নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য কথা বলা এবং সুন্দর করে লেখা অভ্যাসের উপর নির্ভর করে

অদৃশ্য যোদ্ধা

সত্য কথা বলা এবং সুন্দর করে লেখা অভ্যাসের উপর নির্ভর করে

অদৃশ্য যোদ্ধা › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি মেয়ের গল্প।

০২ রা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:২২

জামালপুর জেলার একটি উপজেলা হলো ইসলামপুর। সেখানে থাকতো একটি মেয়ে নাম মেঘা। এস.এস.সি পাশ করে ভর্তি হলো জামালপুরের সেরা সরকারি আশিক মাহমুদ কলেজ। মেসে থেকে ক্লাস করতো।প্রতিদিন ক্লাসে যাবার সময় দেখত অপূর্ব নামের একটি ছেলে তার দিকে তাকিয়ে থাকত। ১ম বর্ষের শেষের দিকে ছেলেটি তার সাথে বন্ধুত্ব করতে চায়। ছেলেটি অনার্স কমপ্লিট করে চাকরী খুজছিল। বন্ধুত্ব থেকে এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে সম্পর্কটি প্রেমে রুপান্তরিত হয়। দুজনের গভীর প্রেম চলতে থাকে। এদিকে অপূর্বও চাকরীর জন্য চেষ্টা করে গেলেও সোনার হরিণ চাকুরীর দেখা সে পাচ্ছিল না।

দেখতে দেখতে মেঘারও এইচ.এস.সি পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল। একদিন জামালপুর শহরে একই রিকক্সায় ঘুরছিল দুজন। হঠাত, কোন এক কারণে মেঘার বড় ভাই রুপক ইসলামপুর থেকে জামালপুরে এসেছিল। বাইকে বসেই দেখেছিল তার বোন অন্য একটি ছেলের সাথে হাত ধরে রিক্সায় বসে আছে। দেখেই মাথায় রক্ত উঠে গলে তার। কিন্তু কিছুই বলল না। মনে মনে ভাবল যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে।রুপক ছাত্র রাজনীতি করার সুবাদে জামালপুরের অনেক ছেলের সাথে তার পরিচয় ছিলো।বিভিন্ন ছেলের কাছ থেকে খবর নিয়ে দেখে ছেলেটি মধ্যবিত্ত পরিবারের।

রুপক বাসায় এসে বাবাকে বললে বাবা তার বন্ধুর ছেলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার রুবেলের সাথে গোপনে বিয়ে ঠিক করলো। মেঘাকে হঠাত জরুরি খবর পাঠালো তাড়াতাড়ি বাড়ি আসার জন্য। বাড়ি আসার পরের দিনই তার বিয়ের দিন ধার্য করা হলো।বাড়ি আসার পর পরই কেড়ে নেওয়া হলো তার মোবাইল ফোন। ঘর থেকেই বের হতে পারলো না মেঘা।অপরদিকে অপূর্বকে কিছু না জানিয়ে বিয়ে করার জন্য মেঘা অনেক কষ্ট পেল। প্রথম দেখায় বিয়ে করে অপরিচিত একজন মানুষকে সে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারলো না।কিন্তু রুবেল জীবনে কখনো কোন মেয়ের সাথে প্রেম করেনি। সে সবসময় ভাবতো, সে যাকে বিয়ে করবে তাকেই সারাজীবন ভালবাসবে, অনেক বেশী ভালবাসবে, অন্যসবার চেয়ে বেশী। মেঘা কষ্ট পেলেও অপূর্ব কিন্তু মোটেও কষ্ট পেলো না, কারণ তার ভালবাসাটা ছিলো একটা বাজী। তার দুষ্ট কিছু বন্ধু ছিলো যারা সব সময় অপূর্বকে দিয়ে মেয়ে পটানোর জন্য বাজি ধরতো। কিন্তু সে ফোনে মেঘাকে হারানোর জন্য অনেক কান্নার অভিনয় করতো।

এভাবেই চলে গেল ৬ মাস। তার দুষ্ট বন্ধুরা আবার অপূর্বকে বললো মেঘার তো এখন বিয়ে হয়ে গেছে, তুই এখন তোর কাছে চলে আসতে বললে আসবে কি?? অপূর্ব বলে ১০০ বার আসবে। তার বন্ধুরা তার সাথে এবার বড় অঙ্গের বাজি ধরে। অপূর্ব আবারও মেঘাকে পটাতে থাকে। এক পর‌্যায়ে সে মেঘাকে বলে রুবেলকে তালাক দিয়ে আমার কাছে চলে আসো আমরা দুজনে সুখে থাকবো। মেঘাও তার কথায় রাজি হয়ে রুবেলকে তালাক দেয়। গত ৬ মাসে রুবেল মেঘাকে অনেক বেশী ভালবেসে ফেলে। মেঘা তাকে ফেলে চলে যাওয়ায় রাহে দুঃখে সে বিদেশে পাড়ি জমায়। অপরদিকে অপূর্বর কাছে মেঘা এসে দেখে অপূর্ব ১৪ দিন আগে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করে ফেলেছে। এসব জানার পর আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না। সাথে সাথে মুর্ছা গেল। জ্ঞান ফিরে দেখলো সে হসপিটালে। সে জানলো না কে, কিভাবে তাকে হসপিটালে এনেছে। জানার দরকারও প্রয়োজন মনে করলো না। হসপিটাল থেকে বের হয়ে হাটতে হাটতে রেল লাইনের কাছে আসলো সে। দেখলো কিছু দূরে তিস্তা ট্রেনটি দ্রুতগতিতে আসছে।রেললাইনে চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়লো মেঘা। মেঘার চোখে ভাসতে থাকলো শুধু মাত্র একজনের মুখ সে রুবেল। যে তাকে সত্যিকারের ভালবাসতো। অল্প কয়েকেদিনেই অনেক বেশী ভালবাসতো। তার চোখে শুধুই ভাসতে তার সাথে কাটানো গত ৬ টি মাসের স্মৃতি। সে চেষ্টা করছে আরও একজনের চেহারা মনে করতে সে অপূর্ব। অনেক চেষ্টা করেও মনে করতে পারলও না সে। চেষ্টা করতে করতেই তিস্তা ট্রেনটি তার উপর দিয়ে চলে গেল সুদুর ঢাকার দিকে। আস্তে আস্তে বাতাসে মিলিয়ে গেলো তিস্তার ঝিকঝিক শব্দ।।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.