নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা :: শব্দেই দৃশ্যানুভূতি

খলিল মাহ্‌মুদ

সুন্দর পৃথিবী চাই

খলিল মাহ্‌মুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঢাকা কলেজে - জামান স্যার, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার ও শামীম আজাদ ম্যাডামের কথা; এবং হাবিজাবি

১২ ই জুন, ২০০৯ রাত ১০:৪৭

কী লিখতে যাচ্ছি জানি না। তবু বসলাম।



তখন কলেজে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। ১৯৮৫। ঢাকা কলেজ।

বাংলা পড়াতেন জামান স্যার, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার, শামীম আজাদ ম্যাডাম- আরও ৪/৫ জন স্যার/ম্যাডাম, যাঁদের নাম মনে নেই।



খেই হারিয়ে ফেললাম- কলেজের বিষয় চলে আসাতে। কতো কিছু, কিন্তু কোন্‌টা লিখবো?



জামান স্যার ক্লাসে এসে বাংলা সিনেমার উপর তাঁর সরেজমিন লব্ধ জ্ঞানের কথা বলতেন। তখন তো খুব সিনেমাপাগল ছিলাম, তাই ভালো লাগতো। স্যার নাকি বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষদের সাথে মিশবার জন্য মাঝে মাঝে একেবারে সামনের সাড়িতে (থার্ড ক্লাসে) গিয়ে বসতেন। হাইস্কুল লেভেল পর্যন্ত মা-বাবার মতো শিক্ষকগণও সিনেমা দেখাটাকে বখে যাওয়ার লক্ষণ মনে করতেন, কিন্তু জামান স্যারের 'সিনেমাদর্শন'-এর জ্ঞান আমাকে সিনেমা দেখার জন্য খুবই অনুপ্রাণিত করতো। দু কদম হাঁটলেই বলাকা সিনেমা হল, শো-টাইমে যার সামনের দিকটা দর্শনার্থী মানুষে থইথই করতো। ওখানে গিয়ে পাগল হয়ে যেতাম। অনেকদিনই হোস্টেলে দু-একটা মিল না খেয়ে টাকা বাঁচিয়ে সিনেমা দেখেছি।

বলাকার পাশেই ইডেন। ওখানে শাহনাজ পড়তো। স্কুল পার হয়ে ঢাকার শহরে শাহনাজকে কতো খুঁজেছি! একদিন নবাবগঞ্জ সেকশনে খালার বাসায় যাওয়ার পথে দেখি শাহনাজ আসছে রিকশায় উল্টো দিক থেকে, ওর পাশে আরেকটা মেয়ে। শাহনাজ হাসছিল সেভাবে যে হাসির জন্য আমি খুন হয়ে যেতাম। ...........শাহনাজ কি একবারও আমাকে খোঁজে না যেভাবে ওকে আমি খুঁজি- এমন ভেবে ভেবে কতো কেঁদেছি!। রুমমেটের সাথে কথা বলতে বলতে চোখে পানি চলে আসতো- ও জানতো না কিছুই, শুধু জানতে চাইতো কী হয়েছে।



শাহনাজের সাথে আজ কথা হলো।

কিরে, ফোন ধরিস না কেন?

ব্যস্ত আছি।

অন্তত ফ্রি হয়ে কি একটা কল দেয়া যায় না?

না।

তুই মানুষ হবি কবে?

আমি খুব ভালো মানুষ। বিশ্বাস না হলে আমার বউরে জিগা।

ইশ, তোর কথাবার্তাও তো দেখছি অভদ্রতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে।

রাখি, ব্যস্ত আছি।

হ্যাঁ, ব্যস্ত তো থাকবিই, ফোন করি তো।

রাখি।

কাল বীনা ফোন করেছিল। খুব দুঃখ করলো। তুই নাকি ওর ফোন ধরিস না?

ব্যস্ত থাকি।

এতো ব্যস্ত কী নিয়ে?

তুই বুঝবি না।

হ্যাঁ, আমার তো বোঝার বয়স হয় নাই।

একটা কবিতা শুনবি?

বল।

আমি কবিতার নাম বলি- তারপর গুরু ভনিলেন অমর বাণী। শাহনাজ হাসে। আমি বলি, তোদের মতো মূর্খের কাছে আর কবিতা বলবো না। রাখি।

কিন্তু রাখতে রাখতেও পিসি থেকে দুটো কবিতা শোনালাম। বেশিক্ষণ মোবাইলে কথা বলতে গেলে কানে ব্যথা হয়ে যায়।

শাহনাজ শেষ করলো, মাঝে মাঝে ফোন দিবি, অন্তত মিস্‌ডকল।



চলুন কলেজে ফিরে যাই।



আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার তখন একজন বিখ্যাত টিভি উপস্থাপক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু তখনো তাঁর কোনো অনুষ্ঠান দেখবার সুযোগ হয় নি বলে খুব আফসোস হতো।

স্যার ক্লাস নেয়ার সময় গ্যালারি ভরে যেতো, বেঞ্চিতে জায়গা না পেয়ে ছাত্ররা দাঁড়িয়ে থাকতো। অন্যান্য সেকশন, সিনিয়র-জুনিয়র সব সেকশনের ছাত্ররা চলে আসতো। তিনি আমাদের 'হৈমন্তী' পড়িয়েছিলেন। ৩ কি ৪ দিনে। আমার সারা জীবনে আজও ওরকম কোনো ক্লাসে এ্যাটেন্ড করার সৌভাগ্য আমার হয় নি। কিন্তু পরবর্তীতে বিটিভিতে স্যারের উপস্থাপনায় একটা অনুষ্ঠান দেখে খুব মর্মাহত হয়েছিলাম। তাঁর বাংলার ক্লাস যতোখানি উপভোগ্য, রসাত্মক ও আকর্ষণীয় ছিল, টিভি অনুষ্ঠান তার এক দশমাংশও মনে হয় নি।



শামীম আজাদ ম্যাডাম পড়াতেন 'সমুদ্রের প্রতি রাবণ' কবিতাটি। রাবণের পিতৃত্ববোধের বর্ণনা দিতে গিয়ে ম্যাডাম এক ক্লাসে বলে ফেললেন- নিজ সন্তান আর পরস্ত্রী সর্বদাই লোভনীয়। তখন তো সব 'স্ত্রী'ই আমাদের পরস্ত্রী, তাই কথাটার গূঢ়ার্থ আমাদের কাছে ততোখানি স্ট্রাইকিং মনে হয় নি। কিন্তু ম্যাডাম কথাটা বেশ ক'বার বললেন। ১০ সেকেন্ড নীরবতা; হঠাৎ গ্যালারির মাঝখান থেকে 'গর্ধভ' একজন দাঁড়িয়ে গেলো : ম্যাডাম, আমার বউ যদি খুবই সুন্দরী হয়, আর পরের বউটা দেখতে যদি খুবই বিশ্রী হয়, তবুও কি আমার কাছে পরস্ত্রী লোভনীয় মনে হবে?

মুহূর্তে ক্লাসের মধ্যে হাসির বোমা ফাটলো। এই ম্যাডাম এখন এই পাগলদের চেঁচামেচি থামাতে ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।

সেই হাসি একটুখানি স্তিমিত হয়েছে, এমন সময়ে পেছন থেকে আরেক পাগল দাঁড়িয়ে বয়ান করলো : ম্যাডাম, আমার বউ 'বিশ্বসুন্দরী' হলেও কি পরের বউয়ের জন্য আমার লোভ হবে?

এটা ফাটলো এটম বোমার মতো।









ঢাকা কলেজ - জামান স্যার, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার ও শামীম আজাদ ম্যাডামের কথা; এবং হাবিজাবি



ঢাকা কলেজে - জামান স্যার, আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার ও শামীম আজাদ ম্যাডামের কথা; এবং হাবিজাবি



ঢাকা কলেজের কথা



ঢাকা কলেজের পুরনো গৌরব কোথায় গেলো?

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুন, ২০০৯ রাত ১০:৫৫

ক্যামেরাম্যান বলেছেন: শামিম আজাদ তিতুমীরে আমার টিচার ছিলেন। আর আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার ছিলেন প্রতিবেশী।

১২ ই জুন, ২০০৯ রাত ১১:২৯

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: উনি বোধ হয় ঢাকা কলেজ থেকে লন্ডনে চলে গিয়েছিলেন। অনেক বছর পর গত বছর চ্যানেল আইতে তাঁর একটা সাক্ষাৎকার দেখি। ম্যাডামকে দেখলাম একটুও বদলাননি।

২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১০ বিকাল ৪:০৫

কালীদাস বলেছেন: আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের কথা অনেক শুনেছি কিন্তু পাইনি। আপনারা লাকি!

১৬ ই এপ্রিল, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:২৪

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: হ্যাঁ, আমরা খুবই লাকি।

৩| ১৮ ই জুলাই, ২০১০ বিকাল ৪:২৭

পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন: শামীম আজাদ =ম্যাডাম?? আপনি নাম উল্লেখ না করে দিলে শিওর বোকা হয়ে যেতাম উনি স্যার না ম্যাডাম এই ভেবে :D

২০ শে জুলাই, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১৫

খলিল মাহ্‌মুদ বলেছেন: ভালো:)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.