নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ

লেখালেখি করার ইচ্ছা আমার দীর্ঘ দিনের

কে এম সুমন

দেশের বর্তমান অবস্থায় আমি খুবই চিন্তিত!!

কে এম সুমন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস জান্নাত ও জাহান্নাম.....

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:৩১

আমরা মুসলমান ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর। আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার অর্থই হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে অদেখা যা কিছুর উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে বলেছেন তা নির্দিধায় মেনে নেয়া অর্থাৎ সেগুলোর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা। এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মৃত্যুর পরের জীবন অর্থাৎ আখিরাত। কেউ যদি নিজেকে ঈমানদার হিসেবে দাবী করেন তাহলে তাকে অন্যান্য ছয়টি বিষয়ের মত আখিরাতকে বিশ্বাস করতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা তার পবিত্র কোরআন শরীফের অসংখ্য আয়াত নাযিল করেছেন মৃত্যুর পরের জীবনকে নিয়ে। এখান থেকে জানা যায় যে এই পৃথিবীর জীবন ক্ষণস্থায়ী আর আখিরাতের জীবন চিরস্থায়ী।
সূরা আ'লায় আল্লাহ বলছেন, "কিন্তু তোমরা দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য দিয়ে থাকো। অথচ আখেরাত উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী।" - (আল আ’লাঃ ১৬-১৭)

দুনিয়া হচ্ছে আখিরাতের শষ্যক্ষেত্র বা পরীক্ষাক্ষেত্রও বলা হয়ে থাকে। দুনিয়াতে আমাদের কর্মফলের প্রতিদান দেয়া হবে আখিরাতে। যারা দুনিয়াতে ভালো পরীক্ষা দিতে পারবে অথবা ভালো ফসল ফলাতে পারবে তারাই আখিরাতে উত্তম প্রতিদান পাবেন। এব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা কোরআনের অনেক জায়গায় বলেছেন। যেমনঃ-
সূরা ইয়াসীনে বলেছেন, "আজ কারো প্রতি তিলমাত্র জুলুম করা হবে না এবং যেমন কাজ তোমরা করে এসেছ ঠিক তারই প্রতিদান তোমাদের দেয়া হবে" -(ইয়া-সীনঃ ৫৪)
সূরা মারয়াম এ বলেছেন, "সেদিনটি অচিরেই আসবে যেদিন মুত্তাকীদেরকে মেহমান হিসেবে রহমানের সামনে পেশ করবো এবং অপরাধীদেরকে পিপাসার্ত পশুর মতো জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবো। সে সময় যে রহমানের কাছ থেকে পরোয়ানা হাসিল করেছে তার ছাড়া আর কারো সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকবে না।" -(মারয়ামঃ ৮৫-৮৭)
সূরা আল-আম্বিয়ায় বলেছেন, "প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর আমি ভালো ও মন্দ অবস্থার মধ্যে ফেলে তোমাদের সবাইকে পরীক্ষা করছি, শেষ পর্যন্ত তোমাদের আমার দিকে ফিরে আসতে হবে।" -(আল আম্বিয়াঃ ৩৫)
সূরা আয-যুমার এ বলেছেন, "এবং প্রত্যেক প্রাণীকে তার কৃতকর্ম অনুসারে পুরোপুরি প্রতিদান দেয়া হবে। মানুষ যা করে আল্লাহ‌ তা খুব ভাল করে জানেন।" - (আয যুমারঃ ৭০)
এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে আরো অসংখ্যা আয়াত রয়েছে। যেগুলো থেকে স্পস্ট বুঝা যায় যে আখিরাতে প্রত্যেক ব্যক্তির বিচার হবে দুনিয়াতে তার কাজের উপর ভিত্তি করে।
যারা আল্লাহর দেখানো পথে চলবে তারা যাবে জন্নাতে আর যারা আল্লাহর দেখানো পথে চলবে না তারা যাবে জাহান্নামে। আর এ জীবন হলো চিরস্থায়ী যার শুরু আছে শেষ নেই।
আর জান্নাত ও জাহান্নাম কি তাও আল্লাহ তায়ালা তার পবিত্র কোরআন শরীফে স্পস্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
"মুত্তাকীদের জন্য যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার অবস্থা এই যে, তার মধ্যে স্বচ্ছ ও নির্মল পানির নহর বইতে থাকবে। এমন সব দুধের নহর বইতে থাকবে যার স্বাদে সামান্য কোন পরিবর্তন বা বিকৃতিও আসবে না, শরাবের এমন নহর বইতে থাকবে পানকারীদের জন্য যা হবে অতীব সুস্বাদু এবং বইতে থাকবে স্বচ্ছ মধুর নহর। এছাড়াও তাদের জন্য সেখানে থাকবে সব রকমেরফল এবং তাদের রবের পক্ষ থেকে থাকবে ক্ষমা। (যে ব্যক্তি এ জান্নাত লাভ করবে সেকি) ঐ ব্যক্তির মত হতে পারে যে চিরদিন জাহান্নামে থাকবে, যাদের এমন গরম পানি পান করানো হবে যা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন ভিন্ন করে দেবে?" -(মুহাম্মদঃ ১৫)
আরো বলেছেন, "আমরা এই দুনিয়ার জীবনেও তোমাদের বন্ধু এবং আখেরাতেও। সেখানে তোমরা যা চাবে তাই পাবে। আর যে জিনিসেরই আকাঙ্খা করবে তাই লাভ করবে।" -(হা-মীম আস সাজদাহঃ ৩১)
জান্নাত সম্পর্কে অন্যত্র বলেছেন, "আর হে নবী, যারা এ কিতাবের ওপর ঈমান আনবে এবং (এর বিধান অনুযায়ী) নিজেদের কার্যধারা সংশোধন করে নেবে তাদেরকে এ মর্মে সুখবর দাও যে, তাদের জন্য এমন সব বাগান আছে যার নিম্নদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে ঝর্ণাধারা। সেই বাগানের ফল দেখতে দুনিয়ার ফলের মতই হবে। যখন কোন ফল তাদের দেয়া হবে খাবার জন্য, তারা বলে উঠবেঃ এ ধরনের ফলই ইতিপূর্বে দুনিয়ায় আমাদের দেয়া হতো। তাদের জন্য সেখানে থাকবে পাক-পবিত্র স্ত্রীগণ এবং তারা সেখানে থাকবে চিরকাল।" -(আল বাকারাহঃ ২৫)
এমন আয়াত গুলো থেকে বুঝা যায় জান্নাত হচ্ছে চিরসুখের স্থান। যে সুখের কথা দুনিয়ার কোন মানুষ কখনো কল্পনাতো দুরের কথা তার ধারের কাছেও যেতে পারবে না।
আর জাহান্নাম সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, "আর যারা কুফরী করেছে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। না তাদের অস্তিত্ব খতম করে দেয়া হবে যাতে তারা মরে যাবে এবং না তাদের জন্য জাহান্নামের আযাব কিছু কমানো হবে। এভাবে আমি প্রত্যেক কুফরীকারীকে প্রতিফল দিয়ে থাকি।" -(ফাতেরঃ ৩৬)
আরো বলেছেন, "আসলে জাহান্নাম একটি ফাঁদ। বিদ্রোহীদের আবাস। সেখানে তারা যুগের পর যুগ পড়ে থাকবে। সেখানে তারা গরম পানি ও ক্ষতঝরা ছাড়া কোন রকম ঠাণ্ডা এবং পানযোগ্য কোন জিনিসের স্বাদই পাবে না। (তাদের কার্যকলাপের) পূর্ণ প্রতিফল। তারা কোন হিসেব-নিকেশের আশা করতো না। আমার আয়াতগুলোকে তারা একেবারেই মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিল।" -{আন নাবাঃ ২১-২৮}
এতক্ষন যা আলোচিত হলো তা থেকে স্পস্ট বুঝা যাচ্ছে যে, জান্নাত ও জাহান্নামের পার্থক্যটা কি?? আর কোন বিবেগবান মানুষ জাহান্নামে যেতে চাইবে না। জান্নাত হলো চির সুখের জায়গা।
এখন কথা হলো জান্নাতে যাওয়ার জন্য আমরা কতটুকু যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছি?? আমরা কি আল্লাহর দেখানো পথে চলতে পারছি?? আল্লাহ পবিত্র কোরআনে যা নির্দেশ করেছেন তাকি পুরোপুরি মেনে চলতে পারছি বা কখনো মেনে চলার চেষ্ট করেছি কি?? যদি না করে থাকি তাহলে আজ থেকে প্রতিজ্ঞা নিন যে আমি এখন থেকে আল্লাহর দেখানো সেই পথে চলার চেষ্টা করবো। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে যা নির্দেশ দিয়েছেন তা মেনে চলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবো এবং যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন করবো। তাহলেই আমরা সফলকাম।
আল্লাহ আমাদেরকে তার নির্দেশিত পথে চলার তৌফিক দান করুন।। আমীন।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.