নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গণমাধ্যমকর্মী, লেখক।

কাকন রেজা

গণমাধ্যমকর্মী, লেখক ।

কাকন রেজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

লেখকের পুরষতা, মানুষের সীমাবদ্ধতা

০১ লা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩১


আগের কথা : এ লেখাটা নোট আকারে অন্য একটা মাধ্যমে গিয়েছে। লেখাটার উৎপত্তির কারণও সে মাধ্যমের কেউ কেউ এবং তাদের লেখক সম্পর্কে ধারণা। যে ধারণা মূলত বিভ্রান্তিরই নামান্তর। লেখককে শুদ্ধ হতে হবে, বিশেষ করে যৌনাচারে। কেনো বাবা, লেখকরা কি ধর্ম প্রচারক? ঋষি? এক ব্ষ্ণৈব ধরণের লোকও দেখলাম বললেন, লেখককে সাধু হতে হবে। আরে সাধুজন, আপনারও তো ভজন সঙ্গিনী আছেন। কারো রয়েছেন একেরও অধিক। এই অধিক শুধু দুইয়ে সীমাবদ্ধ নয়, বহুতে বিলীন। এরাই আবার লেখকের শুদ্ধাচার খোঁজে। এই আচার খোঁজার দোষ অবশ্য এমনি এমনি হয়নি। কিছু লেখকের অতি ভক্তকুল কর্তৃক অতিমানবীয় গুনাবলীর প্রচারও আচার খোঁজার পেছনে রয়েছে। ফেমিনিস্ট প্রবীণ লেখক কেনো যুবতীর দেহসঙ্গ উপভোগ করবেন, এমন প্রশ্ন উঠতেই পারে। কারণ ভক্তকুল তাকে নারী অধিকারের খাম্বা বানিয়ে ফেলেছেন। সেই খাম্বা যে কারো উপর ভেঙে পড়তে পারে, সেটাতো ভক্তকুলের মাথায় আসেনি। গন্ডগোলটা ওইখানেই। যাকগে প্যাচাল থাক, মূল লেখায় আসি। যেটা অন্য মাধ্যমে গিয়েছিল।

মূল লেখা :

কেনো যে মানুষ লেখককে খোঁজে বুঝি না। ব্যক্তিকে গত করে মানুষ লেখক হয়, তারমধ্যেও মানুষ যেটুকু থাকে সেটা তার নিতান্তই ব্যক্তিগত। সেই সীমানায় পা রাখতে যাবার কী দরকার! লেখাটাই দেখুন। লেখাটা ভালো হলো কিনা সেটাই বিবেচ্য। সেখানে লেখক অহংকারী, একরোখা কিংবা মাতাল অথবা চরিত্রহীন এগুলো নিয়ে মাথা ঘামাতে কে বলেছে।

হ্যাঁ, আপনাকেই বলছি যারা লেখকের যাপিত জীবন নিয়ে মাথা ঘামান। লেখক কোনো আলাদা প্রজাতি নন। তারও খিদে পায়। তারও যৌন-জীবন রয়েছে। তিনিও বাথরুমে যান। সশব্দে বায়ু ত্যাগ করেন। হুমায়ূন আহমেদের মতন আলাদা প্রেম থাকে। খুব সাহসী হলে তাকে ঘরে তুলে নেন। না হলে রেখে দেন মনের ভেতর। এর বাইরে আর কিছু নয়। কেনো তাকে মহাপুরুষ বানাতে চান।

হুমায়ূন আহমেদ নিজেও হিমু’র মধ্যে নিজেকে খুঁজতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হিমুও শেষ পর্যন্ত মহাপুরুষ হয়ে উঠতে পারেনি। মহাপুরুষ হতে গেলে পুরুষ হতে হয়। পুরুষ না হয়ে মহাপুরুষ হওয়া যায় না। লেখক কোনো মহাপুরুষ নন। তারা স্রেফ পুরুষ বা নারী এবং মানুষ। তারা কোনো ধর্ম প্রচার করতে আসেননি। তারা মানুষের যাপিত জীবনের কথাই বলতে চান। আর সেটার লিখিত রূপই সাহিত্য। পদাবলীতে যৌনতা উঠে এসেছে বলেই সেটা সাহিত্য হয়েছে। আর গীতা ধর্মগ্রন্থ। এই পার্থক্যটা বুঝতে না পারলে মুশকিল। তাহলে সব লেখককেই মহাপুরুষ হতে হবে। সাহিত্য শিকেয় উঠবে। গল্প হয়ে যাবে ধর্মগ্রন্থ, কবিতা উপদেশনামা।

যারা এমনটা চান তাদের বলি, এবার ক্ষান্ত দেন। যারা লেখককে লেখকের বাইরে মহাপুরুষ বানানোর কাজে লেগে আছেন তারাও এবার থামুন। হক সাহেবকে মহাপুরুষ বানাতে গিয়েছিলেন এই আপনারাই, তসলিমা তাকে পুরুষ বানিয়ে দিয়েছে। অথচ হক সাহেবকে মহাপুরুষ বানাতে না গিয়ে লেখক পর্যন্তই রাখলে তসলিমার কথা কারো গ্রাহ্যই হতো না। কিন্তু আমাদের একপাল পাবলিক আছেন যারা হাতে নিয়ে বসে আছেন ‘মহাপুরুষ প্রকল্প’। হিমু’র বাবা যেমন হিমুকে মহাপুরুষ বানাতে চেয়েছিলেন।

পুনশ্চ : একজন মারজুক রাসেলের ‘তোমারে লাগানো হয়েই উঠতেছে না, হবে---’, এমন লাইনের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু ‘তোমারে ছাড়ার ফিলিংস হচ্ছে, হোক--- আমি অনেক-কিছুই-ছাইড়া-আসাা-লোক!’, এই দুই লাইনের প্রশাংসা করেননি। যিনি কলেছেন ইনিও একজন লিখিয়ে হিসাবে নিজেকে দাবি করেন। আমি উনাকে যতটুকু দেখেছি তাতে ওই লাইনটুকু লেখার মতন সক্ষমতা অর্জন তার ইহজীবনে সম্ভব নয়। কারণ সবারই একটা সীমাবদ্ধতা থাকে। মানুষ তার সীমাবদ্ধতাটাকে অতিক্রম করতে পারে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.