![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রথম পর্ব ঃ
সে রাতে আকাশ খুব কেঁদেছিল।মেঘের হুঙ্কার,বিজলীর ধমক আর বাতাসের তীব্রতায় আতঙ্কিত জনপদ,করুন কণ্ঠে অসুরে-গীত প্রসব করছিল ক্রমাগত।এমনই এক রুদ্ধশ্বাস ঝড়ের রাতে চিৎকার করে সে হাজির হয়েছিল প্রাণের পৃথিবীতে। তবু বাবা-মা তার নাম রাখলেন নির্ঝর।সেজন্যই ঝড়ের সাথে তার আজন্ম সখ্যতা।
বাস্তবতার খসখসে ভোরে ঘুম ভেংগে দেখি-এ এক অন্য সকাল !আস্তাকুঁড়ে বসত গড়া ধুসর দীর্ঘশ্বাস নিয়মের আকাশে ডানা ভাঙ্গা ইচ্ছে হয়ে,হোঁচট খায়। শান্তির চাঁদ মামা তাই-কপালে টিপের বদলে নাগিনীর বিষাক্ত চুম্বনে -ছড়িয়ে দেয় নীল দ্রোহ। আবেগের ঢেউগুলো তখন লঘূ নিম্নচাপ সৃষ্টি করে হৃদয়ের উপকূলে।দেখি স্রোতের বিপরীতে শেওলাগুলো অবলিলায় ভেসে আছে।অনিয়মের খেসারত মনে মগজে বুনে যায় বুনো অস্বস্তি।চৈতন্যের পাহাড় ঘেঁষে তখন নেমে আসে নিকষ অন্ধকার।ঘুটঘুটে আঁধারের জমকালো অন্ধকার আমাকে হাত বাড়িয়ে ডাকে।আমি সেই অন্ধকারে পা বাড়িয়ে দেই,তার উত্তাপ নেই দু'হাত ভরে।সবুজ অরণ্য আর নীল জলরাশি চিৎকার করে উঠে।দেখি সেখানেও বসত গেড়েছে অন্য আধার।তখন অসৎ নিঃশ্বাসের গতি মেপে মেপে অন্ধকারে অন্ধকার ঘষে সে পথের মাঝে,আলোর ঝরনা ঝরাই।আমিও সেই বুনো পথের পথিক হয়ে যাই -যেখানে তুমি আমি রয়ে যাই একই সরলরেখায়।এক সময়,গ্লাসের জলে ভেসে দেখা আজন্ম স্বপ্নগুলো-আটলান্টিক পাড়ি দেওয়া ইচ্ছেকে ক্ষান্তি দিয়ে,গন্তব্যহীনের বৃত্তে অভিমান আত্মসমর্পণ করে।চেনা পৃথিবী ক্রমেই অচেনা হতে থাকে।বন্ধুত্বের মুখোসে লুকিয়ে থাকা স্বার্থপর মুখগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠে।দু'চোখের জলে রক্তের অশ্রুধারা-স্মৃতির ধুলোর তৃষ্ণা মেটায়।আমার একলা আকাশ উপুড় হয়ে আমারই মাথায় বোঝা হয়ে চাপে।অভিমানী জোসনা,জোনাক-জ্বলা হলকের বদলে,কেবলই আঁধার ছড়ায়-সে নিঃসঙ্গ-বিরান পথচলায়।তখন বিলাসী নয়-নগণ্য মজুর হয়ে শ্রমিকের মতো দুঃখগুলো সযত্নে লালন করি,এগিয়ে যাওয়ার পথ ধরে।অনির্দিষ্টের পানে তাকিয়ে থাকি,হয়ত সামনের গন্তব্যই সুদিনের আশ্রয়-এইভেবে।
চলবে...
©somewhere in net ltd.