![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন মানুষ যে দেশটাকে ভালবাসে কিন্ত আজো এই দেশটার জন্য কিচ্ছু করতে পারে নাই। আমি দেশটার মতই হতভাগা।
এই নববর্ষের অনুষ্ঠানে উপভোগ্য অনেক কিছুই পেলাম, যা অন্যবার পাইনি। প্রতিবারের মত এবারো কেউ আটকাতে পারেনি চারুকলা তথা ইউনিভার্সিটি এরিয়া ভ্রমনে। মনে আছে, অষ্টম শ্রেনী থেকে যাওয়া শুরু, বাদ পরেনি কোনবার কেবল মাত্র ইউনিভার্সিটির পাঁচ + সেশন জটের এক বছর ছাড়া। হাস্যকর, অনেকে বলবেন, মিয়া ভাই ছয় বছর-ই তো নাই আবার কন প্রতিবার। আসলে তখন ওই এরিয়ার সাথে ওতপ্রতোভাবে জড়িয়ে ছিলাম, অভাবটা তাই বোধ করিনি। যাই হোক, প্রথম যখন যেতাম তখন দেখতাম ডুগডুগির শব্দ, ঢোলের বাজনা, বাউল গানের আসর, নাটক, দেশজ সংস্কৃতি, চারুকলার মুখোশ প্রদর্শনী ও বিক্রি, মুখে চারুকলার কৌশলীদের তুলির আচড়, দেশজ ধারার চর্চা আর দেশজ খানা খাদ্যের মেলা আর আধুনিকতার ছোয়ায় বামবা-র কনসার্ট। দিনকে দিন পরিবর্তন আসবে, এইটাই স্বাভাবিক, তাকে আমন্ত্রন জানাবো সেটাও স্বাভাবিক, নতুন-ই তো ভবিষ্যত আর নতুন-ই বর্তমান।এত ভাললাগার মাঝে যখন ছিলাম তখনো ভীড় ঠেলে টিএসসি আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরতে এতটুকু খারাপ লাগেনি। শত বিরক্তিতেও কাউকে মন্দ বলতে মনে চায়নি বরং ভালো লেগেছে।
এখন আসি আসল কথায়, খারাপ লাগার অংশটায়। সত্যি বলছি, অনেক কষ্ট নিয়ে কথাগুলো বলছি। বিগত কয়েক বছর ধরেই আমি যাচ্ছি ওই এরিয়াতে নতুন করে। বয়স হয়েছে, নিজে উপভোগ করার চেয়ে গার্ডিয়ান রোলটাই এখন প্লে করতে হচ্ছে। এখন যাই মামা হয়ে নিজের ভাগ্নে ভাগ্নিদের নিয়ে আগে যেখানে মুল সঙ্গী ছিল বন্ধুরা আর বিয়ের পর পর ছিল বউ। যাই হোক এবারো গিয়েছি আর গিয়ে আগের অভিজ্ঞতা আর এখনকার মধ্যে যে পার্থক্যগুলো উপলব্ধি করলাম, সেগুলো এইরকম-
১) এবার অন্যান্যবারের চেয়ে মনে হল ভীড়টা কিঞ্চিত কম। যাবার সময় এবং আসার সময় রিক্সাও পেয়ে গেলাম খুব সহজে আর ধাক্কা ধাক্কিটাও খুব একটা করতে হয়নি। সম্ভবতঃ মার্কেট খোলা থাকা এবং হাতির ঝিলের কল্যানে এইদিকে ধাক্কাটা একটু কম এসেছে।
২) চারূকলার ছাত্রদের জায়গায় বিগত কয়েক বছর ধরেই দেখছি বাইরের কিছু ছক্কা পাঞ্জা পোলাপান রঙ আর তুলি নিয়ে ঝাপিয়ে পরছে আর মুখে আঁকা নিয়ে রীতিমত দর কসাকসি আর বাক বিতন্ডা। অথচ আগে ব্যপারটা ছিল অত্যান্ত শোভনীয় এবং চারুকলার ১ম বর্ষের ছাত্রদের তত্বাবধানে যারা মুখে নঁকশা একে দিত তারা একে দেয়ার পর কখনো দাম হাঁকতো না। তবে খুশী হয়ে কেউ কম-ও দিত না। এখন আঁকিয়ে চারুকলার হোক আর নাই হোক দাম-ও হাকছে, বাক বিতন্ডাও হচ্ছে। স্পেশাল এফেক্টঁ আর মাল্টিমিডিয়ার যুগে চারুকলার ছাত্রদের এখন ভালোই ডিমান্ড তা তাদের অঙ্কন মূল্য, বানিজ্যিকিকরন , মুখোশ বিক্রির ধারা আর আচরনগত পার্থক্যে এখন ভালোই ধরা পরে। নববর্ষ এখন উতকর্ষতার ধারক বাহক হওয়ার চেয়ে মোটামুটি সিজনাল ব্যবসার আভিজাত্যে পরিনত হয়েছে।
৩) এত সুন্দর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে এই সরকার বাবার নাম রাখতে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষন করে বাপের নাম ভুলিয়ে ছেড়েছে সেটাযে এখনো ওই এলাকার শোভা বাড়িয়ে যাচ্ছে তা আসলেই অবাক হওয়ার মত ব্যপার।
৪) বাউল গানের আসর আর বামবার কন্সার্টের কথা বাদ-ই দিলাম কারন তারা আর ফ্রিতে গান-ও গায় না আর এতো পয়সা দিয়ে তাদের আনার মত আগ্রহ-ও এখন আর কেউ দেখায় না। ডাকসুর ইলেকশনটা হলে হয়তঃ ভালো কিছু পাওয়া যেত।
৫) দেশজ পন্য অনেক খোজাখুজি করেছি। পাইনি যে তা না তবে চোখে পরার মত নয় তবে চোখে পরার মত ব্যপার হল এই মেলাতেও চাইনিজ থান কাপড় আর চাইনিজ প্লাষ্টিক পন্যের ছড়াছড়ি। আমার এই ব্যপারটা খুব-ই অবাক লেগেছে, আপনাদের লাগেনি?
৬) আগে দেশ হয়ত এতো আধুনিক ছিল-ও না, তাই হয়তঃ আমরা দেখিওনি। মেলায় হাটার সময় পশ্চাৎ দেশে পিঁপ, টিঁট, প্যাঁপ অসহ্যকর মোটর বাইকের কুত্তার বাচ্চারা আপনাকে বিরক্ত করেনি? কখনো পারলে কি কারো গায়ে উঠিয়ে দেয়নি? কেউ যদি আমার এই ভাষায় রেগে গিয়ে থাকেন, তাহলে জ্বি আমি আপনাকেই বলছি আপনিই হলেন এই নববর্ষের কুত্তা ভার্সন ১।
৭) এইবার আসি ভার্সন ২ এর কথায়। আগে মেলায় গেলে কোন শব্দটা বেশি শোনা যেত মনে আছে? হাঃ আমার মনে আছে ডূগডুগির শব্দ টাররররর টারররর....... আর এইবার যারা গিয়েছেন কি শুনেছেন? ভুভুজেলার ভুভু জ্বালায় একমাত্র ওই অশিক্ষিতের দলরা ছাড়া আর কেউ মুগ্ধ হয়েছিল? নিজের দেশের ঐতিহ্যবাহী ডুগডুগি, ঢোলের আর বাঁশের বাঁশির সাথে কোন মিল খুজে পান আপনারা? মাত্র ১০ টাকায় পাওয়া এই যন্ত্রনা আজ আপনাকে কিনেছে কাল আপনার মাকেও কিনে নেবে, তা জেনেও যারা আপনারা ভুভু জ্বালা বাজিয়ে এই প্রানের মেলাটার ১২ টা বাজিয়েছেন তারা আমার ভাষায় কুত্তা ভার্সন ২।
৮) এইবার আসি তাদের বাচ্চাদের কথায়। যারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষার নামে গাফিলতি করে ওই এলাকায় মোটর বাইক আর ভুভু জ্বালা-কে নিয়ন্ত্রন করেন নাই তাদেরকে এই তত্ত্ব অনুযায়ী পূর্ন বয়স্ক না হলেও বাচ্চা কুকুরের মর্যাদা দিতে ছাড়ব না। তাই আপনাদের জন্য হাফ টিকেট কুত্তা ভার্সন 0.৫।
মোটামুটি এই হচ্ছে আমার ভাষায় এই ১৪২১ নববর্ষের কুত্তার পাল। অনেক অপ্রাসঙ্গিক, অনৈতিক, ভ্রষ্ট আর দেশ ও জাতির জন্য অকল্যানকর ব্যপার দেখেছি কিন্তু স্বজ্ঞানে আর সুস্থ মস্তিষ্কে যারা প্রানের হৃদস্পন্দনে বাধার সৃষ্টি করেন তাদেরকে সামনে গিয়ে জুতা পেটা করতে না পারি মুখ, কলম আর ব্লগের ভাষাতো কারো বাবার জাইয়গির নয়, তাই না? তাই যারা এইটা পরে রেগে গিয়েছেন অথবা রাগ করবেন এইটা তাদের জন্য-ই। আমি আবারো বলছি আপনারা কুত্তা, ইন টোটাল ১৪২১ এর কুত্তা ভার্সন ২.৫- স্বজ্ঞানে এবং স্বদিচ্ছায়।
২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:১৮
মেহেরুন বলেছেন: ঠিক বলেছেন। এইসব কারনে এখন আর কোথাও গিয়ে শান্তি লাগে না, যেতেও ইচ্ছা করে না।
৩| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬
কানা দাজ্জাল বলেছেন: ভাই আপনাদের সাথে আমি পুরোপুরি সহমত।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৪০
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: সকল ভার্সনে সহমত...সবজায়গা ক্লাসলেস পোলাপাইন দিয়া ভইরা গেসে...