নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব স্বাক্ষরতা দিবস। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও গণসচেতনতা তৈরি করাই দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য। এবারের আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবসের প্রতিপাদ্য 'টেকসই উন্নয়নের মুলকথা স্বাক্ষরতা আর দক্ষতা'। ১৯৬১ সালের ডিসেম্বর মাসে পৃথিবীর সব দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূর করতে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। পরে ১৯৬৫ সালের ৮-১৯ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কোর উদ্যোগে ইরানের তেহরানে বিশ্ব স্বাক্ষরতা সম্মেলন হয়। এতে ৮০ দেশের শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। ঐ সম্মেলনে প্রতিবছর ৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস পালনের প্রস্তাব করা হয়। পরে ১৯৬৫ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ৮ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৬৬ সালে ইউনেস্কো প্রথম দিবসটি উদযাপন করলেও ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস পালিত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসটি প্রতি বছর আসে-যায়। কিন্তু গণশিক্ষা আন্দোলনের পথিকৃৎ রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা ঠাকুরগাঁওয়ের মোকছেদ আলীর পরিবারের খোঁজ রাখে না কেউ। স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ডাক দেন। ওই সময় গণশিক্ষা আন্দোলনে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কচুবাড়ি কৃষ্টপুর গ্রামের কলেজ ছাত্র মোকছেদ আলী। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে কিছু দিনের মধ্যেই গ্রামটি নিরক্ষর মুক্ত হয়। গ্রামে সাতশ নারী-পুরুষ সবাই সাক্ষর হয়ে ওঠেন। ঘটে যায় নীরব বিপ্লব। ১৯৭৪ সালের তৎকালীন সরকারের শিক্ষামন্ত্রী সরেজমিনে তদন্ত করে কচুবাড়ির কৃষ্টপুর গ্রামকে দেশের প্রথম নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম ঘোষণা করে মোকছেদ আলীকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা রাষ্ট্রপতি পদক প্রদান করেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে তার সাফল্য দেখার জন্য ওই গ্রামে আসবার বাসনা ছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের। কিন্তু ১৯৭৫ এর নির্মম নৃশংস ঘটনার তিনি শাহাদাত বরণ করলে আর সেখানে যাওয়া হয়নি তাঁর। বঙ্গবন্ধু তাকে ঢাকায় বাড়ি ও চাকরি দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আপত্তি তুলে বলেছিলেন, এলাকায় থেকে মানুষের কাজ করে যেতে চান। পরে ওই গ্রামে আসেন তৎকালিন রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ আনিসুর রহমানসহ দেশ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ। শিক্ষাক্ষেত্রে অসমান্য অবদানের জন্য জাতি তার কাছে কৃতজ্ঞা প্রকাশ করলেও পরিবর্তন হয়নি তার ভাগ্যের চাকা। প্রান্তিক চাষী মোকছেদ আলী ছিলেন নির্লোভ পরোপকারী সাদা মনের মানুষ। তিনি শুধু সমাজকর্মীই শুধু ছিলেন না ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধাও। অভাব অনটনে টাকার অভাবে প্রায় বিনা চিকিৎসায় ২০০৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মারা যান।
তার মৃত্যুৃর পর থেকে সীমাহীন কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছে তার পরিবার। টাকার অভাবে বিয়ে হচ্ছেনা তার বিবাহযোগ্যা কন্যা আম্বিয়া খাতুনের আর ছেলে চাকুরীর সংস্থান না করতে পেরে দিন মজুরের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। অভাব অনটনে কোন ভাবে টিকে আছে গণশিক্ষা গণশিক্ষা আন্দোলনের পথিকৃৎ রাষ্ট্রপতি পদক প্রাপ্ত মোকছেদ আলীর পরিবার। মোকছেদ আলীর বৃদ্ধা স্ত্রী জাহেদা জীবন সায়াহ্নে আর কিছু চান না, তবে তার স্বামী মোকছেদ আলীর যথার্থ সম্মান দেখে মরতে চান তিনি। আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবসে মোকছেদ আলীর পরিবাটিকে যথার্থভাবে মূল্যায়নের অনুরোধ দেশবাসীর।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪৫
ঢাকাবাসী বলেছেন: শিক্ষা ..ন্ত্রী শুনলে বিয়ে দিবেনা তবে একে পরীক্ষা ছাড়াই জিপিএ ছয় দিয়ে দিবে।