| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নির্মলেন্দু গুণ বিষয়ে অনেক কথা হচ্ছে। গুণ প্রকাশ্যে বলেছেন, তিনি একটি রাজনৈতিক দলের কবি। তার এ অবস্থানকে আমিও প্রকাশ্যে সমর্থন করি। ‘ছুপা রুস্তম’ এর চেয়ে প্রকাশ্যে ‘জসিম’ হওয়া ভালো। তাতে অন্তত আর কিছু না হলেও আনুগত্যের সততাটা প্রকাশ পায়।
অনেক কবিকে দেখেছি, যারা নিরপেক্ষতার ভান ধরেন, দিনশেষে ঠিকই প্রমানিত হয় তার পক্ষপাতিতা। একজনকে চিনি যিনি প্রায় প্রতিদিনিই ফেসবুক পেজে আসেন কবিতা ধরণের লেখা সাথে আবৃত্তি আর গান-ফান নিয়ে। ভাবে-সাবে তিনি মহানিরপেক্ষ, স্বভাব যায় না মলে, স্বভাবে প্রমান করে দেন, তিনি ‘মোর দ্যান ডগমাটিক’। এই শ্রেণিটাই ক্ষতিকর। এরা মানুষ এবং সমাজকে বিভ্রান্ত করেন। নি. গুণ অন্তত নিজেকে চিহ্নিত করেছেন। অন্তত তিনি এখন শনাক্ত।
শনাক্ত কথাটা করোনাকালে বেশ প্রচলিত। শনাক্ত কথাটার সাথে আরেকটা কথা এসে যায়, সেটা হলো উপসর্গ। চিকিৎসকরা করোনা সাসপেক্টদের উপসর্গ লুকাতে না করছেন। এই উপসর্গ লুকানো রোগীদের কারণেই চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্ত হচ্ছেন পাড়া-প্রতিবেশিসহ অন্যান্যরাও। অথচ যদি তারা উপসর্গ না লুকাতেন তাহলে সবাই সাবধান হতে পারতেন। সংক্রমিত হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যেতেন অন্যরাও।
নিরপেক্ষতার ভান ধরা কবি বা বুদ্ধি বিক্রেতারাও তেমনি। উপসর্গ লুকানো করোনা আক্রান্তের মতন। উপসর্গ লুকিয়ে করোনা আক্রান্তরা যেমন চিকিৎসকসহ মানুষকে বিভ্রান্ত করেন। ফলে বড় স্বাস্থ্যগত সামাজিক ক্ষতি হয়ে যায়। তেমনি নিরপেক্ষতার ভান ধরে পক্ষপাতিত্বের উপসর্গ লুকানো বুদ্ধি বেচিয়ে কবি-সাহিত্যিকদের দ্বারা বিভ্রান্তিজনিত সামাজিক ক্ষতি হয়ে যায়। নি. গুণ অন্তত উপসর্গ জানিয়ে দিয়ে এমন ক্ষতি থেকে সমাজকে বাঁচিয়েছেন। এজন্যে আত্মস্বীকৃত এই দলীয় কবি প্রশংসা পাবার দাবিদার। আত্মস্বীকৃতির অসম সাহসিকতার জন্য তাকে অবশ্যই ধন্যবাদসহ প্রশংসা করা উচিত।
নির্মলেন্দু গুণের মতন সাহসী লোকের খুব বেশি দরকার আজ। বিশেষ করে গণমাধ্যমে এমন স্বীকার করার মতন সাহসী কর্মী থাকলে সবচেয়ে ভালো হতো। এ মাধ্যমে সবই ‘ছুপা রুস্তম’, একজনও ’জসিম’ নেই। দেখবেন, এসব ছুপা রুস্তমরা নানা ভেক ধরে নিজেদের নিরপেক্ষ প্রমান করার ছলে পক্ষপাতিত্বের চুড়ান্ত করেন। সাধারণেরা বিভ্রান্ত হয়, আর যাদের অন্তত বোঝার ক্ষমতা আছে তাদের মুখ খারাপ হয়। প্রকাশ্যে না হলেও মনে মনে গালি দেয়। অথচ ছুপা রুস্তম’রা যদি নি. গুণের মতন আত্মস্বীকৃত হতেন তাহলে অন্তত গালি খাওয়ার দুর্ভাগ্যটা হতো না। কারণ মানুষ জানতো তাদের অবস্থানটা কী। তারা সেভাবেই তার মূল্যায়ন করতো। কেন যে গণমাধ্যমের ‘ছুপা’রা ‘জসিম’ হবার সাহস করেন না।
জানি, অনেকে বলবেন, প্রকাশ্য হলে সমস্যা রয়েছে। বুঝলাম সমস্যা রয়েছে। কিন্তু সেতো সবার ক্ষেত্রে নয়। যারা ইনিয়ে-বিনয়ে পক্ষপাতিত্বই করছেন। সাথে হাস্যকর সব কর্মকান্ড করছেন, মানুষের গালি শুনছেন, তারা অন্তত নি. গুণের মতন হলেতো এসব বিশেষ করে বকাবাজি থেকে বাঁচতে পারতেন। যাদের আনুগত্য প্রকাশে সমস্যা নেই তাদের অবশ্যই নির্মলেন্দু গুণের মতন সাহসী হওয়া উচিত। আত্মস্বীকৃত হবার মধ্যে আত্মতৃপ্তির কিছু না থাকলেও, তৃপ্তির ঢের ব্যাপার রয়েছে। সুতরাং ‘জসিম’ হতে লজ্জা নেই এবং বাধাও নেই।
©somewhere in net ltd.