নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনেরও ঘর থাকে। মন ও উদ্বাস্তু হয়।হয়ে পড়ে ভ্রাম্য মন। স্থিতধী আর ভ্রাম্য মনের লড়াইয়ে জন্ম নেয়, কিছু স্পষ্ট উচ্চারণ।

স্থিতধী

আমরা সবাই যেন একেকটি খামে মোড়া চিঠি। সবাই পারেনা সে খাম খুলে আমাদের পড়ে নিতে।

স্থিতধী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সম্মান ও সম মানদণ্ড

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৫



ছবিটি ২০১৬ অলিম্পিকস গেমসের মিশর ও জার্মানির মাঝে নারী ভলিবল প্রতিযোগীতার। সে সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেছিলাম; " Accept your differences, Respect each other, and Participate" ।

পোশাক সংস্কৃতির একটি প্রতীক অনেকক্ষেত্রে হয় বটে, তবে তা কখনো সংস্কৃতির গুণাবলীর মানদণ্ড হতে পারেনা । পোশাক কখনো কোন সংস্কৃতির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো কি, তাঁর অর্জন কি, তাঁর ব্যর্থতাগুলোই বা কি সেগুলোর বয়ান দিয়ে যেতে পারেনা। ফলে পোশাকের মানদণ্ডে দুটি ভিন্ন সংস্কৃতির তুলনা করা অবান্তর প্রচেষ্টা। একই ভাবে দুটি মানুষের মানবিক, চারিত্রিক গুণাবলী ও ব্যাবহারিক যোগ্যতার তুলনাও তাই পোশাকের মানদণ্ডে হয়না, সেটা করা এক প্রকারের বালখিল্যতাই নয় শুধু, ক্ষেত্রবিশেষে তা ভীষণ অন্যায় ।

তাহলে পোশাকের "প্রতীক" উপযোগিতাটি দিয়ে কি হয়? উত্তর টি হল কিছু "পার্থক্য" করা হয়। এই পার্থক্য মূলত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ; "আমরা আর ওরা" এর পার্থক্য। পৈতা দিয়ে যদি বামন চেনা যায় তাহলে জার্সি দিয়ে চেনা যায় কে ব্রাজিল আর কে আর্জেন্টিনা। কিন্তু গত বিশ্বকাপে কোন দল ভালো খেলা দেখালো সেই তুলনা কি আর জার্সি দিয়ে হয়? হয়না, কারন পোশাক এখানে দুই দলের ‘পার্থক্য’ বোঝাতে সৃষ্টি হয়েছে দু দলের তুলনা করার ‘মানদণ্ড’ রূপে নয়।

তবুও বহু মানুষ পোশাক দিয়ে পার্থক্য শুধু নয় পোশাক দিয়ে তুলনাও করে বসে। কেন করে? কারন মানুষ প্রাণীটা কেবল যৌক্তিক প্রানী নয় সে অনেক আবেগীও। এই আবেগ তাই অনেকসময় তাঁর পছন্দের প্রতীকে সুখ খুঁজে পায়, মঙ্গল খুঁজে পায়, সৌন্দর্য খুঁজে পায় এমনকি সত্যকেও খুঁজে পায়! রবীন্দ্রনাথের ভাষায় “আনন্দ(সুখ)লোকে, মঙ্গল আলোকে(প্রতীক) বিরাজ সত্য সুন্দর” ।

সেকারনে আমি যদি বেশ আবেগ দিয়ে ব্রাজিল দলের সাপোর্ট করে যাই তাহলে ব্রাজিলের খেলার শৈলী ই শুধু না, ব্রাজিল দলের জার্সিটা দেখেও আমার সুখ বাড়তে থাকে, সবচেয়ে সুন্দর জার্সি ওটাই মনে হয়। আর এই আবেগ আরো কড়া ও বিকারগ্রস্ত হওয়া শুরু করলে এবার আর্জেন্টিনা দলের জার্সি ব্রাজিল দলের জার্সির সামনে একটা “ঘড় মোছার ত্যানা” এমন সব বিদ্ঘুটে উপমাও দিয়ে বসতে পারি। আমার অপর ব্রাজিল সাপোর্টার বন্ধু যদি বলে বসে যে “আর্জেন্টিনা দলের জার্সিটা এমনিতে দেখতে সুন্দর আছে” তখন আমি গোস্বা হবো আর ফতোয়া দিয়ে বসবো, “তুই ব্যাটা ব্রাজিলের সহী সাপোর্টার না, তুই একটা ম্যাওপ্যাও, তোর লেজ দেখা যায়, ল্যাঞ্জা ইজ ভেরি ডিফিকাল্ট টু হাইড!”

দুঃখের বিষয় এভাবে অনেকসময় মানুষের এই বিকারগ্রস্ত অহং , পোশাক অথবা অন্য নানা জড় প্রতীককে একটি ‘মানদণ্ড’ হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করে যেটা কিনা স্বাভাবিক ভাবেই জোড়পূর্বক ভাবে তৈরি করা ব্যাক্তি বা গোষ্ঠী পক্ষপাতদুষ্টতার ভারে এক দিকে হেলে থাকা একটি অসম মানদণ্ড ; ফলে ন্যায়বিচারে সম্পূর্ণ অক্ষম।

ট্র্যাজেডি আরো ব্যাপক হয় যখন এমন মানবগোষ্ঠী প্রতীক হিসেবে শুধু জড় বা মৃত কেই নয়, জীবন্ত মানুষকেও মনের খুশিমতো সাজিয়ে নিতে চেষ্টা করে। আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই যে এদের হাতে জলজ্যান্ত নারী কেবল বস্তু- ই নয়, নিজেই একটি প্রতীকে পরিণত হয়! আমাদের এই অঞ্চলে নানা রকমের মতে ‘মতান্ধ’ ও নানা রকমের ধর্মে ‘ধর্মান্ধ’; মোটাদাগে এমন দুটি দল কে দেখা যাবে যারা প্রায়ই নারীকে তাঁদের নিজস্ব চিন্তাধারায় কিছু নির্দিষ্ট প্রতীক রূপে তৈরি করে নিতে চায় যা খানিকটা নিম্নরূপ;

প্রতীক ১) প্রগতিশীল আধুনিকা, আত্মনির্ভরশীল শিক্ষিতা নারী
‘মতান্ধ’র বর্ণণা ও প্রত্যাশাঃ এই নারীর সর্বাঙ্গ ঢাকা থাকবেনা কোনভাবেই, বিশেষ করে চুল, মুখমণ্ডল, ঘাড়, গলা, হাত অনাবৃত থাকা একেবারে অত্যাবশ্যক। জিন্স, টি শার্ট থেকে শুরু করে হাল ফ্যাশনের সব পোশাক তাদের বেশী করে পরিধান করা উচিৎ । আধুনিক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত। ধর্ম সহ পিতৃতান্ত্রিক সমাজের অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী নানা শারীরিক – সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো এদের ছুড়ে ফেলে দেয়া উচিৎ ।
‘ধর্মান্ধ’র বর্ণণা ও প্রত্যাশাঃ নারীর উক্ত প্রতীক আসলে প্রগতিশীলতার নয়, তা চরিত্রহীনতা , উশৃঙ্খলতা ও গোমরাহির প্রতীক। এই প্রতীকি নারীদের আসলে হেদায়াতের প্রয়োজন । এরা যদি ধর্মে বিশ্বাসী হয়ওবা তাতে কিছু আসে যায়না কারন এরা আখেরে জাহান্নামেই যাবে। এরা সহজেই পরপুরুষের সাথে বিছানায় চলে যায়, তাই এদের শুধু সহজে ভোগ করা যায়। এদের জীবনসঙ্গিনী হিসেবে বিশ্বাস করা যায়না। এরা জীবনসঙ্গিনী হলে সংসার আর সুখের হয়না।

প্রতীক ২) রক্ষণশীল ধার্মিক, পর্দানশীল পতিব্রতা নারী
'ধর্মান্ধ' র বর্ণণা ও প্রত্যাশাঃ যেকোন রকমের যৌন আবেদন সহজে বোঝা যাওয়া যাবেনা তাই এদের মাথা থেকে পা সর্বাঙ্গ খুব ঢোলা কাপড়ে ঢাকা থাকবে, এমনকি মুখও ঢাকা থাকা উচিৎ, কণ্ঠস্বর সর্বদা খুব নিম্ন আওয়াজে থাকবে। পিতৃতান্ত্রিক সমাজের সকল রকমের ঐতিহ্যে পূর্ণ আস্থা আর ধর্মচর্চা তে পূর্ণ আনুগত্য অত্যাবশ্যক।কমবয়সে বিয়ে করে এরা চরিত্র নষ্ট হবার হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে স্বামীর সদা অনুগতা হবে। পড়ালেখা জানা থাকা ভালো তবে তা স্বামী, সন্তান, সংসার কে সাহায্য করার মতো হলেই যথেষ্ট, এর বেশী হলে সেটা বড়জোড় ধর্ম শিক্ষা হতে পারে, অন্য কিছুনা।
‘মতান্ধ’র বর্ণণা ও প্রত্যাশাঃ নারীর উক্ত প্রতীক বাস্তবে অতীতমুখিতা, প্রতিক্রিয়াশীল জঙ্গি মানসিকতা ও পিতৃতান্ত্রিকতার প্রতীক। এই প্রতীকি নারীদের আসলে এসব শেকল থেকে মুক্তির প্রয়োজন। এরা যদি ভালো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেওবা তাতে কিছু আসে যায়না কারন এরা দিন শেষে ধর্ম আর পুরুষের উপকারে আসে কেবল, মানবতার উপকার ও মুক্তী এদের দ্বারা হবেনা। এরা সহজেই পুরুষের ধার্মিক চাল গুলোর কাছে পরাজিত হয়, তাই ধর্ম এদের আজীবন পুরুষের সেবাদাসী গোলাম করে রাখতে পারে। এদের জীবনসঙ্গিনী বানিয়ে ভোগ করা শেষে পুরুষ আবার অন্য নারী ভোগে মন দিবে । পুরুষের জীবনসঙ্গিনী হবার স্বপ্ন দেখতে গিয়ে এরা পুরুষের প্রাতিষ্ঠানিক লাম্পট্যের সহযোগী হয় কেবল, নিজের ভাগ্যে বা চাওয়া পাওয়াতে কোন পরিবর্তন আনতে পারেনা।

মজার বিষয়, এই যে এই প্রতীকগুলোর সৃষ্টি ও তাঁর সাধারণ বর্ণনা; এগুলোর পেছনে যত না নারীর ভূমিকা আছে তার থেকে অনেক বেশী ভূমিকা রাখছে ঐ সমাজগুলোর নানা চরম মতাদর্শধারী পুরুষদের ধ্যানধারণাগুলো। ফলে স্পষ্টত তাঁদের প্রতীক বর্ণনাতে নারীর পোশাক ও যৌন জীবনের উপর বয়ান দেয়া নিয়েই উৎসাহ বেশী থাকতে দেখা যায় । বিভিন্ন ধারার নারী নিজে আসলে নিজের জন্য কি চায়, কিভাবে বাঁচতে চায় সে কথা জানা, শোনা ও মেনে নেবার ধৈর্য, মানসিকতা তাঁদের নেই। তারা জেনেও মানতে চায়না যে একই নারী তাঁদের তৈরি ওসব “প্রতীক বর্ণনা” র সব গুণ বা দোষ কে নিজের মাঝে বরণ,ধারন অথবা বর্জন করার অধিকার ও যোগ্যতা রাখে। তাই সমাজে একই সাথে একজন “আধুনিকা, অপর্দানশীল, ধার্মিক নারী” কিংবা একজন “উচ্চ শিক্ষিত, আত্মনির্ভরশীল, পর্দানশীল নারী” র দেখা পাওয়া অসম্ভব নয় মোটেও। কিন্তু অমন ভিন্ন ধারার বর্ণনা শুনতে ও ভাবতে গেলেও ওই দুই দলের লোকের অনেকের নিজের মাঝেই যেন cognitive dissonance এর সৃষ্টি হয়।

তাই এই দুই দিকের দুই চরমপন্থী মানুষগুলো কে আজকে ২০২০ সনে এসেও দেখা যায়, একটি ভাইরাল ছবিতে এক নারীর “পোশাক” এর ভুল মানদণ্ডে পুরো নারী জাতির উন্নতি বা অবনতির বিচার করে একদিকে অতি “হাততালি” আর এক দিকে অতি “ গালাগালি”র ফোয়ারা ছোটানো! এনারা জানেনা বা জানতেও চায়না যে আজকের যুগে এসে একটি দেশে বা সমাজে নারীর উন্নতি /অবনতি/ ক্ষমতায়ন বোঝার ও তা তুলনা করার অনেক রকমের নৈর্ব্যক্তিক মানদণ্ড রয়েছে। যেমন;
১) নারী শিক্ষার হার
২) নারীর কর্মসংস্থানের হার এবং কর্মস্থানে উঁচু নেতৃত্বপদে যাবার হার
৩) নারীর অর্থ নৈতিক অন্তর্ভুক্তির হার (নারীর নিজের চালানো ব্যাঙ্ক একাঊন্ট থাকা ইত্যাদি)
৪) কর্মস্থলে নারীর মাতৃত্বকালীণ ছুটি পাবার আইনী অধিকার ও শর্তাবলী
৫) মাতৃত্বকালীণ মৃত্যু হার

তবু ভালো বাংলাদেশে ওই দুই ধারার চরমপন্থী মানুষগুলোর মাঝখানে আরো অনেকগুলো মিশ্র - সাংস্কৃতিক ধারার মানুষের স্তর এখনো বিদ্যমান যারা ‘প্রতীকি’ সংস্কৃতি চর্চার চাইতে বাস্তবের সাথে তাল রেখে নিজেদের পরিমার্জিত করতে আগ্রহী । এরা যতদিন আছে, বাংলাদেশের সুস্থ থাকা ও গণতান্ত্রিক বিকাশের সম্ভাবনাও ততদিন আছে।

শুরুতে যা বলছিলাম, মানুষ তাঁর আবেগী অহং এর দ্বারা যে প্রতীক ভিত্তিক ভুল মানদণ্ড গুলো তৈরি করে তাঁর একটি প্রধান নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য হলো অন্যকে এবং অন্যের বিশ্বাসের প্রতীকগুলো কে ক্রমাগত অযৌক্তিক আঘাত করে যাবার মাধ্যমে নিজের বিকারগ্রস্ত অহং কে তৃপ্ত করার চেষ্টা করা। অহং কে তৃপ্ত করার এই বিকারগ্রস্ত চেষ্টায় বাড়ে কেবল সংঘাত। সংস্কৃতির সুন্দর দিকগুলো দেখার বদলে আমাদের দেখতে হয় তাঁর কদর্য দিকগুলো।

তাই নিজেদের সংস্কৃতির (জীবনযাত্রার) পার্থক্যগুলোকে মেনে নিয়ে, অহং এর স্থলে আত্মসম্মান কে প্রাধান্য দিয়ে আমরা নিজেদের ও নিজেদের থেকে ভিন্ন জীবনযাত্রার মানুষদের সম্মান করার চেষ্টাটি করতেই পারি। আর কোনরকম তুলনার প্রতিযোগিতায় যদি যেতে হয় তবে তারজন্য আগে তুলনার ন্যায্য ও স্পষ্ট মানদণ্ড প্রস্তুত থাকা চাই। নচেৎ দর্শক তো দর্শক, এমনকি খেলোয়াড়ররাও খেলার মাঠে তাঁদের খেলোয়াড়ি মনভঙ্গি (sportsmanship) বজায় রাখতে পারেনা নিজেদের মাঝের সব পার্থক্যগুলোকে ভুলে গিয়ে। ন্যায্যতার অনুপস্থিতি বিকারগ্রস্ত অহং এর বিকার আরো তীব্র করে তোলে। কিন্তু তাঁর উপস্থিতি, সেই বিকারের বিস্তার বহুলাংশে রোধ করতে সক্ষম।


ছবিঃ খেলা শেষে ইতালি ও মিসরের নারী ভলিবল খেলোয়াড়দের পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময়

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আমরা নিজেদের উদার বলি বা ভাবি। আসলে আমাদের মন অনেক সঙ্কীর্ণ তাই এরকম ঘটনা ঘটছে। ১৭ কোটি লোকের দেশে বিভিন্ন চিন্তা ধারার, ধর্মের, আদর্শের মানুষ আছে। সবাইকে নিয়েই এই সমাজে বাচতে হবে। কিন্তু আমরা মনে করি সবাইকে আমার মতই হতে হবে। পোশাক মানুষের ব্যক্তিগত একটা ব্যাপার এটা নিয়ে অন্য মানুষের কথা না বলা উচিত।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১১

স্থিতধী বলেছেন: "আমরা মনে করি সবাইকে আমার মতই হতে হবে "

সেটাই, মনে করি তো করিই তার উপর আবার আমার মতোই বানানোর জন্য নানান রকম জবরদস্তির চেষ্টা করি। সেটা নিয়ে কোন লাজ লজ্জাও রাখিনা

২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১০

মুক্তা নীল বলেছেন:
পোশাক নিয়ে সমসাময়িক যা ঘটনাগুলো ঘটছে আপনার
লেখা পড়ে মনে হচ্ছে বেস্ট একটা লেখা পড়লাম।
আমাদের মন-মানসিকতা একেকজনের একেক রকম
হতেই পারে কিন্তু একজন মা ও তার সন্তানের আত্মিক
বন্ধন এর বিষয়টি চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে পোশাকটি।
লেখাটি প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম ।
ধন্যবাদ আপনাকে।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৮

স্থিতধী বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে তিল কে তাল , তাল কে তালা, আর তালা কে শেষে তালাক বানিয়ে ফেলার ক্ষেত্রে আমাদের এই অঞ্চলের মানুষের কোন জুড়ি নাই। এই ঘটনা তার আরেক নিদর্শন।

৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৮

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আমাদের সমস্যা হচ্ছে যে আমরা যেকোনো কিছুকেই প্রথমএ একটা ধারা বা প্যাটার্নে ফেলার চেষ্টা করি। এরপর দেখি প্যাটার্নটা আমার মনমতো কি না।মনমতো হলে প্রশংসায় ভাসাই আর মনমতো না হলে নিন্দা করে উড়িয়ে দেই। ধারায় ফেলার চেষ্টা না করে যখন আমরা স্পেড কে স্পেড হিসেবেই দেখতে শিখবো তখন আর এসব সমস্যা হবে না। সবকিছুকেই নিজের মনের মতো করে নেয়ার প্রচেষ্টাই যত নষ্টের মূল। চমৎকার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪২

স্থিতধী বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। এমন সহজ প্যাটার্ন বা মডেল খোঁজার লোক এদেশে ধীরে ধীরে হলেও কমতে থাকুক এটাই এখন প্রত্যাশা।

৪| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৮

কলাবাগান১ বলেছেন: প্রধানমন্ত্রী এর উচিত দুজনকে বংগভবনে ডেকে একসাথে বসা। দুজন হল মটর সাইকেল চালিয়ে গায়ে হলুদের অনুস্ঠানে যাওয়া নারী ও বোরখা পরে ছেলের সাথে ক্রিকেট খেলা নারীকে।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৪

স্থিতধী বলেছেন: ভালোই বলেছেন! =p~

৫| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৬

রাজীব নুর বলেছেন: ১নং মন্তব্যকারী আমার মনের কথা বলে দিয়েছেন।

৬| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: যার বিয়ে তার খবর নাই অন্যরা বেহুশ । আমরা এভাবে চলছি ।

৭| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ ভোর ৪:২৭

সেনসেই বলেছেন: চমৎকার বিশ্লেষণ। তবে প্রথম দিকে সুখপাঠ্য ছিল। শেষে এসে বোরিং হয়ে গেছে।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ ভোর ৬:২১

স্থিতধী বলেছেন: ধ্নন্যবাদ আপনার সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য। হতে পারে, শেষ দিকে এসে লেখার ধাঁচ একটু বদলেছিলাম বটে।

৮| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:০২

রাশিয়া বলেছেন:
মিশরের মহিলারা তো রাস্তাঘাটে এত সংখ্যায় হিজাব পড়ে চলেনা। তাইলে নাচতে নেমে কেন ঘোমটা দেয়?




১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৩৮

স্থিতধী বলেছেন: রাশিয়া বলেছেন: "মিশরের মহিলারা তো রাস্তাঘাটে এত সংখ্যায় হিজাব পড়ে চলেনা। তাইলে নাচতে নেমে কেন ঘোমটা দেয়?"

আপনাকে দেশ বিদেশ ঘোরা জ্ঞানী লোক মনে হচ্ছে। ধরে নিচ্ছি এই তিনটি ছবি ই মিশরের। প্রথম ছবির এক কোনায় একজন হিজাব পরিহিতা নারী কে দেখছি। আর শেষ ছবিটিতে দুটো বোরকা পরিহিতা নারী কে দেখছি। এই ছবিগুলোতে সর্বমোট ১৩ জন নারী দেখতে পাচ্ছি যার মাঝে ৩ জন হিজাব/ বোরকা পরিহিত। আপনার দেওয়া এই স্যাম্পল অনুযায়ী মিশরের ২৩ % নারী বা প্রতি ৫ জনে ১ জনের ও বেশী নারী কে হিজাব/ বোরকা পরার অভ্যাস আছে মনে হচ্ছে।

তো এখন মিশরের ঐ প্রায় ২০% থেকে আসা একজন নারী যিনি একই সাথে ভলিবল খেলায় পারদর্শী এবং হিজাব পরে চলেন, তার মিশর নারী ভলিবল দলে নির্বাচিত হয়ে হিজাব পরে ভলিবল খেলার অধিকার নেই? যে খেলা খেলতে নেমে তার পক্ষে ঘোমটা দেওয়া সম্ভব সে খেলায় তিনি বা ঘোমটা পরতে পারবেন না? কর্তৃপক্ষ কে তাকে বাঁধা দিতে হবে? আর যাই হক, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ আছে এমন দাবি করা যেকোন দেশে কোন কিংবা সংস্থায় ওরকম জোড়জবরদস্তি খাটেনা।

গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থাকা যেকোন মানুষ তাই আপনার শেয়ার করা তৃতীয় ছবিটি দেখে হয়তো একটু বেশী খুশী হবে। কেননা "বৈচিত্র" ও " সম্প্রীতি্" এই দুটো জিনিষ কে একসাথে তৃতীয় ছবিটিতে বেশী দেখা যাচ্ছে যা গণতন্ত্রের একটি আকাঙ্খা (unity in diversity)।

৯| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৫০

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: বিকিনি পরে খেললে অনেকেই খুশি কিন্তু বোরকা পরে খেললে অনেকের চুলকানী শুরু হয়।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ ভোর ৫:২১

স্থিতধী বলেছেন: সঠিক। আবার এর উল্টোটাও সত্য। সেকারনেই আসলে নারী বা পুরুষ কারোর ই পোশাকের বিবেচনায় তাঁদের চরিত্র, কর্ম বা উদ্দেশ্য নিয়ে যেকোন ধরণের বক্র মন্তব্য করা থেকে সবার বিরত থাকাই শ্রেয়।

১০| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:২১

কলাবাগান১ বলেছেন: বোরকার বিপরীত কেন বিকিনি হবে??? ধর্মান্ধ রা এই তুলনা করতে উস্তাদ....যারা বোরকা পড়ে না, তারা কি রাস্তাঘাটে বিকিনি পড়ে ঘুরে বেড়ায়???

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৩৩

স্থিতধী বলেছেন: ঠিক। বোরকা থেকে বিকিনি এই দুই ধরণের পোশাকের মাঝখানে আরো নানা কম্বিনেশনের পোশাক রয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রাসঙ্গিকতা আর নিজ নিজ স্বাধীন রুচি অনুযায়ী নারী এই যেকোন ধরণের পোশাক পরতে পারে। যেমন অলিম্পিকস ভলিবল খেলার ছবিটিতে মিসরের একজন নারী খেলোয়ারকে দেখা যাচ্ছে হিজাব পরে থাকতে কিন্তু বোরকা নয়, কারন সেটা পরে তিনি ভলিবল খেলতে পারবেনা ঠিক মতো, তাই তাকে লেগিংস পরিধান করতে দেখা যাচ্ছে। আবার তাঁর দলের সঙ্গী নারী খেলোয়ারটি হিজাব পরার কোন প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন নি। জার্মানি- ইতালির নারীরাও তাঁদের রুচি- অভ্যাস- স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী পোশাক পরে খেলছেন। এই সব ই নারীর পোশাক নির্বাচনের স্বাধীনতা, তাঁদের এই স্বাধীনতায় বক্র মন্তব্যের অধিকার কারো নেই।

১১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আসলে এভাবে তুলনা করে কোন লাভ নেই। যে যেটা গ্রহণ করবে সে সেটাইর বহি:প্রকাশ করবে।

১২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০০

রামিসা রোজা বলেছেন:
চমৎকার উদাহরণ দিয়ে আপনার বিশ্লেষণ প্রশংসার দাবি
রাখে । একশ্রেণীর মানুষ আছে সমালোচনা প্রিয় , তাই
কিছুই বলার নেই । একটি প্রবাদ বাক্য আছে ,
আসতেও কাটে যেতেও কাটে । আমার কাছে সবথেকে ভালো লেগেছে , একজন মা তার সন্তানকে সঙ্গ দিচ্ছেন ।
এখানে এতকিছু বলার কি প্রয়োজন ?
ধন্যবাদ আপনাকে।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:২১

স্থিতধী বলেছেন: সুন্দর এই মন্তব্যটির জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ। সমালোচনা জিনিষটা আমাদের দেশের বেশীরভাগ মানুষ মূলত বিনোদন, ব্যাক্তি আক্রমণ অথবা হিংসা বিদ্বেষ প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে নেয়। সমালোচনা যে আসলে সম - আলোচনা, যার মাধ্যমে কিনা আলোচক আর আলোচ্য দুজনই উপকৃত হতে পারে; সেই ব্যাপারটা বুঝে সমালোচনা করা লোকের সংখ্যা কম ই হয়। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।

১৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ৮:৪৪

খায়রুল আহসান বলেছেন: আলোচনাটি চমৎকার হয়েছে। বেশিরভাগ মন্তব্যও। শিরোনামটাও যথাযথ।

পোশাক সংস্কৃতির প্রতীক হতে পারে, গুণ যাচাই এর মানদণ্ড নয় - যথার্থ বলেছেন, একমত।

পোস্টে পঞ্চম ভাললাগা। + +

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.