নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য কথা বলা এবং সুন্দর করে লেখা অভ্যাসের উপর নির্ভর করে

অদৃশ্য যোদ্ধা

সত্য কথা বলা এবং সুন্দর করে লেখা অভ্যাসের উপর নির্ভর করে

অদৃশ্য যোদ্ধা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজাকারের সম্মন ও মুক্তিযোদ্ধার অপমান

১১ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪

দুটি মৃত্যু নিয়ে শোক করছে বাংলাদেশ। দুটি মৃত্যুই ঘটেছে কাছাকাছি সময়ে। একজন অপমানে ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছেন। আরেকজন মারা গেছেন স্বপ্নের দেশ হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়। যে কোনো মৃত্যুই শোকের। কিন্তু শোকের পাল্লায় এই দুটি মৃত্যুকে কোনাভাবেই পাশাপাশি বিচার করার সুযোগ নাই। দুটো মৃত্যূকে নিয়ে শোক প্রকাশকারীদেরও শ্রেণীগত অবস্থান ভিন্ন।
চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব খান আত্মহত্যা করেছেন। গত মঙ্গলবার রাজধানীর তোপখানা রোডের হোটেল কর্ণফুলীর একটি কক্ষ থেকে আইয়ুব খানকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান। হোটেলের ওই কক্ষ থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়। এতে লেখা রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নান ‘গলাধাক্কা দিয়ে অপমান করে বের করে দেওয়ায় আমি আত্মহত্যা করলাম।’
মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব খানের অপমানিত হয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ তোলপাড় হচ্ছে। সেখানে যারা ক্ষোভ ঝাড়ছেন তারা সাধারন জনতার অংশ। আমাদের মন্ত্রীরা, রাজনীতিকরা প্রতিদিন এই যে এতো প্রলাপ বকেন, তাদের কারো কাছ থেকেই আইযুব খানের আত্মহত্যা নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। কেউ এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদারকারী রাজনৈতিক দলটির শাসনামলে একজন মুক্তিযোদ্ধা যখন প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের আমলার বিরুদ্ধে আপমানের অভিযোগ তুলে আত্মহত্যা করেন, তখন সরকারের পক্ষ থেকে কেউ নিদেনপক্ষে তদন্তের আশ্বাসটুকু তো দেবেন। একজন মুক্তিযোদ্ধার অপমানে দু:খ প্রকাশ করার মতো, সহানুভূতি জানানোর মতো কোনো রাজনৈতিক বাংলাদেশে নেই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী সরকারেও নেই। অবিশ্বাস্য হলেও এটি বাস্তবতা।

শিল্পপতি, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আমজাদ খান চৌধুরীর কি ভাগ্য দেখেন? তিনি মারা যাবার পর প্রধানমন্ত্রী দ্রুততার সাথে শোকবার্তা দিয়েছেন। সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী আমজাদ খানের কর্মময় জীবনের ফিরিস্তি দিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট করেছেন। প্রতিমন্ত্রী অবশ্য আমজাদ খানের জীবনের ৭১ এর পর্বটি সযতনে এড়িয়ে গেছেন।
আমজাদ খান মারা যাওয়ার খবর প্রচারিত হবার পর পরই শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের কন্যা শাওন মাহমুদ ফেসবুকে একটি পোষ্ট দিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘এই মাত্র খবর পাওয়া গেলো- একজন রাজাকারের মৃত্যু ঘটেছে।’ আমজাদ খান কি রাজাকার ছিলেন? অনেকেই এই বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষন করবেন। আমজাদ খান ১৯৭১ সালের পুরোটা সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। জীবন বাজি রেখে, পরিবার পরিজনদের অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়ে অনেক সেনাকর্মকর্তা যখন সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছেন,আমজাদ খান তখন পাকিস্তানীদের আজ্ঞাবহ হিসেবে সেনা দায়িত্ব পালন করেছেন। ৭১ এর পুরো ৯ মাস পাকিস্তানী সেনারা কি করেছে- সেটা তো নতুন করে বিবরন দেওয়ার কোনো বিষয় নয়। আমজাদ খান সেই সেনাদের সঙ্গী হিসেবে, সেই সেনাদের হয়ে কাজ করেছেন।অর্থ্যাৎ তাঁর অবস্থানটা ছিলো মুক্তিযুদ্ধের, স্বাধীন বাংলাদেশের বিপক্ষে। অথচ তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শোকার্ত হন, রাষ্ট্র শোকবার্তা দেয়। মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুবের জন্য সামান্য দু:খ প্রকাশের কারো সময় হয় না।
তা হলে আমরা যে মুক্তিযুদ্ধ প্রেম বলি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলি- তার স্বরুপ আসলে কি? রাষ্ট্রের নির্দেশনা আছে- কোনো মুক্তিযোদ্ধা মারা গেলে- তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হবে। জীবিত কোনো মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদাহানি ঘটলে? এ ব্যাপারে কি কোনো নির্দেশনা নেই?

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৯

অদৃশ্য যোদ্ধা বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:৪১

বাবু>বাবুয়া>বাবুই বলেছেন: ক্ষমতা রে ভাই, ক্ষমতা / টাকা রে ভাই, টাকা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.