নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যই সুন্দর

আমি সত্য জানতে চাই

কোবিদ

আমি লেখালেখি করি

কোবিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাংবাদিকতা জগতের কিংবদন্তি ও আলোকিত পথের দিশারী সন্তোষ গুপ্তের ৮৯তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫৪

'

গণমানুষের কল্যাণে আত্মনিবেদিত প্রথিতযশা সাংবাদিক সাহিত্যিক, দৈনিক সংবাদের সাবেক সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, রাইটার্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের সাবেক উপদেষ্টা, কবি ও কলামিষ্ট সন্তোষ গুপ্ত। তিনি একাধারে কবি, ও প্রবন্ধকার ছিলেন। কবিতা, রাজনৈতিক কলাম, সমালোচনা সাহিত্য সহ তিনি অনেক মূল্যবান লেখা লিখেছেন। সন্তোষ গুপ্ত দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশকের সাংবাদিকতা জীবনে বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। দেশের সব জাতীয় দৈনিকে তার বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ, কলাম ও সমালোচনামূলক নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। পাঠক মহলে সমাদৃত ছিল সন্তোষ গুপ্তের লেখা ‘অনিরুদ্ধের কলাম’। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি দৈনিক সংবাদের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে রাজনীতি, সাংবাদিকতা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও লেখালেখির মাধ্যমে জীবদ্দশাতেই তিনি আমৃত্যু সংগ্রামী ও আপোষহীন এক কীর্তিমান পুরুষ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজ এই কৃতি গুণীজনের ৮৯তম জন্মদিন। সাংবাদিক, সাহিত্যিক সন্তোষ গুপ্তের জন্মদিনে আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা।



সন্তোষ গুপ্ত ১৯২৫ সালের ৯ জানুয়ারি বরিশালের ঝালকাঠি জেলার রুনসী গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। সন্তোষ গুপ্ত ছেলেবেলায় মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে বাবা ও কাকাকে হারান। তাঁর মা কিরণবালা তাকে অনেক কষ্টে মানুষ করেন। স্বামীহারা হবার পর থেকে কিরণবালাকে দীর্ঘকাল একবেলা আহার করতে হয়েছে। হিন্দু বিধবা হিসেবে বিকেলে খই বা রুটি খাওয়ার অবস্থাও তার ছিল না। ১৯৪৪ সালে সন্তোষ গুপ্ত চাকরি পাবার পর তিনি রুটি ও ফলমূল খাবার সুযোগ পেয়েছিলেন। ছেলেবেলায় বই পড়ার প্রচন্ড নেশা ছিল সন্তোষ গুপ্তের। একবার একনাগাড়ে রবীন্দ্রনাথের ৪৪টা কবিতা মুখস্থ বলে তিনি তার শিক্ষক মহেন্দ্রবাবুকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন এবং তখন তিনি তাকে উপহার দিয়েছিলেন সঞ্চয়িতা ও চয়নিকা। রবীন্দ্রনাথের পাশাপাশি তিনি ম্যাক্সিম গোর্কী, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, স্বামী বিবেকানন্দ ও কাজী নজরুল ইসলামের রচিত বই পড়েছিলেন। ছয় বছর বয়সে রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি পড়তে শুরু করেন। সেই সময় ঐ অজপাড়াগাঁয়ে মাত্র একটা ইংরেজী টু ইংরেজী অভিধান আর দুটো ঘড়ি থাকলেও এবং এলাকায় সংবাদপত্র আসলেও কারো তেমন পড়ার আগ্রহ ছিল না। এমন অবস্থায় সন্তোষ গুপ্তের লেখাপড়ার তীব্র স্পৃহা সত্যিই বিস্ময়কর ছিল।



(সন্তোষ গুপ্তের নিজে আকাঁ ড্রয়িং)

১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিংয়ে আইজি প্রিজন অফিসে সন্তোষ গুপ্ত কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর দেশভাগের পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কারা বিভাগের আইজির অফিসে সন্তোষ গুপ্তের পোস্টিং হয়। এরপর তিনি ১৯৫৭ সালে ‘সংবাদ’ এ যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে সন্তোষ গুপ্ত প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য বিভাগে কর্মরত ছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি ‘দৈনিক সংবাদ’ এর সিনিয়র সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। প্রায় অর্ধ-শতাব্দী ধরে সাংবাদিকতা জগতে তিনি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বিচরণ করেন। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের বঙ্গবন্ধু এবং পরে ৩ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে জাতীয় চার নেতার হত্যার পর স্বাভাবিকভাবে অসাম্প্রদায়িকতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন সন্তোষ গুপ্ত। বাংলাদেশের বামপন্থীরা স্ব-উদ্যোগে এগিয়ে আসবেন কামনা করেছেন তিনি। এ প্রশ্নে বামপন্থীদের সংকীর্ণতা দেখলে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি। তাই বলে যৌবনের ক্ষুরধার যে বিশ্বাস নিয়ে পথচলা শুরু করেছিলেন, সেই বিশ্বাস থেকে বিচ্যুত হননি কোনো দিন।



বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার সঙ্গে শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন তাঁকে সব্যসাচী লেখক হিসেবে পরিচিত করেছে। রবীন্দ্রনাথ, বঙ্গবন্ধু, পিকাসো, জয়নুল, অমিয় চক্রবর্তী, শামসুর রাহমানসহ সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র সবই ছিল তাঁর লেখার বিষয়বস্তু। কবিতা, শিল্পকলা, চিত্রকলা, রাজনীতি, সাহিত্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ১৪টি বই লিখেছেন। তাঁর প্রকাশিত বইগুলো হলঃ



১। অনিরুদ্ধের কলাম , ২। রক্তমাখা বুক জুড়ে স্বদেশের ছবি, ৩। ইতিহাসের ছায়াছন্ন প্রহর ও বঙ্গবন্ধু, ৪। স্বরূপের সন্ধান, ৫। শিল্প সমাজ ও বাস্তবতা, ৬। ফিরে যেতে চাই: ডায়েরি স্মৃতিকথা ও সাক্ষাৎকার, ৭। ইতিহাসের ঝর্ণাধ্বনি, ৮। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বনাম সাংবাদিকতা, ৯। Dictionary of Pharmacy, ১০। শিল্পের কথা, ১১। একুশের চেতনা , ১২। স্মৃতি বিস্মৃতির অতলে, ১৩। উদিত সূর্যের দেশে পাতাল রাজ্য



সাংবাদিকতা ও সাহিত্যে আবদান রাখার জন্য একুশে পদক, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, জহুর হোসেন স্মৃতি পদক সহ অনেক পদকে তাঁকে সম্মানিত হন। ২০০৪ সালের ৬ আগষ্ট ৮০ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আজ তাঁর ৮৯তম জন্মদিন। সাংবাদিকতা জগতের আলোক বর্তিকা সন্তোষ গুপ্তের জন্মদিনে তাঁকে স্মরন করছি গভীর শ্রদ্ধায়।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:১১

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: শ্রদ্ধা এবং শুভেচ্ছা

২| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২৬

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: শুভ জন্মদিন সন্তোষ গুপ্ত।

৩| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৩১

আরুশা বলেছেন: শুভ জন্মদিন সন্তোষ গুপ্ত সাথে রইলো শুভেচ্ছা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.