![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মা,
বিবর্তনের বাতাস পাল্টে দিয়েছে যাপিত জীবন। আমাদের আঙুলের তলায় এখন কাচুমাচু বসে থাকে তামাম দুনিয়া। একঘেয়েমি সমাজ- সংসারকে যতি দিয়ে ইচ্ছে হলেই, আমরা এখন মহাকাশ ঘুরতে যেতে পারি। প্রগতির এই বিরামহীন পথচলা- পারিপার্শিক পৃথিবীর আমুল পাল্টেছে। তোমাদের কেন্দুয়া কালিবাড়ী রেলস্টেশন থেকে সাতকুড়া তালুকদারবাড়ী পায়ে হাঁটা পথ ধরে পৌঁছাতে আগে যে সময় লাগতো- এখন সে সময়ে সরিষাবাড়ী থেকে নানাবাড়ী, দুই বার যাওয়া- আসা করা যায়। প্রমত্ত যমুনার বুক ভেদ করে চলছে- বিরামহীন যন্ত্রের ছুটাছুটি। ছুটে চলা সভ্যতার ছোয়া, নিত্য বেঁচে থাকায় সব পাল্টেছে। তুমিই শুধু পাল্টাও নি।
ভোরের স্নিগ্ধ শরীরজুড়ে লেগে থাকা তোমার ভেজা চুলের শুভ্র গন্ধ, মিহি কন্ঠের তিলাওয়াতে কুরআনের সুর। সারাদিনের ধকল পেড়িয়ে সন্ধ্যায় টিভির সামনে বসে অঘোর ঘুমে ঠোক্কর খাওয়া- সেই মায়াবী বদন। চোখের সামনে ভেসে উঠতেই, হালভাঙা নাবিকের মন, নিমিষেই - খেই হারায়। টান-পোড়নের ঘানি টানা সংসারের লাগামটা, বাবা তোমার হাতেই সপে দিয়েছিলেন। কপালের ভাঁজে তা বইবার বলিরেখা চিহ্ন, এখনও হুহু করে উঠে- বেদনার প্রতিটি বর্ণমালায়।
তুমি কেমন আছো মা? ওপারের জগত কি তোমায় নিঃশ্চিন্ত করেছে? অসীমের ওপাড়েও কি তোমার উৎকন্ঠ অপেক্ষারা, তাকিয়ে থাকো- ডানপিটে খোাকার ফেরার পথজুড়ে? মনে আছে মা, চুরি করা মাটির ব্যাংকের সবক'টা সিকি- আধুলী ঘরের পাশের কাদা মাটিতে কেন পুঁতে রেখেছি জানতে চাওয়ায় আমি বলেছিলাম, " পুঁতে রেখেছি এই কারনে, যাতে ওটা থেকে টাকার গাছ গজায়।সংসারের অভাব দূর হয়। আমার কথা শুনে, আমাকে জড়িয়ে সেকি কান্না... তোমার কান্না শুনে আপারাও হাউমাউ করে অনেক কেঁদে ছিল- অনেক্ষন। জানো মা, আমার সেই পয়স- আধুলীরা টাকার গাছ হয়ে আর মাটি ফুড়ে গজায় নি- আজও....
আজকাল খু উ ব ই- মিস করি তোমাকে। ফুসফুসের নিরুপায় নিঃশ্বাস, শরীর থেকে- যতবার বেরিয়ে এসে, আবার ঢুকে- ততবার তোমাকে খুঁজি। মুহূর্তের পরতে পরতে খেয়ালি দৃষ্টি বাসাবো- বৌদ্ধ মন্দির থেকে মিডওয়েতে কৃমলাপুর আরামবাগ মতিঝিল গুলিস্তান প্রেসক্লাব কলাবাগান হয়ে মোহাম্মদপুর হয়ে আবার ফিরে খিলগাঁও পুলিশফাড়ি। কোথাও পাই না তোমাকে। প্রেসক্লাবের তিন তলা জ্যামে আটকে পড়া অসহায় মুহুর্তগুলো হন্যে হয়ে খুঁজেছে তোমায়। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় বন্ধু তিতাসের মায়ের ভেজা কাপড়ে দেখে- চমকে উঠে ছিলাম। ম থেকে আকার দুরত্বে এসে ঠাহর করি- মা নয় আন্টি।
তুমি ভালো থেকো- মা। অসিমের ডানায় মেখম মেলা শুভ্রতা, ভুলিয়ে রাখুক তোমার নিগত জীবনের ক্লেদ। দিনের আলো, রাতের জোছনা- ভোরের কুয়াশা পৃথিবীর সমস্ত সম্ভাবনা- যা কিছু মঙ্গল, আমার কাছে তার সবই, তুমি- মা....। জীবনের বাকী পথটুকু যেন তোমাকে ধরেই পারি দিতে পারি।
টার্গেটের আষ্টেপৃষ্ঠে খসখসে বাস্তবতা যেন, তোমার প্রসবের দায় যেন ভুলিয়ে না দেয়। তোমার বুকের দুধের প্রতি ফোটা পুষ্টিকে যেন সুন্দরের পথে চলতে শেখায়, নির্মোহ- সাহসী করে আমায়। আশির্বাদ করো- সত্যকে সহজে নেয়ার শক্তি যেন না হারাই। ভালো থেকো মা, ঘুমিয়ে জেগে- আমার সমস্ত বেঁচে থাকায়....
তোমার
গুণমুগ্ধ সন্তান।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:০৫
কিরমানী লিটন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ সুপ্রিয় ল, শুভকামনা জানবেন। পৃথিবীর সব মায়ের প্রতি ভালোবাসা।
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: মন টা বিষন্ন হয়ে গেল।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:১০
কিরমানী লিটন বলেছেন: আবেগের চীর আশ্রয়ের নাম- মা। তাই সে নামে মনের অতল আদ্র করবেই।
ভালোবাসা জানবেন সুপ্রিয় রাজীব নুর ভাই। শুভকামনা জানবে।
৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৪৪
হাসান ফরিদ বলেছেন: ভালো লেখা
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৬:৪২
ল বলেছেন: ভালো থেকো মা, ঘুমিয়ে জেগে- আমাদের সমস্ত বেঁচে থাকায়....
নিবেদক,
তোমার অবুঝ সন্তানেরা ।
ভালোলাগা যত। +++