নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়
বলা হয় রবীন্দ্রনাথের কবি প্রতিভা বিকাশের পিছনে কাদম্বরী দেবীর বড় ভূমিকা ছিলো।যদিও নজরুল আমাদের বিদ্রোহী কবি,তবে তিনি তো প্রেমেরও কবি।ইতিহাস ঘাটলে তাঁর অনেক গান কবিতার পিছনেও বেশ কজন মহীয়সীর খোঁজ পাওয়া যায়।সামগ্রিক অর্থের কথা না হয় বাদই দিলাম।সাহিত্যের অনেক বিখ্যাত একক সৃষ্টির পিছনেও বাস্তব চরিত্রের উপস্থিতির নজির বহু আছে।কোনটা সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত জানি,কোনটা অজ্ঞাত রয়ে গেছে।এই যেমন কবছর আগেই তো হঠাৎ করে রূপাইয়ের দেখা পাওয়া গেলো। তবে জসীমউদ্দীনের সেই কালো মুখের কালো ভ্রমর ইতোমধ্যে জরার ভারে জ্যোতি হারিয়ে ফেলেছেন।লম্বা মাথার চুলের অস্তীত্ব এখন শুধু 'নকশীকাঁথার মাঠ'-এ বিদ্যমান।আবার জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেনের বাড়ি চেনার জন্য বাঙ্গালির যে গবেষণা তা বোধহয় শার্লক হোমসকেও টেক্কা দেবে।
আসলে গল্প কিংবা উপন্যাস শুধু নয়,আত্মার সাথে সম্পর্কিত যে কোন শিল্প চিত্রকর্ম,ভাস্কর্য,সুর- দেখে মাঝে মধ্যে অবাক হতে হয় এই ভেবে যে এই শিল্পের উৎস কোথায়!সৃষ্টিশীল মানুষগুলো এমন অভূতপূর্ব সব শিল্প সৃষ্টির প্রেরণা কোথায় পান?এই যে 'প্রেরণা' শব্দটা আসছে,এটার সুন্দর একটা ইংরেজি প্রতিশব্দ আছে---সেটা হলো 'মিউজ'(Muse)।আজকের লেখার বিষয়বস্তু এই মিউজ।
মিউজ মূলত গ্রীক শব্দ।এর আভিধানিক অর্থ 'A source of inspiration'।অথবা 'A person,especially a woman,who inspires any artistic work'
সৃষ্টিশীল মানুষগুলো তাঁদের সৃষ্টির অনুপ্রেরণা কোথায় পান সে ব্যাপারে আমার নিজের কোন ধারণা নেই।মনে হয় না কারোরই এ ব্যাপারে কোন পরিষ্কার ধারণা আছে।গ্রীকদের তো আবার জগতের সব ব্যাপারে একটা তত্ত্ব থাকে,এ দিকটাই বা বাদ যাবে কেন?ওদের মতে তিনজন নারী সৃষ্টিশীল মানুষদের মাথায় আইডিয়া দেওয়ার কাজটা করেন।এরা মিউজ নামে পরিচিত।
প্রাথমিকভাবে মিউজের সংখ্যা ছিলো তিন-মহাকবি হোমার এটাকে নয় এ উন্নীত করেন।মিউজদের প্রচলিত নামগুলোও ওনারই দেওয়া।একেকজন মিউজের কাজের ক্ষেত্র আলাদা,তাঁদের পোশাক ও প্রতীক(Emblem) দেখে প্রত্যেককে পৃথক পৃথকভাবে চেনা যায়।
সবার প্রথমে ক্যালাইওপি(Calliope)--ইনি ঐতিহাসিক কবিতার মিউজ।হাতে ধরে থাকা অক্ষরফলক তার পরিচায়ক।
ইতিহাসের মিউজ ক্লিয়ো(Clio)।স্ক্রল অথবা বই তার প্রতীক।
সঙ্গীতের মিউজ ইউটারপ(Eutrpe)।ইনি বংশীবাদক---হাতে এক বিশেষ বাশি(Aulus) নিয়ে ঘুরে বেড়ান।বাঁশি ইউটারপের প্রতীক।
এরাটো(Erato) হলো প্রেমের কবিতার মিউজ।ইনি সিতারা বাজান।তাছাড়া মাথায় একটা গোলাপের মুকুট থাকে।এটাও ইরাতোর একরকম নিজস্ব বৈশিষ্ট্য।
মেলপোমেন(Melpomene) ট্রাজেডির প্রতীক।দুজন মিউজের হাতে মুখোস থাকে।তাদের একজন মেলপোমেন।এর কাছে থাকে ট্রাজেডির মুখোস।
পলিহিমনিয়া(Polyhymnia) ধর্মীয় কবিতার মিউজ।তার হাতে ধরা ভেইল দেখে তাকে চেনা যায়।
টারপসিচোর(Terpsichore) নাচের মিউজ।তার নৃত্যরত ভঙ্গিমার সাথে হাতের লায়ার দেখে আলাদা করে চেনা যায়।
কমেডি বা কৌতুকের মিউজ থেলিয়া(Thalia)।মিউজদের মধ্যে ইরাতোর পরে থেলিয়াই বোধহয় সবচেয়ে বেশি পরিচিত।মেলপোমেনের মতো তার হাতেও একটা মুখোস থাকে--তবে সেটা কমিক মুখোস।
কম্পাস আর গ্লোব দেখে ইউরেনিয়া(Urania) সম্পর্কে খুব সহজেই ধারণা করা যায়।সে এস্ট্রোনমির মিউজ।
মিউজদের জন্ম ইতিহাস নিয়ে নানারকম মত আছে।এর মধ্যে হেসিয়ডের মতামত অধিক সমাদৃত।মিউজরা জিউস এবং নেমোসিন (Mnemosyne) এর কন্যা।জন্মের পর তাঁদের অপ্সরী ইউফাইম এবং এপোলোর তত্ত্ববধানে দিয়ে দেওয়া হয়।এপোলোর কাছেই মিউজরা নিজ নিজ কাজে দক্ষ হয়ে ওঠে।
এত গেলো স্বর্গের দেবী কিংবা অপ্সরী মিউজদের ইতিকথা।মর্ত্যের মিউজের ব্যাপারে কিছু কথা বলা যাক।একটা সময় পাশ্চাত্যের দর্শনে মিউজ বললে প্রথমেই কোন নারীর অবয়ব চিন্তা করা হতো।আসলে মিউজের মিথ এই ধারণাকেই সমর্থন যুগিয়েছিলো।তাছাড়া পৃথিবীর মহাকাব্যগুলো প্রেম,বিরহ, ট্রাজেডি নির্ভর বলে মিউজের এরকম ধ্যান ধারণাটাই স্বাভাবিক।কিন্তু আভিধানিক কিংবা মানবিক কোন দিক থেকেই মিউজের উৎস শুধু নারীতে সীমাবদ্ধ নয়।যদি তাই হতো তাহলে নারী সাহিত্যিকদের কি হতো!
প্রকৃতপক্ষে মিউজ বা প্রেরণার উৎস যেমন নর-নারী হতে পারে,দুর্ভিক্ষের অনাহারী কাকও হতে পারে,আবার ময়লার স্তূপের পাশে কুকুর মাতার আগলে রাখা ছানাগুলোর প্রতি ভালোবাসাও হতে পারে।সৃষ্টির প্রক্রিয়া সবসময়ই রহস্যময়,সেটা নিয়ে ছন্দময় ব্যাখ্যায় যাওয়া নিষ্প্রয়োজন।
ছবিসূত্রঃগুগল
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৩
কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ পাঠক।
২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪২
ক্লে ডল বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট! ভাল লাগল মিউজদের সম্পর্কে জেনে।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৪
কল্পদ্রুম বলেছেন: শুভ সকাল ক্লে ডল সাহেব!
৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৬
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: মিউজ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। আপনার এই পোস্টটি তথ্যবহুল ও শ্রমসাধ্য। প্রচুর পড়াশুনা না থাকলে এরকম নিবন্ধ লেখা যায় না। আমার বিবেচনামতে এই ধরণের নিবন্ধ প্রিন্ট মিডিয়ায় যাওয়া উচিৎ।
ধন্যবাদ ভাই কল্পদ্রুম।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৬
কল্পদ্রুম বলেছেন: ধন্যবাদ লেখাটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।
৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০২
মহাসিন মহী বলেছেন: উফ! লুফে নেবার মতো, তথ্যবহুল তো বটেই।
৫| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০৫
মহাসিন মহী বলেছেন: উফ! লুফে নেবার মতো পোষ্ট, তথ্যবহুল তো বটেই।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৮
কল্পদ্রুম বলেছেন: তা তো বটেই...
৬| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৩
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: বাবাহ! নতুন কবিতা পড়ার আশায় আপনার ব্লগে এসে অন্যধরনের একটা ভালো লেখা পড়লাম। বেশ রিসার্চ করে শ্রমসাধ্য একটি পোষ্ট লিখেছেন! এতকিছু জানতাম না রে। নতুন কিছু গোছালোভাব পরিবেশন করার জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ভালো থাকুন, সুখে থাকুন।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৬
কল্পদ্রুম বলেছেন: কবিতা পড়তে এসে আপনাকে এটা পড়তে হলো জেনে আনন্দিত হবো না কি দুঃখিত হবো বুঝতে পারছি না!!!তবে এই লেখাটা যে আপনাদের ভালো লেগেছে এটাই আনন্দের বিষয়।
আপনিও ভালো থাকবেন,সুখে থাকবেন।
৭| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৮
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন: ইন্টারেস্টিং কিছু তথ্য জানলাম । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৭
কল্পদ্রুম বলেছেন: ইন্টারেস্টিং তো বটেই।ভালো থাকবেন সুহৃদ।
৮| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:০১
কালীদাস বলেছেন: চমৎকার লেখা, এত ডিটেইলস জানতাম না। কয়েকটা ভাষ্কর্য আগে দেখেছি মনে হচ্ছে সামনা সামনি, শিওর হতে পারলাম না।
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৬
কল্পদ্রুম বলেছেন: বাহ!চোখের সামনে দেখতে পাওয়া দারুণ অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই,যদি চিনতে পারা যায় আর কি!আগে থেকে জানা না থাকলে এদের এত এত গড গডেসের ভিড়ে কাউকে আলাদা করা কঠিন।
৯| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অসাধারণ পোস্ট , সরাসরি প্রিয়তে গেল ।
যাবার অআগে জিউসকে রেখে গেলাম ।
জিউস হলেন মহাদেব বা দেবতাদের দেবতা অর্থাৎ সব দেব-দেবীর রাজা এবং অলিম্পাস পর্বতের সম্রাট।
তিনিই মিথলজির প্রধান দেবতা। রোমানরা তাকে জুপিটার বলে ডাকে।
ধন্যবাদ সাথে শুভেচ্ছা রইল ।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৬
কল্পদ্রুম বলেছেন: জিউসকে রেখে যাবার ধন্যবাদ।প্রিয়তে নিলেন জেনে ভালো লাগলো।
১০| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:৪৯
জেন রসি বলেছেন: অনেক আগে মিউজদের সম্পর্কে পড়েছিলাম।ভুলেই গিয়েছিলাম। আপনার পোস্ট পড়ে আবার মনে পড়ে গেল।
০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৮
কল্পদ্রুম বলেছেন: দেখবেন আবার মিউজদের কথা মনে করে নস্টালজিক না হয়ে যান।
১১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:৪৮
মাদিহা মৌ বলেছেন: ভালো পোস্ট। এই সম্পর্কে এবারঈ প্রথম প্ড়লাম। মিউজ নামটা খুব ভালো শোনায়।
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২২
কল্পদ্রুম বলেছেন: তা বেশ।মন্তব্যের জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন আর ভালো থাকবেন।
১২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:০৪
জাহিদ অনিক বলেছেন: বাহ । চমৎকার । মাঝরাতে পড়ার মত পোষ্ট ।
মিথোলজি সবসময়েই আকর্ষণীয় ।
ভাল লাগল এবং চলে গেল প্রিয়তে ।
০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:১৪
কল্পদ্রুম বলেছেন: ধন্যবাদ।নতুন বছরের শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:২৩
কিশোর মাহমুদ বলেছেন: তথ্যবহুল একটি লেখা।
ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটির জন্য।
শুভ কামনা।