নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

ছেড়া বস্তা

My life my choice, My mistakes my lessons, Not your Business

ছেড়া বস্তা › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:০২

একজন ফাঁসির আসামী শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস
করেন
কোন দৈব শক্তি এসে তাকে রক্ষা করবে।
এমনকি
পেছনে হাত বাঁধা, গলায় দড়ি পরানো
অবস্থায় এক
পৃথিবী থেকে অন্য পৃথিবীতে যাওয়ার
মাঝখানে
দেয়াল যখন একটি মাত্র রুমাল; নীরবে
দাড়িয়ে
তখন সে ভাবতে থাকে এই বুঝি তাকে রক্ষা
করতে কেউ এগিয়ে এলো।
>> বাংলাদেশে যেভাবে ফাঁসি কার্ষকর
করা হয়----<
বাংলাদেশে এক সময়ে মুনিরের ফাঁসি
বেশ
আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এরপর এরশাদ
শিকদারের
ফাঁসি নিয়ে ছিল মানুষের ব্যাপক আগ্রহ।
একজন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী যতই ঘৃন্য
হোক,
তার শেষ ইচ্ছা পালনের চেষ্টা করা হয়।
চেষ্টা করা
হয় তার মৃত্যুটি যথাসম্ভব আরামদায়ক
করার।
মৃত্যুদন্ড আরামদায়ক করার জন্য
বিজ্ঞানীরা কাজ
করে যাচ্ছেন। এই ধারাবাহিকতায়
ইলেকট্রিক চেয়ার,
ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড আবিস্কার
হয়েছে। তবে যত সিস্টেমই আবিস্কারই
হোকনা
কেন, মৃত্যুতো মৃত্যুই।
আইনানুগ সকল ফর্মালিটি শেষে ফাঁসির
আসামীকে
নিয়ে আসা হয় কনডেম সেলে। সেখানে শুধু
ফাঁসির আসামীরাই থাকে। মাথায় থাকে
লাল টুপি।
অনেকটা ওয়েটিং রুমের মতো। এখানে
কয়েকদিন
রাখা হয়। তার সাথে যথাসম্ভব ভালো
ব্যবহার করা হয়।
বিদেশ থেকে আনা হয় দড়ি। সাধারনত
জার্মানি
থেকে বিশেষ এই দড়ি আনা হয়। নিয়ম করে
কয়েকবার এতে মাখানো হয় সবরি কলা আর
মাখন।
জল্লাদ নির্বাচন করা হয় কয়েদিদের মধ্য
থেকেই।
প্রতিটি ফাঁসি কার্যকরের জন্য ঐ কয়েদির
২ মাস
করে সাজা কমে। আসামীর সম-ওজনের
বালির বস্তা
দিয়ে কয়েকবার ফাঁসির প্র্যাকটিস করা হয়
কয়েকদিন
আগেই।
কনডেম সেলে আসামীর আত্মীয় স্বজনদের
সাথে দেখা করানো হয়। তবে কবে ফাঁসি
কার্যকর
হবে তা আসামী এবং আত্মীয়-স্বজন
কাউকেই
বুঝতে দেয়া হয় না।
সাধারনত রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার
দিকে কারাগার
মসজিদের ইমামকে সাথে নিয়ে জেল সুপার
কনডেম সেলে যান। তখন কয়দি বুঝতে
পারেন
যে আজই তার জীবনের শেষ রাত। সাড়ে
১১টার
মধ্যে তওবা পড়ানোর কাজ শেষ হয়ে যায়।
১২টার ৫ মিনিট আগে যম টুপি ও গলায় দড়ি
পরিয়ে
দেয়া হয়। জেল সুপার হাতে রুমাল নিয়ে
মঞ্চের
পাশে দাড়িয়ে থাকেন। সাথে দাড়িয়ে
থাকেন
অন্যান্য অতিথিরা। জল্লাদের চোখ তখন
রুমালের
দিকে। ঐ মুহুর্তে এই রুমালই একজন মানুষকে
এপাড়
থেকে ঐপাড়ে পাঠিয়ে দেয়ার ভূমিকা
পালন করে।
আসামীর চোখে মুখে অন্ধকার। দাঁতে দাঁত
খিটে থাকে। গলাটাকে ফোলানোর চেষ্টা
করেন যেন ব্যথাটা একটু কম লাগে। কিন্তু
বিশাল এই
দেহের ভারকি আর গলা সইতে পারে?
ধর্মীয়
দোয়া/মন্ত্র পাঠ করতে থাকে আর মনে মনে
অপেক্ষায় থাকে কোন দৈব শক্তির। কান
খাড়া করে
রাখে এই বুঝি কেউ একজন বলে উঠবে, “স্টপ;
এই ফাঁসি হবে না”। ভাসতে থাকে প্রিয়
মানুষগুলোর
মমতাভরা মুখ। তাদের মায়ামুখগুলো ভেবে
হৃদয়
কেঁদে উঠে। মনে হয়, যে কোন কিছুর
বিনিময়ে আর ক’টা দিন যদি ওদের সাথে
কাটাতে
পারতাম। প্রিয় মানুষগুলোকে একটু জড়িয়ে
ধরতে
পারতাম।
একজন ফাঁসিতে আত্মহত্যাকারী আর
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত
আসামীর মৃত্যুর মধ্যে অনেক পার্থক্য
রয়েছে। আত্মহত্যাকারী পৃথিবীর প্রতি
বিতৃষ্ণার
কারণে আত্মহত্যা করে। তাছাড়া সেই
মুহুর্তে তার
মধ্যে কোন হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। আর
ফাঁসির
আসামী পৃথিবীর মায়ার জন্য অন্যায় করে
এবং সে
ভাবার মতো যথেষ্ট সময় পায়।
আসামী যাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য
অপরাধ
করে শেষ সময় তারা কেউ পাশে থাকতে
পারে না। যারা থাকে সবগুলো অপরিচিত মুখ।
সবাই যার যার
দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত। স্বজনদের মতো
মমতা ভরা
কন্ঠ এখানে নেই। গায়ে হাত বুলিয়ে দেবার
কেউ
নেই। তার কস্টে ব্যথা পাওয়ার কেউ নেই।
যত বড়
দুর্ধর্ষ ব্যক্তিই হোক না কেন, এই সময়টিতে
সে
সবচেয়ে অসহায় অনুভব করে।
একজন মানুষ যখন উত্তেজনায় থাকে তখন
ভবিষ্যৎ
পরিনতি ভাবার মতো জ্ঞান তার থাকে
না। আর সে
সময়টিতেই ঘটায় যত অঘটন। আর এজন্যই
মনিষীরা
বলে থাকেন, জীবনে দুটো সময় কোন
সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। এক খুব
রাগান্বিত অবস্থায় এবং
খুব আনন্দময় অবস্থায়। এই দুটো সময়ে
সিদ্ধান্ত
নিলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা ৯০ ভাগ।
সর্বশেষ ১২টা পাঁচ মিনিটে পায়ের নিচ
থেকে
পাটাতন সরে যায়। গলায় আটকে যায় মোটা
দড়ি। শুরু
হয় রহস্যময় যাত্রা। ১০ মিনিট ঝুলিয়ে
রাখার পর একজন
ডাক্তার এসে ঘাড়ের চামড়া কেটে মৃত্যু
নিশ্চিত
করেন। পরে থাকে নিথর দেহ। এরপর থেকে
আর প্রয়োজন হয়না কোন খাবার কিংবা
পানি। রাতে
খাওয়া খাবারগুলো দেহের কোন কাজে
আসেনা।
পাকস্থলিতে পরে থাকে নিরব হয়ে।
মৃত্যুর আগ মুহুর্তে একজন আসামী ফিরে
যেতে
চায় তার অতীতে। ভুলগুলো মুছে দিয়ে নতুন
করে লিখতে চায় জীবনের অধ্যায়। আমরাও
একই
পথের যাত্রী। শুধু আমরা জানতে পারিনা
আমাদের
মৃত্যুর সময়-ক্ষন। আমাদের যেন শেষ মুহুর্তে
পিছনে ফিরে অতীতকে নতুন করে লিখার
ইচ্ছে
জাগ্রত না হয় সে জন্য প্রতিটি মুহুর্ত-
প্রতিটি
সেকেন্ড ভেবে চিন্তে সৎ ভাবে
অতিবাহিত
করতে হবে। কারণ জীবন খাতার অক্ষর
মোছার
কোন ফ্লুইড নেই।
কার্টেসী: Unfamiliar

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:১৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: লোমহর্ষক বর্ণনা!

২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:১৭

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: মন খারাপ হয়ে গেল।

৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:৩৪

ধ্রুবক আলো বলেছেন: জীবন খাতার অক্ষর মোছার কোন ফ্লুইড নেই। ++

আসলেই ভুল একবার হয়ে গেলে আর শোধরানো কঠিন হয়ে যায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.