নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

আমি সত্য জানতে চাই

কোবিদ

আমি লেখালেখি করি

কোবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডোরেমনের আগ্রাসনে আমাদের শিশু এবং একজন সাংসদের উপলব্ধি

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮



বর্তমানে নাগরিক জীবনের ইট পাথরের নগরীতে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত খেলার মাঠ, খেলাধুলা, আনন্দ প্রকাশের পরিবেশের বড্ড অভাব। বেশির ভাগ সময়ই তাদের চার দেয়ালে আবদ্ধ থাকতে হচ্ছে। ঘরের ভেতরই তাদের জগত্, তাদের বিচরণ। খেলার মাঠ, বন্ধুবান্ধবের বিকল্প হয়ে দাঁড়াচ্ছে টিভি গেমস, কার্টুন। দিনে দিনে এসবে আসক্ত হয়ে পড়ায় বিভিন্ন জটিলতার শিকার হচ্ছে তারা, যা শিশুর সৃজনশীল বিকাশে অন্তরায়। শিশুর মনোজগতে কার্টুন সিরিয়ালের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। কার্টুন ছোটদের কাছে খুব মজার বিষয়, এটা মানতেই হবে। তবে উদ্বেগের বিষয় কার্ট্নু সিরিয়াল শিশুদের মাঝে শুধু দেখার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, শিশুরা এ সকল কার্টুন সিরিয়ালের বিভিন্ন চরিত্রকে হুবহু নকলের চেষ্টা করে। ছোটদের জন্য দেশে-বিদেশে যে কার্টুনগুলো তৈরি হয়, সেগুলোর প্রধান উদ্দেশ্য এর মাধ্যমে ইতিবাচক কাজগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়া। যেমন— বড়দের সম্মান করা, স্কুলের পড়া ঠিকমতো শেখা, সত্য বলা ইত্যাদি। মীনা কার্টুন এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।



বেশ কিছুদিন জাপানি কার্টুন ‘ডোরেমনে’র মম্প্রচার হচ্ছে। দিনের দীর্ঘ সময়জুড়ে দেখানো হয় এটি। ডিশ চ্যানেলের মাধ্যমে বর্তমানে একটি চ্যানেলে ডোরেমন নামের এই কার্টুন সিরিয়াল হিন্দিতে ভাষান্তর করে দেখানো হয়। অবারিত আকাশ সংস্কৃতির কল্যাণে বাংলাদেশের প্রায় সব শিশুরা এই কার্টুন দেখার সুযোগ পাচ্ছে। এমন কোনো বাড়ি খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে শিশুরা ডোরেমন কাটুন সিরিয়ালটি দেখে না। কার্টুনটি শিশুদের মধ্যে এতই জনপ্রিয় যে, ধীরে ধীরে এটি প্রায় প্রত্যেক মা-বাবারই কপালে চিন্তার ভাঁজ তৈরি করেছে। কারণ ডোরেমন নামের কার্টুনটি একেবারেই ভিন্ন ধাঁচের। এখানে নোবিতা নামের প্রধান চরিত্র পড়াশোনায় অত্যন্ত অমনোযোগী। সে তার মা-বাবা আর শিক্ষকদের ফাঁকি দিয়ে নানা কাজ করে এবং ‘ডোরেমন’ নামে আরেক চরিত্র তাকে এতে সাহায্য করে। এসব হয়তো শিশুর ওপর প্রভাব ফেলত না, যদি সে পরিণত বয়সে এটি দেখত। কিন্তু এমন একটি বয়সে এসব নেতিবাচক চরিত্র দেখছে, যখন শুধুই দেখে শেখার বয়স। ডোরেমনের মাধ্যমে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।



অনেক শিশু এই সিরিয়ালের পাত্র-পাত্রীর মতো বিভিন্ন চরিত্রকে হুবহু নকল করছে, হিন্দিতে কথা বলছে এমনকি মিথ্যা বলার অনুপ্রাণিত হচ্ছে। তারা বাসায় হিন্দিতে কথা বলে, খাওয়া-দাওয়া ও অঙ্গভঙ্গিতে বিচিত্র আচরণ করে। সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে ‘ডোরেমন ক্রেজ’। আগেই বলা হয়েছে, কার্টুনটি হিন্দি ভাষায় ভাষান্তরিত। এ কার্টুনে আসক্তি অল্প বয়সেই শিশুদের অন্য একটি ভাষা রপ্ত করিয়ে দিচ্ছে, যা নিজেদের সংস্কৃতির জন্য বড় ধরনের একটি হুমকি। নিজের ভাষা ঠিকমতো রপ্ত করার আগেই শিশু যদি অন্য একটি অপ্রয়োজনীয় ভাষায় কথা বলতে শেখে, সেটা দেশের ভবিষ্যত্ সাংস্কৃতিক মনন তৈরির পথে এক ধরনের প্রতিবন্ধক বটে। এ কার্টুনের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি কোমলমতি ছেলেমেয়েদের না আবার মাতৃভাষা ভুলিয়ে দেয়, এমনটাই শঙ্কা দেখা দিয়েছে।



(সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম)

হিন্দিতে প্রচারিত জাপানি কার্টুন ডোরেমনের কুফল সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম। সংসদে তিনি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সিরিয়ালটি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। শিশুদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এর স¤প্রচার বন্ধ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন এই কার্টুন বাচ্চাদের হিন্দি আর মিথ্যা বলা ছাড়া কিছুই শেখাতে পারবে না। তার মতে এই কার্টুন বন্ধ না হলে বাংলা ভাষার চেয়ে হিন্দি বলা বেড়ে যাবে। যেসব চ্যানেল এই কার্টুন দেখাচ্ছে, সেগুলোর অনুমোদনও বন্ধ করার পক্ষে মত দেন তিনি। ওই সাংসদ আরও বলেন, এমন কার্টুন দেখাতে হবে যেগুলো বাচ্চাদের নৈতিক শিক্ষা দেয়। গত ৩ ফেব্র“য়ারি জাতীয় সংসদে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এই দাবি জানান। তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও বিষয়টি জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিস হিসেবে গৃহীত হয়নি।



দেরিতে হলেও স¤প্রচার বিষয়ে জাতীয় সংসদে একজন সংসদ সদস্যের এমন উপলব্ধি অনেককে আশান্বিত করবে। দেশের হাজারো সমস্যার ভিড়ে বিষয়টি হয়তো সংসদে গুরুত্ব পাবে না। তবে এটাকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নাই। স্যাটালাইট যুগে প্রবেশের আগে বিটিভিতে প্রচারিত বেশকিছু জনপ্রিয় কার্টুন সিরিয়ালে আসক্ত ছিল শিশুরা। জাতীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্কে প্রচার হওয়ার কারণে ওই কার্টুনগুলো ছিল অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত ও সম্পাদিত। আর সেগুলোর বেশির ভাগ ইংরেজি ভাষায় প্রচার হওয়ায় এর অপকারের চেয়ে উপকার ছিল বেশি। কিন্তু ডোরেমন এর সম্পূর্ণ বিপরীত। তাই দেরী না করে এখনই এর বিকল্প বের করতে হবে। এখানে মূল ভূমিকা পালন করতে পারেন মা-বাবা। স্কুলের শিক্ষকরাও বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন। টেলিভিশনে প্রচারিত ভালো-মন্দের বিষয় সম্পর্কে ধারণা দিয়ে প্রভাবিত করতে পারেন তারা। একই সঙ্গে বলা যায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত যারা, বিশেষ নীতিনির্ধারণী মহল— মিডিয়ায় প্রচারিত অনুষ্ঠানাদির ভালো-মন্দ দিক লক্ষ রেখে ব্যবস্থা নিতে পারেন। ‘মীনা’ বা ‘সিসিমপুর’ কার্টুনের আরো বেশি এপিসোড তৈরি করতে হবে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আরো নতুন নতুন শিক্ষামূলক কার্টুন তৈরির পাশাপাশি বিদেশী অন্য কার্টুনকে বাংলায় ডাব করতে হবে। যাতে করে কোমল মতি শিশুরা আমাদের আবহবাম লোক সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হবার সুযোগ পায়। শিশুরা কাঁদা মাটির মতো, ছোট বেলায় তাকে যেমন ভাবে গড়া যাবে তেমনই আচরণ ও বৈশিষ্টের ছাপ পড়বে তার ভবিষ্যৎ জীবনে।



কোমল মতি শিশুদের ওপর কোন অপসংস্কৃতির ছাপ না পড়ে সে জন্য আমাদের যবান হতে হবে তাদের ভিত রচনার জন্য।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৪

ঘুমন্ত রাজকুমার বলেছেন: খুবই সত্য কথা।আমাদের সরকারের এ ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়া উচিত।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

কোবিদ বলেছেন: এইভাবে সব ঘুমন্ত রাজকুমারেররা জেগে উঠলে
এর থেকে পরিত্রান
পাওয়া যাবে অবশ্যই।
ধন্যবাদ রাজকুমার

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৯

ধৈঞ্চা বলেছেন: সাথে সাথে সকল হিন্দি সিরিয়ালগুলোও নিষিদ্ধ করার দাবী জানাই।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০২

কোবিদ বলেছেন: এভাবে কম্বলের লোম বাছতে গেলে
পরে আর কম্বলই খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

সব হিন্দি সিরিয়াল বা ইংরেজী সিরিয়াল নয়
ক্ষতিকারক ও নেতিবাচক সব সিরিয়াল
বন্ধ করা হোক।

৩| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:০৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: সাংসদের শুভ উদ্যোগ।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৩

কোবিদ বলেছেন: সত্যিই তাই,

৪| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৫৭

ধৈঞ্চা বলেছেন: কোবিদ, নিক দেখে ছেলে না মেয়ে বুঝা যাচ্ছে না তবে ধরে নিলাম ছেলে। এই প্রথম কোন ছেলেকে দেখলাম হিন্দি সিরিয়ালের ভক্ত।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৩৯

কোবিদ বলেছেন: এণ্টেনার উপ্রে দিয়ে গেল !!!

৫| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০৩

বইয়ের পোকা বলেছেন: আমরাও তো ছোটোবেলায় কত কার্টুন দেখেছি, এইরকম নেশার মতো ছিলো না কখনোই!!! ভালো কর্টুন দেখাতে হবে বেশী করে।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪০

কোবিদ বলেছেন: সহমত।
কার্টুনের মাঝেই
অসংগতিগুলো তুলে
ধারা যায় নিপুন ভাবে।

৬| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪৫

ব্লগার রাইয়ান বলেছেন: গত রাতে আমি আসিফ মহিউদ্দীন এবং আবিদা রুচির মদের আসর নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলাম। যেটি মুছে ফেলা হয়েছে।

কিন্তু ছবিগুলো এখনো ফেবুতে রয়েছে।

Click This Link

কিন্তু মডারেশন আমার পোস্টটি সরিয়ে নোটিশ ধরিয়ে দেয়।



শুধু তাই নয়, অত্যন্ত গর্হিতভাবে এই পোস্টটি আমার টাইমলাইনে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। সম্মানিত ব্লগারদের উদ্দেশ্যে বলছি মেশিনম্যান লম্পট সাঈদীকে নিয়ে এই পোস্টটি আমি দেইনি। শুধু তাই নয়, কয়েকমাস আগে দেয়া সরস্বতী পূজা সম্পর্কিত একটি পোস্ট ড্রাফটে নেয়া হয়। সুতরাং কারা এসব করছে তা স্পষ্ট।

আমি সাঈদীর পক্ষে নই। আমার প্রশ্ন আসিফের বিপক্ষে থাকলেই কি সাঈদীর পক্ষে থাকা হলো!!!!!!!!!!!!!!


আর আসিফের বিপক্ষে থাকলেই কি মডারেশন নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে একজন ব্লগারের একাউন্ট এভাবে ব্ল্যাকমেল করবেন? নিজের লেখা অন্যের একাউন্টে ঢুকিয়ে দেবেন?

আমি ব্লগারদের নিকট এর বিচার চাই।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫

কোবিদ বলেছেন: অরণ্যে রোদন বা
উলো বনে মুক্তা ছড়িয়ে
কোন লাভ হবে কী?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.