবক্তা হিসেবে বেশ নামকরা।



আলফীম (Alfheim) , হাল্কা পরীদের(Ligh Elves) বাসস্থান। এদের পৃথিবী যেমন সুন্দর। এরা দেখতেও অনেক সুন্দর। এরা ছোটখাটো জাদুবিদ্যা জানে। এদেরকে আবার শাসন করে ভানির দেবতারা।




জতুনহিম (Jotunheim) হচ্ছে দৈত্যদের বাড়ি। ইমির এবং অন্যান্য দৈত্য/ জতুনকে মেরে ফেলার পর যে দুইজন জতুন বেচে যায়, তারা এখানে বসবাস করে এবং বংশবৃদ্ধি করে। এই পৃথিবীটা সবসময় শীতল থাকে। এটি মুলত পাথর বেষ্টিত এবং ঘন জঙ্গল দ্বারা আবৃত। যেহেতু এখানে কোন ধরনের চাষাবাদ করা সম্ভব না, তাই দৈত্যরা নদী থেকে মাছ ধরে এবং জঙ্গল থেকে বন্যপ্রাণী শিকার করে বেঁচে থাকে। এই জতুন বা দৈত্যরা হচ্ছে আইসার বা আসগার্ড দেবতাদের জাতশত্রু।




ভারতালফীম (Svartalfheim) , কালোপরীরা (Dark Elves) এইখানে বাস করে।



নিদাভেলির (Nidavellir) , বামনরা (Dwarfs) এখানে বাস করে। তারা মাটির নিচে ঘরবাড়ি বানায়। এই বামনরা কামারশিল্পের জন্য বেশ বিখ্যাত। থরের (Thor) হাতুড়ি এবং ওডিনের বর্শা তারাই বানিয়ে দেয়।



নিফীম (Niflheim) হচ্ছে মৃতদের বিশ্ব। এই যায়গাটা বরফ এবং কুয়াশায় আবৃত।



মুসফেলহিম (Muspelheim) অগ্নি-অপদেবতা এবং আগুন-দানবদের বিচরণস্থান, সর্বদক্ষিণে অবস্থিত।

আগের পর্ব :
পর্ব ১ঃ ভাইকিং কারা
পর্ব ১

পর্ব ২ঃ সৃষ্টির রহস্য
পর্ব ২


উৎস :
1. wikipedia
2. viking-mythology.com
3. norse-mythology.org

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

রঈসুল ওমর বলেছেন: ভাই আগের পর্বগুলোর লিংক দিয়ে দিলে ভালো হত।

২| ২৯ শে জুন, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪

সময় বলেছেন: এডিট করে লিঙ্ক দিয়েছি।

৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ রাত ১:০৫

শাহ্‌রীয়ার বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.