![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমারর ব্লগবাড়ীতে আপনার সুস্বাগতম । ইনটারনেট বিপ্লবের যুগে কোন তথ্য যদি সার্চ দিয়ে না পাওয়া যায়, সত্যিই বিরক্তিকর! এই বিরক্তি কিছুটা দূর করার জন্যই আমার ব্লগি ..।! প্রয়োজনীয় তথ্যটি পেলে ভাল লাগবে নিজের, স্বার্থক হবে ব্লগিং! আসবেন আবার, বারবার! আমার সাইট http://www.kazisour.blogspot.com/
বাংলাদেশের প্রথম জনযুদ্ধ হয়েছিল কুষ্টিয়া জেলায়। তেমনি এক যুদ্ধ বংশীতলার যুদ্ধ। যা হয়েছিল সেপ্টেম্বরের পাচ তারিখ।
কুষ্টিয়া শহরের অদূরবর্তী দূর্বাচারা গ্রামে জিয়াউল বারী নোমানের নেতৃত্বে বি এল এফ এর একটি দল ছিল। তাদের পৃথক ক্যাম্প ছিল। এমন একটি ক্যাম্পের প্রধান ছিলেন শামসুল হাদী। ৫ই সেপ্টেম্বর তার অনুপস্থিতিতে ক্যাম্প ইনর্চাজ ছিলেন শাহাবুব আলী ও বাহারের নেতৃত্বে প্রায় ২০০মুক্তিযোদ্ধা ছিল। রাজাকাররা কুষ্টিয়ার পিস কমিটিকে জানিয়ে দেয়। পিস কমিটি আর্মি ক্যাম্পে জানালে পাকিস্তানী বাহিনী ভাদালিয়া হয়ে দূর্বাচারার দিকে অগ্রসর হয় । পাকসেনাদের এ খবর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে পৌছে যায় বংশীতলার অন্যতম যোদ্ধা আবুল কাসেমের বন্ধু ফটিকের মাধ্যমে।
মুক্তিযোদ্ধারা দূর্বাচারার ২ মাইল পশ্চিমে বংশীতলায় এ্যাম্বুশ করে। কিন্তু পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত পাকিস্তানীদের খোঁজ না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা নাস্তা করার জন্য অবস্থান ছেড়ে উঠে যায় । এল এম জি ম্যান আব্দুল কুদ্দুস ও সেকেম আলী বংশীতলার ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্রের পূর্ব দিকে অবস্থান নিলে পাকিস্তানী সেনাদের পায়ে হেটে আসতে দেখে। পাকিস্তানী সৈন্যরা খুব কাছাকাছি
চলে আসলে আব্দুল কুদ্দুস এলএমজির ব্রাশ ফায়ার করে দেয়। হঠাৎ আক্রমনে পাকিস্তানীরা হতভম্ভ হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমন করতে পারে না। ঘটনাস্থলে বহু পাকিস্তানী নিহত হয়।
অবিরাম গুলিবর্ষণে আব্দুল কুদ্দুসের এলএমজি জ্যাম হয়ে যায়।
এই সুযোগে পাকিস্তানী সৈন্যরা গুলি করে। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস পায়ে গুলি বিদ্ধ হন। তারপরও তিনি এলএমজি টি ফেলে দিয়ে সঙ্গী সেকেম আলী সহ সাতরে দিয়ে পাকিস্তানী সৈন্যদের নাগালের বাইরে চলে যান। এই সময়ে মধ্যে অন্য মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে এসে গুলিবর্ষণ শুরু করে। বংশীতলা হতে ৩ মাইল দুরে কুষ্টিয়া টেক্সটাইল মিলে অবস্থানরত পাকিস্তানী সৈন্যরা সেল নিক্ষেপ শুরু করে। দীর্ঘক্ষণ যুদ্ধ চলার পরে উভয় পক্ষ পিছু হটতে থাকে। পাকিস্থান বাহিনী অনেক চেস্টা করেও বাইরে থেকে কোন সাহায্য পায়নি।
এই যুদ্ধে ৮০ জন পাকিস্তানী সৈন্য ও কয়েক জন অফিসার নিহত হয়। নিহতদের সংখ্যা মুকিযোদ্ধারা ফটিকের মাধ্যমে জানতে পারে। অন্যদিকে এগারো জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
বংশীতলার যুদ্ধে শহীদ হনঃ
১। তাজুল ইসলাম -পিতা আব্দুল করিম শেখ
২। খোরশেদ আলম দিল -পিতা শাদ আহমদ
৩। শেখ দিদার আলী- পিতা নূরুল ইসলাম
৪। ইয়াকুব আলী শেখ- পিতা কুদরত আলী
৫। গোলাম মোসত্মফা রাজ্জাক -পিতা মোহাম্মদ আলী শেখ
৬। আবু দাউদ- পিতা ইয়াদ আলী গ্রাম
৭ । চাঁদ আলী মোল্লা গ্রাম
৮। আব্দুল মান্নান -পিতা মোজাহার উদ্দিন
৯। মোবারক মোল্লা
১০।দীন মোহাম্মদ।
বংশীতলার শহীদদের দূর্বাচারা বাজার সংলগ্ন নদীর তীরে দাফন করা হয়। শুধু দীন মোহাম্মদকে কমলাপুরে কবরস্থ করা হয়।
আ ক ম আজাদ(পিতা-মোঃ শামছুদ্দিন, পিয়ারপুর, কুষ্টিয়া), শফিউল ইসলাম জিল্লু (পিতা আমিরুল
ইসলাম,কেনীরোড়,কুষ্টিয়া), মতিয়ার রহমান ( গ্রাম ,মনোহরদিয়া), ফিরোজ আহম্মেদ (আমলাপাড়া কুষ্টিয়া),
হাবিবুর রহমান (শেরকান্দি, কুমারখালী), আব্দুল কুদ্দুস (মঙ্গল বাড়ীয়া, কুষ্টিয়া ), আব্দুল খালেক (হাটস হরিপুর, কুষ্টিয়া ) সহ আরো অনেকে আহত হন ।
পরদিন পাকিস্তানীরা বংশীতলা দূর্বাচারা ও আশেপাশের এলাকায় বিমান হামলা করে।
তথ্যসূত্র :★বংশীতলার যুদ্ধ আগে ও পরে এবং কুষ্টিয়া পৌরসভা।
পুনশ্চ : ব্লগার ভাইদের ঊৎসাহ পেলে কুষ্টিয়া জেলার মুক্তিযুদ্ধকালীন ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করব।
©somewhere in net ltd.