![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মোঃ আরিফিন ইসলাম একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। কর্মস্থলঃ thereport24.com (IT support)
রাজধানীর বিভক্ত উত্তর-দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অবৈধ যাত্রী-ছাউনীগুলো অপরাধীদের ‘আশ্রয়স্থল’ হয়ে উঠেছে। দিনের বেলায় দখলকারীরা বিভিন্ন ব্যবসা পেতে বসেন। আর রাতে ছাউনী চলে যায় অপরাধীদের দখলে। ফলে সাধারণ মানুষ যাত্রী-ছাউনীর ধারের কাছেও ভিড়তে পারছে না। দু’-একজন না বুঝে গেলেও তারা বিভিন্ন হয়রানির শিকার হন।
বৃহস্পতিবার রাতে সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর অধিকাংশ যাত্রী-ছাউনী যৌনকর্মী, মাদকাসক্ত ও ছিনতাইকারীরা তাদের ‘নিরাপদ আশ্রয়স্থল’ হিসেবে ব্যবহার করছে। এ সব অপকর্ম রোধে পুলিশের ভূমিকা চোখে পড়েনি। তবে পুলিশের দাবি— এ যাত্রী ছাউনি কেন্দ্রিক অপরাধীদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে মাঝে-মধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বুধবার রাত ১টা। স্থান— ফার্মগেটের তেজগাঁও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন যাত্রী-ছাউনী। মধ্যবয়সী কবীর হোসেন নামে একজনের সঙ্গে এক মহিলার বাগবিতণ্ডা চলছে। ওই মহিলা কবীর হোসেনকে যাত্রী-ছাউনী থেকে উঠে গিয়ে অন্য কোথাও বসতে বলছেন। তার ‘নির্দেশ’ না মানায় মহিলাটি কবীর হোসেনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন। পরে কবীর হোসেন বাধ্য হয়ে যাত্রী-ছাউনী ত্যাগ করেন।
বাগবিতণ্ডার কারণ জানতে চাইলে কবীর হোসেন দ্য রিপোর্টকে জানান, তিনি দিলু রোডের একটি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে কর্মরত। দীর্ঘপথ হেঁটে আসায় তিনি কিছুটা ক্লান্তিবোধ করছেন। বিশ্রাম নিতে তাই বসেছেন ছাউনীতে। কিন্তু কিছুক্ষণ বসার পরেই ওই মহিলাটি তাকে বিভিন্ন ধরনের ইঙ্গিত করেন। সাড়া না দেওয়ায় ছাউনী থেকে উঠে যেতে নির্দেশ দেন। এমনকি মারধর করে যা কিছু আছে তা কেড়ে নেওয়ার হুমকিও দেয় ওই মহিলা। তাই পরিস্থিতি বুঝে চলে আসেন তিনি।
‘যাত্রী-ছাউনী থেকে লোকদের তাড়িয়ে দেন কেন’ এমন প্রশ্নের জবাবে এক যৌনকর্মী বলেন, ‘আগে ওভার-ব্রিজের ওপর ব্যবসা করতাম। ওটা ভেঙ্গে ফেলার পরে এখানে করি। আপনার কোনো সমস্যা?’
ওই যৌনকর্মী পুলিশের অভিযান সম্পর্কে বলেন, ‘মাঝে মধ্যে পুলিশ তাড়া দেয়। আবার কিছু কিছু সময় টাহা পয়সাও নেয়। অনেক সময় টাহা কাইড়াও নেয়।’
এটি শুধু রাজধানীর ফার্মগেটের একটি যাত্রী-ছাউনীর চিত্র। এমন চিত্র প্রায় প্রতিটি যাত্রী ছাউনিতেই। ফার্মগেট পার্কের বিপরীতে অবস্থিত যাত্রী-ছাউনীতেও একই অবস্থা। এই যাত্রী-ছাউনীর পাশে রাত ৩টা-৪টা পর্যন্ত চা বিক্রি করেন সেলিম নামে এক ব্যক্তি। তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথে এই জায়গাটির চেহারাও পাল্টে যায়। যাত্রী-ছাউনী ও তার আশপাশের এলাকায় সব ধরনের অপকর্ম হয়। এখানে যা চাইবেন সব পাবেন।’
এর আগে রাত সাড়ে ১২টায় দু’টি মোটরসাইকেলে করে চারজন ফার্মগেট পার্কের বিপরীতে যাত্রী-ছাউনীর নীচে অবস্থান নিল। তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে সেলিম বলেন, ‘আমি ওদের চিনি না।’ তবে আরেক দোকানি একটু চাপা স্বরে বললেন, ‘এরা ভদ্রবেশী ছিনতাইকারী। রিকশাযাত্রীদের মালামাল ছিনতাই করাই এদের কাজ। মোটরসাইকেল থেকে রিকশাযাত্রীদের মালামাল ছিনতাই করে পালিয়ে যায় তারা।’
অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অবস্থান : যৌনকর্মী, মাদকাসক্ত ও ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মুনতাসীরুল ইসলাম।
দ্য রিপোর্টকে তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও তথ্য-প্রমাণ পেলে পুলিশ অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। এ সব অপরাধীর বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সব ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে পুলিশের অবস্থান শক্ত। আমাদের কাছ থেকে কেউ ছাড় পাবে না।’
মুনতাসীরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘যারা যাত্রী-ছাউনী দখল করে বিভিন্ন অপকর্ম ও অপরাধ করছে পুলিশ তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেবে।’
সংগ্রহ- নাজমুল সাঈদ,দ্য রিপোর্ট২৪ থেকে।
©somewhere in net ltd.