![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখক হিসেবে আমার কাছে আছে ঐশ্বরিক ক্ষমতা! দাঁড়ান, তবে ব্যাপারটা বুঝিয়েই বলা যাক।
একবার উপন্যাসের জন্য একটা চরিত্র তৈরি করলাম। চরিত্রটা পুরুষ। নাম ইমন। বয়েস ৩২ কি ৩৩ হবার পর তার প্রেমিকার সাথে বিনা বাঁধায় বিয়ে দিলাম। কালক্রমে তাদের একটি মেয়ে হল। গল্পের প্রয়োজনেই বাচ্চা প্রসবের সময় আজরাইল পাঠিয়ে তার বউয়ের জান নিয়ে নিলাম। তারপর তো দেখি মহা সমস্যা! ইমনের কাহিনী এগিয়ে যাচ্ছিল ঠিকভাবেই। কিন্তু, সদ্য পৃথিবীর মুখ দেখা তার ভাগ্যহীন মেয়েটাকে তো বাঁচিয়ে রাখতে হবে। গল্পের জন্য মেয়েটি যে খুব গুরুত্বপূর্ণ। অগত্যা প্রথমে চেষ্টা করলাম ইমনকে আরেকটি বিয়ে দেয়ার। কিন্তু তাকে ইতোমধ্যেই এমন একটা চরিত্রে রূপান্তর করা হয়ে গেছে যে তাকে বিয়ে করালে সেই চরিত্রের অপমান হবে। পরিবার আর তার আশেপাশের মানুষগুলো নানাভাবে তাকে বিয়ে করার পরামর্শ দিল। কিন্তু ইমনের এক কথা। সে তার মৃত বউকে কিছুতেই খাটো করতে পারবে না । কি আর করা! অগত্যা আজিজ নামে এক চরিত্রের সৃষ্টি করলাম যিনি একজন ব্যাংকার। তিনি নিঃসন্তানও বটে। সন্তানের জন্য তার আর তার স্ত্রীর হাহাকার চমত্কার চমত্কার সব দৃশ্য দিয়ে পাঠকদের কাছে তুলে ধরলাম। টেস্ট টিউব বেবি উত্পাদনের চেষ্টা থেকে শুরু করে তাবিজ-কবজ, পানি পড়া কিছুই বাকি রাখলেন না তারা। একসময় আজিজ সাহেবকে ট্রান্সফার করিয়ে নিয়ে আসলাম সেই ব্রাঞ্চে যে ব্রাঞ্চের পিয়ন হিসেবে কাজ করছিল আমার প্রধান চরিত্র ইমন। কয়েকদিন পর ইমন আজিজ সাহেবের কাছে কথা প্রসঙ্গে তার জীবন কাহিনী বলে সম্প্রতি নেয়া একটা কঠোর সিদ্ধান্তের কথা জানালো। সে তার তিন মাসের মা-মরা মেয়েটাকে কোন নিঃসন্তান দম্পতির কাছে দান করে দিতে চায়। আজিজ সাহেব সৃষ্টিকর্তার খেলা দেখে অবাক হলেন। ইমন না জেনেই এমন একজন মানুষের কাছে বিষয়টা তুলে ধরল যিনি নিজেও সন্তানের জন্য হাহাকার করছেন। যার স্ত্রী সন্তানের অপেক্ষায় প্রায় মানসিক রোগীতে পরিণত। আজিজ সাহেব ইমনকে পরের শুক্রবার তার বাসায় যেতে বললেন। এবং এভাবেই সেদিন আমি ইমনের সদ্য ভূমিষ্ট হওযা বাচ্চাটাকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলাম!
কিন্তু হায়! আজ বাস্তব জীবনে আমারই অফিসের পিয়ন এসে যখন বলল, স্যার আর পারছি না। আপনার পরিচিত এমন কেউ কি আছে যিনি আমার মেয়েটিকে দত্তক নেবে? একেবারে পিতৃত্বের সব দাবী ছেড়ে মেয়েটিকে দিয়ে দেব স্যার! মেয়েটাকে আমার বাঁচান। তাকে পরামর্শ বিয়ে করে ফেলার। সে আমার উপর রাগ করে দূরে সরে গেল। মনটা খারাপ হয়ে গেল তখন। কী দরকার ছিল মুখ ফসকে এমন একটা কথা বলার! হঠাৎ করে মনে পড়ল আমার এক নিঃসন্তান বন্ধুর কথা যে কিনা টেস্ট টিউব বেবি নেয়ার চেষ্টা করেও বিফল হয়েছে। তাকে সাথে সাথে কল করে বল্লাম, দোস্ত তিন মাস বয়েসের একটা বাচ্চা আছে! নিবি নাকি দত্তক? কোথায় ভেবেছিলাম বন্ধু আমার এমন একটা প্রস্তাব শুনে খুশিতে আটখানা হয়ে আমাকে ধন্যবাদ দেবে। তা না, সে কি না আমাকে খুব খারাপ একটা গালি দিয়ে কলটা কেটে দিল।
তখন ভাবি, হায় ইশ্বর! লেখক হিসেবে তুমি আমাকে যে ক্ষমতা দিয়েছো, বাস্তব জীবনে কেন দাওনি!
ঘটনা: সেদিন আমার অফিসের এক পিয়ন এসে আমাকে বলল, স্যার, সিদ্ধান্ত নিয়েছি মা মরা মেয়েটাকে দত্তক দিয়ে দেব।
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৫
কয়েস সামী বলেছেন: সবার আগে! ধন্যবাদ মামুন।
২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪৪
জুন বলেছেন: আমাদের দেশের যারা একটু অবস্থাপন্ন কেন জানি তারা দত্তক নেয়াটা সহজ ভাবে নিতে পারে না। কিন্ত বিদেশে কত কষ্ট করেও তারা দত্তক নিয়ে প্রতিপালন করছে নিজেদের বাচ্চা থাকা সত্বেও।
+
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৬
কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ জুন আপি। ভাল থাকবেন।
৩| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৫৮
শান্তির দেবদূত বলেছেন: লেখাটা পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল।
আপনের এই সিরিজটা খুব ভাল লাগছে। চালিয়ে যান।
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৭
কয়েস সামী বলেছেন: শুভ কামনা যেন থাকে। চালিয়ে যাবার ইচ্ছে আছে।
৪| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৫২
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:০৭
কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ প্রোফেসর সাহেব।
৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:৪০
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “হায় ইশ্বর! লেখক হিসেবে তুমি আমাকে যে ক্ষমতা দিয়েছো, বাস্তব জীবনে কেন দাওনি!”
-ঈশ্বর আপনার গল্পকে সিনেমা পর্যন্ত নিয়ে যাবার ক্ষমতা দিয়েছেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই।
পিলাচ!
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:০৮
কয়েস সামী বলেছেন: সেজন্যই তো প্রশ্ন! ধন্যবাদ।
৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:১২
টুম্পা মনি বলেছেন: গল্পটা ছুঁয়ে গেলো। শুভকামনা লেখক।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:৪১
কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ টুম্পা মনি।
৭| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গল্প লিখবার চমৎকারিত্বে আমি মুগ্ধ।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১০
কয়েস সামী বলেছেন: গল্পের স্টাইল নিয়ে আপনিই প্রথম বললেন! ধন্যবাদ তাই!
৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:২৮
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া অধিকাংশ সময় গল্পে যা সম্ভব, বাস্তবে তা নয় বলেই তা গল্প। আবার সেসব গল্পই আবার বাস্তব থেকে নেওয়া।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১২
কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ আপি।
৯| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৩
অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: মন খারাপ হয়ে গেল। একজন বাবা কোন পরিস্থিতিতে নিজের সন্তানকে দত্তক দেয়ার কথা ভাবতে পারে, চিন্তা করতে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বিষাদ ঘনায়।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৬
কয়েস সামী বলেছেন: পাঠের জন্য ধন্যবাদ!
১০| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৯
মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: হুম, সেই। বাস্তব আর গল্প এক খুব কম হয়।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৭
কয়েস সামী বলেছেন: ঠিক। সেটাই তুলে ধরলাম। ধন্যবাদ!
১১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৩২
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লাগলো।
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৬
কয়েস সামী বলেছেন: শুরু থেকেই অপেক্ষা করছিলাম খুব
কেন দেরী হলো হে হাসান মাহবুব?
যাই হোক. ধন্যবাদ!
১২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৩৫
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: চমৎকার লাগলো ! লেখকের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা !
খুব ভালো করে লিখেছেন !
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৪১
কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় লেখক!!
১৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৪৫
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
বাস্তবতা এমনই
২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:১৮
কয়েস সামী বলেছেন: পাঠের জন্য ধন্যবাদ!
১৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০০
আরজু পনি বলেছেন:
মন্তব্য না দেখে পড়া শুরু করে দেখি এটা আমি আগেই পড়েছি , কিন্তু মন্তব্য করা হয় নি !
কল্পনায় অনেক কিছু হলেও বাস্তব বড্ড কঠিন !
৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২২
কয়েস সামী বলেছেন: ধন্যবাদ আপি। এ গল্পে আপনার মন্তব্য না পেয়ে আসলেই ভাল্লাগতেসিল না তখন! আবারো ধন্যবাদ!
১৫| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১:৫৩
সানফ্লাওয়ার বলেছেন: ভাইয়া, এই বাচ্চাটাকে কি এখন দত্তক নেয়া যাবে? আমি আগ্রহী।
০৮ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:০৪
কয়েস সামী বলেছেন: ইস! প্রস্তাবটা আগে দিতেন। তবু যোগাযোগের জন্য ঠিকানা নাম্বার দেন!
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৩
মামুন রশিদ বলেছেন: বাস্তব বড়ই রুঢ়, মা হারা তিন মাসের একটা বাচ্চা কিংবা বাচ্চাটার বাবার জন্য এই বাস্তব আরও করুণ ।
লেখা মন ছুঁয়ে গেছে ।
+