| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্রাত্য রাইসু বলেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথ যে ছোট কবি এইটা স্বীকার করার মধ্যেই বাংলা কবিতার মুক্তি’, এরকম একটি কথা। আর যায় কই, পালে পালে নেমে পড়েছেন রাইসু’র গোষ্ঠী উদ্ধারে। অর্থাৎ আপনি এস্টাব্লিশমেন্টে’র বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে পারবেন না। আপনার যুক্তি সবাইকে মেনে নিতেই হবে। এটাকে দর্শনের ভাষায় কি বলে? কর্তৃত্ববাদ? নয়তো কি!
আপনি যা বলবেন, যাকে বড় বলবেন, তাকেই আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে মেনে নিতে হবে! আল মাহমুদ ছোট কবি, শামসুর রাহমান বড় এমন ডিসাইড করার আপনি কে? আপনি আপনার জন্য ডিসাইড করেন, আমার জন্য করবেন কেন! এটা হলো গোষ্ঠীশাসনতন্ত্র। যাও এক প্রকার কর্তৃত্ববাদ বা তার অংশ। গোষ্ঠীশাসনতন্ত্রের ব্যাখ্যা সরাসরি মুক্ত বিশ্বকোষ মানে উইকিপিডিয়া থেকে তুলে দিই।
বিশ্বকোষ বলছে, ‘যেখানে মুষ্টিমেয় লোকের হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভুত থাকে। বংশমর্যাদা, সম্পদ, পারিবারিক ঐতিহ্য, শিক্ষা অথবা ব্যবসা, ধর্মীয় এবং সামরিক নিয়ন্ত্রণ অধিকার থেকে এই সব লোক নির্ধারিত হয়। এই সকল অঞ্চল বা রাজ্য অতি সামান্য কিছু পরিবার কর্তৃক শাসিত হয় যারা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে।’ হ্যাঁ, এটাই গোষ্ঠীশাসনতন্ত্র, কর্তৃত্ববাদ। ঠাকুর বাড়ির বর্তমান প্রজন্ম আপনারা, যারা অন্যের চিন্তাকে অসম্মান করতে চান।
না, আমি রাইসু’র চিন্তার সাথে একমত নই। আমার মতে রবীন্দ্রনাথের কবি হিসাবে আলাদা একটা উচ্চতা আছে, মানুষ হিসাবে না থাকলেও। মানুষ হিসাবে তিনি খুবই আটপৌরে। আপনারা যারা তাকে ঋষি বানাতে চান, আমার চিন্তায় তারা সম্ভবত মোহাবিষ্ট, বিভ্রান্ত। কবি হিসাবেই রবীন্দ্রনাথের আলাপ চলতে পারে। মুশকিল হলো, কর্তৃত্ববাদীরা এতটুকুতে সুখী হতে চায় না। তারা ‘মাঙে মোর’।
রাইসু’র চিন্তা মূলত এ জায়গাটিকেই ছাড়িয়ে যেতে চেয়েছে। ‘রবীন্দ্র সঙ্গীত ইবাদতের শামিল’ এমন রবীন্দ্র ধর্ম প্রচারের বাইরে যেতে চেয়েছেন তিনি। ‘ডগমাটিক’ যারা তারা হয়তো এ কথাতে আপত্তি করবেন। যেমন করেন বাংলাদেশের পীর অনুসারীরা। ‘ডগমা’য় আক্রান্ত এসব পীরের অনুসারী এবং রবীন্দ্রভক্তরা অনেকটা ‘প্রোটোটাইপ’। তারা তাদের চিন্তার বাইরে কেউ বা কিছু গেলেই আতকে উঠেন। আক্রমনকেই সঠিক প্রতিরক্ষা ভেবে অন্যের উপর হামলে পড়েন। যেমন রাইসু’র উপর পড়েছেন।
যাকগে, সময় আছে এখনো অন্যের চিন্তাকে নিজের ভাবনায় নিয়ে ভাবতে শিখুন। এতে অন্তত আপনার চিন্তাটা শুদ্ধ কিনা বুঝতে পারবেন। তুলনা না হলে আপনার দর্শন সঠিক তা বুঝবেন কী করে। দর্শনের মূল উদ্দেশ্যই দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা। রাইসু একটা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছেন। আপনারা দ্বন্দ্বটা নিয়ে আলাপ পারেন। তার আগেই প্রতিপক্ষের গলা টিপে ধরা কেন!
পুনশ্চ : শেষে বলে নিই, আমি রাইসুর পরিচিত নই, বন্ধুত্ব বা অন্য কিছুতো পরের কথা। অনুসারীও নই। তারপরেও একজন মানুষকে তার কথা বলতে দিন। আর ব্যক্তি আমি এমনটাতেই বিশ্বাস করি।
©somewhere in net ltd.