![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মূল লেখাঃ ওবায়েদ হক
মার্ক বেইলীকে মাঝে মাঝে রেষ্টুরেন্টের মালিক না মনে হয়ে কম্পিউটার হ্যাকার মনে হয়। সারাক্ষন কম্পিউটারে চোখ লাগিয়ে বসে থাকেন নিজের অফিসে। এই কম্পিউটার দিয়েই কিভাবে যেন সব সামলে নেন, সাপ্লায়াররা ঠিক সময় মতো সাপ্লাই দিয়ে যায়, ট্যাক্সের সব কাজও হয়ে যায় কিভাবে যেনো। কিন্তু সবাই যেটা জানে না তা হলো মার্কের একটা চোখ সব সময়ই তার কর্মচারীদের দিকেও থাকে। বিশেষ করে বাঙ্গালী নাসেররের দিকে। মার্ক জানে দারীদ্রপীড়িত মানুষ লোভের বশে সব কিছু করতে পারে। আর বাংলাদেশ তো একে দরিদ্র দেশ তার উপর দুর্নীতিতেও পিছিয়ে নেই। নিতান্ত কম বেতনে পাওয়া গেছে বলেই রেখেছে।
কিন্তু আজকে কোথাও চোখ রাখার উপায় নেই, সাপ্লায়ারদের কোনো খোজ নেই। বার বার মেইল পাঠাচ্ছে কোনো রিপ্লাই আসছে না। মাথা নষ্ট হওয়ার জোগাড়। মার্ক দেরী না করে নতুন সাপ্লায়ার খুজতে শুরু করলো। গুগলএ সার্চ দিতে গিয়েই দেখলো পরিচিত গুগল নয় সেটা, লোগোটা কেনো এমন হলো কে জানে। আজ তো বিশেষ কোনো দিবস নয়। সে তাড়াতাড়ি একটা সাপ্লায়ারের সাথে যোগাযোগ করলো, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতেই নতুন গুগলের লোগো নিয়ে একটু জানার কৌতুহল হলো।
কৌতুহল মেটাতে গিয়ে জানতে পারলো, আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। সেটা আবার কী? মার্ক উইকিপিডিয়াতে সার্চ দিয়ে পড়তে লাগলো আর অবাক হতে লাগলো। একটা ভাষার প্রতি মানুষের এতো ভালোবাসা কি করে হয়। যে দেশের মানুষ দুইবেলা পেট পুরে খেতে পারে না, যে দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষ রাস্তায় ঘুমায়, যে দেশে শিক্ষা একটা বিলাসিতা সেই দেশের মানুষ শুধু খাওয়া আর পরার চিন্তা করবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারা নিজেদের ভাষাকে এতো ভালোবাসে যে তার জন্য বন্দুকের সামনে নিজের বুক পেতে দিতেও দ্বিধা করে না। নিজের ভাষার প্রতি তার নিজের ভালোবাসা কতটুকু ভাবতেই মনে মনে লজ্জা পেলো মার্ক।
বাংলাদেশ সম্পর্কে তার জানার আগ্রহ আরও বেড়ে গেলো। বাংলাদেশের ইতিহাস পড়ছিলো আর নিজের গায়ের রোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলো। এতো দেশপ্রেম কোথায় পায় তারা। এত ত্যাগ তারা কিভাবে করে। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা নিয়েও কিছু রিপোর্ট পড়লো সে। অনেক উন্নতি করেছে বাংলাদেশ, আরোও করবে। যে দেশের মানুষ ভাষার জন্য দেশের জন্য জীবন দিতে পারে তাদের উন্নতি কেউ আটকে রাখতে পারবে না।
মার্ক নাসেরকে ডেকে পাঠালো। নাসের ভয়ে ভয়ে এসে দাঁড়ালো মার্কের অফিসে। ভয় পাওয়ার কারনও আছে, এর আগে যতবার ডেকেছে ততবার বকা খেয়েছে সে। মার্ক বললো(ইংরেজীতে),
নাসের তুমি এখানে কেনো?
নাসের অবাক হয়ে তাকালো,
মনে মনে ভাবলো,
শালা তুমিই তো ডেকে পাঠালে।
মার্ক তার অবাক চাহনী উপেক্ষা করে বললো,
তোমার তো শহীদ মিনারে যাওয়া উচিত।
নাসের এবার আরো দ্বিগুন অবাক হলো, নিজেকে সামলিয়ে বললো,
আমি সকালে শহীদ মিনার হয়েই এসেছি।
মার্ক বললো,
চলো আবার যাই, রাস্তায় ফুলের দোকান পরবে তো। কিছু ফুল নিতে হবে। আমিও তোমাদের সালাম রফিকদের স্যালুট জানাতে চাই।
নাসেরের মনে হলো সে স্বপ্ন দেখছে।
মার্ক বলতে লাগলো,
আর হ্যা তুমি তোমাদের ভাষাটা আমাকে শিখাবে?
নাসের এবার আবেগে বাংলায় বলে ফেললো,
শিখাবো, অবশ্যই শিখাবো।
আবেগের কথা নাসের অন্যভাষায় বলতে পারে না। মার্ক যদিও বাংলা পারে না, তবুও বুঝে নিলো নাসের কি বললো।
যদিও এই গল্পটি আমার কল্পনা, কিন্তু আমরা চাইলে এই গল্পটিকে সত্য করতে পারি। শুধু একটা মেইল পাঠাতে হবে। নিজের ভাষার জন্য, দেশের জন্য আমরা প্রান দিতে পারি একটা মেইল দিতে পারবো না? পারবো অবশ্যই পারবো। সারা পৃথিবীর মার্কদের আমরা জানিয়ে দিবো বাংলাদেশ মানেই বন্যা,দারিদ্রতা আর দুর্নীতি নয়। তারাও জানুক বাংলাদেশ আমাদের আবেগের নাম, সারা বিশ্বের আবেগের নাম।
এইবছরও একুশে ফেব্রুয়ারীতে গুগলকে ডুডল করার আহ্ববান জানিয়ে ইভেন্ট করা হয়েছে। যারা জয়েন করতে চান তাদের জন্য নিচে লিঙ্ক দেয়া হলঃ
https://www.facebook.com/events/561670773906014
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৫
কালোবক বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৯
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মেইল পাঠিয়ে দিলাম ।
সবাইকে পাঠাতে বলব।
ধণ্যবাদ।