নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সব সুন্দরকে গ্রহন করে প্রিয় মানুষগুলোকে সুন্দর রাখার প্রয়াস অবিচল রাখার প্রত্যয়ে।

কিশোর মাহমুদ

কিশোর মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দান্তে রচনা এবং প্রেমময় উপাখ্যান

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৭

দান্তে হলেন পৃথিবীর একমাত্র কবি যিনি মৃত্যুর মাঝে অমৃত্যুর গান গেয়েছেন,দুঃখেত সীমাহীন অন্ধকারে অক্ষয় আশা আর ধর্ম বিশ্বাসের অনির্বাণ দীপশিখা জ্বালিয়ে আপন লক্ষে এগিয়ে গেছে আজীবন। এক অবাঞ্চিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আবর্তিত ব্যাথাতুর করে ভাবনার আকাশে ছাপ ফেলে রচনা করেছে এই ডিভাইন কমেডি
তার বর্ণনা তিনি প্রথম লাইনে এভাবে দেন
অর্থ: জীবন চলার বাস্তবতার মাঝপথে এসে ঘুমিয়ে পড়ি আমি।
সহসা জেগে উঠে এক অন্ধকার সুগভীর অরণ্য প্রদেশে পথের নিশানায় হারিয়ে গেছি।
এভাবে ১ম খণ্ডের শুরু,সেই সুগভীর অরণ্য প্রদেশে কবির সাথে ভার্জিলের দেখা হয়,ভার্জিল তাকে বলেন যে তিনি স্বর্গ গত বিয়াত্রিস এর আত্মার আদেশে দান্তেকে পথ দেখিয়ে সমগ্র নরক প্রদেশ ও পরিশুদ্ধির পর্বতের মধ্য দিয়ে স্বর্গের প্রান্তে বিয়াত্রিসের কাছে নিয়ে যাবেন।এরপর পরিশুদ্ধি পর্বতে উঠে এসে তার দুটি ধাপ ও সাতটি চত্বর অতিক্রম করতে করতে দেখলেন আত্মারা আপন পাপ কর্মের কারণে নরক যন্ত্রনা ভোগ করছে। এরপর স্বর্গ প্রান্তে এসে বিয়াত্রিসের উজ্জল আলক্মুর্তি দান্তেকে ধীরে ধীরে দশটি গ্রহস্তরে বিভগত নয়টি স্বর্গ প্রান্তে নিয়ে যায়। দশম স্তরে যাবার আগেই সে মূর্তিটি দান্তের আগেই উর্ধে উঠে গিয়ে জগ্নমতা মেরীর সিংহাসনের পদপ্রান্তে অধিষ্ঠিত হয়.
এই মহাকাব্য প্রতীকী অর্থে লেখা। ঐতিহাসিকেরা এই প্রতীক কে দুই ভাগে ভাগ করেছেন
১|প্রথাগত প্রতীক
২|স্বভাবগত প্রতীক
এই মহাকাব্যের প্রতিটা চরিত্রই প্রতীকধর্মী,এই রসাত্মক ও রুপাত্মক হলেও ঝানু পাঠক ও ধন্দে পড়ে যাবেন,এতই জটিল যে।
প্রতিটা চরিত্র বাস্তব ধর্মী কিন্তু প্রতিকাত্মক অর্থে মণ্ডিত। ধরা যাক দান্তের কথা। তিনি লেখক কিন্তু মহাকাব্যে প্রধান চরিত্র। মহাকাব্যে-- তিনি মহা দার্শনিক এবং বিয়াত্রিসের প্রেমিক। প্রতীক অর্থে তিনি-- খ্রিষ্টিয় এক পাপাত্মার প্রতীক যারা অন্ধকার অরণ্য প্রদেশ হতে তীর্থ যাত্রা করে ঈশ্বরের স্বর্গরাজ্যে একদিন উপনীত হয়।ইনিড কাব্যের রচয়িতা ভার্জিল আরেক মূল চরিত্র যে দান্তেকে পরিশুদ্ধির পর্বতে বিয়াত্রিসের কাসে নিয়ে যায়। প্রতীক অর্থে ভার্জিল হল-- মানুষের ,বুদ্ধি,কল্পনা,অনুভুতি,নীতিশাস্ত্র বিশারদ এমন এক মানুষ যে এসব অর্জনে সক্ষম তথাপি স্বর্গ রাজ্যে পৌছাতে পারেনি ক্যারন তিনি অকুণ্ঠ আত্ম সমর্পণের ধারা ঈশ্বরের পরম মহিমাকে প্রতক্ষ করতে পারেন নি।
ফ্লোরেন্সের রাজকন্যা বিয়াত্রিস। যার প্রেমে পড়েন দান্তে। প্রতীক অর্থে বিয়াত্রিস হলেন-- সেই চার্চ বা ধর্ম প্রতিষ্ঠান যা মানুষ আর ঈশ্বরকে মাঝে এক সূক্ষ্ম সেতু বন্ধনে আবদ্ধ করে।
এবার তিন খণ্ড নিয়ে কথা বলা যাক।
১ম যে ইনফর্ন খণ্ড আছে তা প্রতীকী অর্থে-- পাপীদের মনের এক অবস্থা। গল্পের মাধ্যমে যা এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যে না পড়লে অবাক হবেন না।
পার্ট গরিয়ো হল ২ইয় খণ্ড,প্রতীকী অর্থে-- পরিশুদ্ধির ধাপ। পাপ কাজ করার পর মানুষ এক অনুশোচনায় ভোগে একসময় সে তা থেকে পরিত্রাণ পেতে পথ খুজে।
প্যারিডুসা ৩য় খণ্ড,প্রতীক অর্থে তা হল স্বর্গ কিন্তু গল্পে তার আরেকটি অর্থ-- মানুষ যখন কামনা বাসনা ও ইচ্ছা অতিক্রম করে জীবনে শান্তি ভোগ করে তখন সেই আত্মিক প্রশান্তির স্তব্ধতার মাঝে অতৃপ্ত কামনা
সরিয়ে অতীন্দ্রিয় পরম তৃপ্তির রসসাগরে ডুবে যায়।
অনুবাদক কে স্যালুট!
এমন এক মহাকাব্যের প্রান চঞ্চল রুপ দেয়ার জন্য,পড়তে গেলে মনে হবে আসল লেখা পড়ছেন।

এবার বাকিটা আপনার পড়ে নিলেই হল।
গ্রন্থটি আসলে জীবনের এক রুপ রেখা থেকে নেয়া,প্রতীক অর্থ বাদ দিলেও এই মহা কাব্যে পরম মঙ্গলময় ও প্রেমময় যে ঈশ্বরের প্রেম বিশ্বের কিছু আলো ও গতি দান করেছে,সব কিছু পরিচালিত করেছে,সেই পরম প্রেমের আস্বাদনের মাঝেই ঘটতে পারে মানুষের সকল চাওয়া পাওয়ার ধন্দের অবসান।
ধন্যবাদ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৩

ঋতো আহমেদ বলেছেন: ভাল লাগল আপনার লেখাটি । দান্তে আমার একজন প্রিয় কবি । এই লিখার মাধ্যমে দান্তে কে আবারও নতুন করে জানার সূচনা পেলাম । শুভ কামনা ।

০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৮

কিশোর মাহমুদ বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও শুভ কামনা।
ভাল থাকবেন। :-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.