কবি বলেছেন--------- “ যে দেশে গুণি জনের কদর নেই সে দেশে গুণিজন জন্মায় না ’’

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৭

কবি বলেছেন---------“ যে দেশে গুণি জনের কদর নেই সে দেশে গুণিজন জন্মায় না ’’ । প্রচুর লোক অতি নিরবে-নিভৃতে এ দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে । বিশেষ করে যারা মোটামুটি মেধাবি ও টাকা পয়সা আছে এবং ইংরেজিতে দক্ষতা হিসাবে IELTS / TOFEL এ ভাল করছে .......। এছাড়া অন্যান্য ভাষা কোর্স করে ও বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে । তারা আর কখনও এদেশে মনে হয় ফিরে আসবে না......। কিন্তু কেন...........? এর উত্তর সকলে ভাল করে জানেন......... ! বিশ্বের সবচেয়ে সম্মান জনক ও ভদ্র পেশা হচ্ছে শিক্ষকতা । কাজেই সব চেয়ে মেধাবী , সৎ-যোগ্য, দেশপ্রেমিক, পরিশ্রমি ও আন্তরিকতার সহিত কাজ (দায়িত্ব পালন) করে এমন লোকগুলির শিক্ষক হওয়া উচিত ছিল ...... ! শিক্ষকরা ‍সুশিক্ষার মাধ্যমে একটি জাতিকে সম্পুর্নরুপে ইতিবাচক বদলিয়ে দিতে পারেন । শিক্ষকরা হচ্ছে জাতির প্রকৃত মহানায়ক ও পথপ্রদর্শক । যদিও জটিল , কুটিল ও দুরবৃত্তায়ন রাজনীতির কারণে দেশ অনেক পিছিয়ে আছে । দুঃভার্গ্য জনকভাবে বাস্তবতা ও চরম সত্য হচ্ছে সব চাইতে অযোগ্য ও ইতর শ্রেণীর লোকগুলি (পুরুষ-মহিলা) সর্বনিম্ন প্লে-শ্রেণী(স্কুলজীবনের শুরু) থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয় (ইউনিভার্সিটি) গুলির শিক্ষক হচ্ছে .....। কিভাবে.........কেন....... ? একটা দেশ ধ্বংস ও মেধা শুন্য হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট.......! কারণ এদেশে ভাল লোকের মূল্যায়ন নেই........ ! আবেগ দিয়ে দেশ চলে না........ ! জোসের (আবেগ) সহিত হুশ(সচেতনতা) ও লাগে.......। সরকারী চাকুরীতে ৫৬% যদি কোটা ই চলে যায় । তাহলে বাকিদের কি হবে...........? এরপর আছে মামা-খালু ও সর্বশেষ টাকা ঘুষ-তদ্বীর...........! মেধা তো পালানোর রাস্তাও পাবে না...... ! সুতরাং মেধা পাচার হবে এটাই স্বাভাবিক । মেধা পাচার হয়ে যাবে ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া সহ অন্যান্য উন্নত দেশে...... ! অনেকটা ফল গাছের মত -----“ গাছ লাগাবেন পরিচর্যা করবেন অথচ সকল কষ্ট শেষে ফলটি (মধু) খাবে পশ্চিমারা ” । আপনাকে নানা প্রলোভন সুযোগ- সুবিধা দিয়ে ক্রয় করে নিবে আর আপনি কুরবানির গরুর মত বেশী দামে বিক্রি হয়ে যাবেন.........নিশ্চয়...... । অথবা কোন মুরগি বা হাসের উদাহরণের মত-------কষ্ট করে হাস-মুরগি যত্ন সহকারে পুষবে একজন অথচ ডিম খাবে অন্য জন......... ! অনার্স-মাস্টার্স করে কিন্ডার গার্টেনে ২/৩ হাজার টাকা বেতনের চাকুরি করে এমন লোকের উদাহরনের অভাব নেই । আবার ঢাকা শহরে রিক্সাচালিয়ে মাসে ১০/১৫ হাজার টাকা আয় করে এমন লোকের উদাহরনের অভাব নেই । টাকা আয়ের সাথে লেখা -পড়ার কি বিশেষ সম্পর্ক আছে ? পুর্বে একটা কথা প্রচলন ছিল------ “লেখা-পড়া করে যে গাড়ি-ঘোড়া চড়ে সে’’। এখন এটা মিথ্যা প্রমানের দিন আসন্ন.............। বর্তমানে প্রবাদ হওয়া উচিত বড় দলের রাজনীতি করে যে----------“ আলাদিনের চেরাগ পায় সে, যা খুশি করতে পারে সে ”। যার নাই কোন গতি সে করে শিক্ষকতা । ৬০ হাজার ভুয়া নিবন্ধনধারি শিক্ষক(ইনডেক্স)......। একটা বাস্তব ঘটনা বলি সাধারণত পরিবারের সবচাইতে মেধা-বুদ্ধিহীন ও প্রতিবন্ধি ছেলেকে স্কুলে পড়ার মত যোগ্যতা যার নেই সাধারণত তাকে যেমন আল্লাহর ওয়াস্তে মাদ্রসায় পড়তে মোল্লা-মৌলভী (হুজুর) বানানোর জন্য পাঠানো হয়..... । ঠিক তেমন দূর্বল ভাল চাকুরির অযোগ্য লোকগুলি হচ্ছে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক....। কেন শিক্ষক না হয়ে সকলে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় ?. ....কত হতভাগ্য জাতি আমরা.......? শিক্ষকদের সুযোগ,সুবিধা ও বেতন সব চাইতে বেশি হওয়া উচিত ছিল , কারণ তারা মানুষ গড়ার কারিগর.......গুনিজন তৈরী করে......। “ শিক্ষাকে জাতির মেরুদন্ড ” বলা হয়...... মনে হয় উক্তিটি বাংলাদেশের জন্য হাস্যকর । গুনিজনের কদর কোথায় ? বিশেষ করে প্রাইমারি ও মাধ্যমিক লেভেলে যারা পাঠদান করান । অথচ দেশ- সমাজে যাদের তেমন কোন ভুমিকা বা দায়িত্ব নেই এবং মহা দুর্নীতিবাজ , তাদের বেতন সর্বোচ্চ......... কেন... ..? মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি যথেষ্ট সম্মান রেখে কথা গুলি বলছি--------বর্তমনে চাকুরির ক্ষেত্রে যেটা করা হচ্ছে এটা বড় বেশী আবেগ-বাড়াবাড়ি,রাজনীতি এবং অন্যায়........ ! এতে মুক্তিযোদ্ধাদের বড়ো তো করা হচ্ছে না বরং বিতর্কিত ও ছোট করা হচ্ছে......... ! প্রকৃত পক্ষে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন নিজ জীবনের মায়া ত্যাগ করে তারা কোন দুনিয়াবি দান-খয়রাত, ভিক্ষা বা লোভের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেন নাই । শুধূমাত্র দেশ মার্তৃকাকে অত্যন্ত ভালবেসে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন নিঃস্বার্থভাবে....... ! কে কি করবে বা না করবে এটা ভেবে নয়............ ! কিছু দিন পূর্বে.....বেশ কিছু দূঃর্নীতি ঘটেছে......ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে......পত্র-পত্রিকায় এসেছে...সেটা সকলে কম-বেশী জানেন......সচিবদের কথা.... ।...........অন্য এক ঘটনায় চট্টগ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধা........আত্মহত্যা করেছিলেন.............ইত্যাদি.....। সরকার এ ব্যাপারগুলি ভাল করে দেখুক ও ‍মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কিছু করুক । এখন মুল কথায় আসা যাক ৫৬% কোটার মধ্যে যারা নেই, যাদের প্রভাবশালি আত্মীয়-স্বজন নেই ও নগদ টাকা ঘুষ দেওয়ার মত সামার্থ নেই , আবার অত মেধাবী ও না......তারা কি আত্মহত্যা করবে...... ? যে উপজাতীদের বড় একটি অংশ সর্বদা দেশ বিরোধী( দেশপ্রেমহীন) কাজে লিপ্ত , খাবে এদেশে গুনগান গাইবে অন্যদেশের । তাদের কেন কোটা থাকবে ? আমরা কি বানের জলে( পরিচয়হীন) ভেসে এসেছি ? আমরা কি এদেশের দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক...... ? এসব কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি জনসাধারণের বিতৃষ্ণা ও ক্ষোভ জন্ম নিচ্ছে । মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যেককে ঢাকা শহরে ৫তলা জমি সহ বিল্ডিং দিয়ে দেওয়া হোক । সরকার প্রতি আমাদের কোন আপত্তি অভিযোগ নেই । কিন্তু চাকুরির ব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া উচিত না..... ........ ! সারা বিশ্ব চলে মেধা,যোগ্যতা ও দক্ষতা প্রতিযোগিতার দ্বারা আর বাংলাদেশ চলে আবেগ, কুট রাজনীতি দ্বারা...........! আপনি কখন কবে ঘি দ্বারা ভাত খেয়েছিলেন তার ফুটানি (বড়াই) করা ভাল না ।......বর্তমানে কি করেন বা কি করা উচিত এটা ভাবেন । সমস্ত কোটাই তুলে দেওয়া উচিত । কোটার জন্য প্রকৃত মেধাবিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে । কোটা কিয়ামত পর্যন্ত চলতে পারে না.......! দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে । দূর্নীতির অন্যতম কারণ কোটা । যোগ্য লোক নিয়োগ না পাওয়া.....। একটি উদাহরণ দিচ্ছি -----এক হিন্দু ভদ্রলোক মাদক গ্রহন সম্পর্কিত রিপোর্ট ভুল দেওয়ার কারণে নির্দোষ কিছু ব্যক্তির আদালতের মাধ্যমে দোষী প্রমানিত হয় । পরবর্তীতে ঐ নির্দোষ ব্যক্তিরা রিপোর্ট চ্যালেঞ্জ করলে প্রমানিত হয় যে রিপোর্ট ভুল ছিল ..........(তথ্য প্রথম আলো) ঘটনাটি অনেকে হয়তো পড়েছেন........। আসলে ঐ লোকটি ছিল অযোগ্য তাই মনগড়া মিথ্যা-ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছিল......। কারণ বাস্তবে তার দক্ষতা-অভিজ্ঞতা ছিল না..........খোজ নিলে হয়তোবা দেখা যাবে লোকটি সুদ, ঘুষ বা সুপারিশের মাধ্যমে চাকুরীটা পেয়েছিল । সকলের দ্বারা চামচামি, দালালি,খঁয়ের খা , তোষামোদি,ধামাধরা তেল দেওয়া ও জি হুজুর হ হুজুর বলা ও উচ্ছিষ্ট(খুদ-কুড়ো) খাওয়া সম্ভব না । কারণ যোগ্য ও ভদ্রলোকেরা তোষামোদি পছন্দ করে না । এ ব্যাপারে প্রত্যেকের নূন্যতম ব্যক্তিত্ব ও আত্মসম্মান বোধ থাকা উচিত । মেধাবী,দক্ষ ও যোগ্যদের একটি বড় অংশ বিভিন্নভাবে প্রতারিত ও বৈষম্যের স্বীকার হয়ে দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। কারন তারা জানে এ পরিবেশে নিজেকে অভিযোজন বা খাপখাওয়াতে পারবে না । এত ঘাত প্রতিঘাত অন্যায় ও অসুস্থ প্রতিযোগীতার কারনে প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের পরিবর্তে বরং নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে ঐ খারাপ লোকগুলিকে সুযোগ দিয়ে দিচ্ছে । খারাপ নোংরা লোকদের সাথে সে পেরে উঠবে না কারণ সে সুশিক্ষায় শিক্ষিত অতিভদ্র বিবেকবান আদর্শ মানুষ । মারামারি,চাঁদাবাজি,ছিনতাই,নেশা,অস্ত্রবাজি , টেন্ডারবাজি, লেজুড়বৃত্তি,রাজনীতি,সুদ ঘুষ সহ অন্যায় দুর্নীতি করা সকলের দ্বারা সম্ভব না । বিশ্বে বিভিন্ন প্রতিযোগীতা বিশেষ করে বিজ্ঞান ও গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ান, রানার্সআপ সহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছে । এটা আমাদের গৌরব ও সৌভাগ্য । সমগ্র বিশ্ব তৃতীয় বিশ্বের অনুন্নত দুর্নীতিতে শ্রেষ্ট একটি দেশের এ ধরনের ফলাফল দেখে অবাক হয়েছে ! অনেক সম্ভাবনার দেশ ভাংলাদেশ । সত্যিকারে অতি সহজে ও সুলভে ডক্টরেট ডিগ্রী দেয় সু্ইডেন,নেদারল্যান্ড ও জাপান সহ আরো কয়েকটি দেশ । অথচ জাল ভুয়া পিএইচডি, এমফিল...........জাতীয় বিদেশী ডক্টরেট ডিগ্রীর বাংলাদেশে কম নেই....... । শুধু নীতি কথায় দেশ আজ চলে না । কি কারণে মেধা পাচার হচ্ছে তা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে । মানবিক গুনাবলী হিসাবে একজন শিক্ষক কে চরিত্রবান, ধৈর্য্যশীল,মায়ামমতা ,সুন্দর অমায়িক ব্যবহার, হিউমোরাস,সংস্কৃতিমনা , সততা ও দায়িত্ব কর্ত্যবোধ সম্পন হতে হবে । সকল মানবিক, পুথিগত বিদ্যায় চৌকস,সুস্থ্য স্বাভাবিক,পরিশ্রমি দেশপ্রেমি লোকদের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া । যারা শ্রেণিকক্ষে জাতির ভবিষ্যত ও আলোকিত আদর্শ মানুষ গড়ে তুলবে.............. । তাই সরকারের উচিত শিক্ষকতা পেশায় যারা আগ্রহী তাদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা উচ্চহারে দেওয়া ও যথাযথ মুল্যায়ন করা । মেধাবীরা যাতে বিদেশে না যায় সে ব্যাপারে সরকারের উচিত জনসাধারণ কে সচেতন করা ও যথাযত পদক্ষেপ নেওয়া........ .........গুণি জনের কদর করা...............

১ টি +০/-০