নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

....

কায়সার খসরু

আমি মানুষ হতে চাই

কায়সার খসরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

লাইফটুন -২

২১ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩০



মাঝে মাঝে অনেক আবেগের বৃষ্টি শেষে রাতুল নিজের কাছেই একটু উষ্ণতা খোঁজে। পৃথিবীর অন্য কারো কাছে এখন আর তার কোনো প্রত্যাশা নেই। প্রত্যাশার সবটুকু তাই নিজেকে ঘিরে। কম্বল মুড়ি দিয়ে নিজেকে যতটুকু গুটিয়ে নেয়া সম্ভব,গুটিয়ে নেয়।নিজের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে কাছাকাছি রাখতে চায়। তাদের অনুভব করতে চায়।কম্বলের উষ্ণতা তার চোখের ঝর্ণা মুছে দিতে পারে না।
অনুভুতি কি?
কোথায় তাদের জম্ম?
মস্তিস্কে?
রাতুল বোঝার চেষ্টা করে।
অন্য কাউকে সে বিশ্বাস করে না। না হয় কাউকে বলতো মাথার ছাদ সরিয়ে একটু দেখতে-তার মস্তিস্কে কি খেলা করে। অনুভূতি গুলো কোথা হতে আসে। হঠাৎ মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে যায়। বাসায় প্রিন্টার আছে। নিজের একটা কপি করে নিতে পারে। তাকে দিয়েই দেখাতে পারে তার মস্তিস্কের ভেতরটা।
প্রিন্টার অন করে নিজের একটা কপি করে নেয় রাতুল। পরক্ষণেই বুঝতে পারে কাজটা তার ঠিক হয়নি। কারণ তাকেও সে বিশ্বাস করতে পারছেনা। সব তার মতো,তবু যেন তার মতো নয়। সে তো আরেকটা অস্তিত্ব। সে দেখবে তার চোখ দিয়ে। তার রঙের উপলব্দি যে রাতুলের মতই হবে তা সে বিশ্বাস করতে পারেনা।
- তুই কিন্তু আমি।রাতুল বলে।
- এটা কি বলেন! আমি হলাম আমি, আপনি হলেন আপনি।
- তোকে আমি কপি করেছি কারণ আমার যা আমি দেখতে পাইনা তুই আমাকে দেখিয়ে দিবি।বলবি।
- চেষ্টা করবো কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিতে পারছি না তুমি যেমনি দেখতে আমি তেমনই দেখবো।

রাতুলের নিজের প্রতি রাগ হয়। আরেকটা রাতুল কপি করার পর তার কষ্টটা আরও বেড়ে গেছে। তারও করার কিছু নেই। ইতিমধ্যে সে মাথার করোটি খুলে ফেলেছে।একটা টুলে দাঁড়িয়ে কপি রাতুল আসল রাতুলের মস্তিস্কের ভেতরটা পর্যবেক্ষণ করে।
- কী দেখলে?সুখ-দু:খ-কামনা-কষ্ট-! কোনটা কম কোনটা বেশী- কোথা হতে আসে!
- কিছুই দেখিনা- গরু-ছাগল জবাই করলে যেমন চর্বির দলা পা্ওয়া যায় তেমন চর্বির দলা-।
-ফর ব্রেন-মিড ব্রেন-হিন্ড ব্রেন-সেরিব্রাল-থ্যালামাস আরও কী কী আছে কিছুই দেখছোনা তুমি!
- না। আমিতো কখনও বায়োলজি বা মেডিকলে সায়েন্স পড়িনি।কেমনে জানবো?
রাতুলের মেজাজ খারাপ হয়। কপিতো কোন কাজে আসছেনা বরং তার কষ্ট বাড়িয়ে দিচ্ছে।খুলির ঢাকনা আর সুপারগ্লু এগিয়ে দেয় তার দিকে। রাতুলের মাথার ঢাকনা লাগানো হলো।
এখন কপিকে কেমনে নাই করবে রাতুল।
- তোমাকে মারবো কেমনে?
- কী বলেন- প্রতিনিয়ত আপনি কত আপনাকে হত্যা করেন। নিজের অজান্তেই কখন আমাকে খুন করে ফেলেছেন টেরই পাবেন না। নিজেকে হত্যা করতে করতে আপনি নিজেইতো আর আসল নেই।
- কী বলো..আমি তবে অনকে আগেই মরে গেছি!
-আলবৎ।
রাতুল নিজের দিকে নিজে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে।
সুখ-দু:খ-কামনা-কষ্ট-কত শত অনুভূতি অস্তিত্বশীল।
অথচ তার নিজেরই কোন অস্তিত্ব নেই।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪১

জোভান আহমেদ বলেছেন: হইতো অস্তিত্বগুলো অনুভূতিহীন ভাবে নিজের ভেতর ডিগবাজি খেয়ে বেড়ায়।

২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।
লেখার আড়ালে কিছু লুকিয়ে আছে।

৩| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ২:৪৩

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন:
'সুখ-দু:খ-কামনা-কষ্ট-কত শত অনুভূতি অস্তিত্বশীল।
অথচ তার নিজেরই কোন অস্তিত্ব নেই।'


কীসে আমাদের অস্তিত্ব?
যদি আমরা তা খোঁজে বের করতে পারতাম। তবে হয়তো মরে গিয়েও আমরা বেঁচে থাকতে পারতাম।

আপনার গল্পটি যথেষ্ট অর্থপূর্ণ।
শুভকামনা থাকলো আপনার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.