নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমাকে অভিবাদন,বাংলাদেশ,তুমি ফিরে এসেছ লাল সবুজ আঁকা পতাকার ভেতরে।।

শহীদের খুন লেগে, কিশোর তোমার দুই হাতে দুই, সূর্য উঠেছে জেগে।-------হাসান হাফিজ

কাউসার আলম

কতজনের কত কিছুই হল আমার না হয় পান্তা ভাত আর নুন, কত কী যে হওয়ার কথা ছিল আমার না হয় পাগলামিটাই গুণ।।

কাউসার আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

খনার বচন

০১ লা জুন, ২০১৩ সকাল ১০:৫২

খনার বচন, প্রবাদ, ছড়া, জারী ইত্যাদি বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য। এর মধ্যে প্রায় সহস্র বছর ধরে খনার বচন গ্রামবাংলার মানুষের কথায় কথায় চলে এসেছে আজ পর্যন্ত। তবে খনার বচনের প্রচলন কমে আসছে আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকায়নের ভিড়ে। খনার বচন রচিত হয় চৌদ্দ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে। বিখ্যাত জ্যোতিষী খনা হাজারো বচন রচনা করে গেছেন বাঙালিদের জীবন সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে। খনা মিহিরের স্ত্রী। খনার শ্বশুর বরাহ নামকরা জ্যোতিষী ছিলেন। খনার জন্ম হয় বাংলাদেশে এবং জীবনকাল অতিবাহিত করেন বাংলা ভূখন্ডে। মিহিরের সঙ্গে বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হওয়ায় তিনি পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগনা জেলায় বসবাস করেন। খনার রচিত বচনে বাঙালির জীবন-যাপন রীতি, কৃষি, বৃক্ষরোপণ, পশুপালনসহ যেসব কাজে ব্যস্ত থাকত সেসব কাজের উপদেশমূলক বাক্য রয়েছে। এসব বাক্য মেনে চললে উপকার পাওয়া যায়।

প্রতিটি বচনেই রয়েছে অর্থবহ গভীর তাৎপর্য। কিছু উল্লেখযোগ্য খনার বচন এখানে উল্লেখ করা হলো।



০১.

পূর্ব আষাঢ়ে দক্ষিণা বয়,

সেই বৎসর বন্যা হয়।

০২.

মঙ্গলে ঊষা বুধে পা,

যথা ইচ্ছা তথা যা।

০৩.

পাঁচ রবি মাসে পায়,

ঝরা কিংবা খরায় যায়।

০৪.

বামুন বাদল বান,

দক্ষিণা পেলেই মান।

০৫.

বেঙ ডাকে ঘন ঘন,

শীঘ্র হবে বৃষ্টি জান।

০৬.

আউশ ধানের চাষ,

লাগে তিন মাস।

০৭.

খনা বলে শুন কৃষকগণ

হাল লয়ে মাঠে বেরুবে যখন

শুভ দেখে করবে যাত্রা

না শুনে কানে অশুভ বার্তা।

ক্ষেতে গিয়ে কর দিক নিরূপণ,

পূর্ব দিক হতে হাল চালন

নাহিক সংশয় হবে ফলন।

০৮.

যদি বর্ষে ফাল্গুনে

চিনা কাউন দ্বিগুণে।

০৯.

যদি হয় চৈতে বৃষ্টি

তবে হবে ধানের সৃষ্টি।

১০.

চালায় চালায় কুমুড় পাতা,

লক্ষ্মী বলেন আছি তথা।

১১.

আখ, আদা, পুঁই,

এই তিনে চৈতি রুই।

১২.

চৈত্রে দিয়া মাটি,

বৈশাখে কর পরিপাটি।

১৩.

দাতার নারিকেল, বখিলের বাঁশ,

কমে না বাড়ে বারো মাস।

১৪.

সোমে ও বুধে না দিও হাত,

ধার করিয়া খাইও ভাত।

১৫.

ভরা হতে শুন্য ভাল যদি ভরতে যায়,

আগে হতে পিছে ভাল যদি ডাকেমায়।

মরা হতে তাজা ভাল যদি মরতেযায়,

বাঁয়ে হতে ডাইনে ভাল যদি ফিরে চায়।

বাঁধা হতে খোলা ভাল মাথা তুলে চায়,

হাসা হতে কাঁদা ভাল যদি কাঁদে বাঁয়।

১৬.

জৈষ্ঠতে তারা ফুটে,

তবে জানবে বর্ষা বটে।

১৭.

কি করো শ্বশুর লেখা জোখা,

মেঘেই বুঝবে জলের রেখা।

কোদাল কুড়ুলে মেঘের গাঁ,

মধ্যে মধ্যে দিচ্ছে বা।

কৃষককে বলোগে বাঁধতে আল,

আজ না হয় হবে কাল।

১৮.

বাঁশের ধারে হলুদ দিলে,

খনা বলে দ্বিগুণ বাড়ে।

১৯.

গাই পালে মেয়ে

দুধ পড়ে বেয়ে।

২০.

শুনরে বাপু চাষার বেটা,

মাটির মধ্যে বেলে যেটা।

তাতে যদি বুনিস পটল,

তাতে তোর আশার সফল।

২১.

যদি বর্ষে মাঘের শেষ,

ধন্য রাজার পূণ্য দেশ।

২২.

মাঘ মাসে বর্ষে দেবা,

রাজ্য ছেড়ে প্রজার সেবা।

২৩.

চৈতের কুয়া আমের ক্ষয়,

তাল তেঁতুলের কিবা হয়।

২৪.

আমে ধান, তেঁতুলে বান।

২৫.

সাত হাতে, তিন বিঘাতে

কলা লাগাবে মায়ে পুতে।

কলা লাগিয়ে না কাটবে পাত,

তাতেই কাপড় তাতেই ভাত।

২৬.

ডাক ছেড়ে বলে রাবণ,

কলা রোবে আষাঢ় শ্রাবণ।

২৭.

কি কর শ্বশুর মিছে খেটে,

ফাল্গুনে এঁটে পোত কেটে।

বেড়ে যাবে ঝাড়কি ঝাড়,

কলা বইতে ভাঙবে ঘাড়।

২৮.

ভাদরে করে কলা রোপন,

সবংশে মরিল রাবণ।

২৯.

গো নারিকেল নেড়ে রো,

আম টুকরো কাঁঠাল ভো।

৩০.

সুপারীতে গোবর, বাঁশে মাটি,

অফলা নারিকেল শিকর কাটি।

৩১.

খনা বলে শুনে যাও,

নারিকেল মূলে চিটা দাও।

গাছ হয় তাজা মোটা,

তাড়াতাড়ি ধরে গোটা।

৩২.

যদি না হয় আগনে পানি,

কাঁঠাল হয় টানাটানি।

৩৩.

বিশ হাত করি ফাঁক,

আম কাঁঠাল পুঁতে রাখ।

গাছ গাছি ঘন রোবে না,

ফল তাতে ফলবে না।

৩৪.

বার বছরে ফলে তাল,

যদি না লাগে গরু নাল।

৩৫.

তাল বাড়ে ঝোঁপে,

খেজুর বাড়ে কোপে।

৩৬.

এক পুরুষে রোপে তাল,

অন্য পুরুষি করে পাল।

তারপর যে সে খাবে,

তিন পুরুষে ফল পাবে।

৩৭.

নিত্যি নিত্যি ফল খাও,

বদ্যি বাড়ি নাহি যাও।

৩৮.

চৈত্রেতে থর থর

বৈশাখেতে ঝড় পাথর

জ্যৈষ্ঠতে তারা ফুটে

তবে জানবে বর্ষা বটে।

৩৯.

জল খেয়ে ফল খায়,

যম বলে আয় আয়।

৪০.

দিনের মেঘে ধান,

রাতের মেঘে পান।

৪১.

বেল খেয়ে খায় পানি,

জির বলে মইলাম আমি।

৪২.

আম খেয়ে খায় পানি,

পেঁদি বলে আমি ন জানি।

৪৩.

শুধু পেটে কুল,

ভর পেটে মূল।

৪৪.

চৈতে গিমা তিতা,

বৈশাখে নালিতা মিঠা,

জ্যৈষ্ঠে অমৃতফল আষাঢ়ে খৈ,

শায়নে দৈ।

ভাদরে তালের পিঠা,

আশ্বিনে শশা মিঠা,

কার্তিকে খৈলসার ঝোল,

অগ্রাণে ওল।

পৌষে কাঞ্ছি, মাঘে তেল,

ফাল্গুনে পাকা বেল।

৪৫.

তিন নাড়ায় সুপারী সোনা,

তিন নাড়ায় নারকেল টেনা,

তিন নাড়ায় শ্রীফল বেল,

তিন নাড়ায় গেরস্থ গেল।

৪৬.

আম লাগাই জাম লাগাই

কাঁঠাল সারি সারি-

বারো মাসের বারো ফল

নাচে জড়াজড়ি।

৪৭.

তাল, তেঁতুল, কুল

তিনে বাস্তু নির্মূল।

৪৮.

ঘোল, কুল, কলা

তিনে নাশে গলা।

৪৯.

আম নিম জামের ডালে

দাঁত মাজও কুতুহলে।

৫০.

সকল গাছ কাটিকুটি

কাঁঠাল গাছে দেই মাটি।

৫১.

শাল সত্তর, আসন আশি

জাম বলে পাছেই আছি।

তাল বলে যদি পাই কাত

বার বছরে ফলে একরাত।

৫২.

পূর্ণিমা আমাবস্যায় যে ধরে হাল,

তার দুঃখ হয় চিরকাল।

তার বলদের হয় বাত

তার ঘরে না থাকে ভাত।

খনা বলে আমার বাণী,

যে চষে তার হবে জানি।

৫৩.

থেকে বলদ না বয় হাল,

তার দুঃখ চিরকাল।

৫৪.

বাপ বেটায় চাষ চাই,

তা অভাবে সহোদর ভাই।

৫৫.

ভাদরের চারি আশ্বিনের চারি,

কলাই রোব যত পারি।

৫৬.

ফাল্গুন না রুলে ওল,

শেষে হয় গণ্ডগোল।

৫৭.

মাঘে মুখী, ফাল্গুনে চুখি,

চৈতে লতা, বৈশাখে পাতা।

৫৮.

সরিষা বনে কলাই মুগ,

বুনে বেড়াও চাপড়ে বুক।

৫৯.

গোবর দিয়া কর যতন,

ফলবে দ্বিগুণ ফসল রতন।

৬০.

লাঙ্গলে না খুড়লে মাটি,

মই না দিলে পরিপাটি,

ফসল হয় না কান্নাকাটি।

৬১.

খনা বলে চাষার পো

শরতের শেষে সরিষা রো।

৬২.

সেচ দিয়ে করে চাষ,

তার সবজি বার মাস।

৬৩.

তিনশ ষাট ঝাড় কলা রুয়ে

থাকগা চাষি মাচায় শুয়ে,

তিন হাত অন্তর এক হাত খাই

কলা পুতগে চাষা ভাই।

৬৪.

বৎসরের প্রথম ঈশানে বয়,

সে বৎসর বর্ষা হবে খনা কয়।

৬৫.

পটল বুনলে ফাল্গুনে,

ফল বাড়ে দ্বিগুণে।

৬৬.

উঠান ভরা লাউ শসা,

খনা বলে লক্ষ্মীর দশা।

৬৭.

শুনরে বেটা চাষার পো,

বৈশাখ জ্যৈষ্ঠে হলুদ রো।

আষাঢ় শাওনে নিড়িয়ে মাটি,

ভাদরে নিড়িয়ে করবে খাঁটি।

হলুদ রোলে অপর কালে,

সব চেষ্টা যায় বিফলে।

৬৮.

পান লাগালে শ্রাবণে,

খেয়ে না কুলায় রাবণে।

৬৯.

ফাল্গুনে আগুন চৈতে মাটি,

বাঁশ বলে শীঘ্র উঠি।

৭০.

জ্যৈষ্ঠে খরা আষাঢ়ে ভরা,

শস্যের ভার সহে না ধরা।

৭১.

ভাদ্র আশ্বিনে বহে ঈশান,

কাঁধে কোদালে নাচে কৃষাণ।

৭২.

বৈশাখের প্রথম জলে,

আশুধান দ্বিগুণ ফলে।

৭৩.

বাড়ীর কাছে ধান পা,

যার মার আগে ছা।

চিনিস বা না চিনিস,

ঘুঁজি দেখে কিনিস।

৭৪.

শীষ দেখে বিশ দিন,

কাটতে কাটতে দশদিন।

ওরে বেটা চাষার পো,

ক্ষেতে ক্ষেতে শালী রো।

৭৫.

খনা ডাকিয়া কন,

রোদে ধান ছায়ায় পান।

৭৬.

গাই দিয়া বায় হাল,

দুঃখ তার চিরকাল।

৭৭.

তপ্ত অম্ল ঠাণ্ডা দুধ

যে খায় সে নির্বোধ।

৭৮.

ডাক দিয়ে বলে মিহিরের স্ত্রী, শোন পতির পিতা,

ভাদ্র মাসে জলের মধ্যে নড়েন বসুমাতা।

রাজ্য নাশে, গো নাশে, হয় অগাধ বান,

হাতে কাটা গৃহী ফেরে কিনতে না পান ধান।

৭৯.

ফাল্গুনে আট, চৈতের আট,

সেই তিল দায়ে কাট।

৮০.

ষোল চাষে মূলা, তার অর্ধেকতুলা,

তার অর্ধেক ধান, বিনা চাষেপান।

খনার বচন, মিথ্যা হয় না কদাচন।

৮১.

আশ্বিনে উনিশ, কার্তিকের উনিশ,

বাদ দিয়ে যত পারিস, মটর কলাই বুনিস।

৮২.

চৈত বৈশাখে লাগাইয়া ঝাল,

সুখে কাটে বর্ষাকাল।

৮৩.

আরে বেটা চাষার পো

চৈত্র মাসে ভুট্টা রো।

৮৪.

আষাঢ়ে উৎপত্তি, শ্রাবণে যুবতী,

ভাদে পোয়াতী,

আশ্বিনে বুড়া,

কার্তিকে দেয় উড়া।

৮৫.

আসমান ফাঁড়া ফাঁড়া,

বাতাস বহে চৌধারা।

কৃষক ক্ষেতের বান্ধ আইল,

বৃষ্টি হইবে আইজ কাইল।

৮৬.

মাঘের মাটি হীরের কাঠি

ফাল্গুনের মাটি সোনা,

চৈতের মাটি যেমন তেমন

বৈশাখের মাটি নোনা।

৮৭.

মাঘ মাসে বর্ষে দেবা,

রাজায় ছাড়ে প্রজার সেবা।

খনার বাণী

মিথ্যা না হয় জানি।

৮৮.

ধানের গাছে শামুক পা,

বন বিড়ালী করে রা।

গাছে গাছে আগুন জ্বলে,

বৃষ্টি হবে খনায় বলে।

৮৯.

কচু বনে ছড়ালে ছাই,

খনা বলে তার সংখ্যা নাই।

৯০.

পশ্চিমের ধনু নিত্য খরা,

পূর্বের ধনু বর্ষে ঝরা।

৯১.

স্বর্গে দেখি কোদাল কোদাল

মধ্যে মধ্যে আইল,

ভাত খাইলাও শ্বশুর মশায়

বৃষ্টি হইবে কাইল।

৯২.

তিথি বারো, স্বনক্ষত্র মাসের বারোদিন

একত্র করিয়া তারে সাতে করো হীন,

একে শুভ, দুইয়ে লাভ, তিনে শত্রুক্ষয়

চতুর্থেতে কার্যসিদ্ধি, পঞ্চমে সহায়,

ষষ্ঠে মৃত্যু, শূন্য হলে পায় বহু দুঃখ,

খনা বলে যাত্রা কভু নাহি সুখ।

৯৩.

চৈতের ধূলি, বৈশাখের পেঁকি

ধান হয় ঢেঁকি ঢেঁকি।

৯৪.

আগে বেঁধে দেবে আইল,

তবে তায় রুইবে শাইল।

৯৫.

ঊণা মাতে দুনা বল

অতি ভাতে রসাতল।

৯৬.

আউশের ভুঁই বেলে,

পাটের ভুঁই আঁটালে।

৯৭.

যদি বর্ষে আগনে, রাজা যায় মাগনে,

যদি বর্ষে পৌষে, শস্য যায় তুষে।

৯৮.

মধুমাসে প্রথম দিবসে হয় যেইবার,

রবিশেষে মঙ্গল বর্ষে, দুর্ভিক্ষ বুধবার,

সোম, শুক্র গুরু যার,

পৃথ্বী সয়না শস্যের ভার।

৯৯.

আঁধারে পড়ে চাঁদের কলা,

কতক কালা, কতক ধলা,

উত্তর উঁচু, দক্ষিণ কাত

ধারায় ধারায় ধানের হাত,

ধান-চাল দুই-ই সস্তা

মিষ্টি হবে লোকের কথা।

১০০.

যে গুটিকাপাত হয় সাগরের তীরেতে,

সর্বদা মঙ্গল হয়, কহে জ্যোতিষেতে।

নানা শস্যে পরিপূর্ণ বসুন্ধরা হয়,

খনা কহে মিহিরকে, নাহিক সংশয়।



এসব খনার বচন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এসব উপদেশমূলক গভীর জ্ঞানগর্ভ বাক্য আমাদের ঐতিহ্য। এগুলো ধরে রাখতে হবে আগামী প্রজন্মের জন্য।



[কৃতজ্ঞতা : খনার বচন, নারীগ্রন্থ প্রবর্তন, ঢাকা

পঞ্চম সংস্করণ ১১ জানুয়ারি, ২০০৭, ২৮ পৌষ, ১৪১৩

এবং

ঘুমন্ত রাজকুমার]

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জুন, ২০১৩ সকাল ১০:০৬

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: দারুন একটা জিনিস শেয়ার দিছেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.