নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের ব্যবধানে বেজে বেজে চলে, সূর্য চাঁদ সবচেয়ে- দূরতম শব্দের মাস্তল, যেন কোন অজ্ঞাত নিবাস থেকে ছুটে আসি।পরিচিত শ্টেশন এলেই তুৃমি দেখাও নিশান- আমি উঠে পড়ি...

কিরমানী লিটন

কিরমানী লিটন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পিঁয়াজ রচনা....

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:২৮



ভুমিকাঃ
পিয়াজ একটি নিত্য প্রয়োজনীয় পন্য। ভোজন বিলাসী বাঙালির রন্ধনের স্বাদের বৈচিত্র্যের সাথে এটি সুপ্রসিদ্ধ। তাই রসনা বিলাসী প্রতিটি বাঙালীর গৃহিণীদের কাছে পিঁয়াজ একটি কাঙ্খিত শব্দের নাম। মাছ মাংসের তরকারি, ডাল, সব্জি, পোলাও, কোরমা, বিরিয়ানী, কাবাব, সালাদ, পিঁয়াজু এমন কি পান্তা ভাতের সাথেও পিঁয়াজের একটি নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান।

ইতিহাস ঐতিহ্য ঃ
খৃষ্টের জন্মের ৬০০ বছর আগে বিখ্যাত ভারতীয় চিকিৎসক চক্র সংহিতা প্রথমে পিঁয়াজকে শরীরের জন্য উপকারী ঔষধ হিসেবে বর্ণনা করেন। যদিও ভারতে পিঁয়াজের ইতিহাস প্রায় ৫০০০ বছরের। মিশরে ৫৫০০ বছরের। সুমেরীয়তে ৪৫০০ বছরের। ঐতিহাসিকদের মতে পিঁয়াজের প্রথম নিবাস আরো আগে মধ্য এশিয়া, ইরান এবং পাকিস্তানের পশ্চিমাংশে।পরে তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে।

ক্রম বিকাশঃ
একটা সময় ছিল যখন এ উপমহাদেশে পিঁয়াজ অর্থের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হত এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে ব্যবহৃত হত। প্রাচীন মিশরীয়দের কাছে পিঁয়াজ অত্যন্ত সম্মানিত ছিল। মৃত্যুর পর তারা মৃতের কফিনে পেঁয়াজ দিয়ে দিত। রাজা চতুর্থ রেমেসিসের কফিনে পেঁয়াজ পাওয়া যায়। পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশী পেঁয়াজ উ্ৎপাদিত হয় চীন ভারত এবং আমেরিকায়। সবচেয়ে বেশী পেঁয়াজ খেয়ে থাকে লিবিয়ার মানুষ। বৌদ্ধদের অনেকেই পিঁয়াজ এবং রসুন খায় না। বাইবেলে পেঁয়াজের ব্যবহারের উল্লেখ পাওয়া যায়। আবার আমাদের প্রিয় নবী হয়রত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মত অনেকেই পিঁয়াজ খেতেন না দুর্গন্ধের কারণে।একটা সময় আমাদের দেশের হিন্দুরা মনে করতো মুসলমানদের অতিরিক্ত রাগের কারন এই পিঁয়াজ ভক্ষণ। যদিও পিঁয়াজের স্বাদ এখন আর তাদের‌ও অজানা নয়। পিঁয়াজের দাম বাড়ার সাথে সাথে রাঁধুনির টেনশন তরকারীতে স্বাদ না হলে ডিসক্রেডিট আর খাদকের টেনশন স্বাদ না হলে কি খাওয়া যায়!!!

চাহিদা ও উৎপাদনঃ
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২৫ লক্ষ টন পিঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। ১৯৯০ সাল নাগাদ দেশের উৎপাদিত পিঁয়াজ থেকেই এর চাহিদা পুরন করা হতো। বর্তমানে মোট চাহিদার বিপরিতে দেশে ১৬ লক্ষ টন পিঁয়াজ উৎপাদন হয়। বাকী ৮ লক্ষ টন পিঁয়াজ ভারত, মিয়ানমার, মিশর, তুরস্ক এবং পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়।

পিঁয়াজের সামাজিক ও ব্যবসায়িক গুরুত্বঃ
রন্ধনে বাঙালীর জিহ্বার স্বাদ পিঁয়াজের সাথে অঙ্গাংগী ভাবে জড়িত। পিঁয়াজ ছাড়া আমাদের গৃহিনীদের রান্নার জাদু না-ই হয়ে যায় বললেই চলে। তাই আমাদের রান্নার স্বাদ আর পিঁয়াজ একে অপরের পরিপুরক। দেশের মানুষের এই আবেগ আর স্বাদের চাওয়াকে পুঁজি করে এক শ্রেণীর অসৎ ব্যবসায়ীগন সুযোগ পেলেই বিভিন্ন অজুহাতে পিঁয়াজের বাজার দর নিয়ে অধিক মুনাফার ফাঁদ পেতে ভানুমতির খেলায় মেতে উঠে। রাষ্ট্রের উদাসীনতা এমনকি কখনও কখনও রাষ্ট্রযন্ত্রের লুটেরা নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় এমনটা ঘটে। অতি সম্প্রতি দেশে পিঁয়াজের মূল্যে এক তেলপসমাতি কান্ড ঘটে গেছে। বর্তমানে দেশে এক কেজি পিঁয়াজ ২৫০ টাকারও বেশী। যা মূল্যের দিক দিয়ে- পৃথিবীর যে কোন দেশের, যে কোন সময়ের সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড। পিঁয়াজের এই দূর্গতির কথা চিন্তা করে দেশের প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই তার রন্ধন শিল্পিকে তার রান্নায় পিঁয়াজ না ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে সারা বিশ্বের কাছে তার নোবেল পাওয়ার দাবীকে দৃঢ় করেছেন। পিঁয়াজ মন্ত্রীও এই মূল্য তার নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলে ঘোষনা দিয়ে তার বিনা- ভোটে নির্বাচিত হওয়ার যৌক্তিকতা প্রমাণ করে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেছেন। আর অসহায় জনগন কাতর চিত্তে পিঁয়াজ ব্যবহারের জন্ম নিয়ন্ত্রনে আওয়াজ তুলেছেন, " রান্নায় একের অধিক পিঁয়াজ নয়-
অর্ধেক হলে ভালো হয়।"

উপসংহারঃ
পিঁয়াজকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই দেশের রাজা- ধীরাজরা গত এক মাসে চার হাজার কোটি টাকা লুটের মহোৎসব করতে সক্ষম হয়েছে। তাই পিঁয়াজ নাটকের সুদূর প্রসারী- শৈল্পিক চেতনার গুরুত্ব বিবেচনা করে বিনাভোটে নির্বাচিত মিডনাইট শাসক গোষ্ঠীকে অর্থনীতিতে নোবেল প্রদানের পাশাপাশি, অভিনয়ের জন্যও অস্কার প্রদানের দাবী এখন সময়ের চাহিদা।


মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৩২

বলেছেন: পিঁয়াজ রচনা - ইহা ছাড়া রান্না হয় ...
যত কাটবেন,ততই কাঁদবেন তাই পেঁয়াজকে না বলুন

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৪০

কিরমানী লিটন বলেছেন: ধুর! ভাল্লাগে না কিছু
ইস্যুর পরে ইস্যু,
পিঁয়াজ ঝাঁজে চোখের বদল
কাপড় নষ্ট- হিস্যু !

ভালোবাসায় শুভরাত্রি প্রিয় ল.....

২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৪২

বলেছেন: ঝাঁজালো মজা পেলাম .....

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৪৭

কিরমানী লিটন বলেছেন: হায় ! বুলবুলে কি ক্ষতি?
উন্নয়নের যতি!
চালের দরে আসছে ধেয়ে
নতুন- কেরামতি!!

ভালোবাসা আবারও.....

৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৫৭

মা.হাসান বলেছেন: যতদূর জানি পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এবং তুরস্কে মৌসুমে (গরম কালে) পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১৫ টাকার নিচে থাকে শীতকালে কিছুটা বাড়ে তবে তাও কেজিপ্রতি ৩০ টাকার নিচে থাকে। এটা খোলা বাজারের দাম, পাইকারি বাজার দর এর চেয়ে কিছু কম। মিশরে পিঁয়াজের দাম এর চেয়েও কম। আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম ট্যাক্স এবং পরিবহন খরচ সহ কোনভাবে কেজিপ্রতি ৫০ টাকার উপরে পড়ে না । সরকারি সংস্থার হিসেবেও মিয়ানমার থেকে আমদানি কৃত পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৫০ টাকার নিচে পড়েছে। মাসে পেঁয়াজ লাগে দু লক্ষ টন। প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা করে অতিরিক্ত লাভ করলে (এখন তো ২০০ টাকা করে) হিসাবে মাসে অতিরিক্ত মুনাফা ২০০০ কোটি টাকা।
পেঁয়াজ আমদানি করতে গেলে তখন আবার পেঁয়াজের দাম কমে যেয়ে কৃষকদের দুর্দশা বাড়বে এই ভেবে (?) সরকার পেঁয়াজ আমদানি করতে চায় না ।

সরকারের উচিত বেশি করে সেমিনার ইত্যাদি করে জনগণকে পেঁয়াজ খাওয়া থেকে নিরুৎসাহিত করা। মানুষের উচিত খাদ্যাভ্যাস পাল্টানো, পেঁয়াজ কম খাওয়া, উন্নয়ন খেয়ে দিন পার করা।

সরকারের উচিত পেঁয়াজ চাষীদের পেঁয়াজ চাষে নিরুৎসাহিত করা, এবং চাহিদার পুরোটা পিয়াজ দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ চাষীদের বিকল্প ফসল চাষ করার পরামর্শ দেয়া যায়।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ রাত ২:৩৩

কিরমানী লিটন বলেছেন: ভাই,
আওয়ামীলীগের ক্ষমতার পার্টনার এসআলম গ্রুপ ৫০ হাজার টন পিঁয়াজ আনছে। তাকে কেজিতে দুইশত টাকা মুনাফার সুযোগ করে দিতে গণ-বিরোধী স্বৈরাচারের নতুন নাটক। কেজিতে ২০০ টাকা হলে ৫০ হাজার টনে কত লাভ হয়? সামনে বিলাতে ইলেকশান। বোন ঝির নির্বাচনী ফান্ডে এটা সামান্য সেক্রিফাইজ। ওদিকে তথ্যবাবা আবার জন্ম নিয়ন্ত্রন করেন নি। আমেরিকায় নাতি - নাতনির খরচের কথাটাও বিবেচনায় রাখতে সামনে চালের আড়ত খালী করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

অনেক শুভকামনায় শুভরাত্রি।

৪| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৪:৪২

সোহানী বলেছেন: আমরা আছি এক চক্রের মধ্যে। পেয়াজের ধাক্কা শেষ না হতেই চালের ধাক্কা। চাল শেষ না হতেই ডাল। ডাল শেষ না হতেই অন্যকিছু।

৫| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:০২

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: শুনলুম পিঁয়াজ ছাড়া তরকারি রেসিপির একটা বই সরকারি অনুদানে ছাপা হবে :)

৬| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৭:৩১

ইসিয়াক বলেছেন: পিঁয়াজ রচনায় সব রকমের ফ্লেভার পাওয়া গেল।
খুব ভালো লেগেছে।
জয় চিন্তামণির জয় !
জয় দিদিমণির জয়!!

৭| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:১০

করুণাধারা বলেছেন: ১ টন= ১০০০ কেজি

৫০ হাজার টন= ৫০,০০০* ১০০০ কেজি = ৫০০,০০,০০০= ৫ কোটি কেজি

৫কোটি*২০০ টাকা= ১০০০ কোটি টাকা, নেট লাভ।

৮| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:৪৩

নুরহোসেন নুর বলেছেন: সবচেয়ে দামী কাঁচামালের রচনা,
দামী ভাল লাগলো।

৯| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩১

রাজীব নুর বলেছেন: হায় পেঁয়াজ !!!!!

১০| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৩২

সাইন বোর্ড বলেছেন: পিঁয়াজ নিয়ে তথ্যসমৃদ্ধ পোষ্ট ভাল লাগল ।

১১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চেয়ারের সঙ্গে বোধ-আক্কেলের সম্পর্ক নিবিড়। অনেক হাবাগোবা লোককেও চেয়ারে বসিয়ে দেওয়ামাত্র তার জ্ঞানবুদ্ধি খুলে যায়। সে তখন যাকে ইচ্ছা তাকে জ্ঞান দেওয়া শুরু করে। আবার উল্টোটাও হয়। অনেক সময় ডক্টরেট ডিগ্রিধারী লোকও চেয়ারে বসার পর উল্টোপাল্টা বকা শুরু করে। রানা প্লাজা ধসে পড়লে সেটাকে তাঁর কাছে বিরোধী দলের ছেলেপেলের পিলার ধরে নাড়াচাড়ার ফল মনে হয়। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের আইকন নূর হোসেনকেও অনেকের কাছে ‘ইয়াবাখোর’ মনে হয়। অনেকের কাছে পেঁয়াজের কেজি দেড় শ টাকা ক্রস করার পরও বাজার ‘নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে’ বলে মনে হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.