নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কামাল আহমেদ

কামাল। আহমেদ

মানুষের জীবনতো তীব্র স্রোতেভেসে চলা কচুরি পানার ন্যায়ক্ষনিকের দেখা আর পরিচয়,আবার স্রোতেই ভেসে চলে যেতে হয়।তবুওতা কখনো ভোলা যায়না।।

কামাল। আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নীল চাদরে ঢাকা (পর্ব-৫)

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪৩

বকুল এখনো চেয়ে আছে রুকুর দিকে।

রুকু বলল,”তুইওতো কমনা। বড়অভিমান তোর। বাবার কাছে পর্যন্ত ঘেষতি না। বাবা বলে ডাকতি না শেষেতো বাড়ি ছেড়েই চলে গেলি। আর এই জন্য যে বাবার মনে কি পরিমান কষ্ট ছিল তা তুই কেন,আমরা কেউই কোনদিন বুঝতে পারি নাই। আমরা সবাই মনে করতাম বাবা বুঝি এমুন কইরা শান্তি পায়। কিন্তু আমি শেষ কয়টা দিন বাবার অত্যন্ত কাছে ছিলারে। তহন বজছি এই লোকটা যে কি পরিমান মনো কষ্টে ছিলেন। তোর সম্পর্কে বাবার কেমন ধারণা ছিল জানস?”

“জানি।”

“না জানস না। আর যা জানস তা ভুল।এই পৃথিবীতে কিছুকিছু মানুষ আছে যারা ভালবাসার গভীর সমুদ্র বুকের মাঝে লালন করেন।কিন্তু সে ভালবাসার ছিটে ফোটাও কাউকে দিতে পারেন না। ভালবাসা বিলানোর প্রচন্ড ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও তা কাউকে বোঝাতে পারেন না। আবার কিছু কিছু মানুষ আছে যারা স্ববাবতই খুবই নিঃসঙ্গ ধরণের। খুবই একা একা থাকে। একা থাকতেই পছন্দ করে তারা। কেউ একজনকে ভালবাসে তারা কিন্তু সে মনোভাবটা প্রকাশ করতে পারেনা। প্রথম প্রথম তোর প্রতি বাবার কিছুটা রাগ থাকলেও পরে তিনি সেইটা বুঝতে পারছিলেন। কিন্তু সেটা প্রকাশ করতে পারেন নাই।”

“রুকু তুই এত কথা জানস কেমনেরে?”

“মেয়েরা শশুর বাড়িতে গেলে অনেক কিছুই জাইনা যায়। জাইনা নিতে হয়। তোকে একখানা রিকুয়েস্ট করব দাদা–বাবার উপর তোর যদি কোন অভিমান থাকে ত সেইটা ঝাইড়া ফাল।”

“কি যে কস! অভিমান ক্যান থাকব।”

“আচ্ছা যা,দূঃখের কথা অনেক হইছে। তোর মনটাই খারাপ কইরা দিলাম। এইবার অন্য কথা বলি।”

” অন্য কি কথা?”

“আর কতদিন এমুন দেবদাস হইয়া থাকবি?”

“রুকু তুই না বড্ড পেকেছিস।”

“তুই যদি ডুবে ডুবে জল খাস তাতে যদি কোন দেষ না হয়, আমি পাকামো করলে দোষ হবে কেন?”

বকুল রুকুর কান ধরে বলল,”এই তুই দেখেছিস আমি ডুবে ডুবে জল খায়েছি?”

“উহ! দাদ কান ছাড়।”

“তাহলে বল আমি কোথায় ডুবে ডুবে জল খায়েছি।”

“আচ্ছা যা ডুবে ডুবে জল তুই খাস নাই। কিন্তু বিয়েটা এইবার তোরে করতেই হ্ইব।”

“আচ্ছা তোদের কি হয়েছে বলত? বিয়ে বিয়ে ছাড়া কি আর কোন কথা নাই তোদের নাকি?”

“উ……দাদা তুই এখন ভাল চাকরী করতেছিস।ভাল ইনকাম হইতাছে। এখন তো কোন বাধা নাই। আমাদের বুঝি ভাবি ডাবতে ইচ্ছা করেনা?”

“ভাবি ঘরে এলেতো আবার চুলচুলি করতেও ছারবি না।”

“চুলোচুলি লাগলে করব না?”

“আচ্ছা যা আমার পছন্দের মেয়েটাকে খুজে এনেদে তাহলেই আমি বিয়ে করব।”

“কিন্তু যে হারিয়ে গেছে, যে তোর কথা না ভাইবা তার নিজের সুখের কথা ভাইবা চইলা গেছে,তার কথা ভেবে কষ্ট পাওয়া বোকামি ছাড়া কিছুনা দাদা।”



বকুল কোন কথা বলল না। তীব্র বেগে ছুটে চলা পানির দিকে তাকিয়ে রইল।



সূর্য ডুবে গেছে। মাগরীবের আযান শোনা যাচ্ছে।বকুল অযূ করে মসজীদের দিকে রওয়ানা হল।



দেশের উন্নতি হচ্ছে ব্যাপারটা ভেবে বকুলের বড় ভাল লাগে। বকুল যখন ছোট ছিল ১৫/২০ বছর আগে তাদের গ্রামের লোকজন কত গরীব ছিল। তিন বেলা পেটপরে খেতে পেত না এমন। কিন্তু এখন অনেকেরই দিন ফিরেছে। কেউ কেউ ব্যাবসা করে প্রচুর পয়সা কামাচ্ছে।অনেকে আবার পাড়ি জমিয়েছে বিদেশে। বিদেশ থেকে প্রচুর পয়সা পাঠাচ্ছে দেশে। ক্রমে ক্রমে দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।



আগে যেখানে কাচা রাস্তা ছিল সেখানে এখন ইটের রাস্তা। আর যেখানে ইট ছিল সেখানে পিচ ঢালাই। আর সরু রাস্তাগুলো প্রসারিত করা হয়েছে। বিলপদ্মা নদীর উপরে সেতু নির্মিত হয়েছে। নাম শেখপুর সেতু। সেতুর অদূরে রাস্তার পাসে নির্মিত হযেছে নতুন পরিষদ ভবন। সেতুর উপর এবং সদ্যনির্মিত প্রসারিত রাস্তার উপর দিয়ে নতুন পয়সা ওয়ালা লোকেরা সা-সা করে মোটর সাইকেল দিয়ে চক্কর মারে।



সেতু নির্মিত হয়েছে উত্তর পাসে সিপাইকান্দি এবং দক্ষিণ পাসে বাজিতপুর পয়েন্টে। সেতুর উপরে পূব পাসে এসে দাড়ালে প্রথমে চোখে পড়ে সিপাইকান্দির বাড়ি ঘরগুলো। বাড়িতো দেখা যায় দেখ যায় শুধু গাছের চূড়া।আনমনে তাকালে একটা পাহাড়ের উপর থেকে আর একটা পাহাড় দেখতে যেমন মনে হয়। চোখটা আর একটু ঘোরালে চোখে পড়ে নদীর সাথে মিরজারচর বাওর সংযুক্তকারী খাল। আর একটু ডান দিকে শেখপুর বাজার। আর সরাসরি চলে গিয়েছে বিলপদ্মা। পূব দক্ষিণ কোণে আছে বাজিতপুর গ্রাম। বাজিতপুর বাজার থেকে শেখপুর বাজারে নিয়মিত খেয়া পারাপার চলে। পশ্চিম পাসে আসলে দেখা যায় সুম্ভুক এবং ছলেনামা গ্রাম।



মাগরীবের নামাজ পড়ে বকুল একপা দুপা করে হাটতে হাটতে সেতুর উপরে চলে এল। গরমের দিন হওয়ায় অনেকে সেতুর উপর বসে হাওয়া খাচ্ছে। আড্ডা দিচ্ছে। এসময়ে পুরো সেতু জুড়ে লোকজনে ভর্তি থাকে। বাদাম চটপটির দোকান চলে রাত দশটা পর্যন্ত।



একটা ফাকা স্থান দেখে বকুল রেলিং ধরে দাড়িয়ে বর্ষার ফুলে ফেপে বয়ে চলা নদীর দিকে তাকালো। কল কল শব্দ করে বয়ে চলছে পানি। আজ আকাশ পরিষ্কার থাকায় সকাল সকাল জোৎস্না উঠেছে। জোৎস্নায় ফকফক করে হাসছে চারদিক। চাদের আলো নদীতে পড়াতে চকমক করছে। বকুল তাকিয়ে আছে সেদিকে সে আনমনে হল।



নদীর যেখানে চাদের আলো এসে পড়েছে সেখানটাতে একচট মেয়ের মুখ ভেসে উঠল। কচি একখানা মুখ। মেয়েটার নাম শিমু। বকুলের ভারী বিরক্ত লাগল। মেয়েটার এতটুকু আক্কেল জ্ঞান নাই যখন তখন যেখানে সেখানে এসে হাজির হয়। কোন মানে আছে?যে মেয়েটা একসময় তার বিশেষ কেউ একজন ছিল কিন্তু এখনতো তার কেউ না। কেউ না হলেও মনে পড়ে। আসরে সত্যি বলতে কি মানুষের জীবনে কিছু কিছু স্মৃতি থাকে যা ভুলতে চাইলেও ভোলা যায় না,মুছতে চাইলেও মোছা যায় না। যা হয়ে রয় জীবনেরই একটা অংশ।



বকুল একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে একমুহুর্তের জন্য হলেও তার মনে ভ্রান্তি তৈরী হল।সে ভুলে গেল সে এখন কোথায় দাড়িয়ে আছে। তার মনে হল সত্যি সত্যি সে শিমুকে পানির মধ্যে দেখছে। সে চেচিয়ে বলল,"কি করছ,ওখানে?"

বকুল যেন স্পষ্ট শুনতে পেল,"ভাসছি"

"ভাসছ কেন?"

"তুমি ভাসায়েছ তাই ভাসছি।"

"আমি ইচ্ছ করে ভাসাইনি।"

"তুমি ইচ্ছা করেই ভাসায়েছ।"

না,না লক্ষি আমার কথা শোন..."

"না.... আমি তোমার কোন কথা শুনব না। তুমি মিথ্যুক।"

না,আমি মিথ্যুক না........"

বকুল আরো কিছু বলতে যাবে। কিনতু সে সুযোগ পেলনা। মেয়েটা পালিয়ে গেল। অবাক হয়ে লক্ষ করল চাদের আলোটুকুও নেই।হটাৎ করে কোথাথেকে মেঘ এসে যেন চাদটাকে ঢেকে দিয়েছে। চারদিকে কেমন অন্ধকার। শ্রাবণ মাসের এই একরূপ। আবহাওয়া কখন কি রূপ নেবে তা বোঝা দায়। মানুষের জীবনটাওতো এমন।

বকুল মনেমনে বলল,"একদিন তোমাকে সব বলব তখন আর আমাকে মিথ্যুক বলতে পারবে না।"



চলবে..............দেশের উন্নতি হচ্ছে ব্যাপারটা ভেবে বকুলের বড় ভাল লাগে। বকুল যখন ছোট ছিল ১৫/২০ বছর আগে তাদের গ্রামের লোকজন কত গরীব ছিল। তিন বেলা পেটপরে খেতে পেত না এমন। কিন্তু এখন অনেকেরই দিন ফিরেছে। কেউ কেউ ব্যাবসা করে প্রচুর পয়সা কামাচ্ছে।অনেকে আবার পাড়ি জমিয়েছে বিদেশে। বিদেশ থেকে প্রচুর পয়সা পাঠাচ্ছে দেশে। ক্রমে ক্রমে দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।



আগে যেখানে কাচা রাস্তা ছিল সেখানে এখন ইটের রাস্তা। আর যেখানে ইট ছিল সেখানে পিচ ঢালাই। আর সরু রাস্তাগুলো প্রসারিত করা হয়েছে। বিলপদ্মা নদীর উপরে সেতু নির্মিত হয়েছে। নাম শেখপুর সেতু। সেতুর অদূরে রাস্তার পাসে নির্মিত হযেছে নতুন পরিষদ ভবন। সেতুর উপর এবং সদ্যনির্মিত প্রসারিত রাস্তার উপর দিয়ে নতুন পয়সা ওয়ালা লোকেরা সা-সা করে মোটর সাইকেল দিয়ে চক্কর মারে।



সেতু নির্মিত হয়েছে উত্তর পাসে সিপাইকান্দি এবং দক্ষিণ পাসে বাজিতপুর পয়েন্টে। সেতুর উপরে পূব পাসে এসে দাড়ালে প্রথমে চোখে পড়ে সিপাইকান্দির বাড়ি ঘরগুলো। বাড়িতো দেখা যায় দেখ যায় শুধু গাছের চূড়া।আনমনে তাকালে একটা পাহাড়ের উপর থেকে আর একটা পাহাড় দেখতে যেমন মনে হয়। চোখটা আর একটু ঘোরালে চোখে পড়ে নদীর সাথে মিরজারচর বাওর সংযুক্তকারী খাল। আর একটু ডান দিকে শেখপুর বাজার। আর সরাসরি চলে গিয়েছে বিলপদ্মা। পূব দক্ষিণ কোণে আছে বাজিতপুর গ্রাম। বাজিতপুর বাজার থেকে শেখপুর বাজারে নিয়মিত খেয়া পারাপার চলে। পশ্চিম পাসে আসলে দেখা যায় সুম্ভুক এবং ছলেনামা গ্রাম।



মাগরীবের নামাজ পড়ে বকুল একপা দুপা করে হাটতে হাটতে সেতুর উপরে চলে এল। গরমের দিন হওয়ায় অনেকে সেতুর উপর বসে হাওয়া খাচ্ছে। আড্ডা দিচ্ছে। এসময়ে পুরো সেতু জুড়ে লোকজনে ভর্তি থাকে। বাদাম চটপটির দোকান চলে রাত দশটা পর্যন্ত।



একটা ফাকা স্থান দেখে বকুল রেলিং ধরে দাড়িয়ে বর্ষার ফুলে ফেপে বয়ে চলা নদীর দিকে তাকালো। কল কল শব্দ করে বয়ে চলছে পানি। আজ আকাশ পরিষ্কার থাকায় সকাল সকাল জোৎস্না উঠেছে। জোৎস্নায় ফকফক করে হাসছে চারদিক। চাদের আলো নদীতে পড়াতে চকমক করছে। বকুল তাকিয়ে আছে সেদিকে সে আনমনে হল।



নদীর যেখানে চাদের আলো এসে পড়েছে সেখানটাতে একচট মেয়ের মুখ ভেসে উঠল। কচি একখানা মুখ। মেয়েটার নাম শিমু। বকুলের ভারী বিরক্ত লাগল। মেয়েটার এতটুকু আক্কেল জ্ঞান নাই যখন তখন যেখানে সেখানে এসে হাজির হয়। কোন মানে আছে?যে মেয়েটা একসময় তার বিশেষ কেউ একজন ছিল কিন্তু এখনতো তার কেউ না। কেউ না হলেও মনে পড়ে। আসরে সত্যি বলতে কি মানুষের জীবনে কিছু কিছু স্মৃতি থাকে যা ভুলতে চাইলেও ভোলা যায় না,মুছতে চাইলেও মোছা যায় না। যা হয়ে রয় জীবনেরই একটা অংশ।



বকুল একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে একমুহুর্তের জন্য হলেও তার মনে ভ্রান্তি তৈরী হল।সে ভুলে গেল সে এখন কোথায় দাড়িয়ে আছে। তার মনে হল সত্যি সত্যি সে শিমুকে পানির মধ্যে দেখছে। সে চেচিয়ে বলল,"কি করছ,ওখানে?"

বকুল যেন স্পষ্ট শুনতে পেল,"ভাসছি"

"ভাসছ কেন?"

"তুমি ভাসায়েছ তাই ভাসছি।"

"আমি ইচ্ছ করে ভাসাইনি।"

"তুমি ইচ্ছা করেই ভাসায়েছ।"

না,না লক্ষি আমার কথা শোন..."

"না.... আমি তোমার কোন কথা শুনব না। তুমি মিথ্যুক।"

না,আমি মিথ্যুক না........"

বকুল আরো কিছু বলতে যাবে। কিনতু সে সুযোগ পেলনা। মেয়েটা পালিয়ে গেল। অবাক হয়ে লক্ষ করল চাদের আলোটুকুও নেই।হটাৎ করে কোথাথেকে মেঘ এসে যেন চাদটাকে ঢেকে দিয়েছে। চারদিকে কেমন অন্ধকার। শ্রাবণ মাসের এই একরূপ। আবহাওয়া কখন কি রূপ নেবে তা বোঝা দায়। মানুষের জীবনটাওতো এমন।

বকুল মনেমনে বলল,"একদিন তোমাকে সব বলব তখন আর আমাকে মিথ্যুক বলতে পারবে না।"



চলবে..............

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৭

ক্লান্ত২০১০ বলেছেন: হুমমম... পড়লাম

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৩

কামাল। আহমেদ বলেছেন: পড়তে পড়তে ক্লান্ত হইয়া গেছেন তো ভাই এইবার জিরাইয়া লন।

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৪৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: গল্প জমে উঠেছে ভাই। চালিয়ে যান, পাশেই আছি।

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪৩

কামাল। আহমেদ বলেছেন: আচ্ছা ঠিক আছে দাদা।

৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪১

কামাল। আহমেদ বলেছেন: আচ্ছা ঠিক দাদা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.