নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্তত একবার সত্যকে তার সম্বন্ধে কিছু বলতে দাও। আমরা কে কী, অন্যরা তা জানতে এবং দেখতে পারবে।
‘আয়মান ভাই, আয়মান ভাই!’
‘সরসী! চেয়ে দেখ ইয়া মোটা জোঁক।’ বলে আয়মান কান পাতে। সাড়াশব্দ নেই।
‘জুজুবুড়ির এত সাহস! আমাকে জুতসই করতে চায়।’ নিম্নকণ্ঠে বলে আয়মান ভোজালি কোষে রেখে বিদ্রুপহেসে ব্যস্তকণ্ঠে বলল, ‘সরসী! দৌড়ে এসে উদ্ধার কর। জোঁকরা আমাকে খেয়ে ফেল্ল।’
‘চিল্লাচিল্লি বন্ধ কর! তোর রক্তে মন্ত্রামৃত হবে না।’
‘ও লো! অনূঢ়ার রক্তে তোর মনস্কামনা পুরা হবে না লো। তিন সত্যের কিরা খেয়ে কথা দিয়েছে, অনূঢ়ান্ন খেয়ে অনূঢ়া অনূঢ়ত্ব আমাকে দান করবে।’ বলে আয়মান হেসে কুটিপাটি হয়। এমন সময় নেকড়ে আবির্ভূত হয়ে তাকে আক্রমণ করে। যদিও প্রস্তুত ছিল না কিন্তু শিয়াল চিতা গুলবাঘকে সে তেমন তোয়াক্কা করে না। দাঁত খিঁচিয়ে ভেটকি দিলে লেজ উল্টিয়ে ধুম ধমাৎ করে পালায়, কিন্তু নেকড়ে তাকে তাজ্জব করছে। হিংস্রদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। নেকড়ের তর্জনগর্জন এবং তেরিমেরি দেখে সে মহাখাপ্পা হয়। গোসাঘরে আগুন জ্বলে চোখ দিয়ে ক্রোধের স্ফুলিঙ্গ বেরুচ্ছে। কূজন বন্ধ করে পাখপাখালিরা তার দিকে তাকিয়ে আছে। নিশির ডাক শুনে আলাই বালাইরা ঘনঘন কু ডাকছে। বাতাসে বিপদ সংকেত প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। ভূতপূর্ণিমায় ভূতের ভয়ে বিত্রস্ত রোহিণী কালো মেঘের পিছনে লুকিয়ে উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে দেখে অধিমাসের নিশামণি মুগ্ধদৃষ্টে তাকিয়ে দেখছে, তারপর কী হয়?
আচকা নেকড়িয়া হিংস্র হুংকার ছাড়লে আয়মান রেগে ব্যোম হয়ে ভোজালি বার করে দাঁতে দাঁত পিষে বলল, ‘দাঁড়া! এখনি তোকে নাস্তানাবুদ করব।’
নেকড়ে পিছু হাঁটতে শুরু করে।
‘তোর এত স্পর্ধা! দাঁত খিঁচিয়ে আমাকে ডর দেখাতে চাস। দাঁড়া! জুতসই করে তোকে তুরুমঠোকা দেব।’ বলে আয়মান তেড়ে এগুলে নেকড়িয়া দৌড়ে বনগহনে হারিয়ে যায়।
‘বাঁচাও, বাঁচাও!’ নারী-চিঁক বাতাসে ধ্বনিত হয়।
‘ধাধসপুরে একী ভেলকি শুরু হল?’
‘ওরে মনে রাখিস! জীবনলীলা সাঙ্গ হলেও ধাধসপুরে বারবেলা ফুরায় না। জুতসই করলে তোকে আমি ভুনে খাব।’
‘ওলো শোন! মন ঘুমায় আমি জানি অষ্টপ্রহর দেহকে আত্মা পাহারা দেয়। এ তথ্য তুই জানিস না।’
‘বিদিশা হয়ে তুই ধাধসপুরে এসেছিস কেন?’
‘আমার প্রিয়তমার বাসরে আমি আসব না তো কে আসবে লো?’
‘এই! খামোখা বকবক করিস না!’
‘কাণ্ডজ্ঞানহীনের মত যারা কথা বলে, তাদের সাথে আমি কথা বলি না। ওরা আমার সব কথা বুঝে না।’
‘তোর সাথে আমি আর কথা বলতে চাই না।’
‘আমি তোকে মিনতি করছি নাকি? ল্যালা কোথাকার!’ বলে আয়মান মুখ বিকৃত করে। এমন সময় ধমকা বাতাস তার সামনে এসে থমকে থামে। আয়মান ভোজালি নিশানা করে বলল, ‘তোর নিশ্চয়ই জানা আছে, আমার হাতের ভোজালি তোর গায়ে লাগলে পলকে ভোজবাজি বন্ধ হবে।’
‘কী চাস?’
‘প্রেমাসনে বসে আমি আমার প্রিয়তমার সাথে প্রেমালাপ করতে চাই।’
‘এই! তোর রোমবিকার হচ্ছে কেন রে?’
‘রক্তকণায় শিহরন জেগে আমার তনুমনে কাতুকুতু হচ্ছে। আমি চনমনে হচ্ছি।’
‘তোর সাথে আমি আর কথা বলতে চাই না।’ বলে বাতাস সঞ্চালন বন্ধ হয়ে প্রকৃতি স্তব্ধ হয়।
‘দৌড়ে বাড়ি যা! কোন্দলি কোথাকার।’ বলে আয়মান ঝিলে নামবে এমন সময় সরসী তার গায়ে ধাক্কা দিয়ে জাগিয়ে রুষ্টকণ্ঠে বলল, ‘বনমানুষের মত গড়াগাড়ি করে আমার ফুলবিছানা আউলাঝাউলা করেছ কেন?’
লাফ দিয়ে উঠে বসে চোখ রগড়ে বিছানা থেকে নেমে আয়মান বলল, ‘দাঁড়া, তোর বিছানা তুলছি। যা! নাস্তা নিয়ে আয়। অট্টগরম চা এনে দিলে আজ তোকে পিটিয়ে লম্বা করব না।’
‘দৌড়ে গোয়ালঘরে যেয়ে তাগাদা মেড়া গরু নিয়ে মাঠে যাও।’
‘দাদীজান!’ আয়মান হেঁকে বলে সরসীর দিকে তেড়ে ফুঁড়ে এগুলে এক হাতে হাতাবেড়ি এবং অন্য হাতে তাড়ু নিয়ে স’দাদী এসে দাঁতে দাঁত পিষে চ্যাটাং করে বললেন, ‘এই বনমানুষ! আমার নাতনিকে দাবড়াচ্ছিস কেন রে?’
‘শব্দটা তাইলে আপনিই ওকে শিক্ষা দিয়েছেন? জুতসই করে আজ তোমাকে পেটির ভিতর সামলিয়ে রাখব।’
তার হাবভাব দেখে দাদীকে নিয়ে সরসী দৌড়ে পালায়।
‘চাচি! আমি যাচ্ছি। দুপুরে আসব।’ হেঁকে বলে আয়মান দৌড়ে তাদের পাকঘরে যেয়ে দাদীর পাশে বসে বলল, ‘জানেন দাদীজান, মেদামারার দাদী আজ আমাকে বনমানুষ ডেকে দাবড়িয়েছেন। কী করব?’
‘ভরদুপুরে বটতলে বসিয়ে রাখলে, মাথাগরমের মাথা ঠাণ্ডা হবে।’
‘জানেন দাদীজান, চ্যাটাং চ্যাটাং করে অবলা বলেছিল, দৌড়ে গোয়ালঘরে যেয়ে তাগাদা মেড়া গরু নিয়ে মাঠে যাও।’
‘গুণ দিয়ে হাত পা বেঁধে দামড়ার পাশে বসিয়ে লগি দিয়ে খুঁচিয়ে গোবশাকে চেতালে, হাম্বা ডাক শুনে ষাড় যেয়ে গুঁতালে, বুদ্ধিভোঁতা দাদী নাতনির আক্কেল ধার হবে।’
‘আমি বলছিলাম কী! চোখ পাকিয়ে দোনা একটা হাতে দিয়ে বলব, ছাগলীর দুধ দোহন করো।’
‘কেন?’
‘ছাগলীর লাথি এবং পাঠার ঢুস খেলে ম্যাড়মেড়ে হাড়গোড় শক্ত হবে।’ বলে আয়মান বিদ্রূপহাসি হাসলে দাদী তাড়ি দিয়ে বললেন, ‘তাগাদা আয়। আজ আমরা ছাগলীর দুধে চা খাব।’
‘আসছি দাদীজান! জপযিকির করে তুমি চা’র পানি উৎলাও। গরম চা খাওয়ার জন্য আমি ছাগলীর দুধ আনতে যাচ্ছি।’ পরিচারিকার দিকে তাকিয়ে বলে কলশি থেকে পানি পান করে দোনা একটা হাতে নিয়ে দৌড়ে যেয়ে আয়মান বলল, ‘দাদীজান! বদরাগী ছাগলীর দুধে অট্টগরম চা খেলে গায়ে মাস লাগবে। আজ এক কাপ খেতে চাই।’
‘এই জন্যই তোকে দুই চোখে দেখতে পারে না, গুণ করে বশ করতে চায়। অদ্য অবলারা বেজুতে আছে বিধেয় তোকে জুতসই করতে পারছে না।’ বলে দাদী মৃদু হেসে দ্রুত হেঁটে সরসীর উঠানে যেয়ে হাঁক দিলেন, ‘এই সরসী! তোর দাদী কোথায় লো?’
.....
১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: জী ওটা উপন্যাস। এখানে পোস্ট করতে চেয়েছিলাম। এখন আর ইচ্ছা হচ্ছে না। আমার লেখা এখানে অচল।
আপনি পড়তে চাইলে নিচে লিংক দিলাম।
Click This Link
পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০০
আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: লেখার অংশটুকু কি আপনার কোনো লিখিত বই থেকে নেওয়া?
দারুন উপস্থাপনা। শুভকামনা।