নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রভাবপ্রতিপত্তি আজীবন থাকে না। প্রতারকরাও প্রতিরিত হয়। ক্ষমতাচ্যুত হলে ক্ষমতাসীনের কী হবে? কবর অথবা শ্মশানে প্রতিদিন মৃতসৎকার হয়। ©_Mohammed Abdulhaque [www.mohammedabdulhaque.com]

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক

অন্তত একবার সত্যকে তার সম্বন্ধে কিছু বলতে দাও। আমরা কে কী, অন্যরা তা জানতে এবং দেখতে পারবে।

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধাধসপুরে বারবেলা ( উপন্যাস ) ছয়

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৯





‘আমি জানি না।’ কম্পিতকণ্ঠে বলে সরসী হাত সরালে বাঁধ কানা করে বান ডাকা পানির মত ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোলে সট করে শার্ট খুলে সরসীর কপালে বেঁধে বলল, ‘আমি আসছি!’

‘কোথায় যাচ্ছ?’

কথা না বলে আয়মান দৌড়ে বর্শা এবং ভোজালি লুকিয়ে রেখে পালোয়ানের মত সরসীকে কাঁধে নিয়ে টান কদমে হাঁটতে শুরু করে। সরসী ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে নিম্ন আশ্চর্যান্বিতকণ্ঠে বলল, ‘তড়িৎ বেগে দৌড়াচ্ছ কেন?’

‘আমাকে অনুসণ করেছিলে নাকি?’

‘হ্যাঁ।’

‘আমরা এখন কোথায় জানিস?’

‘অভয়ারণ্যে তাই না?’

‘না। আমরা এখন ধাধসপুরে।’

‘ধাধসপুরের নাম কখনো শুনিনি। আমরা তো আমাদের বাড়ির পাশে। ধাধসপুরে প্রবেশ করলাম কখন?’

‘বাড়ির পাশে হলেও আমরা এখন অন্য দুনিয়ায়। তোকে বলে বুঝাতে পারব না।’ বলে আয়মান দাঁড়িয়ে চোখ বুজে কিছু পড়ে পরিবেশে ফুঁক দিয়ে দৌড় দেয়। পলকে বাড়ির পাশে পৌঁছলে সরসী অবাককণ্ঠে বলল, ‘এত দ্রুত আসলে কেমনে?’

প্রশ্নে উত্তর না দিয়ে আয়মান জোরে হাঁক দেয়, ‘দাদাজান! দৌড়ে আসুন।’

সবাই দৌড়ে বেরিয়ে সরসীকে তার কাঁধে দেখে দাদা হতাশ হয়ে কাঁধ ঝুলিয়ে বললেন, ‘আজ কী করেছে?’

‘ঢং করে ঢিল মেরেছিলাম। ওর মাথায় পট্টি বাঁধুন আমি ডাক্তার আনতে যাচ্ছি।’ বলে সরসীকে ধারিতে বসিয়ে আয়মান দৌড় দেয়। সবাই ব্যতিব্যস্ত হলেন। কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। সরসীর মা বাবাকে আনার জন্য দাদা একজনকে ডেকে পাঠালেন। আ’দাদী থাম্বায় হেলান দিয়ে বসে কপাল আঘাত করে বললেন, ‘কত দিন বলেছি, কু ডাক শুনে আলাইর কাছে যাস না। কোনদিন জানে মেরে ফেলবে। আমার কথা তোর কানে ঠাঁই পায় না। আমি এখন কী করি? তোর কিছু হলে তোর দাদা আমাকে জেলের ভাত খাওয়াবেন।’

সরসী শুষ্ক কম্পিতকণ্ঠে বলল, ‘দাদী, আমাকে আমার আয়মান ভাইর কোঠায় নিয়ে যাবে?’

‘নাশ্চিয়! এই তোরা কে কোথায় আসিছ দৌড়ে আয়।’ কাজের লোককে ডেকে দাদী সরসীর হাত ধরলেন। সরসীর মা বাবা দাদা দাদী এসে ওকে রক্তাক্ত দেখে কান্নায় ভেংগে পড়লেন। বাবা ওকে বাহুতে তুলে এদিক ওদিক তাকিয়ে অসহায়ের মত বললেন, ‘কেউ গাড়ি নিয়ে আসো। আমার মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে হবে।’

আয়মানের বাবা গাড়িতে উঠে স্টার্ট দেবেন এমন সময় ডাক্তার নিয়ে আয়মান এসে ব্যস্তকণ্ঠে বলল, ‘সবাই সরে ডাক্তারকে দেখতে দাও।’

ডাক্তার দ্রুত সরসীর পাশে যেয়ে ব্যাণ্ডেজ দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করে ওর বাবার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললেন, ‘ভয়ে বুক শুকিয়ে অজ্ঞান হয়েছে। চিন্তার কারণ নেই। ক্ষত বেশি গাঢ় নয়। পাতলা চামড়া ফেটে রক্ত বেরিয়েছে মাত্র। এখন বিছানায় শুয়ালে এন্টিস্যাপটিক দিয়ে পরিষ্কার করে ব্যাণ্ডেজ বেঁধে দেব।’

‘ডাক্তারসাহেব, হাসপাতালে নিয়ে এক্সরে স্ক্যান করলে ভালো হবে।’

‘প্রয়োজন নেই। দুয়েক দিনে ঠিক হয়ে যাবে।’ ডাক্তার মৃদু হেসে বললে সরসীর দিকে তাকিয়ে বাবা ঠোঁট কাঁপিয়ে বললেন, ‘ডাক্তার কিছু করুন আমার মেয়ের কষ্ট হচ্ছে।’

‘আমি ভালো করে দেখেছি। আঁচড়ে কেটে রক্ত বেরিয়েছিল মাত্র। আপনি চাইলে সাথে নিয়ে যাব, এতে আমার লাভ হবে।’ সরসীর মাথায় হাত বুলিয়ে ডাক্তার মৃদুহেসে বললেন, ‘তোমার বাবা তোমাকে বেশি আদর করেন তাই না মা?’

‘আম্মাও আমাকে বেশি আদর করেন। সবাই আমাকে আদর করেন। শুধু ঔ বনমানুষ আমাকে দুই চোখে দেখতে পারে না।’ বলে সরসী দাঁত কটমট করে তাকায়। আয়মানের দিকে তাকিয়ে স’বাবা বললেন, ‘বনমানুষ তোমাকে আমাদের চেয়ে বেশি আদর করে তাই ডাক্তার সাহেবকে নিয়ে এসেছে। আমরা আনতে পারতাম না।’

‘আমাকে দেখলেই গরম তাওয়ায় কল্লা কাটা কৈ মাছের মত ছ্যাঁত করে উঠে কেন?’ বলে সরসী মুখ বিকৃত করলে আয়মান দাঁত কটমট করে বলল, ‘চাচাজান! আছাড় দিয়ে নামাও। ধমাৎ করে মাটিতে পড়লে মজা টের পাবে।’

তার কথা শুনে ডাক্তার সরসীর বাবার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘মেয়েকে বিছানায় শুয়ালে ব্যাণ্ডেজ বেঁধে দেব।’

‘আমার কষ্ট হচ্ছে না। আপনি বেঁধে দিন।’

রক্ত পরিষ্কার করে ব্যাণ্ডেজ বেঁধে ব্যাগ থেকে কিছু ট্যাবলেট ক্যাপসুল বার করে আয়মানের বাবার হাতে দিতে দিতে ডাক্তার বললেন, ‘কী করবেন জলদি বলুন, আমার হাতে সময় নেই।’

সরসীকে নামিয়ে বাম হাতে ওকে বুকের সাথে এঁটে ধরে ডান হাতে ডাক্তারের হাতে টাকা হাতে দিতে দিতে স’বাবা বললেন, ‘ডাক্তার সাহেব, আমার মেয়ে ঠিকঠাক আছে তো?’

‘চিন্তার কারণ নেই। রক্ত দেখে ভয়ত্রস্ত হয়েছিল। একটু পর ঠিক হয়ে যাবে। চাইলে আমার ক্লিনিকে নিয়ে যেতে পারবেন। বেড একটা খালি করে দেব।’ সরসীর মাথায় হাত বুলিয়ে সস্নেহে ডাক্তার বললেন, ‘বনমানুষ গিয়েছিল তাই এসেছিলাম। নইলে হাতি দিয়ে টানিয়ে আনতে পারতে না।’

‘সবাই এত ভয় পাও কেন?’

‘মা গো, চোখ পাকালে দুরদুর করে কলিজা কাঁপে। বেশি চেতাবে না, জানে মেরে ফেলবে।’ আয়মানের দিকে তাকিয়ে কপটহেসে ডাক্তার বললেন, ‘বাবা, আমি এখন যেতে পারব?’

‘জি, প্রয়োজন হলে আবার যাব।’

‘ফোন করলেই ছুটে আসব, তোমাকে কষ্ট করতে হবে না রে বাবা।’ বলে ডাক্তার কপটহেসে গাড়িতে উঠে বসলে তার বাবা চালিয়ে চলে গেলেন। সরসীর মা কাতর হয়ে বললেন, ‘ভাবী, সরসীকে নিয়ে আপনার কামরায় যেতে পারব?’

আয়মানের মা মাথা নেড়ে মৃদু হেসে বললেন, ‘বাড়ি তো সরসীর, আমাকে মিনতি করছিস কেন?’

‘ধন্যবাদ ভাবী। এই যে, সরসীকে নিয়ে ভাবীর কামরায় চলুন?’ স’বাবার দিকে তাকিয়ে স’মা বললেন। বাবা ওকে বাহুতে তুলতে চাইলে সরসী বায়না ধরে গাল ফুলিয়ে বলল, ‘আয়মান ভাইর কোঠায় ঘুমাতে চাই। আমি এখন হাঁটতে পারব না।’



....

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

প্রামানিক বলেছেন: আচ্ছালামো আলাই কুম। ভাইজান কেমুন আছেন?

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৩

মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আমি ভালাছি ভাইজান, আপনি কেমন আছেন?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.