নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এক অভিজিৎ লোকান্তরে, লক্ষ অভিজিৎ ঘরে ঘরে........

খান আসিফ তপু

আমাদের জীবনগুলো আসলে একেকটি উপন্যাস, সুন্দর মলাটে বাধানো হাজার পৃষ্ঠার উপন্যাস। উপন্যাসের শুরু হয় জন্মে আর শেষে থাকে মৃত্যু। উপন্যাস জুড়ে থাকে অসংখ্য ছোটগল্প,থাকে ভাঙ্গা গড়ার খেলা। সেই উপন্যাসের মূল চরিত্র আমরা নিজেই। আমাদের ঘিরে থাকে অসংখ্য পার্শ্বচরিত্র। কোন চরিত্র থেকে যায় পুরো উপন্যাস জুড়েই। আবার কোন পার্শ্বচরিত্রের বিচরণ থেমে যায় ক্ষুদ্র পরিসরেই। সে চরিত্রকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় উপন্যাস। চলে আসে নতুন নতুন গল্প,নতুন নতুন চরিত্র। \nউপন্যাসে কখন কোন গল্প শুরু হবে,কে আসবে সবই ঠিক করেন লেখক। তার কলমের আচড়ে লেখা হয়ে যায় উপন্যাসের মানুষ গুলোর ভবিতব্যতা। সত্যি ঈশ্বর মহান লেখক............

খান আসিফ তপু › বিস্তারিত পোস্টঃ

অণু গল্পঃ পরের জনমে পাখি হব

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:৩১

সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার পাখা গজাইছে। পাখা যেহেতু গজাইছে, এখন উড়ান দেয়া দরকার। প্রথম প্রথম উড়তে সমস্যা হলেও পরে ভালভাবেই উড়ান দিলাম। আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছি, যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতে পারছি কোন ঝামেলা ছাড়াই । মনটা আনন্দে ভরে গেল, কোন যাতায়াত ভাড়া লাগছে না। আবার কষ্টও লাগছে, নিজেকে খুবই ক্ষুদ্র মনে হচ্ছে বলে। একবার আয়না দেখা দরকার, পাখনা দুইটা কেমন হইল। এইসব ব্যাপারে আমি আবার খুতখুতে।

ভালবাসার মানুষটা এখন অনেক দূরে , তার কাছে একবার যাওয়া উচিৎ । যেই ভাবনা সেই কাজ। উড়াল দিয়া চলে গেলাম তার কাছে। সে ঘুমোচ্ছে, গভীর ঘুম। পাশেই সদ্য বিয়ে করা স্বামী নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে । মেয়েটা এত বেলা করে ঘুমায় কিভাবে, বিরাট বদ অভ্যাস। থাপ্রায়া ঠিক করতে হবে। যদিও সে আর আমার নাই, তার বিয়ে হয়ে গেছে । সুতরাং থাপ্রানো অসম্ভব। বেশ কবার ডাক দিলাম , সারা শব্দ নাই। শেষমেশ ওর হাতে হাত দিতেই , জাগনা পেল। জাগনা পেলে কি হবে, আমাকে দেখেই চিৎকার। ভয়ানক চিৎকার। কিছু বুঝে ওঠার আগেই, আমি ফুরুৎ । খুবই খারাপ লাগল, মেয়েটা আমাকে চিনতে পারে নাই। পাখনা দেখে ভয় পাইছে। ওর কি দোষ, দোষ আমার। পরে স্যরি বলতে হবে।

কখন যে ক্ষিদে লাগছে টের পাই নি। নাহ, এবার ঘরে ফেরা দরকার। ঘরে ফিরব বলে উড়ছি, রাস্তায় বন্ধুর দেখা । ওকে ডাকলাম, সেও শোনে না। বিরাট সমস্যা তো , পাখা গজানোর সাথে সাথে কি আমার কন্ঠও বদলে গেছে। নাহ, মাথায় কিছু ঢুকছে না। বন্ধুর সামনে গিয়ে চিৎকার করলাম। একি, বন্ধু আমার দিকে ঢিল মারছে। শালা বিরাট ফাজিল তো।
এবার ঘরে যাওয়া দরকার। মা আবার খোঁজাখুঁজি করবে।
ঘর ভর্তি মানুষ, মা অজ্ঞান হয়ে পরে আছেন। বাবা ডুকরে ডুকরে কেদে চলছেন। মোটামুটি সবাই কাদছে, কেউ কেউ চিৎকার করে কাদছে। কিসের এত দুঃখ সবার ! কাদছে কেন সবাই । মা উঠেছে, কিছুক্ষন কেদে আবার মূর্ছা গেলেন। আমারও কান্না পেল।
আমার বিছানায় একটা নিথর দেহ শুয়ে আছে। দেহটা আজকের দুঃখ আসরের কেন্দ্রবিন্দু । ভালভাবে দেখলাম, আরে সে দাড়ি, সেই চোখ, সেই মুখ! এইটা তো আমি নিজেই! তাহলে এই পাখনাওয়ালা আমি কে?! আয়নার সামনে গেলাম। এ আমি কি দেখছি, আয়নায় তো একটা পাখি দেখা যাচ্ছে! একটা শ্বেতশুভ্র পাখি!
আমার দেহটার দিকে আরেকবার তাকালাম, মায়া লাগছে। খুব ভুল হয়ে গেছে, কাল রাতে এত গুলো ঘুমের বড়ি খাওয়া ঠিক হয় নি। আর আমার কি দোষ, ও কেন আমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করতে গেল। আমার কস্ট লাগে না বুঝি, সে তো জানে আমি কতটা অভিমানী।
উড়ে উড়ে জানালায় গিয়ে বসলাম। এই ঘর আর আমার না, এই মানুষ গুলোও আর কেউ নয় আমার। আমাকে উড়ে যেতে হবে দিগন্তের পানে, অজানা সীমাহীন পথ ধরে। অনেক দীর্ঘ পথ, তবে উড়তে আমার ক্লান্তি নেই।
ইশ্বরকে ধন্যবাদ, মৃত্যুর পর আমাকে পাখি বানিয়েছেন। সারা জীবনের চাওয়া পূরণ করেছেন।



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৮:২২

জাফরুল মবীন বলেছেন: বেশ লাগল গল্পটা পড়তে।ধন্যবাদ অাপনাকে গল্পটি উপহার দেওয়ার জন্য।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:৫৯

খান আসিফ তপু বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.