নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৈয়দ মুজতবা আলী একজন বাঙালি সাহিত্যিক। তিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রম্যরচয়িতা। বিবিধ ভাষা থেকে শ্লোক ও রূপকের যথার্থ ব্যবহার, হাস্যরস সৃষ্টিতে পারদর্শিতা এবং এর মধ্য দিয়ে গভীর জীবনবোধ ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাঁকে বাংলা সাহিত্যে এক বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম লেখক ও রম্যরচয়িতা সৈয়দ মুজতবা আলী ৯৭৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। একুশে পদক বিজয়ী বাংলা সাহিত্যের অন্যতম রম্যরচয়িতা সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর মৃত্যু দিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি
সৈয়দ মুজতবা আলী ১৯০৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেটের করিমগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও তার তাঁর পৈতৃক ভিটা হবিগঞ্জে। তাঁর পিতা সৈয়দ সিকান্দার আলী। পিতার বদলীর চাকরি হওয়ায় সুবাদে মুজতবা আলীর প্রাথমিক শিক্ষাজীবন কাটে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ১৯২১ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। তিনি ছিলেন বিশ্বভারতীর প্রথম দিকের ছাত্র। এখানে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি, আরবী, ফার্সি, হিন্দী, গুজরাটি, ফ্রেঞ্চ, জার্মান ও ইটালিয়ান ভাষাশিক্ষা লাভ করেন। ১৯২৬ সালে এখান থেকে বি.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর তিনি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন।
আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ করে ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সাল পর্যন্ত মুজতবা আলী কাবুলের একটি কলেজে অধ্যাপনা করেন। সেখানে তিনি ইংরেজি ও ফ্রেঞ্চ ভাষার শিক্ষক ছিলেন। পরে দর্শনশাস্ত্র পড়ার জন্য বৃত্তি নিয়ে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে গবেষণার জন্য তিনি ডি.ফিল লাভ করেন ১৯৩২ সালে। ১৯৩৪-১৯৩৫ সালে তিনি মিশরে কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে তিনি ১৯৩৫ সালে বরোদার মহারাজার আমন্ত্রণে তিনি বরোদা কলেজে তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এখানে তিনি আট বছর কাটান। এরপর দিল্লীর শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের খন্ডকালীন প্রভাষকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পঞ্চাশের দশকে কিছুদিন আকাশবাণীর স্টেশন ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন পাটনা, কটক, কলকাতা এবং দিল্লীতে। ১৯৬১ সালে তিনি শান্তিনিকেতনে ফিরে যান। বিশ্বভারতীর ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে তিনি অবসরগ্রহণ করেন।
শান্তিনিকেতনে পড়ার সময় সেখানের বিশ্বভারতী নামের হস্তলিখিত ম্যাগাজিনে মুজতবা আলী লিখতেন। পরবর্তীতে তিনি ‘সত্যপীর’, ‘ওমর খৈয়াম’, ‘টেকচাঁদ’, ‘প্রিয়দর্শী’ প্রভৃতি ছদ্মনামে বিভিন্ন পত্রিকায়, যেমনঃ দেশ, আনন্দবাজার, বসুমতী, সত্যযুগ, মোহাম্মদী প্রভৃতিতে কলাম লিখেন। সৈয়দ মুজতবা আলী সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই বাগদেবীর বরমাল্য জয় করে নেন অর্থৎ 'দেশে বিদেশে' প্রকাশনার মধ্য দিয়েই তিঁনি বাংলা সাহিত্যাঙ্গণে তাঁর অক্ষ প্রতিষ্ঠা। মুজতবা আলীর মধ্যে বিপুল সম্ভাবনার ইঙ্গিত রবীন্দ্রনাথ পেয়ে ছিলেন, এবং সম্ভবত তাঁর একাধিক অপ্রকাশিত কিংবা হস্তলিখিত পত্রিকায় প্রকাশিত রচনার প্রতি গুরুদেবের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছিলো। রবীন্দ্রনাথ মুজতবাকে সাহিত্য ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত দেখতে চেয়েছিলেন। শান্তিনিকেতনে পড়ার সময় সেখানের বিশ্বভারতী নামের হস্তলিখিত ম্যাগাজিনে মুজতবা আলী লিখতেন।পরবর্তীতে তিনি ‘সত্যপীর’, ‘ওমর খৈয়াম’, ‘টেকচাঁদ’, ‘প্রিয়দর্শী’ প্রভৃতি ছদ্মনামে বিভিন্ন পত্রিকায়, যেমনঃ দেশ, আনন্দবাজার, বসুমতী, সত্যযুগ, মোহাম্মদী প্রভৃতিতে কলাম লিখেন। তাঁর বহু দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন ভ্রমনকাহিনী। এছাড়াও লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা। বিবিধ ভাষা থেকে শ্লোক ও রূপকের যথার্থ ব্যবহার, হাস্যরস সৃষ্টিতে পারদর্শিতা এবং এর মধ্য দিয়ে গভীর জীবনবোধ ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা তাঁকে বাংলা সাহিত্যে এক বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। তিনি বাঙ্গালী পাঠকের অবিশ্বাস্য ভালবাসা পেয়েছিলেন। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের পরে তৎকালীন সময়ে তিনি সর্বাপেক্ষা উদ্বৃত (Most quoted) লেখক।
তাঁর রচিত বইয়ের সংখ্যা ৩০। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহঃ
ভ্রমনকাহিনীঃ ১। দেশে বিদেশে (১৯৪৯), ২। জলে ডাঙ্গায় (১৯৬০)
উপন্যাসঃ ১। অবিশ্বাস্য (১৯৫৪), ২।শবনম (১৯৬০), ৩। শহরইয়ার (১৯৬৯)
ছোটগল্পঃ ১। চাচা কাহিনী (১৯৫২), ২। টুনি মেম (১৯৬৪)
রম্যরচনাঃ ১। পঞ্চতন্ত্র (১৯৫২), ২। ময়ূরকন্ঠী (১৯৫২)
গল্প মালাঃ ১। রাজা উজির, ২। ধূপছায়া, ৩। বেচে থাক সর্দি-কাশি, ৩। পুনশ্চ,
৪। পাদটীকা, ৫। তীর্থহীনা. ৬। কর্ণেল, ৭। রাক্ষসী, ৮। বিধবা বিবাহ, ৯। ক্যাফে-দে-জেনি, ৯। মা জননী, ১০। বেল তুলে দু-দু'বার, ১১। স্বয়ংবরা, ১২। রস-গোল্লা (ইংরেজি)
তাঁর লেখার স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯৪৯ সালে নরসিং দাস পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬১ সালে পান আনন্দ পুরস্কার এবং ২০০৫ সালে জাতীয় পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন।
বরেণ এই সাহিত্যিক ১৯৭৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ মুজতবা আলী মৃত্যুবরণ করেন। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম লেখক ও রম্যরচয়িতা সৈয়দ মুজতবা আলীর ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
তথ্য সূত্রঃ
১। সৈয়দ মুজতবা আলী জীবন কথাঃ লেখক নূরুর রহমান খান
২। উইকিপিডিয়া (সংকলিত)
৩। ছবি নেট থেকে সংগৃহীত
১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:০১
কোবিদ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে,
অন্তত আপনি মন্তব্য কররলেন্
আর তাঁর বইয় সংগ্রহে রাখার
আগ্রহ প্রকাশ করলেন
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:২০
অদৃশ্য বলেছেন:
তার কয়েকটি গল্প পড়েই তার ফ্যান হয়ে গিয়েছিলাম সেই স্কুল বয়সেই....
আমার কাছে তার চাচা কাহিনীর সফ্টকপি আছে.... কিন্তু আপাতত অন্যকোন সফ্টকপি বা হার্ডকপি নেই... আমি অবশ্যয় তার বইগুলো আমার ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে রাখবো.... পড়বার জন্যতো বটেই... শোভা বাড়াবার জন্যও....
শুভকামনা....
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:২৭
অদৃশ্য বলেছেন:
শ্রদ্ধা.....
তার সবগুলো বই সংগ্রহে রাখার ইচ্ছা আছে....
শুভকামনা...